G

HSC ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায়-০১ pdf download

এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Business Organization and Management 2nd Paper Srijonshil question and answer pdf download.

ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা
২য় পত্র
অধ্যায়-০১

সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

HSC Business Organization and Management 2nd Paper
Srijonshil
Question and Answer pdf download

পরীক্ষার্থী বন্ধুরা, এ অধ্যায়ে বোর্ড পরীক্ষা, শীর্ষস্থানীয় কলেজসমূহের নির্বাচনি পরীক্ষা এবং বাছাইকৃত এক্সক্লুসিভ মডেল টেস্টের প্রশ্নগুলোর পূর্ণাঙ্গ উত্তর দেওয়া হয়েছে। এগুলো অনুশীলন করলে তোমরা এ অধ্যায় থেকে যেকোনো সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর সহজেই লিখতে পারবে।

সৃজনশীল প্রশ্ন-০১
সালেহা জুট মিলের এম.ডি মি. রবি প্রতিষ্ঠানের নীতি ও কৌশল নির্ধারণ করেন। তিনি প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ঠিক করে তা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় উপকরণাদি সংগ্রহ করেন। সঠিক নির্দেশনা প্রদান করেন। আবার কর্মীরা যাতে কর্মে উৎসাহ পায় সে ব্যবস্থাও করেন। সর্বোপরি আদর্শমান অনুযায়ী কাজ বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করেন। তাই এ বছর সালেহা জুট মিল লক্ষ্যের থেকে ২৫% বেশি মুনাফা করেছে। [ঢা. বো. ১৭]
ক. শিল্প বিপ্লব কাল উল্লেখ করো। ১
খ. বাজেটারী নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কেন গুরুত্বপূর্ণ? ২
গ. উদ্দীপকের মি. রবি ব্যবস্থাপনার কোন স্তরের কর্মকর্তা? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. ‘কার্যকর ব্যবস্থাপনা সাফল্যের চাবিকাঠি’- উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ করো। ৪

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
১৭৫০-১৮৫০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত সময় হলো শিল্প বিপ্লব কাল।

'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনাকে সংখ্যায় প্রকাশ করাকে বাজেট বলে। এ বাজেটের আলোকে প্রতিষ্ঠানে যে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরোপ করা হয়, তাকে বাজেটারি নিয়ন্ত্রণ বলে।

বাজেটে আদর্শমান ও বিচ্যুতি নির্ণয়, কার্যফল তুলনা, সংশোধনমূলক ব্যবস্থা নেওয়া প্রভৃতি কাজ সম্পাদিত হয়। ফলে প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সহজ হয়। এছাড়া কাজের মধ্যে সমন্বয়ও ঘটে। এ ব্যবস্থায় সহজে লক্ষ্য অর্জন নিশ্চিত হয়। তাই প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বাজেটারি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ।

'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকের মি. রবি ব্যবস্থাপনার উচ্চস্তরের কর্মকর্তা।

এ স্তরের ব্যবস্থাপকগণ প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন, নীতি নির্ধারণ ও মুখ্য উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের কাজ করেন। পরিচালনা পর্ষদ, ব্যবস্থাপনাপরিচালক ও মহাব্যবস্থাপক উচ্চস্তরের দায়িত্ব পালন করেন।

উদ্দীপকের সালেহা জুট মিলের এম.ডি মি. রবি প্রতিষ্ঠানের নীতি ও কৌশল নির্ধারণ করেন। তিনি প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় উপকরণ সংগ্রহ করেন। অধস্তনরা যাতে কাজ বাস্তবায়ন করতে পারে সেজন্য তিনি সঠিক নির্দেশনা দেন। এ ধরনের কাজগুলো হলো ব্যবস্থাপনার উচ্চস্তরে কর্মরত নির্বাহী ও ব্যবস্থাপকবৃন্দের কাজ। তাই বলা যায়, মি. রবি ব্যবস্থাপনার উচ্চস্তরের কর্মকর্তা।

'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনের জন্য সব উপায়-উপকরণ ও সম্পদ যথাযথভাবে কাজে লাগানোর প্রক্রিয়া হলো ব্যবস্থাপনা।

ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ার কাজ শুরু হয় পরিকল্পনা দিয়ে। আর প্রাতিষ্ঠানিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কর্মীদের কাজের নির্দেশ দান, তত্ত্বাবধান, সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনার প্রধান কাজ।

উদ্দীপকের মি. রবি সালেহা জুট মিলের একজন উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপক। তিনি প্রতিষ্ঠানের নীতি ও কৌশল নির্ধারণ করেন। এছাড়াও তিনি প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ঠিক করে তা বাস্তবায়নের জন্য উপকরণাদি সংগ্রহ করে কর্মীদের কাজের নির্দেশ দেন। আবার কর্মীরা যাতে কর্মে উৎসাহ পান, সে ব্যবস্থাও গ্রহণ করেন। ফলে মি. রবির ব্যবস্থাপনার এসব কর্মকাণ্ডের কারণে প্রতিষ্ঠানটি চলতি বছর ২৫% বেশি মুনাফা লাভ করে।

প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের জন্যই ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমগুলো হলো- পরিকল্পনা, সংগঠন, কর্মীসংস্থান, নির্দেশনা, প্রেষণা, সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণ। এসব বাস্তবায়নের জন্য একজন ব্যবস্থাপক কর্মীদের কাজের নির্দেশ দান, তত্ত্বাবধান, উৎসাহদান, সমন্বয়সাধন ও নিয়ন্ত্রণের কাজ করে থাকেন। উদ্দীপকের ব্যবস্থাপকও ব্যবস্থাপনার এসব কাজ সম্পাদন করে প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্যের চেয়ে ২৫% বেশি মুনাফা অর্জন করেছেন। তাই বলা যায়, ‘কার্যকর ব্যবস্থাপনা সাফল্যের চাবিকাঠি।’

সৃজনশীল প্রশ্ন-০২
জনাব মাহতাব কোম্পানির উদ্দেশ্য নির্ধারণ, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন, কৌশল নির্ধারণ ও অর্থসংস্থানের মতো সিদ্ধান্তের সাথে জড়িত। জনাব রায়হান সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান ও সমন্বয়সাধন করে থাকেন। জনাব কাদের শ্রমিকদের কাছাকাছি থেকে কারখানার কাজ তদারকি করেন। কোম্পানির উদ্দেশ্য অর্জনে সবাই সমন্বিতভাবে কাজ করেন। ফলে ব্যবস্থাপকীয় উদ্দেশ্য অর্জন সহজতর হয়। [রা. বো. ১৭]
ক. ব্যবস্থাপনা কী? ১
খ. ‘ব্যবস্থাপনা সর্বজনীন’- ব্যাখ্যা করো। ২
গ. জনাব মাহতাব, জনাব রায়হান ও জনাব কাদের ব্যবস্থাপনার কোন স্তরে কর্মরত রয়েছেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. ‘ব্যবস্থাপনা স্তরসমূহে নিয়োজিত ব্যক্তিদের সমন্বিত কাজ প্রতিষ্ঠানের সফলতার বড় কারণ’- উদ্দীপকের আলোকে বক্তব্যের যথার্থতা বিশ্লেষণ করো। ৪

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে পরিকল্পনা প্রণয়ন, সংগঠিতকরণ, কর্মীসংস্থান, নির্দেশনা, প্রেষণা, সমন্বয়সাধন ও নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের সম্পদসমূহকে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর প্রক্রিয়াকে ব্যবস্থাপনা বলে।

'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
‘ব্যবস্থাপনা সর্বজনীন’- উক্তিটি গ্রিক দার্শনিক সক্রেটিসের (Socrates)।

পরিবার, রাষ্ট্র এবং ব্যবসায় সংগঠনের সব ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনার কার্য্যাবলি (পরিকল্পনা প্রণয়ন, সংগঠিতকরণ, নির্দেশনা, প্রেষণা ও নিয়ন্ত্রণ) প্রয়োগ করা যায়। স্থানীয় পরিবেশ-পরিস্থিতি, সামাজিক রীতি-নীতি ইত্যাদি কারণে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি ভিন্ন হতে পারে। তবে ব্যবস্থাপনার কার্য্যাবলি প্রয়োগের ক্ষেত্রে তেমন কোনো পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় না। তাই ব্যবস্থাপনাকে সর্বজনীন বলা হয়।

'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
জনাব মাহতাব ব্যবস্থাপনার উচ্চস্তরে, জনাব রায়হান মধ্যস্তরে ও জনাব কাদের নিম্নস্তরে কর্মরত।

উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপকগণ সাধারণত দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন ও নীতি নির্ধারণ করেন। মধ্যস্তরের ব্যবস্থাপকগণ নিম্নস্তরের ব্যবস্থাপকদের কাছ থেকে কাজ আদায় করে নেন এবং নিম্নস্তরের ব্যবস্থাপকগণ শ্রমিক-কর্মীদের মাধ্যমে কাজকে বাস্তবায়ন করেন।

উদ্দীপকের জনাব মাহতাব কোম্পানির উদ্দেশ্য নির্ধারণ, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন ও অর্থসংস্থানের মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণের সাথে জড়িত। সুতরাং তিনি উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপক। জনাব রায়হান সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান ও সমন্বয়সাধন করে থাকেন। তাই তিনি মধ্যস্তরের ব্যবস্থাপক। জনাব কাদের শ্রমিকদের কাছাকাছি থেকে কারখানার কাজ তদারকি করেন। এজন্য তিনি ব্যবস্থাপনার নিম্নস্তরে কর্মরত।

'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া বাস্তবায়নকারীদের বিভিন্ন পর্যায়ই হলো ব্যবস্থাপনা স্তর।

ব্যবস্থাপনা স্তরের সংখ্যা যত বাড়ে, ততই ব্যবস্থাপনার প্রতিটি স্তরের আওতা বিস্তৃত হয়। প্রতিটি স্তরের সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের সফলতা অর্জন করা সহজ হয়।

উদ্দীপকের জনাব মাহতাব উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপক। জনাব রায়হান মধ্যস্তরের এবং জনাব কাদের নিম্নস্তরের ব্যবস্থাপক। কোম্পানির উদ্দেশ্য অর্জনে এরা সবাই সম্মিলিতভাবে কাজ করেন। ফলে এদের দ্বারা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপকীয় উদ্দেশ্য অর্জন সহজতর হয়।

জনাব মাহতাব কর্তৃক প্রণীত কোম্পানির উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনার আলোকে জনাব রায়হান কোম্পানির কাজের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান ও সমন্বয়সাধন করেন। জনাব রায়হানের নির্দেশনার আলোকে জনাব কাদের শ্রমিকদের শুধু কাজের নির্দেশনাই প্রদান করেন না, সাথে সাথে তাদের কাজ তদারকি করেন। প্রত্যেকেই কোম্পানির উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করেন। তাদের দলীয় কার্যক্রমের ফলে প্রতিষ্ঠানের সফলতা অর্জন সহজ হয়। তাই বলা হয়, ব্যবস্থাপনার স্তরসমূহে নিয়োজিত ব্যক্তিদের সমন্বিত কাজ প্রতিষ্ঠানের সফলতার বড় কারণ।

সৃজনশীল প্রশ্ন-০৩
[দি. বো. ১৭]
ক. বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার জনক কে? ১
খ. আদেশের ঐক্য নীতির প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করো। ২
গ. চিত্রিত উদ্দীপকে ‘খ’ স্থানে ব্যবস্থাপনাকে কোন কাজটি করতে হয়? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. ‘ক’ স্থানের কাজটি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে কী ভূমিকা রাখে? বিশ্লেষণ করো। ৪

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার জনক হলেন ফ্রেডেরিক উইন্সলো টেলর (Frederick Winslow Taylor)।

'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
একজন কর্মী একই সময়ে প্রত্যক্ষভাবে একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট থেকে আদেশ পাওয়া ও তা মেনে চলাকে আদেশের ঐক্য নীতি বলে।

একজন কর্মীর আদেশদাতা একাধিক হলে একই সময়ে দু’জন কর্মকর্তা অধস্তনকে ভিন্ন ভিন্ন নির্দেশ দিতে পারেন। এতে দ্বৈত অধীনতার সৃষ্টি হয়। ফলে কর্মীর পক্ষে যথাযথভাবে সব কাজ সম্পাদন করা সম্ভব হয় না। তাই প্রতিষ্ঠানে আদেশের ঐক্য নীতি অনুসরণ করা অপরিহার্য।

'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকের ‘খ’ চিহ্নিত স্থানে ব্যবস্থাপনার কর্মীসংস্থান কাজটি বসবে।

প্রতিষ্ঠানের জন্য যোগ্য ও দক্ষ কর্মী বাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে উপযুক্ত কর্মী সংগ্রহ, নির্বাচন, নিয়োগ ও উন্নয়ন সংক্রান্ত কাজই হলো কর্মীসংস্থান। কর্মীর অবসর গ্রহণ, চাকরি থেকে অব্যাহতি দান প্রভৃতি কারণে বৃহদায়তন প্রতিষ্ঠানে সারা বছরই কর্মীসংস্থানের কাজ চলতে থাকে।

উদ্দীপকে উলি­খিত ‘খ’ স্থানটি ব্যবস্থাপনার কর্মীসংস্থান কাজকে নির্দেশ করে। আমরা জানি, ব্যবস্থাপনার কাজ সাতটি; যথা: পরিকল্পনা, সংগঠন, কর্মীসংস্থান, নির্দেশনা, প্রেষণা, সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণ। এ কাজগুলো পর্যায়ক্রমে সম্পাদিত হয়। চিত্রে দেখা যায়, সংগঠন প্রক্রিয়ার পরের কাজটি কর্মীসংস্থান, যা চিত্র থেকে বাদ পড়েছে। তাই বলা যায়, চিত্রের ‘খ’ স্থানটি ব্যবস্থাপনার কর্মীসংস্থান কাজকে নির্দেশ করে।

'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকের ‘ক’ চিহ্নিত স্থানের কাজটি হলো পরিকল্পনা, যা নিয়ন্ত্রণ কাজের সাথে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক রাখে।

পরিকল্পনার মাধ্যমে ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠানে কী কাজ করা হবে, কে করবে, কীভাবে ও কখন করা হবে ইত্যাদি বিষয়ে অগ্রিম সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। আবার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় কাজ সম্পাদিত হচ্ছে কিনা, তা যাচাই, বিচ্যুতি নির্ণয়, সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

উদ্দীপকের পরিকল্পনার আলোকেই সংগঠন ও কর্মীসংস্থানসহ ব্যবস্থাপনার যাবতীয় কাজ পরিচালিত হয়। চিত্রে সর্বশেষ ধাপে ব্যবস্থাপনার নিয়ন্ত্রণ কাজটি রয়েছে। পরিকল্পনার আলোকেই নিয়ন্ত্রণের কার্যক্রম সম্পাদিত হয়।

আমার মতে, প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে পরিকল্পনা প্রণয়ন করে। আর নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জন বিষয়টি তদারকি করা হয় নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে। পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের কাজ সম্পাদিত না হলে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সংশোধনীমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এ সংশোধনী ব্যবস্থার আলোকে পরবর্তী বছর বা সময়ের জন্য নতুন পরিকল্পনা প্রণীত হয়। এভাবে পরিকল্পনা ও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক সৃষ্টি হয়।

সৃজনশীল প্রশ্ন-০৪
Mr. X এবং Y একই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। উভয়ের কর্মকাণ্ডের ওপর প্রতিষ্ঠানের সফলতা নির্ভর করে। Mr. X প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নীতিমালা ও পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন। অন্যদিকে, Mr. Y প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীদের তত্ত্বাবধানের সাথে জড়িত। বর্তমানে Mr. X-এর সঠিক নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানটি সফলভাবে এগিয়ে চলছে। [কু. বো. ১৭]
ক. আধুনিক ব্যবস্থাপনার জনক কে? ১
খ. ‘ব্যবস্থাপনা একটি পেশা’ - ব্যাখ্যা করো। ২
গ. Mr. Y ব্যবস্থাপনার কোন স্তরে কর্মরত? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. ‘Mr. X-এর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিয়েছে’- উদ্দীপকের আলোকে মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো। ৪

৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
আধুনিক ব্যবস্থাপনার জনক হলেন হেনরি ফেয়ল (Henri Fayol)।

'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
ব্যবস্থাপনাকে পেশা বলা হয়। কোনো ব্যক্তি যখন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ অর্জন করে সেই জ্ঞানকে কর্মক্ষেত্রে কাজে লাগিয়ে জীবিকা উপার্জন করেন, তখন সেটিকে পেশা বলে।

বর্তমানে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানসমূহ দক্ষতার সাথে পরিচালনা করতে ব্যবস্থাপকদের ব্যবস্থাপনার নীতি ও কৌশল সংক্রান্ত জ্ঞান থাকা একান্ত প্রয়োজন। বর্তমানে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে উচ্চশিক্ষা অর্জন করে তা কর্মক্ষেত্রে প্রয়োগ করে প্রচুর সংখ্যক মানুষ জীবিকা নির্বাহ করছেন। এজন্য ব্যবস্থাপনাকে পেশা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকের Mr. Y ব্যবস্থাপনার নিম্নস্তরে কর্মরত।

মধ্যম পর্যায়ের ব্যবস্থাপনা কর্তৃক দেওয়া প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনা ও কর্মসূচি বাস্তবায়নের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ব্যক্তিদের নিয়ে নিম্নস্তরের ব্যবস্থাপনা গঠিত হয়। এ পর্যায়ের উপরে থাকেন মধ্যম পর্যায়ের ব্যবস্থাপকগণ এবং নিচের দিকে থাকেন, ব্যবস্থাপনার সাথে সংশ্লিষ্ট নয় এমন শ্রমিক-কর্মী।

উদ্দীপকের Mr. X এবং Y উভয়ই একই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। উভয়ের কর্মকাণ্ডের ওপর প্রতিষ্ঠানের সফলতা নির্ভর করে। এদের মধ্যে Mr. Y প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীদের তত্ত্বাবধানের সাথে জড়িত। তিনি শ্রমিকদের পরিচালনার মাধ্যমে উচ্চ ও মধ্য পর্যায়ের ব্যবস্থাপকদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে থাকেন। এ ধরনের কাজ প্রতিষ্ঠানের নিম্ন পর্যায়ের ব্যবস্থাপকদের। তাই বলা যায়, Mr. Y একজন নিম্নস্তরের ব্যবস্থাপক।

'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকের Mr. X উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপক।

প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ও কৌশল নির্ধারণ, পূর্বানুমান, উদ্যোগ গ্রহণ, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও নীতি প্রণয়ন উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপনার অন্যতম কাজ। এ স্তরের ব্যবস্থাপকবৃন্দের কাজের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান সফলতার দিকে এগিয়ে যায়।

উদ্দীপকের Mr. X এবং Y উভয়ের কর্মকাণ্ডের ওপর প্রতিষ্ঠানের সফলতা নির্ভরশীল। এদের মধ্যে Mr. X ব্যবস্থাপনার উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপনার সাথে জড়িত। তিনি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নীতিমালা ও পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন। তার সিদ্ধান্তের ওপর প্রতিষ্ঠানের সফলতা নির্ভর করে।

উদ্দীপকের Mr. X একজন উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপক হিসেবে অধীনস্থ কর্মীদের নির্দেশনা প্রদানের মাধ্যমে কাজ সুষ্ঠুভাবে আদায় করে নেন। তিনি প্রতিষ্ঠানের মুখ্য উদ্দেশ্য প্রতিষ্ঠা, কৌশল ও নীতি নির্ধারণ এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। অতঃপর অধস্তনদের কাজের নির্দেশনা দেন। এতে সব বিভাগ ও উপবিভাগের কাজের মধ্যে সমন্বয় ঘটে। ফলে প্রতিষ্ঠানটি সফলভাবে এগিয়ে যায়। তাই বলা যায়, Mr. X- এর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমেই প্রতিষ্ঠানটি এগিয়ে যাচ্ছে।

সৃজনশীল প্রশ্ন-০৫
জনাব সিদ্দিক একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় বেতন-ভাতাদি কম হওয়ায় তার অধীনস্থ শ্রমিক-কর্মীরা জনাব সিদ্দিকের কাছে বেতন বাড়ানোর আবেদন করেন। জনাব সিদ্দিক বিষয়টি বিক্রয় ব্যবস্থাপক জনাব সামীকে জানান। জনাব সামী বিষয়টি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মঈনকে জানালে তিনি হিসাব ও অর্থ বিভাগের প্রধানসহ ৪ সদস্যের একটি দল গঠন করেন, যাদের দায়িত্ব হলো প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয় নিরূপণ করে বেতন সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি ও পেশ করা। [সি. বো. ১৭]
ক. ব্যবস্থাপক কী? ১
খ. ব্যবস্থাপনাকে পেশা বলা যায় কি? ব্যাখ্যা করো। ২
গ. জনাব সিদ্দিক ব্যবস্থাপনার কোন স্তরে কর্মরত? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. যে ধরনের সাংগঠনিক কাঠামোর ভিত্তিতে বেতন সংক্রান্ত প্রতিবেদন তৈরি ও পেশ করা হয়েছে, তা চিহ্নিত করে এর যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ করো। ৪

৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
যে সব ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনা প্রণয়ন, সংগঠিতকরণ, কর্মীসংস্থান, নেতৃত্ব ও নির্দেশনা দান, প্রেষণা প্রদান, সমন্বয়সাধন এবং নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া সম্পাদনের সাথে জড়িত থাকেন, তাদেরকে ব্যবস্থাপক বলে।

'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
ব্যবস্থাপনাকে পেশা বলা হয়। কোনো ব্যক্তি যখন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ অর্জন করে সেই জ্ঞানকে কর্মক্ষেত্রে কাজে লাগিয়ে জীবিকা উপার্জন করেন, তখন সেটিকে পেশা বলে।

বর্তমানে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানসমূহ দক্ষতার সাথে পরিচালনা করার জন্য ব্যবস্থাপককে ব্যবস্থাপনার নীতি ও কৌশল সংক্রান্ত জ্ঞান থাকা একান্ত প্রয়োজন। বর্তমানে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে উচ্চশিক্ষা অর্জন করে তা কর্মক্ষেত্রে প্রয়োগ করে বিপুল সংখ্যক মানুষ জীবিকা নির্বাহ করছেন। এজন্য ব্যবস্থাপনাকে পেশা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকের জনাব সিদ্দিক ব্যবস্থাপনার নিম্নস্তরে কর্মরত রয়েছেন।

নিম্নস্তরের ব্যবস্থাপকগণ সরাসরি শ্রমিক-কর্মীদের পরিচালনার সাথে জড়িত থাকেন। ফোরম্যান, সুপারভাইজার, কোয়ালিটি কন্ট্রোলার, নিম্নস্তরের ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

উদ্দীপকের জনাব সিদ্দিক যে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন উক্ত প্রতিষ্ঠানে তার অধীনস্থ শ্রমিক-কর্মীরা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় বেতন-ভাতাদি কম পান। এজন্য জনাব সিদ্দিকের অধীনস্থ শ্রমিক-কর্মীরা তার কাছে বেতন বাড়ানোর আবেদন করেন। তিনি বিষয়টি বিক্রয় ব্যবস্থাপক জনাব সামীকে জানান, যিনি মধ্যস্তরের ব্যবস্থাপক হিসেবে পরিচিত। তাছাড়া জনাব সিদ্দিক মধ্যস্তরের ব্যবস্থাপকদের নির্দেশ অনুসারে তার অধীনস্থ শ্রমিক-কর্মীদের পরিচালনা করেন। তাই বলা যায়, জনাব সিদ্দিক একজন নিম্নস্তরের ব্যবস্থাপক হিসেবে উক্ত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন।

'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
যে ধরনের সাংগঠনিক কাঠামোর ভিত্তিতে বেতন সংক্রান্ত প্রতিবেদন তৈরি ও পেশ করা হয়েছে তা হলো কমিটি সংগঠন।

কমিটি হলো একাধিক ব্যক্তির সমষ্টি। এটি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্ধারিত উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য গঠিত হয়। এর সদস্যরা সাধারণত সম্মিলিত মতামতের ভিত্তিতে উত্তম সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।

উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানে জনাব সিদ্দিকের অধীনস্থ শ্রমিক-কর্মীরা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় বেতন-ভাতাদি কম পান। এজন্য তারা জনাব সিদ্দিকের কাছে বেতন বাড়ানোর আবেদন করেন। জনাব সিদ্দিক বিষয়টি বিক্রয় ব্যবস্থাপক জনাব সামীকে জানান। জনাব সামী বিষয়টি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মঈনকে জানালে তিনি বিষয়টি নিরসন করার জন্য একটি কমিটি গঠন করলেন।

কর্তৃপক্ষের কমিটি শুধু প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয় নিরূপণ করে বেতন সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য সংগ্রহের জন্য গঠিত হয়েছে। উক্ত কমিটিকে নির্ধারিত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত বিষয় নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি ও তা যথাযথভাবে কর্তৃপক্ষের নিকট পেশ করার পরই কমিটির কার্যকারিতা শেষ হয়ে যাবে। কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী কর্তপক্ষ সমস্যা সমাধানের সুযোগ পাবে। এতে শ্রমিক-কর্মীর অসন্তোষ দূর হবে। অর্থাৎ বেতন সংক্রান্ত প্রতিবেদন তৈরি ও পেশ করার জন্য যে কমিটি গঠন করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ যৌক্তিক।

সৃজনশীল প্রশ্ন-০৬
নাইন-স্টার গ্রুপের ব্যবস্থাপক সাইফুর রহমান কার্যের প্রকৃতি অনুযায়ী কার্যবিভাজন করেন। তিনি যোগ্য কর্মী নির্বাচন করে উপযুক্ত কর্মে নিয়োজিত করেন। সাইফুর রহমান কর্মীদেরকে কেবল দায়িত্বই প্রদান করেন না সাথে সাথে যথাযথ কর্তৃত্বও প্রদান করেন। প্রতিষ্ঠানের বস্তুগত ও অবস্তুগত উপাদানসমূহ একত্রিত করে একেক কর্মীদের ওপর অর্পিত দায়িত্বের খোঁজ-খবর নিয়ে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করেন। এতে প্রতিষ্ঠানটি সফলতা অর্জনের পথে ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছে। [ব. বো. ১৭]
ক. আধুনিক ব্যবস্থাপনার জনক কে? ১
খ. উচ্চ স্তরীয় ব্যবস্থাপনা বলতে কী বোঝায়? ২
গ. সাইফুর রহমান ব্যবস্থাপনার কোন কার্যের সাথে জড়িত? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. নাইন-স্টার গ্রুপের সফলতায় কর্মীদের জবাবদিহিতার ভূমিকা কতটুকু তা মূল্যায়ন করো। ৪

৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
আধুনিক ব্যবস্থাপনার জনক হলেন হেনরি ফেয়ল (Henri Fayol)।

'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
ব্যবস্থাপনার যে স্তরে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ও কৌশল নির্ধারণ, পরিকল্পনা প্রণয়ন ও নীতি নির্ধারণ করা হয় তাকে উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপনা বলে।

প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান, পরিচালনা পর্ষদ, কোম্পানির সচিব, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপকের মধ্যে পড়েন। এক্ষেত্রে নির্বাহীগণ প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য ও নীতি নির্ধারণ, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন ও কৌশল গ্রহণ করেন। এসব কাজে অধিক মাত্রায় চিন্তা-চেতনার প্রয়োজন হয়। তাই বলা হয়, উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপকগণ চিন্তাশীল কাজের সাথে জড়িত থাকেন।

'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
সাইফুর রহমান ব্যবস্থাপনার সংগঠন কার্যের সাথে জড়িত।

সংগঠন বলতে প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য বিভিন্ন মানবীয় ও অমানবীয় উপাদান সংগ্রহ, একত্রীকরণ, দায়িত্ব ও কর্তৃত্ব নির্ধারণ করাকে বোঝায়। এর মাধ্যমে কর্মীদের পারস্পরিক সম্পর্ক নির্দিষ্ট করা হয়।

উদ্দীপকের সাইফুর রহমান নাইন-স্টার গ্রুপের ব্যবস্থাপক। তিনি প্রতিষ্ঠানে কাজের প্রকৃতি অনুযায়ী কাজ ভাগ করেন। তিনি কর্মীদের দায়িত্ব প্রদানের সাথে সাথে কর্তৃত্বও প্রদান করেন। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের বস্তুগত ও অবস্তুগত উপাদানসমূহ একত্রিত করে কর্মীদের ওপর অর্পিত দায়িত্বের খোঁজ-খবরও রাখেন। এর ফলে লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের কাজ সহজে করতে পারেন। সুতরাং, সাইফুর রহমানের এ কাজের দ্বারা প্রতিষ্ঠানে কর্মীদের মধ্যে যে পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়, তা ব্যবস্থাপনার সংগঠন কাজের আওতাভুক্ত।

'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
নাইন-স্টার গ্রুপের সফলতায় কর্মীদের জবাবদিহিতার ভূমিকা অপরিসীম।

অন্যকে দিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়ার কৌশলই হলো ব্যবস্থাপনা। উত্তম ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানের সফলতা অর্জনে সহায়ক। ব্যবস্থাপনার অন্যতম কাজ হলো সংগঠন।

উদ্দীপকের সাইফুর রহমান সংগঠন কাজটি দ্বারা কর্মীদের কেবল দায়িত্বই প্রদান করেন না, সাথে সাথে যথাযথ কর্তৃত্বও অর্পণ করেন। তিনি প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য সহজে বাস্তবায়নের জন্য প্রতিষ্ঠানের বস্তুগত ও অবস্তুগত উপাদানসমূহ একত্রিত করেন। পরবর্তীতে এর আলোকে কর্মীদের ওপর অর্পিত দায়িত্বের খোঁজ-খবর নিয়ে তিনি জবাবদিহিতা নিশ্চিত করেন।

সাইফুর রহমানের জবাবদিহিতা কাজটি দ্বারা প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা সর্বদা তাদের কাজ সম্পর্কে সচেতন থাকেন। তারা তাদের সর্বোচ্চ দক্ষতা প্রয়োগের মাধ্যমে নাইন-স্টার গ্রুপের সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করেন। তাই বলা যায়, জবাবদিহিতার মাধ্যমে নাইন-স্টার গ্রুপের সফলতা অর্জিত হয়েছে।

সৃজনশীল প্রশ্ন-০৭
সৃষ্টির আদি থেকে ব্যবস্থাপনার উৎপত্তি। সভ্যতা বিকাশের সাথে সাথে তা ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এজন্য একজন বিশিষ্ট চিন্তাবিদ ও দার্শনিক বলেছেন, ‘ব্যবস্থাপনা সর্বজনীন’। বিভিন্ন ব্যবস্থাপনা বিশারদ ও মনীষীদের গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আধুনিককালে একজন ব্যবস্থাপনা বিশারদের ১৪টি নীতি ব্যবস্থাপনার প্রয়োগের ক্ষেত্রকে প্রসারিত করেছে। [রা. বো. ১৬]
ক. বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার জনকের নাম কী? ১
খ. চিত্রসহ ব্যবস্থাপনা চক্র ব্যাখ্যা করো। ২
গ. ‘ব্যবস্থাপনা সর্বজনীন’- এ কথাটি কে এবং কেন বলেছেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. প্রদত্ত ১৪টি নীতি কীভাবে ব্যবস্থাপনার প্রয়োগ ও প্রসারে ভূমিকা রাখছে তা বিশ্লেষণ করো। ৪

৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার জনকের নাম ফ্রেডেরিক উইন্সলো টেলর (Frederick winslow Taylor)।

'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
ব্যবস্থাপনার মৌলিক কাজগুলো ধারাবাহিকভাবে পরপর চলতে থাকাকে বলে ব্যবস্থাপনা চক্র।

ব্যবস্থাপনার প্রতিটি মৌলিক কার্যই ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকে। অর্থাৎ ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া পরিকল্পনার মাধ্যমে শুরু হয়ে পর্যায়ক্রমে চলতে চলতে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে শেষ হয় এবং পুনরায় পরিকল্পনার মাধ্যমে শুরু হয়। এ চক্রাকারে আবর্তিত হওয়াকেই ব্যবস্থাপনা চক্র বলে। ব্যবস্থাপনা চক্রে ধারাবাহিকভাবে পরিকল্পনা, সংগঠিতকরণ, কর্মীসংস্থান, নির্দেশনা, প্রেষণা, সমন্বয়সাধন এবং সর্বশেষ নিয়ন্ত্রণে গিয়ে শেষ হয়।

'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
‘ব্যবস্থাপনা সর্বজনীন’ কথাটি বলেছেন গ্রিক দার্শনিক সক্রেটিস।

ব্যবস্থাপনার সর্বজনীনতা বলতে সব ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনার আবশ্যকতা বা ব্যবস্থাপনা জ্ঞানের প্রয়োগ যোগ্যতাকে বোঝায়। ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ায় সম্পাদিত সব কাজ যেমন বড় ধরনের প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, তেমনি সর্বক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনা জ্ঞানের প্রয়োগ পরিলক্ষিত হয়।

উদ্দীপকে সৃষ্টির আদি থেকে ব্যবস্থাপনার উৎপত্তি। সভ্যতা বিকাশের সাথে সাথে পরিবার, সমাজব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটে। ফলে ব্যবস্থাপনার প্রসার বাড়ে। পরিবার থেকে শুরু করে রাষ্ট্র পরিচালনা তথা সমাজের প্রতিটা ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনার অস্তিত্ব পরিলক্ষিত হয় । ছোট-বড় সব ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনার এ ধারা বজায় থাকে। তাই সক্রেটিস বলেন ব্যবস্থাপনা সর্বজনীন।

'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
ব্যবস্থাপনার নীতি হলো ব্যবস্থাপকীয় কার্য্যাবলি সম্পাদনের ক্ষেত্রে নির্দেশকস্বরূপ।

ব্যবস্থাপনা কার্য সম্পাদনের সাধারণ পথনির্দেশনা হলো ব্যবস্থাপনার নীতি। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবস্থাপনার কাজ পরিচালনা করতে গিয়ে ব্যবস্থাপকগণ যেসব নিয়ম-নীতি পালন করছেন, তা-ই নীতি হিসেবে গণ্য।

উদ্দীপকে সৃষ্টির আদি থেকে মানুষ ব্যবস্থাপনার উৎপত্তি লক্ষ করেছেন পরিবার ও সমাজ ব্যবস্থার মাধ্যমে। বর্তমানে ব্যবস্থাপনা পরিচালনার জন্য আধুনিক ব্যবস্থাপনার জনক হেনরি ফেয়ল ১৪টি মূলনীতি নির্দেশ করেছেন। প্রথমটি হলো কার্য বিভাজন, যা কর্তৃত্ব ও দায়িত্ব সঠিকভাবে নির্দেশ করে।

এ ১৪টি মূলনীতির আলোকে হেনরি ফেয়ল অধস্তনদের কার্য ভাগ করে দেন, দায়িত্ব ও ক্ষমতা নির্দিষ্ট করেন, প্রয়োজনীয় আদেশ, উপদেশ ও পরামর্শ প্রদান করেন। একই সাথে তিনি শৃঙ্খলা, নিয়মানুবর্তিতা, কাজের সমতা, স্থায়িত্ব ও কাজের একতার প্রতি দৃষ্টি রাখেন। ফলে ব্যবস্থাপনা বা প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ পর্যায়ে দায়িত্ব ও কর্তব্য সুশৃঙ্খলভাবে পালিত হয়, যা আধুনিককালে শ্রমিক ও অধস্তনদের মাঝে দূরত্ব কমে। তাই বলা যায়, হেনরি ফেয়লের ১৪টি মূলনীতি সর্বক্ষেত্রে সমান গুরুত্বপূর্ণ।

সৃজনশীল প্রশ্ন-০৮
মি. জালাল শাহ “জয়হার টেক্সটাইল লি.”-এর একজন কর্মকর্তা। তিনি কোম্পানির নীতি, আদর্শ, কর্মপদ্ধতি, পরিকল্পনা, কর্মউদ্যোগ প্রভৃতি নিয়ে কাজ করেন। মি. আহসান ঐ প্রতিষ্ঠানেরই অন্য একজন কর্মকর্তা। তিনি প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে কর্মীদের পরিচালনা করেন। তাদের উভয়ের কর্মকাণ্ডে প্রতিষ্ঠানটি একটি প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি। [দি. বো. ১৬]
ক. ব্যবস্থাপনা কী? ১
খ. বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনা বলতে কী বোঝায়? ২
গ. মি. জামাল শাহ ও মি. আহসান প্রতিষ্ঠানটির কোন কোন পর্যায়ে কাজ করেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. মি. জালাল শাহ ও মি. আহসান একে অপরের পরিপূরক; তাদের যৌথ কার্যকলাপ প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের চাবিকাঠি- ব্যাখ্যা করো। ৪

৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে পরিকল্পনা প্রণয়ন, সংগঠিতকরণ, কর্মীসংস্থান, নির্দেশনা, প্রেষণা, সমন্বয়সাধন ও নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের সম্পদসমূহকে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর প্রক্রিয়াকে ব্যবস্থাপনা বলে।

'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে পরিচালিত ব্যবস্থাপনাই মূলত বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনা।

এফ. ডব্লিউ. টেলর সাধারণ শিক্ষানবিশ থেকে প্রধান প্রকৌশলী পর্যন্ত বিভিন্ন পদে দীর্ঘ যুগ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তার কাছে শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন সমস্যা ধরা পড়ে। তিনি সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধানের পন্থা নিয়ে দীর্ঘ দুই দশক গবেষণা চালান। এভাবে তিনি তার গবেষণাকর্মের ফলাফলকে একটা দর্শনে রূপদান করেন, যা বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনা নামে পরিচিত।

'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
মি. জালাল শাহ প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনার উচ্চপর্যায়ে এবং মি. আহসান মধ্যম পর্যায়ে কাজ করেন।

উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপনা বলতে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও নীতিনির্ধারণের সাথে ব্যবস্থাপনার যে স্তর জড়িত থাকে, তাকে বোঝায়। অপরদিকে যারা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সাথে জড়িত থাকেন, তাদের মধ্যস্তরের ব্যবস্থাপনা বলে।

জয়হার টেক্সটাইল লি.-এর কর্মকর্তা মি. জালাল শাহ কোম্পানির নীতি, আদর্শ, কর্মপন্থা, পরিকল্পনা, কর্মউদ্যোগ প্রভৃতি নিয়ে কাজ করেন। এক্ষেত্রে মি. জালাল শাহ প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনার উচ্চস্তরে অবস্থান করেন। অন্যদিকে ঐ প্রতিষ্ঠানেরই অন্য একজন কর্মকর্তা মি. আহসান প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে কর্মীদের পরিচালনা করেন। প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে কর্মীদের এরূপ পরিচালনা করা ব্যবস্থাপনার মধ্যস্তরের কাজ। তাই বলা যায়, মি. আহসান মধ্যস্তরের কর্মকর্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনার মধ্যম পর্যায়ে কাজ করেন।

'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
মি. জালাল শাহ এবং মি. আহসান একে অপরের পরিপূরক; তাদের যৌথ কার্যকলাপ প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের চাবিকাঠি-কথাটি সম্পূর্ণরূপে সমর্থনযোগ্য।

প্রাতিষ্ঠানিক সফলতা অর্জন এবং উন্নয়নের জন্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি বিভাগ, উপবিভাগ এবং ব্যক্তির সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রয়োজন। ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন স্তর এবং এসব স্তরের কর্মকর্তা এসব বিভাগ এবং উপবিভাগে অবস্থান করেন। তাদের সম্মিলিত প্রয়াস প্রতিষ্ঠানের সফলতা অর্জন এবং উন্নয়নের চাবিকাঠি হিসেবে কাজ করে।

মি. জালাল শাহ জয়হার টেক্সটাইল লি.-এর একজন উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা। তিনি কোম্পানির নীতি, আদর্শ, কর্মপদ্ধতি, পরিকল্পনা, কর্মউদ্যোগ প্রভৃতি নিয়ে কাজ করেন। অন্যদিকে মধ্যম পর্যায়ের কর্মকর্তা মি. আহসান প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে কর্মীদের পরিচালনা করেন।

মি. জালাল শাহ প্রণীত নীতি, আদর্শ, কর্মপদ্ধতি, পরিকল্পনা, কর্মউদ্যোগ ইত্যাদির আলোকে মি. আহসান কাজ করেন। তাই মি. জালাল শাহের কাজের যথার্থতার ওপর মি. আহসানের কাজের সফলতা নির্ভর করে। আবার মি. আহসান তার কাজ যথার্থভাবে সম্পাদন করলেই মি. জালাল শাহ কর্তৃক প্রণীত পরিকল্পনার বাস্তবায়ন হবে। তাদের যেকোনো একজনের কাজ সঠিকভাবে সম্পাদিত না হলে প্রতিষ্ঠান সফলতা অর্জন করতে পারবে না। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের বিবৃতিটি সম্পূর্ণরূপে সমর্থনযোগ্য।

সৃজনশীল প্রশ্ন-০৯
জনাব সাকিব ডুয়েল নির্মাণ কোম্পানির টঙ্গী প্রকল্পের একজন সুপারভাইজার। কাজের জন্য তাকে প্রকল্প ব্যবস্থাপক জনাব রহিম ও প্রকৌশলী জনাব সাজ্জাদের নিকট জবাবদিহি করতে হয়। একই সময়ে দুইজন বসের নিকট জবাবদিহিতার কারণে তার কাজের গতিশীলতা ব্যাহত হয়। তিনি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের গোচরে আনার কথা ভাবছেন। [কু. বো. ১৬]
ক. ব্যবস্থাপনা চক্র কী? ১
খ. ‘ব্যবস্থাপনা সর্বজনীন’- বুঝিয়ে লেখো। ২
গ. উদ্দীপকে জনাব সাকিব ব্যবস্থাপনার কোন স্তরের দায়িত্ব পালন করছেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত সাকিবের কাজে গতিশীলতা আনয়নে করণীয় সম্পর্কে তোমার অভিমত দাও। ৪

৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
ব্যবস্থাপনার মৌলিক কাজগুলো (পরিকল্পনা প্রণয়ন, সংগঠিতকরণ, কর্মীসংস্থান, নির্দেশনা, প্রেষণা, সমন্বয়সাধন ও নিয়ন্ত্রণ) পরপর আবর্তিত হওয়াকে ব্যবস্থাপনা চক্র বলে।

'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
‘ব্যবস্থাপনা সর্বজনীন’- উক্তিটি গ্রিক দার্শনিক সক্রেটিসের (Socrates)। ব্যবস্থাপনার সর্বজনীনতা বলতে সর্বত্র, সব ক্ষেত্রে, সকলের দ্বারা স্বীকৃত ব্যবস্থাপনা জ্ঞানের আবশ্যকতা ও প্রয়োগ যোগ্যতাকে বোঝায়।

পরিবার, রাষ্ট্র এবং ব্যবসায় সংগঠনের সব ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনার কার্য্যাবলি (পরিকল্পনা প্রণয়ন, সংগঠিতকরণ, নির্দেশনা, প্রেষণা ও নিয়ন্ত্রণ) প্রয়োগ করা হয়। স্থানীয় পরিবেশ-পরিস্থিতি, সামাজিক রীতি-নীতি ইত্যাদি কারণে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি ভিন্ন হতে পারে। তবে ব্যবস্থাপনার কার্য্যাবলি প্রয়োগের ক্ষেত্রে তেমন কোনো পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় না। তাই ব্যবস্থাপনাকে সর্বজনীন বলা হয়।

'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকে জনাব সাকিব ব্যবস্থাপনার নিম্নস্তরের দায়িত্ব পালন করছেন।

নিম্ন পর্যায়ের ব্যবস্থাপনা বলতে মধ্যম পর্যায়ের ব্যবস্থাপনা কর্তৃক গৃহীত পরিকল্পনা ও নীতি কৌশল মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনাকে বোঝায়। এরা সরাসরি শ্রমিক-কর্মীদের সাথে সম্পৃক্ত থাকেন।

জনাব সাকিব ডুয়েল নির্মাণ কোম্পানির নিম্ন পর্যায়ের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করেন। তিনি উক্ত কোম্পানির টঙ্গী প্রকল্পের একজন সুপারভাইজার। কাজের জন্য তাকে প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও প্রকৌশলী অর্থাৎ মধ্যম পর্যায়ে ব্যবস্থাপকদের নিকট জবাবদিহি করতে হয়। জনাব সাকিব একজন নিম্নস্তরের ব্যবস্থাপক হওয়ায় তার কাজ হলো মধ্যম স্তরের ব্যবস্থাপকদের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা। তাই নিজের কাজের জন্য তাকে মধ্যস্তরের ব্যবস্থাপকদের কাছে জবাবদিহি করতে হয়। উচ্চপর্যায়ের ব্যবস্থাপকগণ চিন্তা বা কর্মপরিকল্পনার সাথে জড়িত। আর জনাব সাকিবের মতো নিম্ন পর্যায়ের ব্যবস্থাপকগণ তা বাস্তবায়নের সাথে জড়িত।

'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
জনাব সাকিবের কাজে গতিশীলতা আনয়নে করণীয় হলো আদেশের ঐক্য নীতির বাস্তবায়ন করা।

একজন কর্মীর আদেশকর্তা হবেন একজন মাত্র ব্যক্তি। এরূপ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিতকরণের নীতিকে ব্যবস্থাপনার আদেশের ঐক্য নীতি বলে।

জনাব সাকিবকে তার কাজের জন্য একই সময়ে দুইজন ঊর্ধ্বতনের নিকট জবাবদিহি করতে হয়। এতে তার কাজের গতিশীলতা ব্যাহত হয়। ফলে তিনি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর কথা ভাবছেন।

জনাব সাকিবকে দু’জন আদেশকর্তা দু’ধরনের আদেশ দেন এবং তাকে দু’জনের নিকট কাজের জবাবদিহি করতে হয়। এ কারণেই তার পক্ষে সুষ্ঠুভাবে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই তার কাজের গতিশীলতা আনয়নে আদেশের ঐক্য নীতি বাস্তবায়ন করতে হবে।

সৃজনশীল প্রশ্ন-১০
মি. আকরাম একজন দক্ষ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। তিনি বার্ষিক ১,০০,০০০ (এক লক্ষ) পিস শার্ট তৈরির জন্য একটি কারখানা স্থাপন করেন। সব উপকরণ ও সরঞ্জামাদি সন্নিবেশিত করার মাধ্যমে শতভাগ সফলতা অর্জন করেন। ব্যাপক সাফল্যে তিনি বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ২,০০,০০০ (দুই লক্ষ) পিস শার্ট নির্ধারণ করেন এবং সেজন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল, জনবল ইত্যাদির ব্যবস্থা করলেন। কিন্তু বছর শেষে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হলেন। [সি. বো. ১৬]
ক. শিল্প বিপ্লব কী? ১
খ. ব্যবস্থাপনা চক্র বলতে কী বোঝায়? ২
গ. উদ্দীপকে জনাব আকরামের সাফল্যের কারণ ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. “বৃহদায়তন উৎপাদন ব্যবস্থাপনার সফল প্রয়োগের অভাবই জনাব আকরামের ব্যর্থতার মূল কারণ”- বিশ্লেষণ করো। ৪

১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
যান্ত্রিক শক্তি আবিষ্কার ও ব্যবহারের ফলে অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষে ইউরোপ ও আমেরিকার শিল্পজগতে পণ্য উৎপাদন ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে। উৎপাদন ব্যবস্থার এ পরিবর্তনই শিল্প বিপ্লব নামে পরিচিত।

'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
ব্যবস্থাপনার কার্যসমূহ চক্রাকারে আবর্তিত হওয়াকে ব্যবস্থাপনা চক্র বলে।

ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ হলো পরিকল্পনা করা। পরিকল্পনার আলোকে কর্মীসংস্থান করা হয়, অতঃপর তাদেরকে কাজের নির্দেশনা দেওয়া হয়। কাজের গতি ও নির্ভুলতা নিশ্চিতের জন্য কর্মীদেরকে প্রেষণা প্রদান করা হয়। এরপর পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজগুলো হচ্ছে কি না তার সমন্বয় ও প্রয়োজনমতো নিয়ন্ত্রণ কার্যসম্পাদন করা হয়। নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি পাওয়া গেলে তা সংশোধনের জন্য আবার পরিকল্পনা করা হয়। এ কাজগুলো একটার পর একটা চক্রাকারে বাস্তবায়িত হয়ে থাকে। তাই একে ব্যবস্থাপনা চক্র বলা হয়।

'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
জনাব আকরামের সাফল্যের কারণ সঠিক ব্যবস্থাপনা।

উপকরণাদির কার্যকর ব্যবহার করে প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্যার্জনের জন্য পরিকল্পনা, সংগঠন, কর্মীসংস্থান, নির্দেশনা, প্রেষণা, সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণ কার্যকে ব্যবস্থাপনা বলে। ব্যবস্থাপক সঠিক ব্যবস্থাপনায় উপকরণাদি, প্রক্রিয়া, পদ্ধতি কৌশল ইত্যাদির যথাযথ ব্যবহার করেন। সঠিক ব্যবস্থাপনার ফলে প্রাতিষ্ঠানিক সাফল্য অর্জন সম্ভব হয়।

মি. আকরাম একজন দক্ষ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। তিনি বার্ষিক ১০০.০০০ পিস শার্ট তৈরির জন্য একটি কারখানা স্থাপন করেন। তিনি সব উপকরণ ও সরঞ্জামাদি সন্নিবেশিত করার মাধ্যমে শতভাগ সাফল্য অর্জন করেন। জনাব আকরাম ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ায় উপকরণাদির সঠিক প্রয়োগ ও কার্য পরিচালনা করে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেন। তিনি দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার হওয়ায় সঠিক সময়ে দক্ষতার সাথে ব্যবস্থাপনার কাজ পরিচালনা করেন। শ্রমিক-কর্মচারীদের সঠিকভাবে পরিচালনার মাধ্যমে সুসম্পর্ক সৃষ্টি করেছেন। তাই বলা যায়, সঠিক ব্যবস্থাপনা প্রয়োগের ফলে জনাব আকরাম সফল হয়েছেন।

'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
বৃহদায়তন উৎপাদনে ব্যবস্থাপনার সফল প্রয়োগের অভাবই জনাব আকরামের ব্যর্থতার মূল কারণ।

ব্যবস্থাপনা হলো মানবীয় ও বস্তুগত উপকরণাদির কার্যকর ব্যবহার করে লক্ষ্যার্জনের প্রচেষ্টা। ব্যবস্থাপনার প্রতিটি কাজ ধারাবাহিকভাবে সম্পাদিত হয়। ব্যবস্থাপনা উৎপাদনের উপকরণ ভূমি, শ্রম, মূলধন ও সংগঠনের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে।

জনাব আকরাম একজন দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার। তিনি ছোট পরিসরে একটি শার্ট তৈরির কারখানা স্থাপন করেন। তিনি সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে প্রথমে শতভাগ সাফল্য অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি ব্যবসায় সম্প্রসারণ এবং বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা দ্বিগুণ করেন। সেজন্য প্রয়োজনীয় সব উপকরণ, যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল, জনবল ইত্যাদির ব্যবস্থা করেন।

জনাব আকরাম বৃহদায়তন উৎপাদন ব্যবস্থাপনায় দক্ষ ছিলেন না। ফলে বৃহদায়তন উৎপাদন ব্যবস্থাপনায় কারখানার সব উপকরণ, জনবল, সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। লক্ষ্য অনুযায়ী কার্যপরিচালনা ও তদারকির ব্যবস্থা রাখার মাধ্যমে কার্যপরিচালনা করতে হয়।

উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা দ্বিগুণ করায় জনাব আকরাম উৎপাদনের উপকরণগুলোর যথাযথ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে উৎপাদন কার্য্যাবলি সম্পাদন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। যার ফলে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। সুতরাং বলা যায়, বৃহদায়তন উৎপাদনে ব্যবস্থাপনার সফল প্রয়োগের অভাবই জনাব আকরামের ব্যর্থতার কারণ।

এইচএসসি ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্র সৃজনশীল প্রশ্ন/মডেল টেস্ট


1 comment: