G

SSC স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো কবিতার (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download

স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর | নবম-দশম শ্রেণির গাইড
নবম-দশম শ্রেণি
বাংলা ১ম পত্র গাইড
কবিতা/পদ্য

স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো
নির্মলেন্দু গুণ

SSC Bangla 1st Paper Kobita
Sadhinot Shobdoti Kivabe Amader Holo
Srijonshil
Question and Answer pdf download
স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর: নবম-দশম শ্রেণি


১নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
দুলিতেছে তরী ফুলিতেছে জল, ভুলিতেছে মাঝি পথ,
ছিঁড়িয়াছে পাল, কে ধরিবে হাল, আছে কার হিম্মৎ?
কে আছ জোয়ান হও আগুয়ান হাঁকিছে ভবিষ্যৎ।
ক. সব স্মৃতি মুছে দিতে কী উদ্যত?  ১
খ. ‘ঢেকে দেয়া এই ঢাকার হৃদয় মাঠখানি’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? ২
গ. উদ্দীপকটি ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’- কবিতার কোন দিককে উন্মোচিত করেছে- ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকটি ‘স্বাধীনতা’ এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’- কবিতার সমগ্র ভাবকে ধারণ করেনি- মূল্যায়ন করো। ৪

১ এর ক নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
✍ সব স্মৃতি মুছে দিতে উদ্যত হয়েছে কালো হাত।

১ এর খ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
✍ ‘ঢেকে দেয়া এই ঢাকার হৃদয় মাঠখানি’- বলতে রেসকোর্স ময়দানকে বোঝানো হয়েছে, যেখানে বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন।

✍ ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন বঙ্গবন্ধু। সেই ভাষণে ধ্বনিত হয়েছিল বাঙালির মুক্তির চূড়ান্ত দিক নির্দেশনা। কবি তাই এ স্থানটিকে ঢাকার হৃদয় মাঠ বলে অভিহিত করেছেন। কিন্তু স্মৃতিময় এ স্থানটি এখন খেলনা, বাগান ইত্যাদিতে সজ্জিত। কবি মনের ঢাকার হৃদয় মাঠ খানিকে এভাবেই সুকৌশলে ঢেকে দিয়েছে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি।

১ এর গ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
✍ উদ্দীপকটিতে ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় বর্ণিত স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার দৃঢ় সংকল্পের দিকটি উন্মোচিত করেছে।

✍ পাকিস্তানি স্বৈরশাসনের নাগপাশ থেকে বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য ১৯৭১ সালে ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু লক্ষ জনতার মাঝে এক ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন। জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য তিনি প্রেরণা জুগিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সে ভাষণ ছিল কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ের প্রতিধ্বনি। জনগণের হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসায় সিক্ত সেদিনের ভাষণে বঙ্গবন্ধু যেন কবিতার মতো প্রতিটি শব্দ উচ্চারণ করেছিলেন। তাঁর তেজোদ্দীপ্ত ভাষণই স্বাধীনতা সংগ্রামের পথ দেখিয়েছিল। রেসকোর্স ময়দানের সে ভাষণের মহিমা নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্য কবি নির্মলেন্দু গুণ ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতাটি লিখেছেন।

✍ উদ্দীপকটিতে কবি একটি দিকনির্দেশনাহীন পথহারা জাতির ভবিষ্যৎ নির্মাণের জন্য এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন। টালমাটাল ও হতাশাগ্রস্ত জাতিকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তিনি জোয়ানদের এগিয়ে আসতে বলেছেন। জোওয়ানরা যদি হাল না ধরে তবে উদ্ধারের আশা নেই। দেশ জাতির স্বার্থে দৃঢ়তার সাথে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়দীপ্ত আহবান জানিয়েছে উদ্দীপকটি। আলোচ্য ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার দৃঢ় সংকল্পের কথা যেভাবে ব্যক্ত হয়েছে উদ্দীপকেও তার প্রতিধ্বনি রয়েছে।

১ এর ঘ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
✍ ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় বঙ্গবন্ধুর ভাষণসহ স্বাধীনতা সংগ্রামের বিভিন্ন দিক আলোচিত হলেও উদ্দীপকে শুধু নেতৃত্বহীন জাতিকে নেতৃত্বদানের জন্য এগিয়ে আসার আহবান জানানো হয়েছে।

✍ মহান স্বাধীনতা আমাদের গৌরবের অর্জন। এই স্বাধীনতা অর্জনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা ছিল অসামান্য। ৭ই মার্চের ভাষণ ছিল পাকিস্তানি স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে এক সোচ্চার প্রতিবাদ। নির্যাতিত নিষ্পেষিত বাঙালির পক্ষে তিনি গর্জে উঠেছিলেন। রেসকোর্সের ভাষণে তিনি হৃদয়ের সবটুকু আবেগ দিয়ে বাঙালির মনোভাবকে সঠিকভাবে ব্যক্ত করতে পেরেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সাহসী উচ্চারণে জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুক্তি সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। বিজয় ছিনিয়ে এনেছিল। ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় কবি বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক ভাষণের প্রেক্ষাপট ও ফলাফল তুলে ধরেছেন।

✍ উদ্দীপকে একটি হতাশাগ্রস্ত জাতির মধ্যে সাহস সঞ্চারের চেষ্টা করা হয়েছে। উদ্দীপকের জাতির সঠিক নেতৃত্ব নেই। তারা দিকভ্রষ্ট। জোয়ানদের আহবান জানানো হয়েছে জাতির হাল ধরার জন্য, ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের জন্য। দিকনির্দেশনাবিহীন জাতি অসহায় নিঃস্ব। তাদের উদ্ধারের জন্য একজন দক্ষ নাবিক প্রয়োজন। উদ্দীপকে এই দক্ষ নাবিকের অন্বেষণ করা হয়েছে, যে জাতিকে সমূহ বিপদ থেকে উদ্ধার করবে।

✍ আলোচ্য ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় আমরা দেখি বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণে দেশপ্রেম জাগ্রত করা ঐতিহাসিক রেসকোর্সের বর্ণনা, লক্ষ লক্ষ জনতার অংশগ্রহণ, বঙ্গবন্ধুর পরিচয়, ইত্যাদি বিষয় আলোচিত হয়েছে। কিন্তু উদ্দীপকে শুধু নেতৃত্বহীন জাতিকে নেতৃত্ব প্রদানের আহবান জানানো হয়েছে। কবিতায় বর্ণিত হয়েছে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শোনার জন্য মানুষের আকুলতার স্বরূপ। বাংলার মানুষের মক্তিসংগ্রামের ইতিহাস। স্বাধীনতাবিরোধীদের অপতৎপরতা ইত্যাদি বিষয়ও কবিতায় ঠাঁই পেয়েছে। ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণের মর্মার্থ নতুন প্রজন্মকে জানানোর কথা বলেছেন কবি। কিন্তু উদ্দীপকে শুধু একজন দক্ষ নেতার অনুসন্ধান করা হয়েছে। তাই উদ্দীপকটি কবিতার সমগ্রতাকে ধারণ করেনি।

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো
কবিতা
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

SSC Bangla 1st Paper
Sadhinot Shobdoti Kivabe Amader Holo
Kobita
Srijonshil
Question-Answer
২নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
পৃথিবীর ইতিহাসে যে কয়জন মানবতাবাদী গণতন্ত্রপ্রেমী মহান রাষ্ট্রনায়ক জন্মগ্রহণ করেছেন তাঁদের মধ্যে বিশিষ্টতম হলেন আব্রাহাম লিংকন। একটা সময় আমেরিকায় কালোদের মানুষ মনে করা হতো না। তাদেরকে হাটে-বাজারে-বন্দরে ক্রীতদাস হিসেবে বিক্রি করা হতো পোষা প্রাণীর মতো। এমন নিষ্ঠুরতা দেখে তিনি এই অমানবিক ব্যবসার বিরুদ্ধে ক্রীতদাসদের চেতনা জাগিয়ে তুলেছিলেন। প্রতিবাদে কাঁপিয়ে তুলেছিলেন গোটা আমেরিকা। তিনি বজ্রকণ্ঠে বলেছিলেন “দেশের অর্ধেক মানুষ যখন ক্রীতদাস তখন স্বাধীনতা এক নির্মম রসিকতার নামান্তর”। তাঁর এই বক্তব্যে উদ্বেল হয়ে উঠেছিল আমেরিকার জনগণ। শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে আমেরিকার ১৬তম প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব আব্রাহাম লিংকনের হাতেই তুলে দিয়েছিলেন জনগণ।
ক. কী লেখা হবে বলে লক্ষ লক্ষ বিদ্রোহী শ্রোতা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে? ১
খ. ‘জনসমুদ্রের উদ্যান সৈকত’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? ব্যাখ্যা করো। ২
গ. উদ্দীপকের আব্রাহাম লিংকনের ভাষণ কোন দিক থেকে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের সাথে তুলনীয়? ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার আলোকে ব্যাখ্যা করো। ৩ 
ঘ. বঙ্গবন্ধু ও আব্রাহাম লিংকন দুজনেই ছিলেন সত্যিকারের জননেতা- উক্তিটি উদ্দীপক ও ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার আলোকে বিশ্লেষণ করো। ৪

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. একটি কবিতা লেখা হবে বলে লক্ষ লক্ষ বিদ্রোহী শ্রোতা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।

খ. ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে মানুষের ঢল এবং ঐতিহাসিক মঞ্চটি কাব্যিক ব্যঞ্জনা পেয়েছে আলোচ্য কথাটির মাধ্যমে।

✍ ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শোনার জন্য হাজির হয়েছিল লক্ষ লক্ষ মানুষ। কবি মানুষের এমন অভূতপূর্ব সমাবেশকে কল্পনা করেছেন জনসমুদ্রের বাগানরূপে। সেই জনসমুদ্রের একদিকে ছিল বক্তৃতার মঞ্চটি। কবির ভাষায় সেটি যেন সেই জনসমুদ্রের তীর বা সৈকত। সমুদ্রের ঢেউগুলো যেমন সৈকতে এসে আছড়ে পড়ে। তেমনি রেসকোর্স ময়দানের লক্ষ জনতার সমস্ত ব্যাকুলতা ছিল মঞ্চটিকে কেন্দ্র করে।

গ. উদ্দীপকের আব্রাহাম লিংকনের ভাষণ স্বাধীনতার প্রেরণা জাগ্রত করার দিক থেকে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের সাথে তুলনীয়।

✍ ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ মানুষের মনে স্বাধীনতা ও দেশপ্রেমের প্রেরণা জাগ্রত করেছিল। এই ভাষণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি স্বৈরশাসনের নিগড় থেকে মুক্তির প্রেরণা দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু এদিন বাঙালি জাতির মুক্তি ও স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন। জনগণ তাঁর ভাষণ শুনে খুঁজে পেয়েছিল সঠিক দিকনির্দেশনা। ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় কবি ঐতিহাসিক এই ভাষণের মর্মার্থই তুলে ধরেছেন।

✍ উদ্দীপকের আব্রাহাম লিংকন তার ভাষণে কৃষ্ণাঙ্গদের মুক্তির প্রেরণা জুগিয়েছেন। শ্বেতাঙ্গদের সৃষ্ট দাসপ্রথার শৃঙ্খল থেকে কৃষ্ণাঙ্গরা মুক্তির স্বপ্ন দেখেছিল আব্রাহাম লিংকনের ভাষণ শুনে। তিনি বজ্রকণ্ঠে কালোদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের ঘোষণা দিয়েছিলেন। আব্রাহাম লিংকনের এই বজ্রকণ্ঠী ভাষণ বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। অধিকার আদায়ের প্রেরণা জাগ্রতকরণে উদ্দীপকের আব্রাহাম লিংকনের ভাষণ এবং কবিতায় বর্ণিত বঙ্গবন্ধুর ভাষণ একই ধারায় প্রবাহিত।

ঘ. সত্যিকারের জননেতা হওয়ার কারণেই অধিকার বঞ্চিত জনগণ উদ্দীপকের আব্রাহাম লিংকন এবং বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বকে বরণ করে নিয়েছিল।

✍ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা। তাঁর অনলবর্ষী ভাষণ শুনে জনগণ বিমোহিত হয়ে যেত। ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে অধিকার আদায়ের চেতনায় জাগ্রত করেছিলেন। পাকিস্তানি স্বৈরশাসনের হাত থেকে মুক্তির স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। তাঁর বক্তৃতা শুনতে ভিড় করেছিল কৃষক-শ্রমিক-মজুর-বুদ্ধিজীবী, শিশু-কিশোর সকলেই। একজন সত্যিকারের নেতাই পারেন একটি পুরো জাতিকে এভাবে একই কাতারে দাঁড় করাতে। ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় বঙ্গবন্ধুর এই সত্যিকারের নেতৃত্বের গুণটিই প্রকাশ পেয়েছে।

✍ উদ্দীপকে আব্রাহাম লিংকন তাঁর নেতৃত্বের গুণেই প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করতে পেরেছিলেন। তিনি বজ্রকঠিন বক্তৃতায় আমেরিকানদের মন জয় করতে পেরেছিলেন। ফলে আমেরিকানরা তাকে নতুন দিনের অগ্রসৈনিক হিসেবে গ্রহণ করেছিল। ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় বর্ণিত বঙ্গবন্ধুকে যেভাবে বাঙালি জাতি নেতা হিসেবে বরণ করেছিল তেমনি আব্রাহাম লিংকনকেও আমেরিকাবাসী তাদের ভবিষ্যৎ নাবিক হিসেবে মনে করেছিল।

✍ কবিতায় বর্ণিত বঙ্গবন্ধু এবং উদ্দীপকের লিংকন উভয়েই জনগণের হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থান করে নিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর আহবানে স্বতস্ফুর্তভাবে সাড়া দিয়েছিল বাংলার জনগণ। সেই আহবানে সাড়া দিয়েই তারা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিল। তেমনি লিংকনের আহবানেও সাড়া দিয়েছিল আমেরিকার জনগণ। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই লিংকনের আহবান গ্রহণ করে তাঁকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেছিল। উভয়েই মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে গেছেন। হতে পেরেছেন সকলের অতি আপন। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের আব্রাহাম লিংকন এবং কবিতার বঙ্গবন্ধু দুজনেই ছিলেন সত্যিকারের জননেতা।
 
এসএসসি বোর্ড পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতির জন্য পড়ুন সৃজনশীল ও বহুনির্বাচনি প্রশ্ন-উত্তরসহ:

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো
কবিতা
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

SSC Bangla 1st Paper
Sadhinot Shobdoti Kivabe Amader Holo
Kobita
Srijonshil
Question-Answer
৩নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
‘শিল্পী, কবি, দেশী কি বিদেশী সাংবাদিক
খদ্দের, শ্রমিক, ছাত্র, বুদ্ধিজীবী, সমাজসেবিকা
সবাই এলেন ছুটে, পল্টনের মাঠে, শুনবেন
দুর্গত এলাকা প্রত্যাগত বৃদ্ধ মওলানা ভাসানী
কী বলেন। রৌদ্রালোকে দাঁড়ালেন তিনি দৃঢ়, ঋজু
শোনালেন কিছু কথা, যেন নেতা নন,
অলৌকিক স্টাফ রিপোর্টার।’
ক. বর্তমান বৃক্ষশোভিত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পূর্বনাম কী? ১
খ. বঙ্গবন্ধুকে কবির সাথে তুলনা করা হয়েছে কেন? ২
গ. উদ্দীপকের সাথে ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার কোন দিকটির সাদৃশ্য রয়েছে? ব্যাখ্যা করো।  ৩
ঘ. ‘উদ্দীপকের ‘অলৌকিক স্টাফ রিপোর্টার’ এবং নির্মলেন্দু গুণের ‘কবি’ একসূত্রে গাঁথা’- উক্তিটির যৌক্তিকতা বিচার করো।  ৪

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. বর্তমান বৃক্ষশোভিত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পূর্বনাম রেসকোর্স ময়দান।

খ. বঙ্গবন্ধুর বাঙালি হৃদয়ের আবেগপ্রবণ প্রকাশ কবিসুলভ ছিল বলে তাঁকে কবির সাথে তুলনা করা হয়েছে।

✍ ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় কবি নির্মলেন্দু গুণ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কল্পনা করেছেন কবিরূপে। কারণ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতার স্বপ্ন ও অনুভূতির রূপকার। তাঁর ভাষণে তিনি বাঙালির মুক্তির আকাক্সক্ষার কথা তুলে ধরেছিলেন বিদগ্ধ এক কবির মতো করেই। লক্ষ লক্ষ মানুষকে বঙ্গবন্ধু আকর্ষণ করতে পারতেন আবেগময় বাগ্মিতায়। তিনি ছিলেন যথার্থ রাজনীতির কবি। তিনি বক্তৃতায় জনগণকে মন্ত্রমুগ্ধের মতো সম্মোহিত করতে পারতেন বলে তাঁকে কবি বলা হয়েছে।

গ. উদ্দীপকের জনসভার সাথে ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় উল্লিখিত রেসকোর্স ময়দানের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক জনসভার দিকটির সাদৃশ্য হয়েছে।

✍ ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় বর্ণিত হয়েছে যে, ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু রমনার রেসকোর্স ময়দানে লক্ষ লক্ষ মানুষের সম্মুখে বজ্রকণ্ঠে ভাষণ দেন। তাতে তিনি পাকিস্তানি স্বৈরশাসনের নিগড় থেকে বাঙালি জাতির মুক্তি ও স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন। বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণের মাঝেই নিহিত ছিল আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্ন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহবান। সেদিন কৃষক-শ্রমিক, মজুর-বুদ্ধিজীবী-শিশু-কিশোর-নারী-পুরুষ-বৃদ্ধ সবাই সমবেত হয়েছিল বাঙালির মহান  নেতার কথা শোনার জন্য।

✍ উদ্দীপক কবিতাংশে ফুটে উঠেছে আরেকজন বিখ্যাত রাজনৈতিক নেতা মওলানা ভাসানীর পল্টনের মাঠে ভাষণ প্রদানের অনুষ্ঠানের কথা। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ভাসানীর বক্তব্য শোনার জন্য ছুটে এসেছিলেন। ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় ১৯৭১ সালে ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে প্রদত্ত বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের যে দৃশ্য উপস্থাপিত হয়েছে সেই দৃশ্যের সাথে উদ্দীপকের মওলানা ভাসানীর ভাষণ প্রদানের দৃশ্যের সাদৃশ্য রয়েছে। দুই মহান নেতা দাঁড়িয়েছেন জনতার সামনে।

ঘ. উদ্দীপকের ‘অলৌকিক স্টাফ রিপোর্টার’ এবং ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় উল্লিখিত কবি এক সূত্রে গাঁথা। কেননা দুটো বিশেষণই নেতৃত্বের বিশালতাকে তুলে ধরেছে।

✍ ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় বঙ্গবন্ধুকে আখ্যায়িত করা হয়েছে কবি হিসেবে। বঙ্গবন্ধু ছিলেন যথার্থই রাজনীতির কবি। তাঁর ভাষণ ছিল সম্মোহনী শক্তিসম্পন্ন। তাঁর জাদুকরী বাগ্মিতায় মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে যেত সামনে বসে থাকা জনতা। দেশ ও দেশের মানুষের জন্য তাঁর সীমাহীন আবেগের কথা তিনি যেন কবির মতো করেই বলতেন।

✍ উদ্দীপকে প্রকাশিত হয়েছে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর জনসভার একটি চিত্র। তাঁর ভাষণ শুনতে ছুটে এসেছে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ। তাঁর কথাগুলো শুনে মনে হলো যেন একজন নেতা নন বরং পত্রিকার একজন অসামান্য স্টাফ রিপোর্টার কথা বলছেন। মানুষের দুঃখ দুর্দশার বিবরণ তিনি অত্যন্ত যত্নের সাথে দিচ্ছিলেন বলে তা সবার চোখের সামনে যেন মূর্ত হয়ে উঠছিল। এ কারণেই তাঁকে এই বিশেষণে বিশেষায়িত করা হয়েছে।

✍ বঙ্গবন্ধুর ভাষণে বাঙালির স্বভাবসুলভ আবেগ জড়িত থাকা এবং বাঙালির স্বপ্ন নির্মাণ ও বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের সৃজনশীলতার কারণে বঙ্গবন্ধুকে ‘কবি’ বলা হয়েছে। অন্যদিকে ‘স্টাফ রিপোর্টার’ -এর বাংলা হলো নিজস্ব সংবাদদাতা। কোনো সংবাদপত্রের নিজস্ব সংবাদদাতা যেমন করে বিশ্বস্ততার সাথে ও দায়িত্বশীলভাবে খবর পরিবেশন করে তেমনি মওলানা ভাসানীও জনগণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ পরিবেশন করতেই যেন মঞ্চে দাঁড়িয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু আর ভাসানী উভয়ের লক্ষ্য ছিল এক- আর তা হলো জনগণের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করা। উভয় নেতাই জনগণের কল্যাণে জনগণের সম্মুখে নিজেকে উপস্থাপন করেছেন। একজন কবিসুলভ ভঙ্গিমায়, আরেকজন স্টাফ রিপোর্টারের ভঙ্গিমায় উপস্থিত হলেও তাঁদের অবস্থান এক এবং জনগণের প্রতি ভালোবাসাও সমান্তরাল। দেশ, জনগণের কল্যাণে আত্মনিবেদিত হিসেবে দুজন সমসূত্রে গাঁথা। 

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো
কবিতা
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

SSC Bangla 1st Paper
Sadhinot Shobdoti Kivabe Amader Holo
Kobita
Srijonshil
Question-Answer
৪নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
“প্রত্যেক গ্রামে, প্রত্যেক মহল্লায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে  তোল। এবং তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো। মনে রাখবা, রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব। এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশা আল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা।”
ক. কবি কোনটিকে ‘ঢাকার হৃদয় মাঠ’ বলে উল্লেখ করেছেন ১
খ. রেসকোর্স ময়দানে শিশুপার্ক তৈরি করার উদ্দেশ্য কী? ব্যাখ্যা করো।  ২
গ. উদ্দীপকটি ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার সাথে কীভাবে সম্পর্কিত?  ৩
ঘ. বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণই বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রকৃত ঘোষণা।’ - উদ্দীপক ও পঠিত কবিতার আলোকে উক্তিটি বিশ্লেষণ করো।  ৪

৪নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক . কবি তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানকে ‘ঢাকার হৃদয় মাঠ’ বলে উল্লেখ করেছেন।

খ. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিকে সুকৌশলে মুছে ফেলার জন্য রেসকোর্স ময়দানে শিশুপার্ক তৈরি করা হয়েছে।

✍ বর্তমানে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উত্তর প্রান্তের একটি অংশজুড়ে রয়েছে শিশুপার্ক। আগে এ শিশুপার্ক ছিল না, তখন এর নাম ছিল রমনা রেসকোর্স ময়দান। এ রেসকোর্সের উত্তর প্রান্তে নির্মিত বিরাট প্রশস্ত মঞ্চ থেকে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ভাষণের সেই স্মৃতিময় স্থানটির কোনো অস্তিত্ব এখন আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। লক্ষ লক্ষ মানুষের হৃদয় নিংড়ানো ‘স্বাধীনতা সংগ্রামের বাণী’ যেখান থেকে উচ্চারিত হয়েছিল সে স্মৃতিময় স্থানটি ঢেকে দেওয়া হয়েছে। শিশুপার্ক তৈরির মাধ্যমে সুকৌশলে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে।

গ. বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের উল্লেখ থাকায় উদ্দীপকটি ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার সাথে সম্পর্কিত।

✍ আমাদের স্বাধীনতার রূপকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি বাঙালি জাতির প্রতি মুক্তিযুদ্ধের ডাক দিয়েছিলেন। ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু স্পষ্ট ভাষায় স্বাধীনতার ঘোষণা দেন এবং বাংলার মানুষকে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলার আহবান জানান। ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় এই ঐতিহাসিক ভাষণেরই একটি অভিনব বর্ণনা আছে। এ কবিতায় কবি নির্মলেন্দু গুণ ৭ই মার্চের ভাষণ এবং জনমনে এর প্রভাবের কথা তুলে ধরেছেন।

✍ উদ্দীপকে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ তুলে ধরা হয়েছে। এখানে বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য অমোঘ আহবান জানিয়েছেন। মরণপণ সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতাকে ছিনিয়ে আনার কথা বলেছেন। ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায়ও ঐতিহাসিক এ ভাষণের মহিমা তুলে ধরা হয়েছে। এভাবেই উদ্দীপকের বিষয়বস্তু পঠিত কবিতার সাথে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত।

ঘ. বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণই বাঙালির মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত অনুপ্রেরণা ও চূড়ান্ত দিকনির্দেশনা হিসেবে কাজ করেছিল। তাই উদ্দীপক ও পঠিত কবিতার আলোকে বলা যায়, আলোচ্য উক্তিটি যথার্থ।

✍ ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের এক অনুপম চিত্র প্রকাশিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর কথা শোনার জন্য জমায়েত হয়েছে লক্ষ লক্ষ উৎকণ্ঠিত মুখ। বঙ্গবন্ধু যেন এক মহান জাদুকর। তাঁর এক ইশারাতেই যেন সকলে ঝাঁপিয়ে পড়বে অধিকার আদায়ের সংগ্রামে এবং বাস্তবেও তা-ই ঘটেছিল। বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণই গোটা বাংলার মুক্তিকামী জনতার মনে স্বাধীনতার অগ্নিমশাল প্রদ্দীপ্ত করেছিল।

✍ উদ্দীপকের অংশটুকু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ থেকে গৃহীত হয়েছে। ভাষণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ মূলত এটিই। এখানে তিনি বাংলাদেশের মানুষকে পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে উদ্দীপ্ত করেছেন, প্রস্তুত করেছেন স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্য। তিনি সবাইকে প্রস্তুত থাকতে বলেছেন যা আছে তাই নিয়ে। তিনি স্পষ্ট ভাষায় রক্ত দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

✍ ১৯৭১ সালে চরম রাজনৈতিক সংকট ও পাকিস্তানি শাসকদের অপতৎপরতার পটভূমিতে জনগণ তীব্র ক্ষোভ আর হতাশা নিয়ে অপেক্ষা করছিল। আশা করছিল তাদের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছ থেকে দিকনির্দেশনার। তখন তিনি লাখো জনতার সামনে ঐতিহাসিক এক ভাষণ দেন। পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার জন্য এর চেয়ে স্পষ্ট ঘোষণা আর হতে পারে না। ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব এবং জনগণের ওপর তাঁর অসাধারণ প্রভাবের পরিচয় পাওয়া যায়। এ বিষয়গুলোর উদাহরণ দিতে কবি ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণকেই সযতেœ তুলে এনেছেন। কবি বলেছেন, এই ভাষণের মাধ্যমে বাঙালির স্বাধীনতা ঘোষিত হয়েছে, স্বাধীনতা শব্দটির ওপর বাঙালির অধিকার অর্জিত হয়েছে। বাস্তবে এই ভাষণের পরই গোটা প্রশাসন পাকিস্তানি শাসকদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। দেশের মানুষ চূড়ান্ত লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হয়। কাজেই উদ্দীপক ও কবিতার আলোকে বলা যায় আলোচ্য উক্তিটি যে যথার্থ তাতে কোনো সন্দেহ নেই। 

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো
কবিতা
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

SSC Bangla 1st Paper
Sadhinot Shobdoti Kivabe Amader Holo
Kobita
Srijonshil
Question-Answer
৫নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
তোদের চির-উৎখাত করবো বলে,
১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর আমরা 
বিজয়ীর বেশে ফিরে এসেছিলাম
শেখ মুজিবের স্বাধীনতা উদ্যানে।
ক. ১৭৫৭ সালে কোথায় বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়েছিল? ১
খ. ‘গণসূর্যের মঞ্চ' বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? ২
গ. উদ্দীপক ও ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো' কবিতার মধ্যে কী মিল খুঁজে পাও-ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপক ও ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো' কবিতার ভাববস্তু একই স্রোতধারায় প্রবাহিত-কথাটি বিচার করো।  ৪

৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. ১৭৫৭ সালে পলাশীর প্রান্তরে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়েছিল।

খ. মঞ্চে গণমানুষের প্রাণের নেতার উজ্জ্বল উপস্থিতির বিষয়টিকে তুলে ধরা হয়েছে আলোচ্য উপমাটির মাধ্যমে।

✍ ‘গণসূর্য’ অর্থ হলো জনতার সূর্য। সূর্য দ্বারা রূপকার্থে জাতীয় নেতাকে বোঝানো হয়েছে। আর সেই অবিসংবাদিত নেতার জন্য তৈরি হয়েছে একটি ঐতিহাসিক মঞ্চ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ছিলেন জনগণের নেতা, মঞ্চে দাঁড়ানো অবস্থায় তাঁর তেজিয়ান দ্যুতি চারদিকে বিচ্ছুরিত হচ্ছিল। তিনি যেন এক গণসূর্য। সেই নেতা যে মঞ্চে দাঁড়িয়ে, সেটা তো গণসূর্যের মঞ্চ। মূলত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ৭ই মার্চের ভাষণ যে মঞ্চে প্রদান করেছিলেন, সেটিকে ‘গণসূর্যের মঞ্চ' বলে অভিহিত করা হয়েছে।

গ. বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের প্রেরণা উপস্থাপনের দিক থেকে উদ্দীপক কবিতাংশটি ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার সাথে মিলে যায়।

✍ বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের মাহাত্ম্যের কথা বর্ণিত হয়েছে ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো' কবিতায়। গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা লাভ করি আমাদের স্বাধীনতা। কিন্তু সেই মুক্তিযুদ্ধের মূলভিত্তি ছিল ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের সেই শ্রেষ্ঠ বিকালে রেসকোর্সের জনতার মঞ্চে দেওয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ঐতিহাসিক ভাষণ। সেই ভাষণে তিনি বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম'। সেদিন থেকে বাঙালি জাতির অভিধানে লেখা হয়েছিল ‘স্বাধীনতা' শব্দটি।

✍ উদ্দীপক কবিতাংশে প্রকাশ লাভ করেছে মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির চূড়ান্ত বিজয়ের অনুভূতির কথা। সে বিজয়ের ক্ষণটির সাথে জড়িয়ে আছে রেসকোর্স ময়দানের নাম। এখানেই বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চে এক ঐতিহাসিক ভাষণে বাঙালির স্বাধীনতার ডাক দেন। তাঁর সে আহবানে সাড়া দিয়েই বাঙালি জীবন বাজি রেখে লড়াই করে দেশকে শত্রুমুক্ত করে। ৭ই মার্চের ভাষণ তাই বাঙালির মুক্তির সমার্থক। এ বিষয়টি আলোচ্য কবিতায় যেমন এসেছে তেমনিভাবে এসেছে উদ্দীপক কবিতাংশে।

ঘ. উদ্দীপক ও ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার যে ভাববস্তু, তা একই চেতনার স্রোতধারায় প্রবাহিত। একটিতে স্বাধীনতার বাণী উচ্চারণের মুহূর্তের কথা বলা হয়েছে আর অন্যটিতে বলা হয়েছে সেই স্বাধীনতার প্রাপ্তির সময়ের কথা।

✍ ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো' কবিতায় আমাদের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের ঘোষণার ক্ষণটির চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ শেখ মুজিবের বজ্রকণ্ঠে এ দেশের মানুষের প্রতি মুক্তির সংগ্রামে অংশগ্রহণের আহবান ধ্বনিত হয়েছিল। গোটা জাতি স্বাধিকার-সচেতন হয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ এই দৃপ্ত শপথ নিয়ে সর্বস্তরের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।

✍ উদ্দীপকে তুলে ধরা হয়েছে আমাদের স্বাধীনতার চেতনার সাথে রেসকোর্স ময়দান তথা ৭ই মার্চের ভাষণের ওতপ্রোত সম্পর্কের কথা। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানি বর্বর হানাদার বাহিনী এ দেশের নিরীহ মানুষের ওপর নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়েছিল। আর সেই গণহত্যার বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিল এ দেশের সর্বস্তরের মানুষ। যাঁরা একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে নাম লিখিয়েছেন তাঁরা দীর্ঘ নয় মাসের আপসহীন সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা ছিনিয়ে বিজয়ীর বেশে এসেছিলেন। বিজয়ের সেই অসাধারণ মুহূর্তটি বাঙালি প্রথম উদ্যাপন করে ৭ই মার্চের স্মৃতিবিজড়িত রেসকোর্স ময়দানেই।

✍ বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ আর মুক্তিসংগ্রামের মাধ্যমে বাঙালির বিজয় অর্জন একই সুতোয় গাঁথা। মুক্তিযুদ্ধে বাংলার জনতা শত্রুদের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ১৬ই ডিসেম্বর শত্রুসেনারা আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার যুদ্ধে সবাইকে প্রস্তুতি নেওয়ার আহবান ধ্বনিত হয়। সেই সময়ের অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায়। আবার যুদ্ধ শেষেও বীর বাঙালির ঠিকানা হয় সেই ঐতিহাসিক প্রান্তরই, যা উল্লেখ করা হয়েছে উদ্দীপকে। কবিতা ও উদ্দীপক উভয়টিতেই রয়েছে আমাদের স্বাধীনতার চেতনা, ৭ই মার্চের ভাষণ যার অন্যতম প্রেরণাশক্তি।

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো
কবিতা
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

SSC Bangla 1st Paper
Sadhinot Shobdoti Kivabe Amader Holo
Kobita
Srijonshil
Question-Answer

জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
১. নির্মলেন্দু গুণ কী হিসেবে খ্যাত?
উত্তর: নির্মলেন্দু গুণ কবি হিসেবে খ্যাত।
 
২. নির্মলেন্দু গুণ পেশায় কী?
উত্তর: নির্মলেন্দু গুণ পেশায় সাংবাদিক।

৩. লক্ষ লক্ষ ব্যাকুল বিদ্রোহী শ্রোতা কখন থেকে জনসমুদ্রের উদ্যান সৈকতে বসে আছে?
উত্তর: লক্ষ লক্ষ ব্যাকুল বিদ্রোহী শ্রোতা ভোর থেকে জনসমুদ্রের উদ্যান সৈকতে বসে আছে।

৪. কপালে-কব্জিতে লালসালু বেঁধে কারা ছুটে এসেছিল?
উত্তর: কপালে-কব্জিতে লালসালু বেঁধে কারখানা থেকে লোহার শ্রমিকেরা ছুটে এসেছিল।

৫. উলঙ্গ কৃষকেরা কী কাঁধে এসেছিল?
উত্তর: উলঙ্গ কৃষকেরা লাঙল জোয়াল কাঁধে এসেছিল।

৬. বঙ্গবন্ধু কার মতো দৃপ্ত পায়ে হেঁটে জনতার মঞ্চে এসে দাঁড়ালেন?
উত্তর: বঙ্গবন্ধু রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে হেঁটে জনতার মঞ্চে এসে দাঁড়ালেন।

৭. কত সালের সাধারণ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালি বিজয় লাভ করে?
উত্তর: ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালি বিজয় লাভ করে।

৮. ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি ষড়যন্ত্রকারীদের সামরিক প্রতিভূ কে ছিলেন?
উত্তর: ১৯৭১ সালের পাকিস্তানি ষড়যন্ত্রকারীদের সামরিক প্রতিভূ ছিলেন ইয়াহিয়া খান।

৯. ইয়াহিয়া খান কত তারিখে পাকিস্তানের জাতীয় সংসদের অধিবেশন স্থগিত করেন?
উত্তর: ইয়াহিয়া খান ১৯৭১ সালের ১লা মার্চ পাকিস্তানের জাতীয় সংসদের অধিবেশন স্থগিত করেন।

১০. জাতীয় সংসদের অধিবেশন স্থগিত করা হলে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে কী শুরু হয়?
উত্তর: জাতীয় সংসদের অধিবেশন স্থগিত করা হলে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয়।

১১. বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পূর্বনাম কী?
উত্তর: বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পূর্বনাম রমনা রেসকোর্স।

১২. ১৯৭১ সালের ৫ই এপ্রিল নিউজউইক পত্রিকার নিবন্ধে বঙ্গবন্ধুকে কী বলে আখ্যায়িত করা হয়?
উত্তর: ১৯৭১ সালের ৫ই এপ্রিল নিউজউইক পত্রিকার নিবন্ধে বঙ্গবন্ধুকে ‘রাজনীতির কবি’ বলে আখ্যায়িত করা হয়।

১৩. কত সালে সিপাহি বিপ্লব সংঘটিত হয়?
উত্তর: ১৮৫৭ সালে সিপাহি বিপ্লব সংঘটিত হয়।

১৪. ১৯৩০ সালে কার নেতৃত্বে চট্টগ্রামে ব্রিটিশবিরোধী সশস্ত্র যুদ্ধ হয়?
উত্তর: ১৯৩০ সালে সূর্য সেনের নেতৃত্বে চট্টগ্রামে ব্রিটিশবিরোধী সশস্ত্র যুদ্ধ হয়।

১৫. ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় রবীন্দ্রনাথের কোন কবিতার চরণের উল্লেখ রয়েছে?
উত্তর: ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় রবীন্দ্রনাথের ‘দেবতার গ্রাস’ কবিতার চরণের উল্লেখ রয়েছে।

১৬. ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় কবি বিষ্ণু দের কোন কবিতার চরণ ব্যবহৃত হয়েছে?
উত্তর: ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় কবি বিষ্ণু দের ‘ঘোড়সওয়ার’ কবিতার চরণ ব্যবহার হয়েছে।

১৭. অনাগত শিশুরা কিসে দোল খেতে খেতে একদিন সব জানতে পারবে?
উত্তর: অনাগত শিশুরা শিশুপার্কের রঙিন দোলনায় দোল খেতে খেতে একদিন সব জানতে পারবে।

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো
কবিতা
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

SSC Bangla 1st Paper
Sadhinot Shobdoti Kivabe Amader Holo
Kobita
Srijonshil
Question-Answer

অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
১. একটি কবিতা লেখা হবে- কথাটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: ৭ই মার্চের স্বাধীনতা ঘোষণার ঘটনাটিকে একটি কবিতা লেখার সাথে তুলনা করা হয়েছে আলোচ্য চরণে।

✍ ৭ই মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন। সেদিন তিনি বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দিয়েছিলেন। আবেগে, বক্তব্যে, দিকনির্দেশনায় ভাষণটির তাৎপর্য ছিল অপরিসীম। বঙ্গবন্ধুর সেই মুক্তির ডাককে একটি কবিতা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন নির্মলেন্দু গুণ।

২. লক্ষ লক্ষ শ্রোতা ভোর থেকে ব্যাকুল হয়ে বসে ছিল কেন?
উত্তর: বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শোনার জন্য লক্ষ লক্ষ শ্রোতা ভোর থেকে ব্যাকুল হয়ে বসে ছিল।

✍ দেশভাগের পর থেকে বাঙালিরা প্রতি পদে পদে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর অত্যাচার, অবিচারের শিকার হয়। বাঙালির সমস্ত অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। বাঙালিও শুরু থেকেই সকল নির্যাতনের বিরুদ্ধে ছিল প্রতিবাদমুখর। তার চূড়ান্ত বিস্ফোরণ ঘটে ১৯৭১ সালে। ৭ই মার্চ এক ঐতিহাসিক জনসভায় সংগ্রামের চূড়ান্ত দিকনির্দেশনা প্রদান করার কথা ছিল বাঙালির প্রাণের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। তিনি কী বলেন তা শোনার জন্য অত্যন্ত অধীর হয়ে ভোর থেকেই অপেক্ষা করে ছিল লক্ষ জনতা।

৩. ৭ই মার্চের ভাষণ শুনতে আসা লক্ষ লক্ষ শ্রোতাদের ‘বিদ্রোহী শ্রোতা’ বলা হয়েছে কেন?
উত্তর: ৭ই মার্চের ভাষণ শুনতে আসা লক্ষ জনতা ষড়যন্ত্রকারী পাকিস্তানি সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল বলে তাদেরকে বিদ্রোহী শ্রোতা বলা হয়েছে।

✍ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালি বিজয় লাভ করলেও তাদের ক্ষমতায় যেতে দেওয়া হয়নি। পাকিস্তানি সামরিক শাসকদের এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সারা দেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। ক্ষোভে ফেটে পড়ে দেশের মানুষ। এ অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনতে আসা লক্ষ জনতার সকলেই ছিল যেন এক একজন বিদ্রোহী। সেই বিদ্রোহ ছিল পাকিস্তানি স্বৈরশাসক ও সামরিকতন্ত্রের অন্যায় ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে।

৪. ‘সেদিনের সব স্মৃতি মুছে দিতে উদ্যত কালো হাত’- কথাটি বুঝিয়ে লেখো।
উত্তর: বঙ্গবব্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের সোনালি দিনটিকে ভুলিয়ে দিতে অশুভ শক্তির উদয় ঘটেছে- আলোচ্য চরণটির মাধ্যমে এটিই বোঝানো হয়েছে।

✍ ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ পড়ন্ত বিকেলে রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু বাঙালির মুক্তির ডাক দেন। সেই ডাকে সাড়া দিয়েই বাঙালি যুদ্ধ করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনে। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর এ দেশে অশুভ শক্তির উদ্ভব ঘটে। তারা মুছে দিতে চায় বাঙালির সোনালি অতীত। ৭ই মার্চের সেই ঐতিহাসিক স্থানটির চিহ্নও তারা বিলুপ্ত করে দিতে চায়। ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় কবি এমন তৎপরতা চালানো মানুষদের কালো হাত হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।

৫. কবি সেই শ্রেষ্ঠ বিকেলের গল্প লিখে যাচ্ছেন কেন?
উত্তর: ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে সঠিক ইতিহাস পৌঁছে দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে কবি সেই শ্রেষ্ঠ বিকেলের গল্প লিখে যাচ্ছেন।

✍ ৭ই মার্চের এক ঐতিহাসিক বিকেলে বঙ্গবন্ধু বাংলার স্বাধীনতার ডাক দেন। কিন্তু সেদিনের স্মৃতিগুলো ভুলিয়ে দেওয়ার জন্য অশুভ শক্তির তৎপরতা লক্ষ করেন উদ্বিগ্ন কবি। আগামীদিনের শিশুরা তাহলে আর বাঙালির সেই গর্বের ইতিহাসটি জানতে পারবে না। আগামীদিনের কবিদের সেদিনের কথা জানিয়ে যাওয়ার দায়িত্ববোধ থেকে কবি তাই বিষয়টিকে নিজের কবিতার মাধ্যমে সংরক্ষণ করে রাখতে চান।

৬. ‘শ্রেষ্ঠ বিকেলের গল্প’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: ‘শ্রেষ্ঠ বিকেলের গল্প’ বলতে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের স্বর্ণালি মুহূর্তের কথাকে বোঝানো হয়েছে।

✍ ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের বিকেলে বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানে এক ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছেন। কবির ভাষার সেই বিকেলটি ছিল বাংলার মানুষের জন্য ‘শ্রেষ্ঠ বিকেল’। কেননা এই বিকেলেই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। তাঁর ভাষণটিই বাঙালি জাতির জন্য মুক্তির ভিত্তি গড়ে দিয়েছিল।

৭. ‘এই শিশুপার্ক সেদিন ছিল না’- কথাটি কেন বলা হয়েছে?
উত্তর: রেসকোর্স ময়দানের যে স্থানটিতে বঙ্গবন্ধু ভাষণ দিয়েছিলেন সেখানে এখন শিশুপার্ক গড়ে উঠেছে- এ বিষয়টিই বোঝানো হয়েছে কথাটির মাধ্যমে।

✍ ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দেন। কিন্তু স্বাধীনতাবিরোধী অশুভ শক্তি সেই গৌরবোজ্জ্বল মুহূর্ত ও স্থানটির স্মৃতি মুছে দিতে চায়। রেসকোর্স ময়দানের যেখানে ৭ই মার্চের সমাবেশস্থল ছিল সেখানে এখন শিশুপার্ক স্থাপিত হয়েছে। ইতিহাস মুছে দেওয়ার এই অপতৎপরতার কথা বোঝাতেই কবি কথাটি বলেছেন।

৮. ‘শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে’- কথাটি বুঝিয়ে লেখো।
উত্তর: অত্যাচারীর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে করতে বাঙালি যেন স্বাধীনতার দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে- এ বিষয়টিই প্রকাশিত হয়েছে আলোচ্য চরণে।

✍ বাংলার স্বাধীনতা সূর্য অস্তমিত হয়েছিল ১৭৫৭ সালে। সেই থেকে আমরা সংগ্রাম করে এসেছি- কখনো ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে, কখনো পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে। অসংখ্য মানুষের আত্মত্যাগে আমরা পার হয়ে এসেছি ইতিহাসের বহু অধ্যায়। তারই ধারাবাহিকতায় বাঙালির চূড়ান্ত মুক্তির বার্তা নিয়ে হাজির হয় ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ। আর সেই মুক্তির বার্তা ধ্বনিত হয় বঙ্গবন্ধুর বজ্রকণ্ঠে ৭ই মার্চের পড়ন্ত বিকেলে। স্বাধীনতাযুদ্ধের ঠিক আগের এই সোনালি মুহূর্তটি এসেছিল শত বছরের শত সংগ্রামের পর।

৯. ‘সেই থেকে স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের।’- কথাটি বুঝিয়ে লেখো।
উত্তর: বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দেওয়ার পর থেকে ‘স্বাধীনতা’ শব্দটি বাঙালির জন্য ভিন্ন তাৎপর্য বহন করে-এ বিষয়টিই বোঝানো হয়েছে কথাটির মাধ্যমে।

✍ ‘স্বাধীনতা’ শব্দটি কেবল বুলিমাত্র নয়। এটি একটি অনুভব, মানুষের জন্মগত অধিকার। ‘স্বাধীনতা’ শব্দটি বাঙালির জন্য আরও অনেক বেশি গুরুত্ববাহী। এ শব্দের সঙ্গে আমাদের সংগ্রাম ও মুক্তির প্রসঙ্গ জড়িত। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠ থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা ধ্বনিত হওয়ার পর থেকেই ‘স্বাধীনতা’ শব্দটি পায় নতুন অর্থ ও ব্যঞ্জনা। বঙ্গবন্ধুর আহবানে সাড়া দিয়েই মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে ও স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনে। বঙ্গবন্ধু যেন তাঁর ৭ই মার্চের ভাষণের মাধ্যমে বাঙালির মাঝে স্বাধীনতার বীজটি বপন করে দিয়েছিলেন।

১০. ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় বঙ্গবন্ধুকে ‘কবি’ বলা হয়েছে কেন?
উত্তর: বঙ্গবন্ধুর বাঙালি হৃদয়ের প্রকাশ কবিসুলভ ছিল বলে আলোচ্য কবিতায় বঙ্গবন্ধুকে কবি বলা হয়েছে।

✍ বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতার স্বপ্ন ও অনুভূতির রূপকার। বাগ্মিতায় তিনি ছিলেন অসাধারণ। নিজের বক্তৃতার শক্তিতে তিনি মানুষকে সম্মোহিত করে রাখতে পারতেন। তিনি ছিলেন একজন রাজনীতির কবি। এ কারণেই কবিতায় তাঁকে ‘কবি’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

No comments:

Post a Comment