SSC অন্ধবধূ কবিতার (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download

অন্ধবধূ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর | নবম-দশম শ্রেণির গাইড

নবম-দশম শ্রেণি
বাংলা ১ম পত্র গাইড
কবিতা/পদ্য

অন্ধবধূ
যতীন্দ্রমোহন বাগচী

SSC Bangla 1st Paper Kobita
Ondho bodhu
Srijonshil
Question and Answer pdf download
অন্ধবধূ কবিতার/পদ্যের সৃজনশীল ও বহুনির্বাচনি প্রশ্ন উত্তর: বাংলা গাইড

১নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
 মানুষের জীবন ক্ষণস্থায়ী। জীবনের এই স্বল্প সময়ের সমগ্র হিসাব চুকিয়ে, সব সম্পর্ক ছিন্ন করে পরপারে চলে যেতে হয়। গৃহবধূ সুদীপা মাঝে মাঝে দুঃখ করে বলেন, ‘সুন্দর এই পৃথিবী, ঝিঁ ঝিঁ ডাকা সন্ধ্যা, জ্যোৎস্না ভরা রাত সব ছেড়ে আমাদেরকে বিদায় নিতে হবে’।
ক. ‘অন্ধবধূ’ কবিতায় দীঘির ঘাটের সিঁড়িটি কেমন? ১ 
খ. ‘কোকিল ডাকা শুনেছি সেই কবে’ পঙ্ক্তিটি দ্বারা প্রকৃতির কোন রূপের ইঙ্গিত পাওয়া যায়? ২
গ. উদ্দীপকের বক্তব্য ‘অন্ধবধূ’ কবিতার যে বিশেষ দিকটিকে আলোকপাত করেছে তা ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকের বক্তব্যে ‘অন্ধবধূ’ কবিতার সমগ্র ভাবের প্রতিফলন ঘটেনি- বিশ্লেষণ করো। ৪

১ এর ক নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
অন্ধবধূ কবিতায় দীঘির ঘাটের সিঁড়িটি শ্যাওলা-পিছল।

১ এর খ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
‘কোকিল ডাকা শুনেছি সেই কবে’ পঙ্ক্তিটি দ্বারা প্রকৃতিতে বসন্ত ঋতুর বিদায় নেওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যায়।

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মানুষের অসাধারণ জগৎকে তুলে ধরা হয়েছে অন্ধবধূ কবিতায়। অন্ধবধূ তার অনুভূতিশক্তি দিয়েই প্রকৃতির বিচিত্র রং-রূপের বিষয়গুলো বুঝতে পারে। কোকিলের ডাকে ঋতু পরিবর্তনের বিষয়টি অনুভব করতে পারে।  কোকিল বসন্তকালে ডাকে। আলোচ্য উক্তিটির মাধ্যমে অন্ধবধূ বোঝাতে চেয়েছে বসন্তকাল অনেক আগেই গত হয়েছে।

১ এর গ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
উদ্দীপকে অন্ধবধূর মৃত্যুচিন্তার দিকটি আলোকপাত করা হয়েছে।

অন্ধবধূ তার অন্ধত্বের জন্য গভীর মর্মবেদনা অনুভব করে। দুঃখ-কষ্ট-অভিমানে সে অনেক কথাই মনে মনে ভাবে। দিঘির ঘাটে শ্যাওলা-পিছল সিঁড়িতে পড়ে গিয়ে পানিতে তলিয়ে মরে যাওয়ার কথাও সে ভেবেছে। সে বলেছে, এতে তার অন্ধ চোখের দ্বন্দ্ব চুকে যাবে। প্রকৃতপক্ষে অন্ধবধূ আর দশটি মানুষের মতো করেই বাঁচতে চেয়েছিল। কিন্তু তার প্রতি মানুষের অবহেলা সে সহ্য করতে পারেনি। তাই সে ভেবেছে দিঘির জলে তলিয়ে গিয়ে মৃত্যু হলে ভালোই হতো।

পৃথিবী নশ্বর ও জীবন ক্ষণস্থায়ী হলেও বেঁচে থাকার আকাক্সক্ষা মানুষের চিরন্তন। উদ্দীপকের গৃহবধূ সুদীপার মাঝে এমন অভিব্যক্তি আমরা লক্ষ করি। ঝিঁ ঝিঁ ডাকা সন্ধ্যা, জ্যোৎস্না ভরা রাত কার না ভালো লাগে। গৃহবধূ এই সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ার কথায় বেদনা অনুভব করে। তাই অন্ধবধূর মৃত্যুচিন্তার সাথে উদ্দীপকের গৃহবধূর মৃত্যুচিন্তার দিকটি একই সূত্রে গাঁথা।

১ এর ঘ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
‘অন্ধবধূ’ কবিতায় শারীরিক প্রতিবন্ধী একজন মানুষের মনোজাগতিক নানা বিষয় উঠে এলেও উদ্দীপকে তেমনটা হয় নি। উদ্দীপকটি তাই কবিতার সমগ্র ভাবের ধারক নয়।

কবি যতীন্দ্রমোহন বাগচী তাঁর ‘অন্ধবধূ’ কবিতায় একজন অন্ধবধূর গভীর মর্ম যাতনার দিকটি উল্লেখ করেছেন। অন্ধ হওয়ার কারণে সে প্রকৃতির রূপ-রস-গন্ধ থেকে বঞ্চিত। অন্যদিকে প্রবাসী স্বামীর অবহেলায় তার জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল। তারপরও সে তার অনুভূতি দিয়ে ঋতুর পরিবর্তন, ফুলের গন্ধ, পাখির ডাকসহ প্রকৃতির সবকিছুই সে উপলব্ধি করতে চেষ্টা করেছে। তার প্রতি অবহেলা সে যেন সহ্য করতে পারছিল না। ক্ষোভে দুঃখে সে দিঘির জলে ডুবে মরতে চেয়েছে। দিঘির স্নিগ্ধ শীতল জলে সে তার মনের ব্যথা খানিকটা উপশম করতে চেষ্টা করেছে।

উদ্দীপকে ব্যক্ত হয়েছে মানুষের জীবনের চিরন্তন সত্য মৃত্যুরচিন্তা। এই পৃথিবীর সৌন্দর্য অসীম। এই পৃথিবীর মায়া ছেড়ে কারো মন চায় না পরপারে চলে যেতে। গৃহবধূ সুদীপার মধ্যেই সেই অনুভূতি কাজ করেছে। সে শান্ত স্নিগ্ধ ঝিঁ ঝিঁ ঢাকা সন্ধ্যা, জোৎস্না ভরা রাত এসব ছেড়ে চলে যেতে চায় না। গৃহবধূ সুদীপার মাঝে মায়া-মমতায় ভরা পৃথিবীর মাঝে বেঁচে থাকার চিরন্তন আবেগ কাজ করেছে।

আলোচ্য কবিতা ‘অন্ধবধূ’ পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, কবিতায় অন্ধবধূর জীবনের বিভিন্ন দিক আলোচিত হয়েছে। অন্যদিকে উদ্দীপকে শুধু মৃত্যুচিন্তা ও পৃথিবী ছেড়ে না যাওয়ার আকুতি ব্যক্ত হয়েছে। কবিতার মতো প্রতিবন্ধিতার শিকার মানুষের মর্মবেদনার স্বরূপ প্রকাশিত হয় নি উদ্দীপকে। সেদিক থেকে উদ্দীপকের বক্তব্যে ‘অন্ধবধূ’ কবিতার সমগ্র ভাবের প্রতিফলন ঘটেনি বরং আংশিক ভাব প্রতিফলিত হয়েছে মাত্র।
 

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
অন্ধবধূ
কবিতা
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

SSC Bangla 1st Paper
OndhoBodhu
Kobita
Srijonshil
Question-Answer
২নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ফুলবানুর ইচ্ছে ছিল লেখাপড়া শিখে স্বনির্ভর হওয়ার। বাবার সহযোগিতায় সে ব্রেইল পদ্ধতিতে লেখাপড়া শেখে পরবর্তীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হয়। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হলেও অদম্য ইচ্ছার কাছে হার মেনেছে অন্ধত্বের অভিশাপ।
ক. সমাজ কাদের অবজ্ঞা করে? ১ 
খ. ‘দিঘীর ঘাটে নতুন সিঁড়ি জাগে’- কথাটি বুঝিয়ে বলো। ২
গ. উদ্দীপকের সাথে ‘অন্ধবধূ’ কবিতার কোন অংশটি সাদৃশ্যপূর্ণ- ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. “উদ্দীপকের ফুলবানু এবং অন্ধবধূ চরিত্রের ভাব সম্পূর্ণ আলাদা”- মূল্যায়ন করো। ৪

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. সমাজ দৃষ্টিহীনদের অবজ্ঞা করে।

খ. অন্ধবধূ তার প্রখর অনুভূতিশক্তি দ্বারা দিঘির ঘাটে নতুন সিঁড়ি জাগার কথা বুঝেছে।

অন্ধবধূ দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হলেও সে একজন ইন্দ্রিয়সচেতন মানুষ। এই ইন্দ্রিয়সচেতনতা দিয়ে সে প্রতিবন্ধকতাকে জয় করেছে। দিঘির ঘাটের শ্যাওলা পড়া সিঁড়ির অস্তিত্ব টের পেয়েছে। দিঘির পানি কমে গেছে। অনুভবে সে নতুন সিঁড়ি জাগার কথা বুঝেছে।

গ. অন্ধত্বের প্রতিবন্ধকতা দূর করে জীবনকে উপভোগ করার আকাঙ্খার দিকটি উদ্দীপকের সাথে ‘অন্ধবধূ’ কবিতার সাদৃশ্য রচনা করেছে।

সমাজ দৃষ্টিহীনদের অবজ্ঞা করে। ফলে দৃষ্টিহীনেরা নিজেদের অসহায় ভাবে। কিন্তু ইন্দ্রিয়সচেতনতা দিয়ে অন্ধদের এই প্রতিবন্ধকতা দূর করা সম্ভব। ‘অন্ধবধূ’ কবিতায় কবি যতীন্দ্রমোহন বাগচী অন্ধবধূর জীবনকে উপভোগের এই আকাঙ্খার স্বরূপ বর্ণনা করেছেন। অন্ধবধূ নিজের ইন্দ্রিয়সচেতনতা দিয়ে প্রকৃতিকে উপভোগ করে। পায়ের তলায় নরম শিউলি ফুলের অস্তিত্ব, পাখির ডাকে ঋতু পরিবর্তনের অনুভূতি সবই সে নিজের চেষ্টায় বুঝতে পারে।

উদ্দীপকের ফুলবানুরও নিজের অন্ধত্বের প্রতিবন্ধকতা থেকে মুক্তির আকাক্সক্ষা প্রবল। সে দৃষ্টিহীন হলেও আর দশটা স্বাভাবিক মানুষের মতো বেঁচে থাকার বাসনা মনের মধ্যে পোষণ করে। তার এই বাসনা ‘অন্ধবধূ’ কবিতার অন্ধবধূর আকাঙ্খার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। অন্ধবধূও ইন্দ্রিয়সচেতনতা দিয়ে দৃষ্টিহীনতার অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে চায়।

ঘ. উদ্দীপকের ফুলবানু অদম্য ইচ্ছায় প্রতিবন্ধকতা জয় করলেও ‘অন্ধবধূ’ কবিতার অন্ধবধূটি অসহায়ত্বের নিগড়ে বন্দি।

‘অন্ধবধূ’ কবিতায় কবি যতীন্দ্রমোহন বাগচী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের অসহায়ত্ব বোঝাতে চেয়েছেন। কবিতার ‘অন্ধবধূ’ সমাজে অবজ্ঞার শিকার হওয়ায় নিজেকে অসহায় মনে করে। অন্ধত্বের অভিশাপে সে হতাশা ব্যক্ত করে। এই হতাশা তাকে শেষ পর্যন্ত বয়ে বেড়াতে হয়। প্রকৃতির সান্নিধ্যে থেকে বধূটি সান্ত¦না খুঁজে নিতে চায়।

উদ্দীপকের ফুলবানু দৃষ্টিহীন হলেও অন্ধত্বের অভিশাপকে জয় করেছে। ফলে তার ভেতর হতাশা নেই বরং অসহায়ত্বকে জয় করার গৌরব আছে। অবশ্য পরিবার তাকে এ ব্যাপারে সহযোগিতা করেছে। কিন্তু ‘অন্ধবধূ’ কবিতায় অন্ধবধূ পরিবারের কাছে অসহায়ত্ব থেকে উত্তরণে কোনো সহযোগিতা পায়নি বরং অবহেলিত হয়েছে।

‘অন্ধবধূ’ কবিতায় অন্ধবধূটি পরিবারের মানুষের অবহেলার কারণে হতাশা প্রকাশ করেছে। কিন্তু উদ্দীপকে ফুলবানু পরিবারের সহায়তায় হতাশা থেকে মুক্তি পেয়েছে। ফলে উদ্দীপকের ফুলবানুর ক্ষেত্রে সফলতার আনন্দ থাকলেও অন্ধবধূর মাঝে রয়েছে অসহায়ত্বের বেদনা। তাদের দুজনের জীবনের অভিজ্ঞতার মাঝে ভিন্নতা লক্ষণীয়। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের ফুলবানু এবং অন্ধবধূ চরিত্রের ভাব সম্পূর্ণ আলাদা।
 
এসএসসি বোর্ড পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতির জন্য পড়ুন সৃজনশীল ও বহুনির্বাচনি প্রশ্ন-উত্তরসহ:

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
অন্ধবধূ
কবিতা
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

SSC Bangla 1st Paper
OndhoBodhu
Kobita
Srijonshil
Question-Answer
৩নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
নিশাতের সাথে ভালোবেসে বিয়ে হয় তৌহিদের। একদিন তৌহিদ স্ত্রীকে নিয়ে মোটরসাইকেলে শহর থেকে বাড়ি ফেরার পথে মারাত্মক দুর্ঘটনার শিকার হয়। দুজনে প্রাণে বেঁচে গেলেও নিশাত দুইটি পা হারিয়ে চিরদিনের জন্য পঙ্গু হয়ে যায়। তৌহিদ ও পরিবারের অন্য সদস্যরা নিশাতের দৈনন্দিন কাজে যত্ন নিতে থাকে। নিশাত এখন আর নিজেকে অসহায় ভাবে না।
ক. পায়ের তলায় নরম কী ঠেকেছিল? ১ 
খ. বধূটির ঘরে ফিরে যাওয়ার তাড়া ছিল না কেন? ২
গ. উদ্দীপকে ‘অন্ধবধূ’ কবিতার যে বিপরীত সত্তার পরিচয় পাওয়া যায় তা ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. ‘অন্ধবধূর প্রবাসী স্বামী যদি তৌহিদের মতো হতো তবে অন্ধবধূকে এত বিড়ম্বনায় পড়তে হতো না।’- উক্তিটির যথার্থতা বিচার করো। ৪

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. পায়ের তলায় নরম ঝরা বকুল ঠেকেছিল।

খ. ঘরের কোণে বসে থাকা ছাড়া আর কোনো কাজ ছিল না বলে অন্ধবধূর ঘরে ফিরে যাওয়ার তাড়া ছিল না।

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হওয়ায় অন্ধবধূ স্বাভাবিক জীবনযাপন থেকে বিচ্ছিন্ন। ঘরের কোণে তার একাকী সময় কাটতে চায় না। মনের ব্যথা ভুলতে প্রকৃতির সাথে যে মিশে যেতে চায়। দিঘির স্নিগ্ধ শীতল জলে  সে মায়ের ভালোবাসার পরশ খুঁজে পায়। অন্ধবধূ দিঘির শীতল জলের সাথে নিজের একাকিত্বের দুঃখ ভাগাভাগি করতে চায়। এজন্য অন্ধবধূ তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে চায় না।

গ. ‘অন্ধবধূ’ কবিতায় প্রতিবন্ধিতার শিকার অন্ধবধূ নিজেকে অবহেলিত ভাবার দিক বিবেচনায় তার সাথে উদ্দীপকের নিশাতের বৈসাদৃশ্য লক্ষ করা যায়।

যতীন্দ্রমোহন বাগচী রচিত ‘অন্ধবধূ’ কবিতায় একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী নারীর কথা তুলে ধরা হয়েছে। শারীরিক অক্ষমতার কারণে সে সবার কাছে অবহেলিত। নিজের স্বামীও তার প্রতি যথাযথ যত্ন নেয় না। এসব কারণে অন্ধবধূ নিজেকে ভাগ্যহীনা মনে করে। তার মনে হয় পুকুরে ডুবে মরলে অন্ধত্বের অভিশাপ থেকে সে মুক্তি পেত।

উদ্দীপকের নিশাত মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় পা দুটি হারায়। কিন্তু তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাকে অমর্যাদা করেনি। বরং সবার ভালোবাসা তাকে নতুনভাবে বাঁচার প্রেরণা জোগায়। নিশাতের মাঝে যে মানসিক শক্তির উদ্ভব হয়েছে, তা অন্ধবধূর ক্ষেত্রে পাওয়া যায় না।

ঘ. অন্ধবধূর প্রবাসী স্বামী উদ্দীপকের নিশাতের স্বামী তৌহিদের মতো সহানুভূতিশীল হলে অন্ধবধূর জীবনটা অনেক সুন্দর হতো।

‘অন্ধবধূ’ কবিতায় যতীন্দ্রমোহন বাগচী একজন দৃষ্টিহীন নারীর দুর্ভাগ্যের কথা লিপিবদ্ধ করেছেন। দৃষ্টিহীন হলেও অন্ধবধূ তার ইন্দ্রিয়ের শক্তিতে প্রকৃতির নানা রূপ-রস-গন্ধ অনুভব করে। কিন্তু অন্ধবধূর মনে অনেক দুঃখ। প্রবাসী স্বামী তার খোঁজ রাখে না। অন্ধবধূ তাই নিজেকে বঞ্চিত মনে করে।

উদ্দীপকের নিশাতের জীবনে অন্ধকার নেমে আসে সড়ক দুর্ঘটনার কারণে। দুটি পা হারিয়ে সে পঙ্গু হয়ে যায়। তার এই দুঃসময়ে পাশে দাঁড়ায় স্বামী তৌহিদ। তৌহিদের ভালোবাসায় তার দুঃখ দূর হয়ে যায়। অন্ধবধূর স্বামী উদ্দীপকের তৌহিদের মতো যত্নশীল হলে অন্ধবধূও দুঃখ ভুলে হাসতে পারত।

স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের ভিতটি পারস্পরিক ভালোবাসা, মমতা ও যত্নে নির্মিত। উদ্দীপকের তৌহিদ ও নিশাতের মাঝে তার দেখা পাওয়া যায়। নিশাত ভালোবেসে বিয়ে করে তৌহিদকে। সড়ক দুর্ঘটনা নিশাতকে শারীরিক প্রতিবন্ধীতে পরিণত করলেও নিশাতের প্রতি তৌহিদের ভালোবাসা কমে যায়নি। বরং তৌহিদের ভালোবাসাই নিশাতকে কষ্ট ভুলে বাঁচতে শিখিয়েছে। অন্যদিকে অন্ধবধূর স্বামী তার স্ত্রীর প্রতি সহমর্মী নয়। প্রবাসে গিয়ে দীর্ঘদিন সে স্ত্রীর কাছ থেকে দূরে থাকে। ফলে অন্ধবধূ নিজেকে খুব অসহায় মনে করে। স্বামীর এই অবজ্ঞার চেয়ে মৃত্যুকেই সে শ্রেয় মনে করে। উদ্দীপকের তৌহিদের মতো অন্ধবধূর স্বামী তাকে মমতা ও মর্যাদা দিলে অন্ধবধূর মনে কোনো বেদনা থাকত না।

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
অন্ধবধূ
কবিতা
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

SSC Bangla 1st Paper
OndhoBodhu
Kobita
Srijonshil
Question-Answer
৪নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
চিরসুখী জন ভ্রমে কি কখন
ব্যথিত বেদন বুঝিতে পারে?
কি যাতনা  বিষে বুঝিবে সে কিসে 
কভু আশী বিষে দংশেনি যারে?
ক. অন্ধবধূ কাকে আস্তে চলতে বলে? ১
খ. অন্ধবধূ কীভাবে বুঝতে পারে পায়ের তলায় ঝরা বকুল পড়েছে? ২
গ. ‘অন্ধবধূ’ কবিতার অন্ধবধূর মানসিক যাতনার আলোকে উদ্দীপকটি ভাবটি ব্যাখ্যা করো। ৩ 
ঘ. উদ্দীপকটির ‘অন্ধবধূ’ কবিতার আংশিক প্রতিফলন মাত্র- বিশ্লেষণ করো। ৪

৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. অন্ধবধূ তার ঠাকুরঝিকে আস্তে চলতে বলে।

খ. অন্ধবধূ তার অনুভূতিশক্তির দ্বারা বুঝতে পারে পায়ের তলায় ঝরা-বকুল পড়েছে।

দৃষ্টিহীনদের অনুভূতিশক্তি হয় প্রখর। তারা জগতের সকল কিছু তাদের অনুভবে বুঝতে চেষ্টা করে। অন্তর্দৃষ্টিকে প্রসারিত করে বিভিন্ন বস্তুর সম্পর্কে দৃষ্টিহীনরা জ্ঞান রাখে। অন্ধবধূ তার অনুভবে জগতের রূপ-রস-গন্ধ সম্পর্কে জ্ঞান রাখে। এর মাধ্যমেই সে পায়ের তলায় ঝরা-বকুলের উপস্থিতি টের পায়।

গ. উদ্দীপকের ব্যথিতের বেদন কেউ যেমন কেউ বুঝতে পারে না তেমনি ‘অন্ধবধূ’ কবিতায় বর্ণিত বধূর মানসিক যাতনাও কেউ বুঝতে পারেনি।

‘অন্ধবধূ’ কবিতায় কবি যতীন্দ্রমোহন বাগচী এক দৃষ্টিহীন নারীর গভীর মর্মবেদনার দিকটি তুলে ধরেছেন। অন্ধবধূ দৃষ্টিহীন হওয়ার কারণে সুন্দর প্রকৃতিকে দেখতে পায় না। দিন কাটে ঘরের কোণে বসে। অন্ধবধূ তাই তার মনের খেদোক্তি ব্যক্ত করেছে। পা-পিছলে যদি দিঘির জলে ডুবে যায় তবে যেন অন্ধ চোখের দ্বন্দ্ব চুকে যায়। তার দুখের আলাপন শোনার যেন কেউ নেই। অন্ধবধূর ব্যথা যেন কেউ বোঝে না।

উদ্দীপকে বলা হয়েছে, একজন সুখী মানুষ কখনও ব্যথিতের বেদন বা কষ্ট বুঝতে পারে না। অথবা যাকে কোনো দিন সাপে দংশন করেনি সেও দংশনের জ্বালা বুঝতে পারবে না। আলোচ্য অন্ধবধূর বিষয়টাও অনুরূপ। যার চোখ নেই তার কষ্ট ও দুঃখ দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন ব্যক্তিরা বুঝতে পারে না। 

ঘ. ‘অন্ধবধূ’ কবিতায় অন্ধবধূর মানসিক যাতনাসহ বিভিন্ন বিষয় আলোচিত হলেও উদ্দীপকে কেবল মানসিক যাতনার দিকটি আলোচিত হয়েছে। উদ্দীপকটি তাই কবিতার খণ্ডাংশের ধারক।

‘অন্ধবধূ’ কবি যতীন্দ্রমোহন বাগচীর এক অনবদ্য কবিতা। কবিতায় তিনি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এক গৃহবধূর গভীর মর্মবেদনা নিপুণভাবে অংকন করেছেন। অন্ধবধূর স্মৃতিশক্তি ও অনুভূতি অত্যন্ত প্রখর। যা দিয়ে সে তার আশপাশের পরিবেশকে বুঝতে পারে। এই অসহায় নারীর স্বামী থাকে প্রবাসে। তার মনের যন্ত্রণাকে ভাগাভাগি করারও উপায় ছিল না। তাই মনঃকষ্টে সে দিঘির জলে ডুবে গিয়ে সকল যন্ত্রণার অবসান ঘটাতে চেয়েছে। আবার দীঘির স্নিগ্ধ জলের পরশে সে দেহ ও মনকে জুড়াতে চেয়েছে।

আলোচ্য উদ্দীপকের বক্তব্য কালজয়ী। সব যুগ সব সময়ের জন্য তা সত্য। পৃথিবীতে মানুষ তার কষ্ট একাই বহন করে। একজনের কষ্ট কখনই আরেকজন তার মতো করে বুঝতে পারে না। যাকে কোনো দিন সাপে দংশন করেনি এর তীব্র যাতনা সে কখনোই বুঝতে পারে না। একজন সুখী মানুষও দুঃখী মানুষের কষ্ট বুঝতে পারে না। ‘অন্ধবধূ’ কবিতায় এ বিষয়টি তুলে ধরার পাশাপাশি অন্ধবধূর মানসিকতার নানা দিক উঠে এসেছে।

‘অন্ধবধূ’ কবিতায় কবি অন্ধবধূর বিষয়টি বর্ণনা করতে গিয়ে নানা বিষয়ের অবতারণা করেছেন। দৃষ্টিশক্তি না থাকলেও অন্ধবধূর অন্তর্দৃষ্টি প্রকৃতির রূপ-রস-গন্ধ এড়ায়নি। জীবন সম্পর্কে প্রতিবন্ধী মানুষের গভীর দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় পাওয়া যায় কবিতায়। কিন্তু উদ্দীপকে কেবল একটি বিষয় তথা মানসিক যাতনার দিকটি ফুটে উঠেছে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকটি ‘অন্ধবধূ’ কবিতার আংশিক প্রতিফলন মাত্র।

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
অন্ধবধূ
কবিতা
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

SSC Bangla 1st Paper
OndhoBodhu
Kobita
Srijonshil
Question-Answer
৫নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
“ও যার চোখ নাই
তার চোখের জলের
কীই বা আছে দাম”
ক. অন্ধবধূ কোথায় বসে মধুমদির গন্ধে আচ্ছন্ন হয়? ১
খ. অন্ধবধূ অন্ধ চোখের দ্বন্দ্ব চুকে যাওয়ার কথা বলেছে কেন? ২
গ. উদ্দীপকটি ‘অন্ধবধূ’ কবিতাতে অন্ধবধূর হৃদয়ের প্রতিধ্বনি যেভাবে পাওয়া যায় তা ব্যাখ্যা করো। ৩ 
ঘ. উদ্দীপকটি ‘অন্ধবধূ’ কবিতার পূর্ণ প্রতিফলন কি? বিশ্লেষণী মতামত দাও। ৪

৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. অন্ধবধূ দোরের পাশে বসে মধুমদির গন্ধে আচ্ছন্ন হয়।

খ. অন্ধবধূ অসহায়ভাবে জীবনযাপন করার চেয়ে মরে গেলে অন্ধত্বের অভিশাপ ঘুচবে মনে করে অন্ধ চোখের দ্বন্দ্ব চুকে যাক বলেছে।

অন্ধত্বের কারণে অন্ধবধূ সবার কাছে অবহেলিত। তাই সে নিজেকে পরিবারের জন্য বোঝা ভাবতে থাকে। তাই মরে গেলে এই অন্ধত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি মিলত বলে মনে করে। এজন্য অন্ধবধূ অন্ধ চোখের দ্বন্দ্ব চুকে যাওয়ার কথা বলেছে।

গ. উদ্দীপকটিতে ‘অন্ধবধূ’ কবিতায় বর্ণিত অন্ধবধূর হৃদয়ের করুণ অভিব্যক্তিই প্রকাশিত হয়েছে।

‘অন্ধবধূ’ কবিতাটিতে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী একজন নারীর হৃদয়ের হাহাকার প্রকাশিত হয়েছে। অন্ধ হওয়ার কারণে সে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারে না। আত্মমর্যাদাসম্পন্ন অন্ধবধূ অন্ধত্বের কষ্ট গভীরভাবে অনুভব করে। দিঘির জলে ডুবে মরলে তার অন্ধত্ব চিরতরে ঘুচে যেত এমন খেদোক্তিও ব্যক্ত করে সে। জীবনের প্রতি গভীর মমত্ববোধ থাকা সত্ত্বেও সে প্রেম-ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত। প্রবাসী স্বামীর প্রতি তাই তার অনেক অভিমান।

উদ্দীপকে প্রকাশিত হয়েছে মানবজীবনের এক করুণ অভিব্যক্তি। সমাজে অন্ধ ব্যক্তি অনেকটাই অবহেলা ও করুণার পাত্র হয়ে থাকে। অন্ধ মানুষও যে সাধারণ মানুষের মতো স্নেহ ভালোবাসা মায়া মমতা পাওয়ার অধিকারী সেটি আমরা ভেবে দেখি না। তারও যে বেদনা আছে দুঃখবোধ আছে সেটিও বিবেচনা করি না। আর সে কারণেই বলা হয়ে থাকে তার চোখের জলের কোনো মূল্য নেই। ঠিক একইভাবে কবিতায় উল্লেখ রয়েছে “চক্ষুহীনার কী কথা কার কাছে”। কাজে কাজেই উদ্দীপকের বক্তব্য অন্ধবধূ কবিতার অন্ধবধূর হৃদয়ের যথার্থ প্রতিধ্বনি।

ঘ. ‘অন্ধবধূ’ কবিতার মূল প্রতিপাদ্য হলো দৃষ্টিহীনদের সহানুভূতি জানানো। সেই বিষয় বিবেচনায় উদ্দীপকটি ‘অন্ধবধূ’ কবিতার পূর্ণ প্রতিফলন।

‘অন্ধবধূ’ কবিতার অন্ধবধূ রক্তে-মাংসে গড়া একজন মানুষ। পৃথিবীর সৌন্দর্য দুচোখ মেলে তারও তাকিয়ে দেখার কথা ছিল। তারও ভালোবাসা স্নেহ পাওয়ার অধিকার আছে। কিন্তু নিয়তির নিষ্ঠুর পরিহাস সে এসবের কিছুই পায়নি। পৃথিবীটা তার কাছে শুধুই কেবলই নিকষ কালো অন্ধকার। তার মনের দুঃখ বোঝে না কেউ। অন্ধবধূ তাই দিঘির জলে ডুবে মরার কথা বলেছে। অন্ধবধূ যদিও তার তীক্ষè অনুভূতি ও ইন্দ্রিয় দিয়ে সব কিছু জয় করার চেষ্টা করেছে তবু তার হৃদয়ে ক্ষণে ক্ষণে বেজে উঠেছে বেদনার সুর।

আলোচ্য উদ্দীপকটি সংক্ষিপ্ত হলেও এর মধ্য দিয়ে বঞ্চিত মানবহৃদয়ের করুণ অভিব্যক্তি বর্ণিত হয়েছে। মানুষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হচ্ছে তার দুটি চোখ। এই চোখ দিয়ে সে পৃথিবীকে অবলোকন করে। প্রিয়জনকে দেখে আনন্দে উদ্বেলিত হয়। পৃথিবীর রূপ-সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়। অথচ দুটো চোখই যার অন্ধ তার কাছে পুরো পৃথিবীটা ধূসর, বিবর্ণ। অন্ধ মানুষের এই দুঃখ কেউই যেন বুঝতে পারে না।

উদ্দীপক ও ‘অন্ধবধূ’ কবিতা পর্যালোচনা করলে দেখা যায় উভয়টিতে রয়েছে যেন বিন্দুর মাঝে সিন্ধুর গভীরতা। সমাজে দৃষ্টিশক্তিহীন মানুষের আবেগ অনুভূতির কোনো মূল্য নেই। এই নিয়ে তাদের মন যন্ত্রণায় পোড়ে। ‘অন্ধবধূ’ কবিতায় বর্ণিত বধূটিও একা একা সব কষ্ট সহ্য করে। স্বামীর দীর্ঘদিন প্রবাস যাপন তার বেদনাকে বাড়িয়ে তোলে। জীবনটা তাই তার কাছে অর্থহীন। সংবেদনশীল কবি হয়তো অন্ধবধূর মর্মবেদনা অনেকটাই বুঝতে পেরেছিলেন। তাই তাঁর কবিতা আমাদের কাছে হয়ে উঠেছে বাস্তব ও জীবনধর্মী। উদ্দীপকেও একইভাবে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের হৃদয়ের যাতনা উপস্থাপিত হয়েছে।

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
অন্ধবধূ
কবিতা
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

SSC Bangla 1st Paper
OndhoBodhu
Kobita
Srijonshil
Question-Answer

জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
১. ‘অন্ধবন্ধূ’ কবিতাটির রচয়িতা কে?
 উত্তর: ‘অন্ধবধূ’ কবিতাটির রচয়িতা যতীন্দ্রমোহন বাগচী।
 
২. যতীন্দ্রমোহন বাগচী কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?
 উত্তর: যতীন্দ্রমোহন বাগচী ১৮৭৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন।
 
৩. যতীন্দ্রমোহন বাগচী কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
 উত্তর: যতীন্দ্রমোহন বাগচী নদীয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।
 
৪. যতীন্দ্রমোহন বাগচী কত সালে মৃত্যুবরণ করেন?
 উত্তর: যতীন্দ্রমোহন বাগচী ১৯৪৮ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
 
৫. ‘অন্ধবধূ’ কবিতায় দিঘির ঘাটে কী জাগে?
 উত্তর: ‘অন্ধবধূ’ কবিতায় দিঘির ঘাটে নতুন সিঁড়ি জাগে।
 
৬. কে চেঁচিয়ে সারা হলো?
 উত্তর: ‘চোখ গেল’ পাখি চেঁচিয়ে সারা হলো।
 
৭. ‘অন্ধবধূ’ কবিতায় কার অনুভূতিশক্তি প্রখর?
 উত্তর: ‘অন্ধবধূ’ কবিতায় অন্ধবধূর অনুভূতিশক্তি প্রখর।
 
৮. দৃষ্টিহীনদের কী দিয়ে প্রতিবন্ধকতা দূর করা সম্ভব?
 উত্তর: দৃষ্টিহীনদের ক্ষেত্রে ইন্দ্রিয়সচেতনতা দিয়ে প্রতিবন্ধকতা দূর করা সম্ভব।
 
৯. অন্ধবধূ কাকে আমের গায়ে বরণ দেখার কথা জিজ্ঞেস করে?
 উত্তর: অন্ধবধূ তার ননদকে আমের গায়ে বরণ দেখার কথা জিজ্ঞেস করে।
 
১০. অন্ধবধূ অনেক দিন আগে কিসের ডাক শুনেছে?
 উত্তর: অন্ধবধূ অনেক দিন আগে কোকিলের ডাক শুনেছে।
 
১১. ‘অন্ধবধূ’ কবিতায় কে নৈরাশ্যবাদী মানুষ নয়?
 উত্তর: ‘অন্ধবধূ’ কবিতায় অন্ধবধূ নৈরাশ্যবাদী মানুষ নয়।
 
১২. অন্ধবধূ কিসের গায়ে বরণ দেখার কথা বলেছে?
 উত্তর: অন্ধবধূ আমের গায়ে বরণ দেখার কথা বলেছে।

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
অন্ধবধূ
কবিতা
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

SSC Bangla 1st Paper
OndhoBodhu
Kobita
Srijonshil
Question-Answer

অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
১. অন্ধবধূর আকাশ-পাতাল মনে হয় কেন?
 উত্তর: রাতে ফুলের মোহময় সুগন্ধে অন্ধবধূর আকাশ-পাতাল মনে হয়।

অন্ধবধূ একজন অনুভবঋদ্ধ মানুষ। সে অন্ধ হলেও অনুভবে প্রকৃতির বিভিন্ন বিষয় উপলব্ধি করতে পারে। সেই উপলব্ধিতে তার মনে নানা প্রশ্ন, নানা শঙ্কা জাগে। আবেগ-অনুভূতি সবই তার অনুভবের জগৎকে ঘিরে। তার এই চিন্তার জগতে নতুন উদ্দীপনা জাগায় ফুলের মধুমদির সুগন্ধ। এই গন্ধেই তার আকাশ-পাতাল মনে হয়।

২. “দেখবি তখন- প্রবাস কেমন লাগে?”- অন্ধবধূ একথা বলেছে কেন?
 উত্তর: স্বামীর প্রতি অভিমানে অন্ধবধূ আলোচ্য কথাটি বলেছে।

অন্ধবধূর স্বামী প্রবাসী। অন্ধবধূ তার জন্য দিনের পর দিন প্রতীক্ষায় থাকে। সে কোকিলের ডাক শুনে, দিঘির ঘাটের নতুন সিঁড়ির অনুভবে ঋতু বদল বুঝতে পারে। এভাবে ঋতুর পর ঋতু চলে গেলেও প্রবাসী স্বামী অন্ধবধূর সান্নিধ্যে আসেনি। বধূটি ভাবে সে মারা গেলে স্বামী নিশ্চয়ই দ্রুত ঘরে নতুন বউ আনবে। তখন প্রবাসের জীবন তার আর ভালো লাগবে না।

৩. অন্ধবধূ কীভাবে ঋতুর বিবর্তন জেনে নিতে চায়?
 উত্তর: অন্ধবধূ তার ইন্দ্রিয়সচেতনতা দিয়ে ঋতুর বিবর্তন জেনে নিতে চায়।

অন্ধবধূ একজন ইন্দ্রিয়সচেতন মানুষ। সে অনুভবে জগতের রূপ-রস-গন্ধ সম্পর্কে জ্ঞান রাখে। তার সেই জ্ঞানের আলোকে কোকিলের ডাক শুনে সে বসন্তের আগমন বোঝে, দিঘির ঘাটে নতুন সিঁড়ি জাগায় গ্রীষ্মের আগমন বোঝে। এভাবেই গভীর ইন্দ্রিয়সচেতনতা ও জ্ঞান দিয়ে অন্ধবধূ ঋতুর বিবর্তন বুঝে নিতে চায়।

৪. দৃষ্টিহীনদের প্রতিবন্ধকতা দূর করা সম্ভব কীভাবে? বুঝিয়ে লেখো।
 উত্তর: ইন্দ্রিয়সচেতনতা দিয়ে দৃষ্টিহীনদের প্রতিবন্ধকতা দূর করা সম্ভব।

দৃষ্টিহীনেরা নিজেদের অসহায় মনে করে। কিন্তু নিজেদের অসহায় মনে না করে নিজের অন্তর্দৃষ্টিকে প্রসারিত করলে দৃষ্টিহীন হলেও প্রকৃতির বিভিন্ন বিষয় অনুভব করা যায়। প্রকৃতির সান্নিধ্যে থেকে জগতের রূপ-রস-গন্ধ সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়। আর এভাবে দৃষ্টিহীনেরা ইন্দ্রিয়সচেতনতা দিয়ে নিজেদের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে পারে।

৫. অন্ধবধূ দিঘির জলে তলিয়ে গেলে মন্দ হতো না বলে কেন?
 উত্তর: অন্ধত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তির জন্য অন্ধবধূ দিঘির জলে তলিয়ে গেলে মন্দ হতো না বলে।

অন্ধবধূ অন্ধত্বের কষ্ট গভীরভাবে অনুধাবন করে। সবাই অবজ্ঞা করে বলে নিজেকে সে বড় অসহায় মনে করে। তাই অন্ধত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি খুঁজে পেতে চায়। পা পিছলিয়ে দিঘির জলে তলিয়ে গেলে মন্দ হতো না বলে সে মনে করে।

৬. “বাঁচবি তোরা-দাদা তো তোর আগে?” অন্ধবধূ এ কথা বলেছে কেন?
 উত্তর: অন্ধবধূ নিজেকে অসহায় এবং পরিবারের বোঝা মনে করে প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেছে।

অন্ধবধূ তার পরিবারে নিগৃহীত। স্বামীর কাছ থেকে পায় অবজ্ঞা। অন্ধবধূ তাই অন্ধত্বকে নিজের অভিশাপ মনে করে। মনে করে অন্ধত্বের কারণে সে পরিবারের বোঝা। এই কারণে মরে গিয়ে অন্ধত্বের অভিশাপ থেকে পরিবারকে মুক্তি দিতে চায়। আর এজন্যই সে ঠাকুরঝিকে বলে, “বাঁচবি তোরা- দাদা তো তোর আগে?”
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post