SSC পয়লা বৈশাখ গল্পের (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download

পয়লা বৈশাখ গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর | নবম-দশম শ্রেণির গাইড

নবম-দশম শ্রেণি
বাংলা ১ম পত্র গাইড
গল্প/গদ্য

পয়লা বৈশাখ
কবীর চৌধুরী

SSC Bangla 1st Paper Golpo
Pahela Baishakh
Poyla Boishakh
Srijonshil
Question and Answer pdf download
পয়লা বৈশাখ সৃজনশীল ও বহুনির্বাচনি প্রশ্ন-উত্তর নবম-দশম শ্রেণি

১নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
১৯৬৭ সাল থেকে রমনার বটমূলে ‘ছায়ানট’ নববর্ষের যে উৎসব শুরু করে স্বাধীন বাংলাদেশের বাধাহীন পরিবেশে এখন তা জনগণের বিপুল আগ্রহ-উদ্দীপনাময় অংশগ্রহণে দেশের সর্ববৃহৎ জাতীয় অনুষ্ঠানের পরিণত হয়েছে। রাজধানী ঢাকার নববর্ষ উৎসবের দ্বিতীয় প্রধান আকর্ষণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ছাত্র-ছাত্রীদের বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা। এই শোভাযাত্রায় মুখোশ, কার্টুনসহ যে-সব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীকধর্মী চিত্র বহন করা হয় তাতে আবহমান বাঙালিত্বের পরিচয় এবং সমকালীন সমাজ-রাজনীতির সমালোচনাও থাকে।
ক. নববর্ষ এক অস্তিত্বকে বিদায় দিয়ে অন্য জীবনে প্রবেশ করায় কী প্রকাশ করে? ১
খ. ধর্মনিরপেক্ষ চেতনা বলতে কী বোঝ? ২
গ. ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধে প্রকাশিত নববর্ষ উদ্যাপনের কোন দিকটি উদ্দীপকে অনুপস্থিত? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. ‘সামাজিক প্রকৌশলীদের আজ বাংলা নববর্ষের মধ্যে সচেতনভাবে নতুন মাত্রিকতা যোগ করতে হবে।’ লেখকের এই প্রত্যাশাই যেন উদ্দীপকটি ধারণ করছে’ - মূল্যায়ন করো। ৪

১নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর: ক
✍ নববর্ষ এক অস্তিত্বকে বিদায় দিয়ে অন্য জীবনে প্রবেশ করার আনন্দানুভূতি প্রকাশ করে।

১নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর: খ
✍ ধর্মনিরপেক্ষ চেতনা হচ্ছে সেই ধর্মচেতনা যেখানে মানুষ ধর্মে ধর্মে পার্থক্য না করে নিজ নিজ ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করে।

✍ বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন একটি ধর্মনিরপেক্ষ সর্বজনীন উৎসব। এই আনন্দ উৎসবে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই অংশগ্রহণ করে। বিগত বছরের দুঃখ-জরা, কষ্ট-বেদনা ভুলে গিয়ে নতুন বছরে সবাই আনন্দে মেতে ওঠে। নববর্ষকে সবাই একসাথে বরণ করে নেয়। ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে সকলে একসাথে এই বর্ষবরণের মতো ঐক্যবদ্ধ থাকার চেতনাই ধর্মনিরপেক্ষ চেতনা।

১নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর: গ
✍ ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধে উল্লিখিত নাগরিক বুর্জোয়া বিলাস ও ফ্যাশন প্রদর্শন উদ্দীপকে অনুপস্থিত।

✍ বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ সাংস্কৃতিক উৎসব ‘পয়লা বৈশাখ’ কৃষিনির্ভর এই অঞ্চলে ফসল কাটার সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্রাচীনকাল থেকে পালিত হয়ে আসছে। বর্তমানে এটি বাঙালির সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। পরস্পরের বাড়িতে যাওয়া-আসা, শুভেচ্ছা বিনিময়, খাওয়া-দাওয়া, নানা রকম খেলাধুলা ও আনন্দ উৎসব, মেলা ও প্রদর্শনী ইত্যাদি অনুষ্ঠানমালার মধ্য দিয়ে পালিত হয়ে আসছে পয়লা বৈশাখ। ব্যবসায়ী মহলে পালিত হয় হালখাতা ও মিঠাই বিতরণ। অর্থনৈতিক কারণে বর্তমানে এটি শহরকেন্দ্রিক পালিত হলেও যথেষ্ট প্রাণচাঞ্চল্য লক্ষ করা যায়। তবে নববর্ষ উদ্যাপনের ধরন দেখে লেখক এটিকে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত নাগরিকের বুর্জোয়া বিলাস ও ফ্যাশনের সাথে তুলনা করেছেন।

✍ উদ্দীপকে ১৯৬৭ সাল থেকে বাধাহীন পরিবেশে এদেশে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান পালনের কথা বলা হয়েছে। সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বর্ণাঢ্য আয়োজনের দিকটি তুলে ধরা হয়েছে। এসব আয়োজনে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীকধর্মী চিত্র তুলে ধরা হয়। যা আবহমান বাঙালিত্বের পরিচয় ও সমকালীন সমাজ রাজনীতির সমালোচনা বহন করে। নববর্ষ উদ্যাপনের এই দিকটি পয়লা বৈশাখ প্রবন্ধে উল্লিখিত। কিন্তু আজকাল যে এই উৎসব মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত নাগরিকের বুর্জোয়া বিলাস ও ফ্যাশনে রূপ নিচ্ছে তা উদ্দীপকে উল্লেখ করা হয়নি।

১নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর: ঘ
✍ বিজাতীয় সংস্কৃতি থেকে বাঁচিয়ে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান যাতে আমাদের বাঙালিত্বের পরিচয়কে ধারণ করতে পারে সে কারণে এতে সচেতনভাবে নতুন মাত্রিকতা যোগ করতে হবে।

✍ পয়লা বৈশাখ নিঃসন্দেহে আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক। এর উদ্যাপন রীতিতে নানা পালাবদল ও বিভিন্ন মাত্রিকতা যুক্ত হচ্ছে। পয়লা বৈশাখ পালনের সাথে কৃষি সমাজের যোগসূত্র ছিল। বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে পয়লা বৈশাখ উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। গ্রামীণ উপকরণ নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় বৈশাখী মেলা। হালখাতা, মিঠাই বিতরণ, নানা রকম খেলাধুলা, সংগীতানুষ্ঠান, আবৃত্তি, আলোচনা সভা ইত্যাদি পয়লা বৈশাখের অন্যতম অনুষঙ্গ। তবে বর্তমান সময়ে এই বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে দেশীয় সংস্কৃতির বাইরে গিয়ে বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুকরণ করা হচ্ছে। লেখক একে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত নাগরিকের বুর্জোয়া বিলাস ও ফ্যাশনের সাথে তুলনা করেছেন। তাগিদ দিয়েছেন বাংলা নববর্ষের মধ্যে সচেতনভাবে নতুন মাত্রিকতা যোগ করার।

✍ উদ্দীপকে নববর্ষ উৎসব আয়োজনের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বর্ণনা করা হয়েছে। ছায়ানটের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা, ঢাকার নববর্ষ উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। ছায়ানট বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তুলে ধরার ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে অবদান রেখে যাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদেরও রয়েছে অসামান্য অবদান। 

✍ সামাজিক প্রকৌশলী বা সংস্কৃতি নির্মাণের কারিগরদের প্রতি লেখক আহŸান জানিয়েছেন বাংলা নববর্ষের মধ্যে সচেতনভাবে নতুন মাত্রিকতা যোগ করার। কারণ পয়লা বৈশাখকে তার নিজস্ব ভাবমূর্তিতে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর সাথে শ্রমজীবী মানুষের রাখিবন্ধনকে নতুন করে বাঁধতে হবে। পাশাপাশি বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনের ক্ষেত্রে এর ধর্মনিরপেক্ষ চেতনাকে সমুন্নত রাখতে হবে। আর উদ্দীপকে এই দিকগুলোই লক্ষ করা যায়।

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
পয়লা বৈশাখ
গল্প
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
SSC Bangla 1st Paper
Pahela Baishakh
Golpo
Srijonshil
Question-Answer
২নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
চৈত্রের শেষে ব্যবসায়ী আতিক সাহেবের মন আনন্দে শিহরিত হয়ে ওঠে। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে তিনি উন্মুখ হয়ে থাকেন। যাতে পুরনো হিসাব-নিকাশ চুকিয়ে নব উদ্যমে ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালাতে পারেন। তিনি মনে করেন, নববর্ষ বাঙালির ঐতিহ্য, সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধির প্রতীক।
ক. বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসব কোনটি? ১ 
খ. হালখাতা অনুষ্ঠানটি পালন করা হয় কেন? ২
গ. উদ্দীপকে ‘পয়লা বৈশাখ’ রচনার যে দিকের আভাস দেওয়া হয়েছে তা ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. ‘পয়লা বৈশাখ’ অবলম্বনে উদ্দীপকের সর্বশেষ লাইনটির সপক্ষে তোমার নিজস্ব অভিমত ব্যক্ত করো। ৪

২নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসব হলো পয়লা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন।

খ. ব্যবসায়ীরা তাদের পাওনা আদায় এবং নতুন বছরের খাতা খোলার ঐতিহ্য রক্ষায় হালখাতা অনুষ্ঠানটি পালন করে।

✍ হালখাতা অনুষ্ঠান পয়লা বৈশাখে ব্যবসায়ীদের কাছে একটি অন্যতম প্রধান উৎসব। তারা এদিন তাদের পাওনা আদায় করে নতুন বছরের নতুন খাতা খোলেন। এদিন ব্যবসায়ীরা বকেয়া পরিশোধকারীদের মিষ্টিমুখ করান। এজন্য নানা রকম মিঠাই বিতরণ করেন। এই হালখাতা অনুষ্ঠান ব্যবসায়ী মহলে প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে। ফলে এটি একটি ঐতিহ্যও বটে। আর এই ঐতিহ্য রক্ষা এবং পাওনা আদায়ের জন্য ব্যবসায়ীরা হালখাতা অনুষ্ঠান পালন করেন। 

গ. উদ্দীপকে ‘পয়লা বৈশাখ’ রচনার ঐতিহ্যের দিকটি বোঝাতে হালখাতা অনুষ্ঠানের আভাস দেওয়া হয়েছে।

✍ ‘পয়লা বৈশাখ’ রচনায় লেখক কবীর চৌধুরী বাংলা নববর্ষ তথা পয়লা বৈশাখের জয়গান গেয়েছেন। এই পয়লা বৈশাখে বাঙালিরা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে উৎসব অনুষ্ঠান করে থাকে। অতি প্রাচীনকাল থেকেই বাঙালিরা গ্রাম-নগর নির্বিশেষে হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান সকলেই সোৎসাহে নববর্ষের উৎসবে যোগদান করত। এদিন ব্যবসায়ীরা বছরের নতুন খাতা খোলার জন্য হালখাতা ও মিঠাই বিতরণের অনুষ্ঠান করেন। এই ধারাবাহিকতা আজও বিদ্যমান।

✍ উদ্দীপকে হালখাতা অনুষ্ঠানের ইঙ্গিত করা হয়েছে। এই হালখাতা বাংলা নববর্ষ উৎসবে ব্যবসায়ী মহলে নতুন মাত্রা যোগ করে। তারা পয়লা বৈশাখে বছরের নতুন খাতা চালু করে। ‘পয়লা বৈশাখ’ রচনাতে লেখক এই হালখাতা অনুষ্ঠানের কথা বলেছেন, যা পয়লা বৈশাখের একটি অন্যতম অংশ। বাঙালিরা এই পয়লা বৈশাখের ঐতিহ্য আজও ধারণ করে আছে। উদ্দীপকের আতিক সাহেব তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। তাই বলা যায়, উদ্দীপকে ‘পয়লা বৈশাখ’ রচনায় বর্ণিত বাঙালির ঐতিহ্যের দিকটির আভাস দেওয়া হয়েছে।

ঘ. প্রাচীনকাল থেকেই বাঙালিরা উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে নববর্ষ উৎসব পালন করে আসছে, যা বাঙালির ঐতিহ্য, সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধির প্রতীক বলে আমি মনে করি।

✍ ‘পয়লা বৈশাখ’ রচনায় লেখক কবীর চৌধুরী বাঙালির নববর্ষ উৎসবের ঐতিহ্যের দিকটি তুলে ধরেছেন। নববর্ষ উৎসব সমগ্র বাঙালির জীবনে বয়ে আনে উৎসবের আমেজ। এদিন ধর্মীয় সংকীর্ণতা অতিক্রম করে সমগ্র বাঙালি উৎসবে যোগদান করে। কৃষিনির্ভর এই দেশে প্রাচীনকাল থেকে ফসল উৎপাদনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নববর্ষ উৎসব পালন করা হয়। ফলে এদিন বাঙালির ঘরে ঘরে থাকে শান্তি ও সমৃদ্ধি।

✍ উদ্দীপকে ব্যবসায়ী আতিক সাহেব নববর্ষ উৎসবে সোৎসাহে অংশগ্রহণ করেন। তিনি হালখাতা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বছরের নতুন খাতা খোলার আনন্দে শিহরিত হন। পয়লা বৈশাখে সকল মানুষের হাতেই টাকা-পয়সা থাকে। ফলে সকলে বাকি পরিশোধ করে নতুন খাতা খোলে। এতে সর্বত্র সুখ শান্তি বিরাজ করে। তাছাড়া এদিন সকলেই ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে পরস্পরের বাড়িতে যাওয়া-আসা, শুভেচ্ছা বিনিময় করে। ফলে সর্বত্র একটি উৎসবমুখর আমেজ বিরাজ করে। এতে পয়লা বৈশাখ অন্য দিনগুলো থেকে স্বতন্ত্র হয়ে গৌরবমণ্ডিত হয়ে ওঠে।

✍ ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধে লেখক পয়লা বৈশাখের গৌরবমণ্ডিত ঐতিহ্য তুলে ধরেছেন। নববর্ষ হলো বাঙালির জাতীয়তাবাদের ভিত্তি। এ দিকটি বোঝানোর প্রয়াসে লেখক পয়লা বৈশাখের ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরেছেন। পয়লা বৈশাখ সকলের কাছেই উৎসবের বার্তা নিয়ে আসে। সকলে পাওনা পরিশোধ করে একে অন্যের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করে। তাই উদ্দীপকের সর্বশেষ লাইনটির সাথে আমি সম্পূর্ণ একমত।
 
এসএসসি বোর্ড পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতির জন্য পড়ুন সৃজনশীল ও বহুনির্বাচনি প্রশ্ন-উত্তরসহ:

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
পয়লা বৈশাখ
গল্প
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
SSC Bangla 1st Paper
Pahela Baishakh
Golpo
Srijonshil
Question-Answer
৩নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
শিশু ফাইয়াজ বাবার সাথে রমনা পার্কে বেড়াতে যায়। সেখানে নানা বয়সী নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ রং-বেরঙের পোশাক পরে ঘুরে বেড়ায়। সবার হাতে বেলুন, বাঁশি, মাথায় ফেস্টুন। এসব দেখে ফাইয়াজ আনন্দে অভিভূত হয়। সে অনেকগুলো খেলনা ও মজার মজার খাবার ক্রয় করে বাড়ি ফিরে আসে।
ক. “আইন-ই-আকবরী” গ্রন্থ কার লেখা? ১ 
খ. বাংলা নববর্ষের ঐতিহ্য সুপ্রাচীন ও গৌরবমণ্ডিত কেন? ২
গ. উদ্দীপকে ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধের কোন দিকটি নির্দেশ করা হয়েছে তা ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. “উদ্দীপকে বর্ণিত বিষয়ে আলোকপাত করাই লেখকের মূল উদ্দেশ্য নয়”- ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধের আলোকে মূল্যায়ন করো। ৪

৩নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. “আইন-ই-আকবরী” গ্রন্থটি ঐতিহাসিক আবুল ফজলের লেখা।

খ. প্রাচীনকাল থেকেই নববর্ষে দিনে ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সকলে আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান করত বলে দিনটি অন্য দিনগুলো থেকে স্বতন্ত্র ও গৌরবমণ্ডিত।

✍ সুদূর অতীতে কৃষিসমাজের সাথে বাংলা নববর্ষের যোগসূত্র ছিল অবিচ্ছেদ্য। এদিন সকল ধর্মের লোকই একে অন্যের বাড়িতে যেত। তাদের এই যাওয়া-আসা, খাওয়া-দাওয়া, শুভেচ্ছা বিনিময় নানা রকম খেলাধুলা ও আনন্দ উৎসবে দিনটি মুখর হয়ে উঠত। তাছাড়া মেলা ও প্রদর্শনীর আয়োজন করা হতো এই দিনে। ফলে নববর্ষের দিনটি অন্যান্য দিন থেকে স্বতন্ত্র হয়ে গৌরবমণ্ডিত হয়ে উঠত।

গ. ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধে পয়লা বৈশাখ উদ্যাপন করা নিয়ে যে উৎসাহ-উদ্দীপনার কথা বলা হয়েছে তারই চিত্র আমরা উদ্দীপকে দেখতে পাই।

✍ কবীর চৌধুরী রচিত ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধে বাংলা নববর্ষকে ঘিরে বাঙালির আবেগ উচ্ছ¡াসের স্বরূপ প্রকাশিত হয়েছে। পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে শহরে ও গ্রামে নানা রকমের আনন্দ উৎসবের আয়োজন করা হয়। সব শ্রেণির মানুষ প্রাণভরে সেগুলো উপভোগ করে। পয়লা বৈশাখকে কেন্দ্র করে বাঙালির গভীর আবেগের বর্ণনাও রয়েছে আলোচ্য রচনায়।

✍ উদ্দীপকের বর্ণনা থেকে দেখা যায়, ছোট্ট ফাইয়াজ বাংলা নববর্ষের উৎসবে অংশ নিতে বাবার সাথে রমনা পার্কে যায়। সেখানে সে নানা বয়সী নারী-পুরুষ, শিশুদের আনন্দ করতে দেখে। সবার গায়ে ছিল রঙিন পোশাক। ফাইয়াজের মনও সব কিছু দেখে খুশিতে ভরে ওঠে। বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনে মানুষের স্বতঃস্ফ‚র্ত অংশগ্রহণের যে স্বরূপ উদ্দীপকে প্রকাশ পেয়েছে তার বর্ণনা ‘পয়লা বৈশাখ’ রচনায়ও রয়েছে।

ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত হয়েছে বাঙালির পয়লা বৈশাখ উদ্যাপনের উচ্ছ¡াসের কথা। কিন্তু ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধের রচয়িতার মূল উদ্দেশ্য বাঙালির জাতীয় চেতনায় পয়লা বৈশাখের প্রভাবের বিষয়টি তুলে ধরা।

✍ ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধে কবীর চৌধুরী পয়লা বৈশাখের নানা দিক তুলে ধরেছেন। তার বর্ণনায় যেমন ঠাঁই পেয়েছে পয়লা বৈশাখ উদ্যাপনের ইতিহাস-ঐতিহ্য, তেমনিভাবে এসেছে পয়লা বৈশাখের মূল চেতনার কথাও। পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান যে আমাদের জাতীয় চেতনার ধারক ও বাহক সে কথাও আলোচ্য প্রবন্ধে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তিনি।

✍ উদ্দীপকে বর্ণিত হয়েছে পয়লা বৈশাখের আনন্দ আয়োজনের স্বরূপ। বাংলা নববর্ষে খুশিতে উদ্বেল হয়ে পড়ে বাঙালির মন। রঙিন পোশাক পরে নানা আনন্দ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তারা দিনটিকে রাঙিয়ে তোলে। তেমনই একটি আনন্দঘন চিত্র প্রকাশিত হয়েছে উদ্দীপকে। কিন্তু ‘পয়লা বৈশাখ’ রচনার লেখকের রচনার মূল কেন্দ্রবিন্দু এটি নয়।

✍ পয়লা বৈশাখ বাঙালির প্রাণের উৎসব। সর্বস্তরের বাংলা ভাষাভাষী মানুষ এদিনটিকে প্রাণের উচ্ছ্বাছে বরণ করে নেয়। এই উদ্যাপনে হিন্দু-মুসলিম, ধনী-গরিব, শিশু-বৃদ্ধ কোনো ভেদাভেদ থাকে না। ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধের রচয়িতা কবীর চৌধুরীর প্রত্যাশা পয়লা বৈশাখের এই সর্বজনীনতার দিকটি আমাদের জাতীয় চেতনাকে আরও সমুন্নত করবে। পয়লা বৈশাখের উদ্যাপন সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে বাঙালির প্রতিবাদের বহিঃপ্রকাশ। তাই আমাদের জাতীয় চেতনার সাথে এর সম্পর্ক সুদৃঢ়। ‘পয়লা বৈশাখ’ রচনায় এ বিষয়গুলোর কথা এলেও উদ্দীপকে রয়েছে কেবলই পয়লা বৈশাখ উদ্যাপনের আনন্দ-উৎসবের চিত্র, যা ‘পয়লা বৈশাখ’ রচনার খণ্ডিত একটি অংশের প্রতিনিধিত্ব করে মাত্র। উদ্দীপকের বিষয়বস্তু তাই ‘পয়লা বৈশাখ’ রচনার লেখকের মূল আলোচ্য নয়।

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
পয়লা বৈশাখ
গল্প
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
SSC Bangla 1st Paper
Pahela Baishakh
Golpo
Srijonshil
Question-Answer
৪নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
শিক্ষক ইকবাল ইউসুফ শ্রেণিকক্ষে নববর্ষ প্রসঙ্গে শিক্ষার্থীদের বললেন, ‘তোমরা দেখে থাকবে পহেলা বৈশাখে আমাদের গ্রামগুলোতে মেলা বসে গ্রামীণ ও লোকজ সব উপাদান নিয়ে। সেসব আয়োজনে থাকে প্রাণের ছোঁয়া। কিন্তু ওই দিন ঘটা করে মাটির পাত্রে পান্তা খাওয়ার ঘটনাকে মেকি ও কৃত্রিমতাপূর্ণ বলেই মনে হয়। তাছাড়া ব্যস্ত সংগীতের সাথে উদ্দাম নৃত্যও আমাদের ঐতিহ্যের সাথে খাপ খায় না।
ক. কবীর চৌধুরী কত সালে জন্মগ্রহণ করেন? ১
খ. গ্রাম-নগর, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষই নববর্ষ উৎসবে যোগ দেয় কেন? ২
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত গ্রামীণ মেলা ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধের গৌরবমণ্ডিত দিনের সাথে কীভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা করো। ৩ 
ঘ. ‘শহরে বৈশাখী উৎসব মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত নাগরিকের বুর্জোয়া বিলাস ও ফ্যাশন’ উদ্দীপক ও ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ করো। ৪

৪নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. কবীর চৌধুরী ১৯২৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন।

খ. নববর্ষ বাঙালির জাতীয় উৎসব হওয়ার কারণে গ্রাম-নগর, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষই এতে যোগ দেয়।

✍ বাংলা নববর্ষ বাঙালির জাতীয় জীবনে এক আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে। এদিন হিন্দু-মুসলিম, বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান সকলেই পুরোনোকে বিদায় জানিয়ে নতুনকে গ্রহণের আনন্দে মত্ত থাকে। সকলের কাছে দিবসটি সমান গুরুত্ব বহন করে। তাই সবাই নববর্ষ উৎসবে যোগদান করে।

গ. গ্রামীণ ঐতিহ্যকে ধারণ করার দিক থেকে উদ্দীপকের গ্রামীণ মেলা ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।

✍ বাঙালি খুবই উৎসবপ্রিয় জাতি। সুদূর অতীতে কৃষিসমাজের সাথে অবিচ্ছেদ্য যোগসূত্র ছিল নববর্ষ উৎসবের। এই দিনে বাঙালিরা একে অপরের বাড়িতে যাওয়া-আসা, শুভেচ্ছা বিনিময়, নানা রকম খেলাধুলা ও আনন্দ উৎসব, মেলা ও প্রদর্শনী ইত্যাদি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে মানুষ পুরোনো ও বিগত দিনের জরাজীর্ণতাকে মানুষ ভুলে থাকতে চায়। পয়লা বৈশাখের এই দিনটিকে তাই স্বতন্ত্র, বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ও গৌরবমণ্ডিত দিন বলা হয়েছে।

✍ আলোচ্য উদ্দীপকে গ্রামীণ ও লোকজ উপাদান নিয়ে আয়োজিত গ্রামের মেলার কথা বলা হয়েছে। এসব আয়োজন নতুন বছরে নতুন প্রেরণা এনে দেয়। গ্রামের মানুষের মাঝে আনন্দের আবহ বয়ে যায়। তারা বিভিন্ন লোকজ পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করে এই মেলায়। প্রাচীনকালে এই লোকজ বৈচিত্র্যকে ধারণ করাতেই পয়লা বৈশাখ গৌরবমণ্ডিত হয়ে উঠত। তাই উদ্দীপকের গ্রামীণ মেলা এদিক থেকেই প্রবন্ধের গৌরবমণ্ডিত দিনের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।

✍ পয়লা বৈশাখের আনুষ্ঠানিকতা ও দিনটির গুরুত্ব বিবেচনায় উদ্দীপকের গ্রামীণ মেলা ও প্রবন্ধের গৌরবমণ্ডিত দিন যথেষ্ট সাদৃশ্যপূর্ণ।

ঘ. পয়লা বৈশাখ তার চিরাচরিত রূপ হারিয়ে তা এখন বিলাসিতা ও ফ্যাশনে রূপ নিয়েছে, যার উল্লেখ উদ্দীপক ও পয়লা বৈশাখ প্রবন্ধে রয়েছে।

✍ আমাদের দেশে পয়লা বৈশাখকে ঘিরে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। বাঙালিয়ানা পোশাক পরে বিভিন্ন বয়সের মানুষ বৈশাখী মেলা, সংগীতানুষ্ঠানসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করে। বর্তমানে এই আয়োজন শহরকেন্দ্রিক ও কৃত্রিমতাপূর্ণ হয়ে যাওয়ায় তা মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত মানুষের বুর্জোয়া বিলাস ও ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে বলে ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধের লেখক মনে করেন।

✍ উদ্দীপক অনুযায়ী আমরা বুঝতে পারি পয়লা বৈশাখে গ্রামের মেলাগুলোতে যে প্রাণচাঞ্চল্য ঘটে, তা অকৃত্রিম। মেলাগুলো হয়ে ওঠে বাঙালি সংস্কৃতির প্রতীক। নববর্ষের এই আনন্দ আয়োজন মানুষের জীবনে এনে দেয় নতুন আমেজ, নতুন প্রেরণা। কিন্তু ঢাকাকেন্দ্রিক বা নগরকেন্দ্রিক আয়োজনে সে মেজাজ রক্ষিত হয় না। নববর্ষের সকালে মাটির পাত্রে পান্তা খাওয়া আবার ব্যান্ডের উদ্দাম নৃত্যে গা ভাসিয়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে বাঙালি সংস্কৃতিকে ধারণ করা সম্ভব নয়। এটিই শুধুই লৌকিকতা, যার সাথে প্রাণের কোনো সংযোগ নেই।

✍ মূলত পয়লা বৈশাখের আনন্দানুষ্ঠানের প্রাণকেন্দ্র ছিল গ্রাম। অর্থনৈতিক কারণে এই আয়োজন এখন শহরকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে। ফলে পয়লা বৈশাখ তার নিজস্ব রূপ হারিয়ে অনুকরণপ্রিয়তার দিকে পা বাড়িয়েছে। শহরের ছেলেমেয়েরা এদিন ফ্যাশন আর বিলাসিতা দেখানোর জন্যই যে উৎসব করে তা উদ্দীপকের শিক্ষক এবং প্রবন্ধের লেখক উভয়েই বলেছেন। তাই এটিকে এখন মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তের বুর্জোয়া বিলাস ও ফ্যাশন ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না।

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
পয়লা বৈশাখ
গল্প
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
SSC Bangla 1st Paper
Pahela Baishakh
Golpo
Srijonshil
Question-Answer
৫নং সৃজনশীল প্রশ্নঃ

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং সৃজনশীল প্রশ্নগুলোর উত্তর দাওঃ
পয়লা বৈশাখের সকালে প্রভা সেজেগুজে বাড়ি থেকে বের হচ্ছিল। এ সময় তাকে বাধা দিল তার মামা। তাঁর মতে, এগুলো বিধর্মীদের সংস্কৃতি। কিন্তু প্রভার বাবা বললেন, “পয়লা বৈশাখ নির্দিষ্ট কোনো ধর্মের মানুষের উৎসব নয়। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এটি বাঙালির প্রাণের উৎসব। তিনি নিজেই প্রভাকে নিয়ে পয়লা বৈশাখের উৎসব যোগ দিলেন।
ক. নওরোজ শব্দের অর্থ কী? ১
খ. বাংলা নববর্ষ ধর্মনিরপেক্ষ চেতনাকে ধারণ করে কীভাবে? ২
গ. উদ্দীপকের প্রভার মামার আচরণ ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধে উল্লিখিত কোন দিকটিকে মনে করিয়ে দেয়? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. ‘পয়লা বৈশাখ’ আমাদের ধর্মনিরপেক্ষ চেতনার ধারক’- উদ্দীপক ও ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধের আলোকে উক্তিটি মূল্যায়ন করো। ৪

৫নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
ক. ‘নওরোজ’ শব্দের অর্থ নতুন দিন।

খ. সকল ধর্মের মানুষের কাছেই বাংলা নববর্ষ সমান গুরুত্বের হওয়ায় এই উৎসব ধর্মনিরপেক্ষ চেতনাকে ধারণ করে।

✍ বাংলা নববর্ষ বাঙালির একটি জাতীয় উৎসব। এই উৎসবে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই যোগদান করে। এদিন মুসলমান হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান কোনো ভেদাভেদ থাকে না। সকলের কাছেই আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে এই নববর্ষ। সকলেই মহা আনন্দে এই উৎসবে যোগদান করে। এভাবে বাংলা নববর্ষ ধর্মনিরপেক্ষ চেতনাকে ধারণ করে।

গ. উদ্দীপকের প্রভার মামার আচরণ ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধে উল্লিখিত পাকিস্তানি শাসকবর্গের বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন নিয়ে ক্ষীণদৃষ্টি, ধর্মান্ধ ও বৈরী মনোভাবকেই স্মরণ করিয়ে দেয়।

✍ ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধে কবীর চৌধুরী বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনে পাকিস্তানিদের বিতর্কিত ভূমিকার কথা উল্লেখ করেছেন। ১৯৪৭-এ পাকিস্তান সৃষ্টির পর সেদিনের পূর্ব পাকিস্তানে বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন নিয়ে তৎকালীন নয়া উপনিবেশবাদী, ক্ষীণদৃষ্টি, ধর্মান্ধ, পাকিস্তানি শাসকবর্গ যে মনোভাব প্রদর্শন করে, তা খুবই ন্যক্কারজনক। একই সঙ্গে তা কৌত‚হলোদ্দীপকও বটে। তারা প্রচার করার চেষ্ট করে ‘পয়লা বৈশাখ’ উদ্যাপন বিজাতীয় সংস্কৃতির প্রকাশ এবং ইসলাম ধর্মবিরোধী।

✍ উদ্দীপকের প্রভা পয়লা বৈশাখে অন্য দশটি মেয়ের মতো সেজেগুজে বাড়ি থেকে বের হচ্ছিল। কিন্তু তার মামা তাকে বাধা দেন এবং বলেন এগুলো বিধর্মীদের সংস্কৃতি। প্রভার বাবা এতে বিরোধিতা করে নিজেই প্রভাকে নিয়ে উৎসবে যোগ দেন। ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধে আমরা লক্ষ করি পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী পয়লা বৈশাখ উদ্যাপনে বাধা দিয়েছিল এবং উদ্দীপকের মতোই বৈরী মনোভাব পোষণ ও অপপ্রচার চালিয়েছিল। এখানে প্রভার মামার মানসিকতা পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর অনুরূপ।

ঘ. পয়লা বৈশাখ জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে একটি সর্বজনীন উৎসব হওয়ায় ঐতিহ্যগতভাবেই এটি আমাদের ধর্মনিরপেক্ষ চেতনার ধারক।

✍ ‘পয়লা বৈশাখ’ প্রবন্ধে বলা হয়েছে, একসময় গ্রাম-নগর নির্বিশেষে বাংলার সব মানুষ বাংলা নববর্ষের উৎসবে যোগ দিত। পরস্পরের বাড়িতে বাড়িতে যাওয়া-আসা, শুভেচ্ছা বিনিময়, খাওয়া-দাওয়া, নানা রকম খেলাধুলা ও আনন্দ উৎসব, মেলা ও প্রদর্শনীতে সারাবছরের অন্য দিনগুলো থেকে এই দিনটি সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ও সর্বজনীন হয়ে উঠত। বাংলা মুসলিম-হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান কোনো ভেদাভেদ থাকত না বলে এদিনে সকলের মাঝে ধর্মনিরপেক্ষ চেতনা প্রকাশ পেত। 

✍ উদ্দীপকে প্রভার বাবার কথায় ধর্মনিরপেক্ষ চেতনার কথা প্রকাশ পেয়েছে। তিনি বলেছেন, পয়লা বৈশাখ নির্দিষ্ট কোনো ধর্মের মানুষের উৎসব নয়। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এটি বাঙালির প্রাণের উৎসব। তার এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে পয়লা বৈশাখের সর্বজনীনতা প্রকাশ পেয়েছে।

✍ ‘পয়লা বৈশাখ’ বাঙালির একমাত্র উৎসব যেখানে সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষ ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে যোগদান করে থাকে। প্রবন্ধে লেখক সর্বজনীন উৎসব হিসেবে পয়লা বৈশাখের ইতিহাস তুলে ধরেছেন। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন আমাদের ধর্মনিরপেক্ষ চেতানাকে অপরাজেয় শক্তি ও মহিমায় পূর্ণ করুক লেখক এ কামনাও করেছেন। অন্যদিকে উদ্দীপকে প্রভার বাবা বৈশাখ নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন তা পয়লা বৈশাখের সর্বজনীনতা ও ধর্মনিরপেক্ষ চেতনাকেই তুলে ধরে। তাই বলা যায়, পয়লা বৈশাখ আমাদের ধর্মনিরপেক্ষ চেতনার ধারক।

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
পয়লা বৈশাখ
গল্প
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
SSC Bangla 1st Paper
Pahela Baishakh
Golpo
Srijonshil
Question-Answer

জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
 
১. প্রায় সব দেশে কী উদ্যাপনের প্রথা প্রচলিত আছে?
 উত্তর: প্রায় সব দেশে নববর্ষ উদ্যাপনের প্রথা প্রচলিত আছে।

২. পয়লা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ কী?
 উত্তর: পয়লা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ বাঙালির একটি জাতীয় উৎসব।

৩. সুদূর অতীতে পয়লা বৈশাখের সঙ্গে কোন সমাজের যোগসূত্র ছিল?
 উত্তর: সুদূর অতীতে পয়লা বৈশাখের সঙ্গে কৃষিসামজের যোগসূত্র ছিল।

৪. ‘আইন-ই-আকবরী’ কার রচিত গ্রন্থ?
 উত্তর: ‘আইন-ই-আকবরী’ আবুল ফজলের রচিত গ্রন্থ।

৫. আবুল ফজল তার গ্রন্থে বাংলা নববর্ষকে কী বলে উল্লেখ করেছেন?
 উত্তর: আবুল ফজল তার গ্রন্থে বাংলা নববর্ষকে এ দেশের জনগণের নওরোজ বলে উল্লেখ করেছেন।

৬. কত সলে উপমহাদেশের বিভক্তি হয়?
 উত্তর: ১৯৪৭ সালে উপমহাদেশের বিভক্তি হয়।

৭. কাদের মধ্যে হালখাতা ও মিঠাই বিতরণের অনুষ্ঠান হয়?
 উত্তর: ব্যবসায়ী মহলে হালখাতা ও মিঠাই বিতরণের অনুষ্ঠান হয়।

৮. আগে পয়লা বৈশাখের আনন্দানুষ্ঠানের প্রাণকেন্দ্র ছিল কী?
 উত্তর: আগে পয়লা বৈশাখের আনন্দানুষ্ঠানের প্রাণকেন্দ্র ছিল গ্রামবাংলা।

৯. আবুল ফজল নওরোজকে নববর্ষ বলে উল্লেখ করেছেন কত বছর আগে?
 উত্তর: আবুল ফজল নওরোজকে নববর্ষ বলে উল্লেখ করেছেন সাড়ে তিনশ বছর আগে

১০. বাংলা নববর্ষের সাথে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী চেতনা যুক্ত হয় কবে?
 উত্তর: বাংলা নববর্ষের সাথে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী চেতনা যুক্ত হয় বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে।

১১. সিরাজউদ্দৌলা শেষবারের মতো লড়াই করার জন্য কাদের ডাক দিয়েছিলেন?
 উত্তর: সিরাজউদ্দৌলা শেষবারের মতো লড়াই করার জন্য হিন্দু-মুসলমান উভয়কেই ডাক দিয়েছিলেন।

১২. পাকিস্তানি আমলে ধর্মের নামে কী হতো?
 উত্তর: পাকিস্তানি আমলে ধর্মের নামে নৃশংসতা হতো।

৯ম-১০ম শ্রেণির
বাংলা ১ম পত্র গাইড
পয়লা বৈশাখ
গল্প
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
SSC Bangla 1st Paper
Pahela Baishakh
Golpo
Srijonshil
Question-Answer

অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
১. নববর্ষের মাধ্যমে বাঙালিরা তাদের জাতীয়তাবাদী চেতনাকে তুলে ধরেছে কীভাবে?
 উত্তর: ধর্ম ও সম্প্রদায়-নিরপেক্ষভাবে নববর্ষ উদ্যাপনের মাধ্যমে বাঙালিরা তাদের জাতীয়তাবাদী চেতনাকে তুলে ধরেছে।

✍ নববর্ষের বাঙালিরা তাদের ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায় নির্বিশেষে উৎসব অনুষ্ঠানে যোগদান করে থাকে। এদিন বাঙালি হিসেবে মুসলিম-হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান সকলে একে অন্যের বাড়িতে যায়, শুভেচ্ছা বিনিময় করে। এতে সকলের মাঝে জাতীয়তাবোধ জাগ্রত হয়।

২. নববর্ষের উদ্যাপন রীতিতে নানা পালাবদল ঘটেছে কীভাবে?
 উত্তর: কালের যাত্রাপণে সমাজ সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আসায় নববর্ষ উদযাপন রীতিতেও নানা পালাবদল ঘটেছে।

✍ বাংলা নববর্ষ বাঙালির একটি অন্যতম জাতীয় উৎসব। এই উৎসব বিভিন্ন  সময় বিভিন্ন মাত্রিকতা অর্জন করেছে। সুদূর অতীতে কৃষিসমাজের সাথে এর যোগসূত্র ছিল অবিচ্ছেদ্য। ফলে গ্রাম বাংলা ছিল এই উৎসবের প্রাণকেন্দ্র। কিন্তু কাল পরম্পরায় এই উৎসবের বিবর্তন ঘটে এখন শহুরে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত নাগরিকের বুর্জোয়া বিলাসে পরিগ্রহ লাভ করেছে। এভাবে নববর্ষের উদযাপন রীতিতে পালাবদল ঘটেছে।

৩. পয়লা বৈশাখকে বর্তমান অবস্থা থেকে উদ্ধার করা প্রয়োজন কেন?
 উত্তর: পয়লা বৈশাখ বর্তমানে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত নাগরিকের ফ্যাশন ও বুর্জোয়া বিলাসের অংশ হয়ে যাওয়া তাকে বর্তমান অবস্থা থেকে উদ্ধার করা প্রয়োজন।

✍ পয়লা বৈশাখ একসময় কৃষি সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল। তখন এই উৎসবের প্রাণকেন্দ্র ছিল গ্রামবাংলা। গ্রামের মানুষের মাঝে আনন্দের বার্তা বয়ে আনত এই উৎসব। কিন্তু কাল পরিক্রমায় এই উৎসব শহুরে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত মানুষের বুর্জোয়া ও বিলাসে পরিণত হয়েছে। তাই এই উৎসবকে আবার বৃহত্তর জনজীবনের সঙ্গে সংযোগ করা প্রয়োজন।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post