HSC পৌরনীতি ও সুশাসন ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায় ১০ pdf download

 এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Civics and Good Governance 2nd Paper Srijonshil Question Answer pdf download

পৌরনীতি ও সুশাসন
দ্বিতীয় পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
অধ্যায়-১০

HSC Civics and Good Governance 2nd Paper pdf download
Srijonshil
Question and Answer

১. নজরুল ইসলাম বাজার থেকে কিছু পাকা আম ক্রয় করে বাড়ি আসেন। আম কাটার পর তিনি দেখতে পান ভেতরে আমের আঁটিগুলো শক্ত হয়নি। আম খাওয়ার পর তার পেটে কিছু সমস্যা দেখা দেয়।
ক. দুর্নীতি কী?
খ. শারীরিক প্রতিবন্ধিতা বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকের সাথে তোমার পঠিত কোনো নাগরিক সমস্যার সাদৃশ্য আছে কি? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে উদ্দীপকে বর্ণিত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব বিশ্লেষণ করো।

১ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. আইন ও নীতি বিরুদ্ধ কাজই হলো দুর্নীতি।

খ. অসুখ, দুর্ঘটনা, চিকিৎসাজনিত ত্রুটি অথবা জন্মগতভাবে যদি কোনো ব্যক্তি শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে তার কর্মক্ষমতা আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে লোপ পায় তাকে শারীরিক প্রতিবন্ধিতা বলে।
যাদের মাঝে নিচে উল্লেখিত লক্ষণগুলোর মধ্যে এক বা একাধিক লক্ষণ দেখা যাবে তারা শারীরিক প্রতিবন্ধী বলে বিবেচিত হবে। যথা- একটি বা উভয় হাত বা পা না থাকা; কোনো হাত বা পা পূর্ণ বা আংশিকভাবে অবশ অথবা গঠনগত এমন ত্রুটিপূর্ণ বা দুর্বল যে, দৈনন্দিন সাধারণ কাজকর্ম বা সাধারণ চলন বা ব্যবহার ক্ষমতা আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে ব্যাহত হয়; স্নায়ুবিক অসুবিধার কারণে স্থায়ীভাবে শারীরিক ভারসাম্য না থাকা।

গ. উদ্দীপকের সাথে আমার পঠিত নাগরিক সমস্যা খাদ্যে ভেজাল-এ সাদৃশ্য রয়েছে।
সাধারণভাবে খাদ্যে ভেজাল বলতে খাঁটি বা আসল পণ্যের সাথে নিম্নমানের পণ্য বা রাসায়নিক পদার্থের মিশ্রণ ঘটিয়ে বিক্রয় করাকে বোঝায়। এতে দ্রব্যের গুণগত মান নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি বিশুদ্ধতা হারায়। বর্তমানে খাদ্যে ভেজাল একটি মারাত্মক সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সমস্যা হিসেবে পরিগণিত হয়। খাদ্য দ্রব্যের সাথে ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ মিশিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী জনসাধারণের সাথে প্রতারণা করে। ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি লক্ষ করা যায় অপরিপক্ব ফল পাকানো এবং এর রং আকর্ষণীয় করার ক্ষেত্রে। এসব ফল খেয়ে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে এবং বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। উদ্দীপকে দেখা যায়, নজরুল ইসলাম বাজার থেকে কিছু পাকা আম কিনে বাড়ি আসেন। আম কাটার পর তিনি দেখতে পান ভেতরে আমের আঁটিগুলো শক্ত হয়নি। আম খাওয়ার পর তার পেটে কিছু সমস্যা দেখা দেয়। এখানে মূলত খাদ্যে ভেজাল মিশ্রণের বিষয়টি ফুটে উঠেছে। আমাদের প্রাত্যহিক নাগরিক জীবনে যে সমস্যাগুলো প্রকট হয়ে উঠেছে তার মধ্যে অন্যতম হলো খাদ্যে ভেজাল সমস্যা।

ঘ. আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে উদ্দীপকে বর্ণিত সমস্যা অর্থাৎ খাদ্যে ভেজাল থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। আমরা প্রতিনিয়ত যেসব খাবার গ্রহণ করি তার মধ্যে রয়েছে ভেজাল। ফসল তোলা থেকে শুরু করে খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরে মেশানো হচ্ছে নানা ধরনের রাসায়নিক পদার্থ। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য আইনের যথাযথ প্রয়োগ এবং নাগরিক সচেতনতার প্রয়োজন। ভেজাল খাদ্য কীভাবে সমাজের ক্ষতি করছে এবং এর মারাত্মক পরিণতির বিষয়ে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা দরকার। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসা এবং বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে খাদ্যে ভেজাল বিরোধী প্রচারণা এবং কর্মসূচির ব্যবস্থা করতে হবে।
শুধু জনগণ সচেতন হলেই খাদ্যে ভেজাল মেশানো বন্ধ করা সম্ভব নয়। এর পাশাপাশি খাদ্যদ্রব্য ভেজালমুক্ত কিনা সেজন্য নিয়মিত সরকারি ও বেসরকারিভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। ভেজাল খাদ্য উৎপাদনকারী ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। জরিমানা ও কারাদ--র মেয়াদ বৃদ্ধি এবং কড়াকড়িভাবে তা প্রয়োগ করতে হবে। ভোক্তা পর্যায়ে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এক্ষেত্রে আমাদের সবার দায়িত্ব হবে নিজে খাদ্যে ভেজালের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং অপরকে সচেতন করে তোলা।
উপরের আলোচনা শেষে বলা যায়, আইনের যথাযথ প্রয়োগ এবং সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে খাদ্যে ভেজাল সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

২. জনি রনির বড় ভাই। রনি ২০১৬ সালের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় বৃত্তি পেয়েছে। অন্যদিকে জনি কথা বলতে পারে না। তাই স্থানীয় স্কুলে তাকে ভর্তি করানো যায়নি। তার সমবয়সীরা তাকে খেলায় নিতে চায় না। এ কারণে জনি ও তার বাবা-মায়ের মন খারাপ থাকে। জনির সাথে রনির খুব বন্ধুত্ব। জনি সুন্দর ছবি আঁকতে পারে। তার বাবা তার জন্য রং ও ছবি আঁকার বই কিনে দিয়েছে। জনি এখন ছবি আঁকা নিয়ে ব্যস্ত।
ক. C.F.C. (সি.এফ.সি) কী?
খ. খাদ্যে ভেজাল বলতে কী বোঝ?
গ. জনির প্রতিবন্ধিতা জনিত সমস্যাটি ব্যাখ্যা করো।
ঘ. জনির সমস্যা সমাধানে এবং তাকে স্বাভাবিক জীবনযাপনের ক্ষেত্রে সহায়তা করার জন্য কী কী পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন তা আলোচনা করো।

২ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. C.F.C হলো- উষ্ণতা বৃদ্ধিকারক এক ধরনের গ্রিন হাউস গ্যাস।

খ. খাদ্যে ভেজাল একটি মারাত্মক সামাজিক অপরাধ।
খাদ্যে ভেজাল বলতে বোঝায়, প্রাকৃতিক ও স্বাভাবিক উপায়ে খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুত না করে ক্ষতিকর, নিম্নমানের ও অস্বাস্থ্যকর উপাদান দিয়ে তৈরি করা। ভালো ও উৎকৃষ্ট খাদ্যের সাথে নিকৃষ্ট কিংবা জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ বা রং মেশানো হলেও তা ভেজাল বলে গণ্য হবে। খাদ্যে ভেজাল বিষয়টি সাধারণত দুইভাবে সম্পন্ন হয়। যথাত অসাবধানতাবশত বা অনিচ্ছাকৃত এবং ইচ্ছাকৃত। মাছ, মাংস, ফল অথবা সবজিতে ক্ষতিকর বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য, যেমনত ক্যালসিয়াম কার্বাইড, ইথিলিন ও ফরমালিন মেশানো খাদ্যে ভেজালের উদাহরণ।

গ. জনি একজন বাক-প্রতিবন্ধী।
শারীরিক বা মানসিক দিক থেকে যারা অসুস্থ এবং স্বাভাবিক জীবন যাপনে অক্ষম তারাই হলো প্রতিবন্ধী। প্রতিবন্ধীরা আমাদের সমাজেরই সদস্য। মানুষের শরীরে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধিতা লক্ষ করা যায়। এর মধ্যে বাক প্রতিবন্ধিতা অন্যতম। জনির ক্ষেত্রে এই ধরনের প্রতিবন্ধিতাই লক্ষণীয়।
উদ্দীপকের জনি কথা বলতে পারে না। তবে সে সুন্দর ছবি আঁকতে পারে। কথা বলতে না পারার কারণে সে স্কুলে ভর্তি হতে না পারলেও ছবি আঁকা নিয়ে সে ব্যস্ত থাকছে। বাকপ্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে এমনটি লক্ষ করা যায়। জন্মের পর থেকেই যারা কোনো শব্দ বলতে পারেনি কিংবা রোগ বা দুর্ঘটনায় কথা বলার শক্তি হারিয়েছে তারা হলো বাক-প্রতিবন্ধী। অনেক সময় দেখা যায় কথা না শোনার কারণেই তারা কথা বলতে শেখে না। এরা কথা বলতে না পারলেও কোনো না কোনো দিক থেকে নিজের দক্ষতার বিকাশ করতে পারে। যেমন: ছবি আঁকা, নাচ, অভিনয়, হস্তশিল্প ইত্যাদি। অবশ্য অন্যান্য প্রতিবন্ধিতার ক্ষেত্রেও এমনটি হয়ে থাকে।

ঘ. জনির সমস্যা সমাধানে এবং তাকে স্বাভাবিক জীবনযাপনের ক্ষেত্রে সহায়তা করার জন্য বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।
আমাদের সমাজে প্রতিবন্ধীদের বহুমুখী সমস্যা মোকাবিলা করতে হয়। জীবন যতদূর বিসত্মৃত প্রতিবন্ধীদের সমস্যাও ততদূর বিসত্মৃত। তাই এদের সমস্যা সমাধানের জন্য সরকারের সাথে সাথে ব্যক্তি, সমাজ ও আন্তর্জাতিক সহায়তা আবশ্যক। সম্মিলিতভাবে নিম্নোক্ত ব্যবস্থাদি গ্রহণের মাধ্যমে প্রতিবন্ধীদের স্বাভাবিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত করা সম্ভব।
প্রতিবন্ধী সমস্যার সমাধানের জন্য প্রথমেই প্রয়োজন সামাজিক সচেতনতা। প্রতিবন্ধীরাও যে মানুষ এ ধারণা সমাজের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে জাগ্রত হলে তাদের মধ্যকার প্রতিবন্ধী বিষয়ক কুসংস্কার দূর হবে। প্রতিবন্ধীদের জন্য শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে। এজন্য প্রতিবন্ধীদের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বৃদ্ধি করতে হবে। এছাড়া মূলধারার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও তাদের উপযোগী করে গড়ে় তুলতে হবে। প্রতিবন্ধীদের জন্য পরিবারভিত্তিক সেবা ও কমিউনিটি ভিত্তিক পুনর্বাসনের বিস্তার ঘটাতে হবে। প্রতিবন্ধী ও তাদের পরিবারগুলোকে আর্থিক ও মানসিক সহায়তা দিতে হবে। এতে তারা আত্মপ্রত্যয়ী হবে। যেসব প্রতিবন্ধীর কাজ করার ক্ষমতা আছে তাদেরকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে কাজে যোগদানের ব্যবস্থা করতে হবে। কর্মক্ষেত্রে তারা যাতে ন্যায্যমূল্য পায় সে বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিবন্ধী সমস্যা সমাধানে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় বিষয় হলো প্রতিবন্ধীবান্ধব আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ। এ আইনের মাধ্যমে প্রতিবন্ধীদের একটি রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে আনতে হবে।
পরিশেষে বলা যায়, উল্লিখিত পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ করলে প্রতিবন্ধী সমস্যা অনেকটাই সমাধান করা সম্ভব। আর তাদের সমস্যার সমাধান করতে পারলেই তারা স্বাভাবিক জীবন যাপনের সুযোগ পাবে।

৩. 'X' পাঁচ বছর বয়সী একটি শিশু। তার চেহারা ও অবয়ব অন্য শিশুদের মতো। তার মধ্যে সীমাবদ্ধ কিছু কাজ বা আচরণের প্রবণতা লক্ষ করা যায়। সে অন্যদের তুলনায় একটু বেশি বা কম সংবেদনশীল।
ক. ফরমালিন কী?
খ. বিশেষ চাহিদার জনগোষ্ঠী বলতে কী বোঝায়?
গ. 'X' কী ধরনের শিশু? তোমার পাঠ্যবইয়ের আলোকে ব্যাখ্যা করো।
ঘ. প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পেলে 'x' এর মতো শিশুরা একদিন সম্পদে পরিণত হবে- তুমি কি একমত?

৩ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ফরমালিন হলো মানব-স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ।

খ. বর্তমান সময়ে প্রতিবন্ধীদের বোঝানোর জন্য বহুল ব্যবহৃত ইংরেজি শব্দ হচ্ছে Person with Special Needs এর বাংলা প্রতিশব্দ হলো বিশেষ চাহিদার জনগোষ্ঠী।
সাধারণভাবে বলা হয়, যার মাঝে প্রতিবন্ধকতা বিরাজমান তিনিই প্রতিবন্ধী; সে প্রতিবন্ধকতা যত সামান্যই হোক না কেন। প্রকৃতপক্ষে অসুখে, দুর্ঘটনায়, চিকিৎসা ত্রুটি বা জন্মগতভাবে যদি কোনো ব্যক্তির শারীরিক বা মানসিক অবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার মাধ্যমে কর্মক্ষমতা আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে লোপ পায় অথবা তুলনামূলকভাবে কম হয়। তাহলে সেই ব্যক্তিকে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বলা হয়।

গ. উদ্দীপকের 'X' এর প্রতিবন্ধিতার একটি অন্যতম ধরন অটিজমে আক্রান্ত শিশু।
অটিজম বা আত্মসংবৃতি মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বিকাশজনিত প্রতিবন্ধকতা; যা শিশুর বয়স তিন বছর হবার পূর্বেই প্রকাশ পায়। এ ধরনের শিশুরা সামাজিক আচরণে দুর্বল একই কাজ বারবার করার প্রবণতা থেকে তাদের শনাক্ত করা যায়। উদ্দীপকের শিশু 'X' এর ক্ষেত্রেও আমরা অনুরূপ বিষয়টি দেখতে পাই।
সাধারণত অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের শারীরিক গঠনে কোনো সমস্যা থাকে না এবং তাদের চেহারা, অবয়ব অন্যান্য সুস্থ ও স্বাভাবিক মানুষের মতোই হয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে ছবি আঁকা, গান করা, কম্পিউটার চালনা বা গাণিতিক সমাধানসহ অনেক জটিল বিষয়ে এ ধরনের শিশু পারদর্শী হয়। সাধারণত অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের যেসব বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয় তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- i. মৌখিক বা অমৌখিক যোগাযোগে সীমাবদ্ধতা, ii. সীমাবদ্ধ কিছু কাজ বা আচরণের পুনরাবৃত্তি, iii. শ্রবণ, দর্শন, গন্ধ, স্বাদ, স্পর্শ, ব্যাথা, ভারসাম্য ও চলনে অন্যদের তুলনায় বেশি বা কম সংবেদনশীলতা, iv. চোখে চোখ না রাখা বা কম রাখা, v. অস্বাভাবিক শারীরিক অঙ্গভঙ্গি প্রভৃতি।
উদ্দীপকের পাঁচ বছর বয়সী শিশু 'X' এর ক্ষেত্রে দেখা যায়, তার চেহারা ও অবয়ব অন্য শিশুদের মতো তার মধ্যে নির্দিষ্ট কিছু কাজ বা আচরণের প্রবণতা লক্ষ করা যায় এবং অন্যদের তুলনায় সে একটু কম বা বেশি সংবেদনশীল। তার শারীরিক ও মানসিক এ বৈশিষ্ট্যের সাথে অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের মিল রয়েছে। তাই বলা যায় যে, উদ্দীপকের 'X' অটিজমে আক্রান্ত প্রতিবন্ধী শিশু।

ঘ. হ্যাঁ, প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পেলে প্রতিবন্ধী শিশুরা একদিন সম্পদে পরিণত হবে।
প্রতিবন্ধীরা আমাদের সমাজেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ। এদেরকে সমাজের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড অমর্ত্মভুক্ত করা প্রয়োজন। তাহলেই দেশের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব। আর এজন্য সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা প্রয়োজন। আমাদের সমাজের প্রতিবন্ধীরা বিভিন্ন রকমের সমস্যায় ভুগছে। এসব সমস্যা সমাধান করে তাদেরকে ন্যায়সঙ্গত অধিকার দিতে হবে। তাদের প্রতি সমাজের মানুষের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করতে হবে। তাহলে তারা প্রতিভার বিকাশ ঘটিয়ে সমাজের সর্বস্তরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে। সরকারি ও বেসরকারিভাবে প্রতিবন্ধীদের আর্থিক ও সামাজিক সহায়তা দিতে হবে। এতে তারা আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে উঠবে। প্রতিবন্ধীদেরকে উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ দেওয়া উচিত। তাদের জন্য কাজের ব্যবস্থা এবং ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়াও প্রতিবন্ধীদের জন্য আইন প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন করতে হবে। তাহলে সার্বিক নিরাপত্তা পেয়ে নিজের জন্য ও সমাজের জন্য কাজ করতে পারবে। তারা আলোকিত মানুষ হয়ে সমাজকে উজ্জ্বল করতে পারবে।
উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, প্রতিবন্ধীদের প্রতি সঠিক দায়িত্ব পালন করতে পারলে তারা আর সমাজের বোঝা থাকবে না। তারাও নিজেদের প্রতিভার বিকাশ ঘটিয়ে আলোকিত সমাজ গড়ার কর্ণধার হতে পারবে।

৪. রাফিন কানে শোনে না। তাই তাকে তিন বছর বয়সেই একটি বিশেষ স্কুলে ভর্তি করা হয়। স্কুলের শিক্ষকরা লক্ষ করলেন যে রাফিন ছবি আঁকায় খুবই আগ্রহী। দুই বছরের মধ্যেই সে দক্ষ অংকন শিল্পী হয়ে ওঠে। সুন্দর ছবি আঁকার জন্য সে প্রধানমন্ত্রীর নিকট হতে পুরস্কারও লাভ করে। রাফিনের শিক্ষকরা তার বাবা-মায়ের সঙ্গে আলোচনা করে তাকে একটি আর্ট স্কুলে ভর্তি করে দেন।
ক. HIV-এর পূর্ণরূপ কী?
খ. দুর্নীতি বলতে কী বোঝ?
গ. উদ্দীপকের রাফিন কোন ধরনের শিশু? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. রাফিনের প্রতি তার বাবা-মা ও স্কুল শিক্ষকদের গৃহীত উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়ত উক্তিটি মূল্যায়ন করো।

৪ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. HIV - এর পূর্ণরূপ হলো Human Immunodeficiency Virus.

খ. দুর্নীতি বলতে ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার করাকে বোঝায়।
রাজনৈতিক ও সরকারি প্রশাসনে সাধারণত ঘুষ, বলপ্রয়োগ, ভয় প্রদর্শন, প্রভাব বিস্তার এবং ব্যক্তি বিশেষকে সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার করা হয়। এছাড়া ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত পর্যায়ে বিভিন্ন উপায়ে মানুষকে ঠকিয়ে নিজের ক্ষমতাও প্রতিষ্ঠা বা চাওয়া পূর্ণ করা হলে তাকে দুর্নীতি হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। মোটকথা, নীতি বিচ্যুত হয়ে যেকোন কাজ করাই হলো দুর্নীতি।

গ. উদ্দীপকের রাফিন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু বা প্রতিবন্ধী শিশু।
বিশেষ চাহিদার জনগোষ্ঠী সমাজের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এক বা একাধিক অক্ষমতা বিশিষ্ট মানুষকেই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন বলা হয়। রাফিনের ক্ষেত্রে এই অক্ষমতাই দৃষ্টিগোচর হয়। রাফিন কানে শোনে না, তবে ছবি আঁকায় খুবই পারদর্শী। সুন্দর ছবি আঁকার জন্য সে প্রধানমন্ত্রীর নিকট থেকে পুরস্কারও লাভ করেছে। প্রতিবন্ধী শিশুদের ক্ষেত্রেও এমনটি লক্ষ করা যায়।
শারীরিক ও মানসিক ত্রুটির কারণে প্রতিবন্ধীদের স্বাভাবিক গতি বাধাগ্রস্থ হয়ে। বয়স, লিঙ্গ, জাতি, সংস্কৃতি বা সামাজিক অবস্থান অনুযায়ী আর দশজন যে কাজগুলো করতে পারে প্রতিবন্ধীরা তা পারে না। এই প্রতিবন্ধিতা শারীরিক বুদ্ধি, দৃষ্টি, শ্রবণ, বাক এসব ক্ষেত্রে হতে পারে। তবে এই ধরনের মানুষ ক্ষেত্র বিশেষে অধিক প্রতিভার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম। অর্থাৎ কোনো না কোনো দিক দিয়ে তারা নিজেদের যোগ্যতার প্রতিফলন ঘটাতে পারে। যেমন: গান করা, ছবি আঁকা, নৃত্য, হস্তশিল্প ইত্যাদি বিষয়ে প্রতিবন্ধীরা নিপুণতার সাথে কাজ করতে পারে। সুতরাং রাফিন কানে শোনে না ও ছবি আঁকায় দক্ষ হওয়ায় তাকে প্রতিবন্ধী বা বিশেষ চাহিদার শিশু হিসেবে আখ্যা দেওয়া যায়।

ঘ. রাফিনের প্রতি তার বাবা-মা ও স্কুল শিক্ষকদের গৃহীত উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়ত উক্তিটি যথার্থ।
বাংলাদেশে প্রতিবন্ধীদের প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি নেতিবাচক। তাদেরকে সবাই সমাজের কলঙ্ক ও বোঝা মনে করে। এ কারণে তাদের পাশে দাঁড়ানো সমাজের প্রতিটি মানুষের অবশ্য কর্তব্য। এ কর্তব্য পালনের দৃষ্টান্ত রাফিনের বাবা-মা ও স্কুল শিক্ষকদের মধ্যে লক্ষ করা যায়।
রাফিন প্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও ছবি আঁকায় দক্ষ। এ দক্ষতা দেখে প্রতিভা বিকাশের স্বার্থে তার বাবা-মা ও স্কুল শিক্ষকরা তাকে আর্ট স্কুলে ভর্তি করায়। এ কাজটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। কারণ বিশেষ চাহিদার জনগোষ্ঠী সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সমাজের এই অংশটিকে যোগ্য করে নিজ অবস্থান প্রতিষ্ঠিত করাই আমাদের কর্তব্য। নিজেদের অমর্ত্ম©র্নহিত দক্ষতার বিকাশ সাধনের মাধ্যমে যেকোনো প্রতিবন্ধী ব্যক্তি হয়ে উঠতে পারে সমাজের আলোকিত মানুষ। তবে এ আলোকিত মানুষ হওয়ার জন্য প্রয়োজন যথার্থ সহায়তা। যে শিশুটি যে দিকে দক্ষ তাকে সেইমুখী শিক্ষা দিতে হবে। অনেক সময় প্রতিবন্ধীরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। তাই নিজেদের গুটিয়ে রেখে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এ কারণে তাদেরকে মানসিক আর্থিক সহায়তা দিতে হবে। এছাড়া তাদের প্রতিভা বিকাশ, প্রতিষ্ঠা এবং নিরাপত্তার জন্য সরকারি নীতিমালার প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। তাহলেই রাফিনের মতো শিশুরা হয়ে উঠবে আত্মপ্রত্যয়ী আর দৃঢ় মনোবল নিয়ে তারা সমাজের যোগ্য মানুষ অর্থাৎ মানবসম্পদে রূপান্তরিত হবে।
উপর্যুক্ত আলোচনার নিরিখে বলা যায়, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের উন্নয়নমূলক কাজের অংশীদার করানোর জন্য প্রয়োজন সার্বিক সহযোগিতা। রাফিনের বাবা-মা ও স্কুল শিক্ষকদের গৃহীত উদ্যোগে এর প্রতিফলন ঘটেছে।

৫. অহনার প্রিয় সবজি টমেটো। সে বাজার থেকে সুন্দর রং দেখে দুই কেজি টমেটো ক্রয় করে। বাসায় এসে কেটে দেখে টমেটো পাকার মত হয়নি। এই টমেটো খেয়ে তার ছোট বোন মারিয়া অসুস্থ হয়ে পড়লো। অহনা বিষয়টি পুলিশকে জানালে পুলিশ দোকানদারকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করে। বিজ্ঞ আদালত দোকানদারকে ঐ আইনের বিধান অনুযায়ী শাস্তি প্রদান করেন।
ক. আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামী কতজন ?
খ. রাজনৈতিক অস্থিরতা কীভাবে দুর্নীতির বিকাশ ঘটায়?
গ. উদ্দীপকে অহনার সমস্যাটি বাংলাদেশের কোন সমস্যার প্রতি ইঙ্গিত বহন করে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের অহনা যে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে তা প্রতিরোধে তুমি কী কী সুপারিশ করবে?

৫ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামী ছিল ৩৫ জন।

খ. রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে দেশের আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটে যা দুর্নীতির বিকাশ ঘটায়।
রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে রাষ্ট্রে বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিবাদের সৃষ্টি হলে, সে সুযোগে দুর্নীতিমূলক কর্মকা- বৃদ্ধি পায়। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন অনৈতিক কর্মকা-কে উৎসাহিত করে। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ক্ষমতায় আসার জন্য রাজনৈতিক দলসমূহ নির্বাচনে বিপুল অর্থ ব্যয় করে এবং ক্ষমতায় যাওয়ার পর সেই অর্থ উশুল করার প্রবণতার কারণেও দুর্নীতির বিকাশ ঘটে থাকে।

গ. উদ্দীপকে অহনার সমস্যাটি বাংলাদেশের খাদ্যে ভেজাল সমস্যার প্রতি ইঙ্গিত বহন করে।
সাধারণভাবে খাদ্যে ভেজাল বলতে খাঁটি বা আসল পণ্যের সাথে নিম্নমানের ও নকল পণ্যের মিশ্রণ ঘটিয়ে বিক্রয় করাকে বোঝায়। এতে দ্রব্যের গুণগত মান নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি বিশুদ্ধতা হারায়। বর্তমান যুগে খাদ্যে ভেজাল একটি মারাত্মক সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সমস্যা হিসেবে পরিগণিত হয়। খাদ্যদ্রব্যের সাথে ক্ষতিকারক কেমিক্যাল মিশ্রণ করে কিছু অসাধু, নীতি বিবর্জিত ব্যবসায়ী ও বিক্রেতা জনসাধারণের সাথে প্রতারণা করে থাকে, উদ্দীপকেও এ সমস্যার প্রতিফলন লক্ষণীয়।
উদ্দীপকে দেখা যায় যে, অহনা বাজার থেকে সুন্দর রং দেখে দুই কেজি টমেটো ক্রয় করে। বাসায় এসে কেটে দেখে টমেটো পাকার মতো হয়নি। এই টমেটো খেয়ে তার ছোট বোন মারিয়া অসুস্থ হয়ে পড়ে। এখানে মূলত খাদ্যে ভেজাল মিশ্রণের বিষয়টি ফুটে উঠেছে। আমাদের প্রাত্যহিক নাগরিক জীবনে যে সমস্যাগুলো প্রকট হয়ে উঠেছে তার মধ্যে অন্যতম হলো ভেজাল খাদ্য। মাছ, মাংস, তরিতরকারি থেকে শুরু করে তৈরি খাবার, ফলমূল এমনকি শিশু খাদ্যে পর্যন্ত ভেজালের ভয়ঙ্কর দৌরাত্ম্য সৃষ্টি হয়েছে। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীর সীমাহীন মুনাফা অর্জনের লোভে, নাগরিকদের অসচেতনতা এবং আইন প্রয়োগে প্রশাসনের শিথিলতার কারণে দিন দিন এ সমস্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব ভেজাল ও দূষিত খাদ্য গ্রহণের ফলে ব্যক্তি পর্যায়ে পুষ্টির অভাব থেকে ভোক্তার মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। উদ্দীপকেও এ সমস্যাটির কথা বলা হয়েছে।

ঘ. উদ্দীপকের অহনা খাদ্যে ভেজাল সমস্যাটির সম্মুখীন হয়েছে। আর এ সমস্যাটি প্রতিরোধ করতে হলে সরকার, ব্যবসায়ী ও ভোক্তা সকল পর্যায়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
খাদ্যে ভেজাল প্রতিকার বা প্রতিরোধে নিম্নলিখিত ব্যবস্থাগুলো গ্রহণ করতে হবে-
১. খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের উৎপাদিত দ্রব্যসামগ্রী BSTI- এর দ্বারা মানোত্তীর্ণ হবার সার্টিফিকেট অর্জন এবং তা প্রদর্শন করতে হবে।
২. BSTI এর দ্বারা পরিক্ষীত নয়, এমন উৎপাদিত খাদ্যসামগ্রী বাজারজাত করা হলে কঠিন শাস্তির বিধান এবং তা কার্যকর করতে হবে।
৩. হোটেল, রেস্তোরাঁয় পচা-বাসি খাবার যেন পরিবেশন করা না হয় সেজন্য নজরদারি জোরদার করতে হবে।
৪. অসৎ ব্যবসায়ী, উৎপাদক, পরিবেশকদের বিরুদ্ধে কী শাস্তি প্রদান করা হলো, ভ্রাম্যমান আদালত কী করছে তা নিউজ এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশ ও প্রচার করতে হবে।
৫. চাল-ডাল-আটা-ময়দা, ফলমূল প্রভৃতির আড়তগুলোতে নজরদারি বৃদ্ধি করতে হবে এবং অসৎ ব্যবসায়ীদের শাস্তি প্রদান করতে হবে।
৬. বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ বাজারজাতকরণ ও বিপণন ব্যবস্থার সাথে জড়িতদের ওপর সতর্ক নজরদারি রাখতে হবে, যেন এসব পদার্থ খাদ্যে ভেজালের জন্য নয় বরং উপযুক্ত কাজেই শুধু ব্যবহার হয়।
৭. খাদ্যে ভেজালের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে এবং খাদ্য সংরক্ষণের জন্য জনগণবান্ধব ও স্বাস্থ্যসহায়ক উপায় বা পদ্ধতি উদ্ভাবন করতে হবে।
৮. জনগণ নিজেই যেন ফরমালিনমুক্ত বা ভেজাল পণ্য চিনতে পারে সে পদ্ধতি প্রচার করে জনগণকে সচেতন করে তুলতে হবে।
সর্বোপরি, জনগণের সচেতনতা, সাবধানতা, ব্যবসায়ীদের সততা ও আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে এ সমস্যাটি প্রতিরোধ করা সম্ভব।

৬. কর্মস্থলে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় আহত হয় শফিক। তার অপারেশনের জন্য রক্তের প্রয়োজন। এই রক্ত দেয় তারই প্রবাসী বন্ধু সিয়াম। শফিক সুস্থ হয়ে ওঠে। কিন্তু কিছুদিন পর শফিকের ওজন কমে যাওয়া শুরু করে। দীর্ঘদিন ধরে পাতলা পায়খানা ও শুকনা কাশি হচ্ছে। সে ডাক্তারের শরণাপন্ন হলো এবং জানতে পারল সে এক মরণব্যাধিতে আক্রান্ত।
ক. জলবায়ু পরিবর্তন কাকে বলে?
খ. গ্রিনহাউস ইফেক্ট কীভাবে জলবায়ুর পরিবর্তন করে?
গ. উদ্দীপকের শফিক কোন ধরনের মরণব্যাধিতে আক্রান্ত হয়েছে? ব্যাখ্যা করো। 
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত শফিক যে মরণব্যাধিতে আক্রান্ত এর থেকে মুক্তির জন্য তুমি কী কী সুপারিশ করবে?

৬ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কোনো স্থানের বা অঞ্চলের ৩০-৪০ বছরের জলবায়ুর উপাদান যেমন— তাপমাত্রা, বায়ুর চাপ, বায়ুর আদ্রতা ও শুষ্কতার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনকে জলবায়ুর পরিবর্তন বলা হয়।

খ. গ্রিনহাউস প্রতিক্রিয়া হচ্ছে এমন একটি প্রক্রিয়া যার দ্বারা ভূ-পৃষ্ঠ হতে বিকীর্ণ তাপ বায়ুমন্ডলীয় গ্রিনহাউস গ্যাসসমূহ দ্বারা শোষিত হয়ে পুনরায় বায়ুম-লের অভ্যন্তরে বিকিরিত হয়। এই বিকীর্ণ তাপ ভূ-পৃষ্ঠে উপস্থিত বায়ুম-লের নিম্নস্তরে ফিরে এসে ভূ-পৃষ্ঠের তথা বায়ুম-লের গড় তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়। প্রাকৃতিক গ্রিনহাউজ প্রতিক্রিয়া পৃথিবীতে প্রাণীজগতের বসবাস উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টিতে সহায়তা করে। কিন্তু মানুষেল বিভিন্ন কর্মকা- বিশেষত জীবাশ্ম জ্বালানির অতিরিক্ত দহন এবং বনাঞ্চল ধ্বংসের কারণে প্রাকৃতিক গ্রিনহাউজ প্রতিক্রিয়া তীব্রতর হয়ে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি করছে, যার নেতিবাচক প্রভাব ব্যাপক।

গ. উদ্দীপকের শফিক মরণব্যাধি এইডস- এ আক্রান্ত হয়েছে।
এইডস এক প্রকার ভাইরাস দ্বারা গঠিত রোগ। এই ভাইরাসকে Human Immunodeficiency Virus বা এইচ আই ভি (HIV) বলা হয়। এইচ আই ভি ভাইরাসটি রক্তের সাদা কোষ (CD-৮ বা টি সেল) নষ্ট করে দেয়, যার ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অকার্যকর হয়ে পড়ে। উদ্দীপকের শফিকের মধ্যেও এই রোগের লক্ষণ ফুটে ওঠেছে।
উদ্দীপকের শফিক দুর্ঘটনায় আহত হলে তার প্রবাসী বন্ধুর রক্ত দিয়ে তার অপারেশন করা হয়। সে সুস্থ হয়ে যাওয়ার কিছুদিন পর তার ওজন কমতে শুরু করে এবং দীর্ঘদিন ধরে পাতলা পায়খানা ও শুকনো কাশি হতে থাকে। ডাক্তারের নিকট গেলে শফিক জানতে পারে সে মরণব্যাধি এইডসে আক্রান্ত। কেননা তার মধ্যে এইডস এর লক্ষণ বা উপসর্গগুলো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এইডস আক্রান্ত ব্যক্তির দেহের ওজন হ্রাস পেতে থাকে। সেই সাথে দুই মাসের বেশি সময় ধরে পাতলা পায়খানা হতে থাকে, দীর্ঘদিন ধরে শুকনো কাশি লেগে থাকে। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমে যায় এবং এক পর্যায়ে তা সম্পূর্ণরূপে নষ্ট হয়ে যায়। HIV আক্রান্ত হলে ব্যাকটেরিয়া ভাইরাস এবং অন্যান্য মাইক্রো অর্গানিজম দ্বারা সংঘটিত রোগ সহজেই শরীরকে আক্রান্ত করে ফেলে। এইডস এর কার্যকর প্রতিষেধক এখনও আবিষ্কৃত হয়নি। এজন্যই এইডসকে ঘাতকব্যাধি বা মরণব্যাধি বলা হয়। সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকের শফিকও এইডস রোগে আক্রান্ত।

ঘ. শফিক মরণব্যাধি এইডস-এ আক্রান্ত। এ রোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে কিছু বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
বর্তমানে এইডস একটি মারাত্মক রোগ যা বিশ্বব্যাপী আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। এ রোগের প্রতিষেধক এখনও আবিষ্কার হয়নি। এ রোগ প্রতিরোধকল্পে উন্নত দেশসহ তৃতীয় বিশ্বের চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে বর্তমানে এ রোগের ছোবল থেকে রক্ষা পেতে হলে নাগরিকদের সচেতন হয়ে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
উদ্দীপকের শফিক এইডস- এ আক্রান্ত। এরোগ থেকে মুক্তি পেতে ধর্মীয় অনুশাসন সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে। একমাত্র ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চললে মানুষ পারিবারিক জীবনে বিশ্বস্ত থাকে। সেই সাথে অনিরাপদ ও বিবাহ-বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক থেকে বিরত থাকে। এছাড়া সুই কিংবা সিরিঞ্জ ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করলে এইডস এ আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। তাই কারো সাথে সুই কিংবা সিরিঞ্জ ভাগাভাগি করা যাবেনা। এইডস- এ আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত শরীরে প্রবেশ করানো যাবেনা এবং তার ব্যবহৃত সুঁচ, সিরিঞ্জ ও অন্যান্য অপারেশনের যন্ত্রপাতি জীবাণুমুক্ত করে ব্যবহার করতে হবে। এ রোগ থেকে মুক্ত থাকতে হলে পারিবারিক মূল্যবোধ রক্ষা করতে হবে। দাম্পত্য জীবনে বিশ্বস্ত থাকতে হবে, মাদকদ্রব্য সেবন থেকে বিরত থাকতে হবে, সমকামিতার কুফল সম্পর্কে প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। এছাড়াও এইডসের কারণ ও এর প্রভাব সম্পর্কে সচেতন ও সজাগ থাকতে হবে। এইডস প্রতিরোধে জনমত গড়ে় তুলতে হবে। এইডস সংক্রমণের আশঙ্কা আছে এমন কারণ থেকে নিজে দূরে থাকতে হবে এবং অন্যকেও এ ব্যাপারে সাহায্য করতে হবে।
উপর্যুক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে সতর্ক থাকলে এবং তা যথাযথভাবে মেনে চললে মরণব্যাধি এইডস প্রতিরোধ করা সম্ভব।

HSC পৌরনীতি ও সুশাসন ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায় ১০ pdf download

৭. বাংলাদেশের একজন ব্যবসায়ী খাদ্যে ভেজাল দিয়ে অনেক টাকা উপার্জন করেছেন। তাকে বিচারের সম্মুখীন করা হয় এবং আইন অনুযায়ী তার শাস্তি হয়। আসলে খাদ্যে ভেজাল দেওয়া অর্থ মানবদেহে ভেজাল দেওয়া।
ক. HIV এর বিস্তারিত রূপ লিখ।
খ. ইভটিজিং সম্পর্কে সংক্ষেপে বর্ণনা করো।
গ. উদ্দীপকের বিষয়ে দুদকের ভূমিকা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের শেষ বাক্যটি আলোচনা করো।

৭ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. HIV-এর বিস্তারিত রূপ হলো Human Immunodeficiency Virus.

খ. ইভটিজিং মূলত প্রকাশ্যে যৌন হয়রানি, পথেঘাটে উত্ত্যক্ত করা বা পুরুষ দ্বারা নারী নির্যাতন নির্দেশক একটি শব্দ।
বর্তমানে ইভটিজিং বেড়ে যাওয়ার পেছনে পরিবারে নারীদের যথাযথ মূল্যায়ন না করা ও নারীদের প্রতি বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি অনেকটা দায়ী। এছাড়াও পারিবারিক ও সামাজিকভাবে সুশিক্ষার অভাব, নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়, পরিবারে শিশুর সঠিক সামাজিকীকরণের অভাব ইভটিজিং এর কারণ হিসেবে ধরা যায়। মাদকাসক্ত ও বেকার যুবকরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়লে নিজের প্রতি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে এবং ইভটিজিং করে। এছাড়াও ধর্মীয় অনুশাসনের অভাব, বিদেশি সংস্কৃতির প্রভাব, স্যাটেলাইট টেলিভিশন ইভটিজিং এর জন্যে ব্যাপকভাবে দায়ী।

গ. উদ্দীপকে খাদ্যে ভেজাল সমস্যা নিয়ে আলোকপাত করা হয়েছে।
বর্তমানে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে যে সমস্যাগুলো প্রকট হয়ে উঠছে খাদ্যে ভেজাল তার মধ্যে অন্যতম। মাছ, মাংস, তরিতরকারি থেকে শুরু করে তৈরি খাবার, ফলমূল এমনকি শিশুখাদ্যে পর্যন্ত ভেজালের ভয়ঙ্কর দৌরাত্ম্য লক্ষ করা যাচ্ছে। একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীর সীমাহীন মুনাফা অর্জনের লোভ, নাগরিক অসচেতনতা এবং আইন প্রণয়নে প্রশাসনের শিথিলতাই এ সমস্যার প্রধান কারণ। এ সমস্যা সমাধানে সাধারণ জনগণের পাশাপাশি সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অনেক দায়িত্ব রয়েছে। তন্মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের ভূমিকা নিচে ব্যাখ্যা করা হলো-
সাধারণ অর্থে নীতিবিহীন কাজ করাই হচ্ছে দুর্নীতি। উদ্দীপকের খাদ্যে ভেজাল এ নীতিবিহীন কাজেরই একটি অংশ। বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশন এসব নীতিবিহীন কাজকে কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। দুর্নীতি দমন কমিশন অপরাধসমূহ অনুসন্ধান ও তদন্ত পরিচালনা, মামলা দায়ের ও পরিচালনা, গণসচেতনতা গড়ে তোলা, দেশে বিদ্যমান বিভিন্ন অপরাধের উৎস চিহ্নিত করতে নানা কাজ করে যাচ্ছে। তাছাড়া খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধের বিষয়ে গবেষণা পরিকল্পনা তৈরি করে এবং গবেষণালব্ধ ফলাফলের ভিত্তিতে করণীয় সম্পর্কে রাষ্ট্রপতির নিকট সুপারিশ পেশ করে।

ঘ. উদ্দীপকের শেষ বাক্যটি অর্থাৎ 'আসলে খাদ্যে ভেজাল দেয়া অর্থ মানবদেহে ভেজাল দেওয়া।
উদ্দীপকের এ বাক্যটি দ্বারা আমরা খাদ্যে ভেজালের প্রভাব সম্পর্কে অবগত হই। খাদ্যে ভেজাল মানবদেহে নানা ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। নিচে তা আলোচনা করা হলো:
খাদ্যদ্রব্যে ভেজালের আধিক্য সমাজজীবনের সুদূরপ্রসারী নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল দেশের জনস্বাস্থ্যের সমস্যাকে তীব্রতর করে তুলছে।
ভেজাল খাদ্যদ্রব্য মানুষের মধ্যে নানা রোগ ছড়িয়ে থাকে। এ খাদ্যদ্রব্য গ্রহণে পেটের পীড়া, আলসার, দৃষ্টিহীনতা এমনকি ক্যান্সারের মতো রোগে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। শিশুরা নানা রকম ভেজাল খাদ্য যেমন জুস, চানাচুর, চিপস, চকোলেট প্রভৃতি খাদ্য গ্রহণ করে মারাত্মকভাবে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে; যা নতুন প্রজন্মকে দুর্বল জাতিতে পরিণত করছে। ভেজাল খাদ্যদ্রব্যের কারণে যে স্বাস্থ্যহীনতার সৃষ্টি হয় তা কর্মক্ষম মানুষের কর্মস্পৃহা ও উৎপাদন ক্ষমতাকে হ্রাস করে। ভেজালের দৌরাত্ম্যে তরুণ-তরুণীদের জীবনে নেমে আসছে অন্ধকার। দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ খাদ্যে, পানীয়ে, ওষুধে ভেজাল খেয়ে প্রতিনিয়ত অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
সুতরাং আমরা বলতে পারি, খাদ্যে ভেজাল একটি সামাজিক অপরাধ। এ অপরাধ মানুষের প্রাত্যহিক খাবারের মাধ্যমে তার রক্তের মধ্যে প্রবেশ করছে। তাই ভেজালের সর্বনাশা গ্রাস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টা জরুরি।

৮. বাশার সাহেব একটি খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। তিনি তার ক্ষমতার জোরে পরিবারের অনেক সদস্যকে উক্ত প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেন। তার এ অন্যায় নীতির কারণে অনেক মেধাবী এ প্রতিষ্ঠানে চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়।
ক. গ্রিন হাউস গ্যাস কী?
খ. বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বলতে কী বোঝায়?
গ. বাশার সাহেবের কার্যক্রমে সমাজজীবনের কোন সমস্যাটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত সমস্যা প্রতিহত করতে নাগরিক সমাজের করণীয় তোমার পাঠ্যসূচির আলোকে মূল্যায়ন করো।

৮ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড প্রভৃতি গ্যাসের সমন্বয়ে গঠিত গ্যাসই হলো গ্রিন হাউজ গ্যাস।

খ. বিশ্বে উষ্ণায়নের হার ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাওয়াকে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বলা হয়।
বায়ুম-লে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট গ্যাস যেমন কার্বন-ডাই-অক্সাইড এবং মিথেনের এক ধরনের তাপ ধারণক্ষম প্রভাব রয়েছে। বায়ুম-লে এ রকম নানা ধরনের গ্রিনহাউস গ্যাসের মাত্রা বেড়ে গিয়ে মহাশূন্যে তাপ নির্গমনে বাধার সৃষ্টি করছে, যার ফলাফল হচ্ছে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন। যখন বায়ুম-লে গ্রিনহাউস গ্যাসের মাত্রা বেড়ে যায় তখন স্বাভাবিকভাবেই মহাশূন্যে তাপের বিকিরণ কমে যায় এবং বৈশ্বিক তাপমাত্রা যা বৈশ্বিক উষ্ণায়ন হিসেবে পরিচিত।

গ. বাশার সাহেব একটি খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। তিনি তার ক্ষমতার জোরে পরিবারের অনেক সদস্যকে উক্ত প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেন। তার এ অন্যায় নীতির কারণে অনেক মেধাবী এ প্রতিষ্ঠানে চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়। আলোচ্য উদ্দীপকে বাশার সাহেবের কার্যক্রমে সমাজজীবনের অন্যতম সমস্যা দুর্নীতির বিষয়টি ফুটে উঠেছে। নিচে বিষয়টি ব্যাখ্যা করা হলো-
পাঠ্যবইয়ের বর্ণনায় দেখা যায় যে, সাধারণভাবে যেসকল কার্যাবলি নীতি-আদর্শ ও মূল্যবোধ বহির্ভূত তাই দুর্নীতি। দুর্নীতি মূলত সামাজিক অপরাধ। বাংলাদেশে যথেষ্ট আইন থাকলেও আইনের যথাযথ প্রয়োগ নেই। বরং দুর্নীতিবিরোধী আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাবে বাংলাদেশে দুর্নীতি ক্রমশ বেড়েই চলেছে। উদ্দীপকে বাশার সাহেব ক্ষমতার জোরে পরিবারের সদস্যদেরকে অন্যায়ভাবে চাকরি দেন। এভাবে চলতে থাকলে এক সময় দেশ দুর্নীতির কালো ছায়ায় নিমজ্জিত হয়ে পড়বে। স্বজনপ্রীতি ছাড়াও দুর্নীতির আরো নানাবিধ কারণ আছে। যেমন- আর্থিক অসচ্ছলতা, সামাজিক প্রভাব ও মর্যাদা বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতা, রাজনৈতিক অস্থিরতা, আইনের ফাঁকফোকর ইত্যাদি। দুর্নীতির করালগ্রাসে দিন দিন দেশ বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হচ্ছে।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত সমস্যাটি হলো দুর্নীতি। দুর্নীতি প্রতিহত করতে নাগরিক সমাজের করণীয় বিষয় আমার পাঠ্যসূচির আলোকে আলোচনা করা হলো-
১. দুর্নীতি রোধে কঠোর আইন প্রণয়ন ও তা কার্যকর করা।
২. সর্বক্ষেত্রে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
৩. ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ও তথ্য লাভের অধিকার সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন করতে হবে।
৪. বাক স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
৫. আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
৬. বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
৭. সরকারের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয়ের হিসাবনিকাশ (নিরীক্ষা) নিয়মিতভাবে সম্পন্ন করতে হবে।
৮. দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে সৎ ও নিষ্ঠাবান ব্যক্তি ও কর্মীদের পুরস্কৃত করে উৎসাহ দিতে হবে এবং যারা অসৎ তাদেরকে তিরস্কৃত করতে হবে, শাস্তি দিতে হবে। প্রয়োজনে অপসারিত করতে হবে।
৯. গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
১০. বেতনভুক্ত কর্মচারীদেরকে ন্যায্য পারিশ্রমিক দিতে হবে।
পরিশেষে বলা যায় যে, দুর্নীতি রোধে উপরিউক্ত সুপারিশ ছাড়াও মূল্যবোধের বিকাশ এবং ধর্মীয় শিক্ষা প্রসারের মাধ্যমে দুর্নীতির ভয়াবহতা অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।

৯. জাভেদ ভাগ্যোন্নয়নের জন্য চাকরি নিয়ে সিঙ্গাপুর যায়। চার বছর চাকরি করার পর সে দেশে ফিরে আসে। কিছুদিন পর সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তার শরীরের ওজন দ্রুত হ্রাস পেতে থাকে। ঘনঘন জ্বর হয়, হজম শক্তি কমতে থাকে, স্মরণশক্তি লোপ পায় এবং সে ক্রমাগত দুর্বল হতে থাকে। ডাক্তার বিভিন্ন পরীক্ষা করে বলেন যে, জাভেদ ভাইরাসজনিত একটি রোগে আক্রান্ত হয়েছে। ডাক্তারের কথা শুনে জাভেদের পরিবার ও বন্ধু-বান্ধব জাভেদের প্রতি সহযোগিতা ও সহমর্মিতার হাত প্রসারিত করে।
ক. ইভটিজিং কাকে বলে?
খ. অটিজম বলতে কী বোঝায়?
গ. জাভেদ যে রোগে আক্রান্ত হয়েছে তার নাম উল্লেখপূর্বক রোগটি প্রতিরোধের উপায় ব্যাখ্যা করো।
ঘ. জাভেদের প্রতি তার পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবের আচরণ অত্যন্ত ইতিবাচক ও মানবিক মূল্যায়ন করো।

৯ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. পুরুষ কর্তৃক নারীকে উত্ত্যক্ত করা, লাঞ্ছিত করা বা যৌন নিপীড়ন করাকে ইভ-টিজিং বলে।

খ. অটিজম মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বিকাশের একটি জটিল প্রতিবন্ধকতা, যা শিশুর জন্মের এক বৎসর ছয়মাস হতে তিন বৎসরের মধ্যে প্রকাশ পায়।
এ ধরনের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সাধারণত শারীরিক গঠনে কোনো সমস্যা বা ত্রুটি থাকে না। এমনকি তাদের চেহারা, অবয়ব অন্যান্য সুস্থ ও স্বাভাবিক মানুষের মতোই থাকে। অনেক ক্ষেত্রে ছবি আঁকা, গান করা, কম্পিউটার চালনা বা গাণিতিক সমাধানসহ অনেক জটিল বিষয়ে এ ধরনের ব্যক্তিরা বিশেষ দক্ষতা প্রদর্শন করে থাকে।

গ. উদ্দীপকের বর্ণনায় জাভেদ এইডসে আক্রান্ত হয়েছে।
এইডস প্রতিরোধে পুরুষের ভূমিকা মুখ্য। সমকামী পুরুষ দ্বারা পরিবারের নারীরা আক্রান্ত হয়। পুরুষ থেকে নারীতে এইচআইভি সংক্রমণের সংখ্যা ৮ গুণ বেশি। কারণ পুরুষের যৌনসঙ্গী বেশী থাকে। তাই পুরুষরা সচেতন হলে এ রোগ প্রতিরোধ করা অনেকটা সম্ভব। তাছাড়া অবাধ যৌন মেলামেশা পরিহার করা, যৌন মেলামেশায় স্বামী-স্ত্রী একে অপরের বিশ্বস্ত থাকা, ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা, ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ পরিহার করা, স্ত্রী সমত্মানের প্রতি বিশ্বস্ত থাকা, কেবল একজন যৌন সঙ্গী বেছে নিয়ে যৌনকর্মীদের সঙ্গ ত্যাগ করা, ঝুঁকিপূর্ণক্ষেত্রে কনডম ব্যবহার করা, রক্ত গ্রহণের সময় সুঁচ ভাইরাস মুক্ত কিনা তা দেখা ইত্যাদি।
পরিশেষে বলা যায়, উপরিউক্ত উপায়ে এইডস প্রতিরোধ করা যেতে পারে।

ঘ. উদ্দীপকে জাভেদের প্রতি তার পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবের আচরণ অত্যন্ত ইতিবাচক ও মানবিক।
এইচআইভি এইডস ভাইরাসজনিত একটি রোগ। অনিরাপদ শারীরিক সম্পর্ক এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত গ্রহণ, এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তির সুঁচ ও সিরিঞ্জ ব্যবহার, শিশুর জন্মের সময়, পূর্বে ও পরে এইচআইভি আক্রান্ত হলে, এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তির ব্রাশ ও দাড়ি কামানোর ব্লেডড ব্যবহার ইত্যাদি কারণে এইডস রোগ হয়। এটি ছোঁয়াচে রোগ নয়। তাই এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সেবা করলে হুমকির কোনো সম্ভাবনা নেই। বরং এইডসে আক্রান্ত ব্যক্তিকে সেবাদানের মাধ্যমে মানসিকভাবে অনেকটাই সুস্থ করে তোলা সম্ভব। অথচ এইডসে আক্রান্ত বেশিরভাগ রোগীরা পরিবার ও আত্মীয় স্বজনের সহযোগিতা ও সেবা তো পায়ই না বরং তারা ঘৃণার পাত্র হিসেবে বিবেচিত হন। এমতাবস্থায় এইডসে আক্রান্ত রোগীটি রোগে ও মানসিকভাবে ভুগতে ভুগতে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হয়।
উদ্দীপকের বর্ণনা মতে, জাভেদ এইডসে আক্রান্ত হলে জাভেদের পরিবার ও বন্ধু-বান্ধব জাভেদের প্রতি সহযোগিতা ও সহমর্মিতার হাত প্রসারিত করে। তাদের আচরণ নি:সন্দেহে অত্যন্ত ইতিবাচক ও মানবিক। এইডসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সাথে এমন ইতিবাচক ও মানবিক আচরণই সকলের নিকট কাম্য।

১০. মারুফ বাজার থেকে একটি রুই মাছ কিনে আনে। ভুলে মাছটি ফ্রিজে না রেখে টেবিলে রেখে গ্রামের বাড়ি চলে যায়। তিন দিন পর ফিরে এসে দেখে টেবিলে মাছ পড়ে আছে কিন্তু একটুও পঁচেনি। সে অবাক হয়। এখন সে বাজার থেকে আম, আপেল বা অন্য কোনো ফল কিনতেও ভয় পায়।
ক. অ্যাটর্নি জেনারেলকে নিয়োগদান করেন কে?
খ. বাংলাদেশের বৈদেশিক নীতির গুরুত্বপূর্ণ দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
গ. মারুফ এর ক্রয়কৃত মাছ না পঁচার কারণ কী? ব্যাখ্যা করো। 
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ঘটনার কারণে জনজীবনে যে প্রভাব পড়তে পারে তার প্রতিকারে তোমার মতামত দাও।

১০ নম্বর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. অ্যাটর্নি জেনারেলকে নিয়োগদান করেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি।

খ. বৈদেশিক নীতি হলো জাতীয় নীতির সেই অংশ, যা বহির্বিশ্বের সাথে সম্পর্কযুক্ত। বাংলাদেশের বৈদেশিক নীতির গুরুত্বপূর্ণ দুটি বৈশিষ্ট্য হলো-
১. সবার সাথে বন্ধুত্ব: বাংলাদেশের বৈদেশিক নীতির প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে শত্রুতা নয়। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ ঘোষণা করেন।
২. স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা: বাংলাদেশের বৈদেশিক নীতির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ভৌগোলিক অখ-তা রক্ষা করা এবং সমতা বজায় রাখা।

গ. মারুফ এর ক্রয়কৃত মাছ না পঁচার কারণ হলো মাছে বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ ফরমালিন মেশানো হয়েছে।
উদ্দীপকের বর্ণনায় দেখা যায়, মারুফ বাজার থেকে একটি রুই মাছ কিনে আনে। ভুলে মাছটি ফ্রিজে না রেখে টেবিলে রেখে গ্রামের বাড়ি চলে যায়। তিন দিন পর ফিরে এসে দেখে টেবিলে মাছ পড়ে আছে কিন্তু একটুও পঁচেনি। পাঠ্যবইয়ের বর্ণনায় দেখা যায় যে, বর্তমানে সারাদেশে খাদ্যে ভেজাল এক মহামারি আকার ধারণ করেছে। বাজারে সব ধরনের ফলমূল, তরিতরকারি, মাছ, মাংস এবং দুধে নানারকম বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ যুক্ত করে বিক্রি করছে। ব্যবসায়ী প্রতিদিন তাদের পণ্যে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহার করেন।- যেমন ফরমালিন, কার্বাইড ইত্যাদি। পচনশীল দ্রব্যকে চড়া দামে বিক্রি করার জন্য এবং এর স্থায়ীত্ব দীর্ঘ করতে এগুলো করেন তারা। ব্যবসায়ীরা সাদা ডিম কেমিক্যাল দিয়ে লাল করছে। তরমুজ, সস ও জেলিতে মিশাচ্ছে বিষাক্ত রং। দেশের অধিকাংশ খামারে গরুকে খাওয়াচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত ইউরিয়া সার ও সোডা।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ঘটনা তথা মাছে ফরমালিন মেশানোর কারণে জনজীবনে মারাতমক ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। নিচে এর প্রতিকার সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
১. সরকারিভাবে জেলাভিত্তিক নিয়মিত ফরমালিনের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা।
২. মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের দমনে সৎ ও যোগ্য লোকের হাতে নেতৃত্ব প্রদান করতে হবে।
৩. ফরমালিন বিরোধী অভিযান পরিচালনার জন্য স্বতন্ত্র একটি অধিদপ্তর গঠন করা।
৪. ফরমালিন বিরোধী কঠোর আইন প্রণয়ন করা ও তার যথাযথ প্রয়োগ করা।
৫. ফরমালিনের ক্ষতিকর দিকগুলো বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া।
৬. প্রত্যেক বাজারে ক্রেতাদের জন্য অভিযোগ বক্স স্থাপন করে তাদের অভিযোগ মতো যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
৭. ফরমালিন আর ক্ষতিকারক রাসায়নিক দ্রব্য প্রয়োগকারীদেরকে শাস্তির পরিমাণ বাড়াতে হবে এবং আর্থিক জরিমানার বিধান করতে হবে।
৮. নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষার বিস্তার ঘটাতে হবে।
উপরিউক্ত সুপারিশসমূহের মাধ্যমে ফরমালিনের প্রতিকার পাওয়া সম্ভব।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post