সড়ক দুর্ঘটনা রোধের পরামর্শ দিয়ে সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্য পত্র

সড়ক দুর্ঘটনা রোধের ব্যাপারে পরামর্শ দিয়ে সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্য একটি পত্র লেখো।
[কু. বো. ১৫]
সড়ক দুর্ঘটনা রোধের পরামর্শ দিয়ে সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্য পত্র

১০ই নভেম্বর, ২০২৪
সম্পাদক,
দৈনিক ইনকিলাব
ইনকিলাব ভবন
২/১, রামকৃষ্ণ মিশন রোড, ঢাকা-১২০৩।

জনাব,
আপনার বহুল প্রচারিত পত্রিকার ‘চিঠিপত্র’ বিভাগে প্রকাশের জন্য ‘সড়ক দুর্ঘটনা রোধের উপায়’ শিরোনামের একটি চিঠি পাঠাচ্ছি। অনুগ্রহ করে তা প্রকাশের সুযোগ করে দিলে বাধিত হব।

বিনীত
বেনজীর আহমদ
গজারিয়া, মুন্সীগঞ্জ

সড়ক দুর্ঘটনা রোধের উপায়
‘একটা দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না’- এ স্লোগানটি নির্মম বাস্তবতানির্ভর ও সর্বজনবিদিত। সড়ক দুর্ঘটনা বর্তমানে আমাদের দেশের একটি জাতীয় সমস্যা। মুহূর্তের মধ্যে তা ছিনিয়ে নিচ্ছে মানুষের অমূল্য জীবন, ভেঙে দিচ্ছে অসংখ্য সাজানো সংসার। পঙ্গু ও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে অনেক মানুষ। সম্পদের ক্ষতিও কম হচ্ছে না। তাই আজ সর্বমহল থেকে দাবি উঠেছে, ‘নিরাপদ সড়ক চাই’। তা সত্ত্বেও দিন দিন প্রতিযোগিতা করে এ দেশে সড়ক দুর্ঘটনার হার বেড়ে যাচ্ছে। এতে কত মূল্যবান প্রাণ অকালে ঝরে পড়ছে, কত পরিবার পথে বসেছে, সেই অশ্রুসজল করুণ মুখের হিসাব কেউ রাখে না। পিতার কাঁধে পুত্রের লাশ অথবা অপ্রাপ্ত বয়স্ক পুত্রের সামনে পিতার রক্তাক্ত নিথর দেহ- এই অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। অথচ এসব দুর্ঘটনার পেছনে অধিকাংশ ক্ষেত্রে চালক ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতা দায়ী। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। প্রতিটি বাসস্টেশনে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ বা তদারককারী মোতায়েন করে চালক ও হেলপারদের স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ করতে হবে। বাসচালক ও বাসমালিকদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত শাস্তির বিধান করতে হবে। এ ছাড়া সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ও নিরাপদ যানবাহন চলাচলের জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করা যেতে পারে:

(১) বেশিরভাগ দুর্ঘটনাই ঘটে অদক্ষ, অযোগ্য ও লাইসেন্সবিহীন চালকের কারণে। তাই লাইসেন্স প্রদানের আগে চালকের দক্ষতা ও যোগ্যতা ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করতে হবে। লাইসেন্সবিহীন কেউ যেন গাড়ি চালাতে না পারে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।

(২) ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন প্রায়ই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটায়। তাই রাস্তায় বের করার আগে যান্ত্রিক কার্যকারিতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে। প্রতিটি গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট আছে কী না তাও দেখতে হবে।

(৩) ট্রাফিক আইন ভঙ্গের কারণে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। তাই এ আইনের প্রতি যাতে সবাই শ্রদ্ধাশীল থাকে সেজন্য একে আরো শক্তিশালী ও যুগোপযোগী করতে হবে।

(৪) ওভারটেকিংয়ের কারণে প্রচুর দুর্ঘটনা ঘটে। তাই বিধিবহির্ভূত ওভারটেকিংয়ের অসম প্রতিযোগিতা থেকে চালককে বিরত থাকতে হবে।

(৫) অতিরিক্ত মাল ও যাত্রীবোঝাই সড়ক দুর্ঘটনার জন্য অনেকাংশে দায়ী। অতিরিক্ত মাল ও যাত্রী বহন কঠোর আইন প্রণয়নের মাধ্যমে বন্ধ করতে হবে।

(৬) মহাসড়কের সংখ্যা বৃদ্ধি ও তা অধিকতর প্রশস্ত করা প্রয়োজন।

(৭) রাস্তায় ডিভাইডার প্রস্তুত করা অত্যন্ত জরুরি।

(৮) গাড়িচালকদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

আশা করি, উপর্যুক্ত কারণগুলো চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সুপারিশমালা বাস্তবায়ন করলে সড়ক দুর্ঘটনা অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব হবে।

নিবেদক
বেনজীর আহমদ
গজারিয়া, মুন্সীগঞ্জ।

[ঠিকানাসহ খাম হবে]
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post