HSC ভূগোল ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায় ২ pdf download

এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Geography 1st Paper Srijonshil question and answer. HSC Geography 1st Paper (Srijonshil) Creative Questions pdf download. HSC Vugol 1st paper Srijonshil Proshno Uttor.

উচ্চ মাধ্যমিক
ভূগোল
প্রথম পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
অধ্যায়-২

HSC Geography
1st Paper
Srijonshil Question and Answer pdf download

১. বাংলাদেশের ভূপ্রাকৃতিক অঞ্চল:
ক. দেশের পূর্বদিকে অবস্থিত, খ. দেশের প্রায় মধ্যখানে অবস্থিত, মাটির রং লাল ও ধূসর, গ. নদীবাহিত পলি দ্বারা গঠিত।
ক. বাংলাদেশের ভূপ্রকৃতিকে কয়ভাগে ভাগ করা যায়?
খ. প্লাইস্টোসিনকালের সোপান কী? বুঝিয়ে লেখ।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ‘ক’ ভূপ্রকৃতির বর্ণনা দাও।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ‘ক’, ‘খ’ ও ‘গ’ এর মধ্যে যে ভূপ্রকৃতিটি সর্বাধিক তার গঠন প্রক্রিয়া বিশ্লেষণ কর।

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বাংলাদেশের ভূপ্রকৃতিকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।

খ. আনুমানিক ২৫,০০০ বছর পূর্বের সময়কে প্লাইস্টোসিনকাল বলে।
উত্তর-পশ্চিমাংশের বরেন্দ্রভূমি, মধ্যভাগের মধুপুর ও ভাওয়ালের গড় এবং কুমিল্লা জেলার লালমাই পাহাড় বা উচ্চভূমি এ অঞ্চলের অন্তর্গত। প্লাইস্টোসিনকালে এসব সোপান গঠিত হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ‘ক’ ভূপ্রকৃতিটি হলো টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ।
রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম, সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের পাহাড়ী এলাকাগুলো নিয়ে টারশিয়ারি অঞ্চল গঠিত। সম্ভবত টারশিয়ারি যুগে হিমালয় পর্বত উথিত হওয়ার সময় মিয়ানমারের দিক হতে আগত গিরিজনি আলোড়নের ধাক্কায় ভঁজগ্রস্ত হয়ে এসব পর্বতের সৃষ্টি হয়েছে। তাই এদের টারশিয়ারি পাহাড় বলা হয়। এ পাহাড়গুলোকে আসামের লুসাই এবং মায়ানমারের আরাকান পাহাড়ের সমগোত্রীয় বলে ধারণা করা হয়। টারশিয়ারি যুগের পাহাড়ী অঞ্চলের আয়তন ১০,৩২৪ বর্গ কি.মি.। এ পাহাড়গুলো বেলে পাথর, সেস্নট জাতীয় প্রস্তর এবং কর্দমের সংমিশ্রণে গঠিত। পাহাড়গুলোর গায়ে ক্ষুদ্র-বৃহৎ বৃক্ষরাজির বন এবং অসংখ্য ঝোপজঙ্গল রয়েছে।
রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি জেলা এবং চট্টগ্রাম জেলার অংশবিশেষে অবস্থিত পাহাড়সমূহ নিয়ে দক্ষিণ -পূর্বাঞ্চল এবং সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলায় অবস্থিত বিচ্ছিন্ন ছোট-বড় পাহাড় নিয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চল অবস্থিত। যা টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহের অন্তর্ভুক্ত। আর এ অঞ্চলটি দেশের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ‘ক’, ‘খ’ ও ‘গ’ ভূপ্রকৃতি হলো যথাক্রমে টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ, প্লাইস্টোসিনকালের সোপানসমূহ এবং সাম্প্রতিক কালের প্লাবন সমভূমি অঞ্চল। এদের মধ্যে সাম্পতিক কালের প্লাবন সমভূমির ভূপ্রকৃতি সর্বাধিক।
টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ এবং প্লাইস্টোসিনকালের সোপানসমূহ ছাড়া সমগ্র বাংলাদেশ নদীবিধৌত এক বিস্তীর্ণ সমভূমি। অসংখ্য ছোট-বড় নদী, বাংলাদেশের সর্বত্র জালের মতো ছড়িয়ে রয়েছে।
সমতলভূমির উপর দিয়ে এ নদীগুলো প্রবাহিত হওয়ার কারণে বর্ষাকালে বন্যার সৃষ্টি হয়। বছরের পর বছর এভাবে বন্যার সঙ্গে পরিবাহিত মাটি সতি হয়ে এ প্লাবন সমভূমি গঠিত হয়েছে। এ প্লাবন সমভূমির আয়তন প্রায় ১,২৪,২৬৬ বর্গকিলোমিটার।
এ সমভূমি বাংলাদেশের উত্তর অংশ থেকে উপকূলের দিকে ক্রমনিম্ন। সুন্দরবন অঞ্চল প্রায় সমুদ্র সমতলে অবস্থিত। সমুদ্র সমতল থেকে বাকি অঞ্চলগুলো যেমন- দিনাজপুরের উচ্চতা ৩৭.৫০ মিটার, বগুড়ার উচ্চতা ২০ মিটার, ময়মনসিংহের উচ্চতা ১৮ মিটার এবং নারায়ণগঞ্জ ও যশোরের উচ্চতা ৮ মিটার। এই অঞ্চলে বিক্ষিপ্তভাবে অসংখ্য জলাভূমি ও নিম্নভূমি ছড়িয়ে আছে। এর কিছুসংখ্যক পরিত্যক্ত অশ্বখুরাকৃতি নদীখাত। স্থানীয়ভাবে এগুলোকে বিল, ঝিল ও হাওর বলে। এদের মধ্যে চলনবিল, মাদারিপুর বিল ও সিলেট অঞ্চলের হাওরসমূহ বর্ষার পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে হ্রদের আকার ধারণ করে। সমগ্র সমভূমির মাটির স্তর খুব গভীর এবং ভুমি খুবই উর্বর।

২. ভূ-অভ্যন্তরীণ স্তরসমূহক-
ক. - সবচেয়ে উপরের স্তর
খ. - আয়তন সর্বাধিক
গ. - সর্বনিম্ন স্তর, এই স্তরের অপর নাম NiFe স্তর।

ক. ভূ-ত্বক কাকে বলে?
খ. মোহহাবিযুক্তি রেখা কী?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ‘খ’ স্তরের বর্ণনা দাও।
ঘ. জীবজগতের উপর ‘ক’ স্তরের গাঠনিক গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর।

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ভূপৃষ্ঠের কঠিন বহিরাবরণকে ভূ-ত্বক বলে।

খ. ভূত্বক ও গুরুমন্ডল পৃথককারী শিলাস্তর হলো মোহোবিযুক্তি রেখা।
ভূকম্পন তরঙ্গের মাধ্যমে জানা যায় অশ্মমন্ডল ও গুরুমন্ডলের মধ্যে একটি পাতলা স্তর আছে যা ১৯০৯ সালে সার্বিয়ার ভূকম্পনবিদ মোহোরোভিসিক প্রথম আবিষ্কার করেন। তাঁর নামানুসারে এ স্তরটিকে মোহোবিযুক্তি রেখা বলা হয়।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ‘খ’ স্তর গুরুমন্ডলকে নির্দেশ করে।
ভূত্বকের নিচে প্রায় ২,৮৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত পুরুমন্ডলকে গুরুমন্ডল বলে। গুরুমন্ডল মূলত ব্যাসল্ট শিলা দ্বারা গঠিত। এ অংশে রয়েছে সিলিকা, ম্যাগনেসিয়াম, লোহা, কার্বন ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ।
গুরুমন্ডলের মধ্যে উর্ধ্ব গুরুমন্ডল যা ৭০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। এ মন্ডল প্রধানত লোহা ও ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ সিলিকেট খনিজ দ্বারা গঠিত। গুরুমন্ডল প্রধানত আয়রন অক্সাইড, ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড এবং সিলিকন ডাইঅক্সাইড সমৃদ্ধ খনিজ দ্বারা গঠিত এর আয়তন ও সর্বাধিক।

ঘ. উদ্দীপকের ‘ক’ স্তর হলো অশ্মমন্ডল বা ভূত্বক। অশ্মমন্ডল সরাসরি জীবজগতের অস্তিত্বের সাথে জড়িত। তাই এ স্তরের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে।
অশ্মমন্ডলের উপরের ভাগেই পৃথিবীর বাহ্যিক অবয়বগুলো, যেমন- পাহাড়, পর্বত, সমভূমি ইত্যাদি দেখা যায়। সেখানে মানুষ বসতি গড়ে তোলে জীবজগতের বেঁচে থাকার জন্য যেসব খনিজ বা অন্যান্য উপাদান প্রয়োজন তা অশ্মমন্ডলে বিদ্যমান।
মানুষের ব্যবহৃত জ্বালানি সম্পদ (কয়লা, তেল, গ্যাস), কৃষিকাজ, গৃহনির্মাণ প্রভৃতি সবকিছুই অশ্মমন্ডলের ওপর নির্ভরশীল। জীবজগৎ তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল। আর এই প্রাকৃতিক পরিবেশের আধার হলো অশ্মমন্ডল।
সুতরাং জীবজগতের ওপর ‘ক’ স্তরের তথা অশ্মমন্ডল বা ভূত্বকের গঠনিক গুরুত্ব অপরিসীম।

৩. ভারতে ‘ক’ পর্বতমালা রয়েছে যা বাংলাদেশের উত্তরে অবস্থিত এবং পৃথিবীর বৃহত্তম। আবার ‘খ’ একটি পর্বত যার উদাহরণ ভারতের বিন্ধ্য পর্বত।
ক. পর্বত কাকে বলে?
খ. মালভূমির গঠন প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের ‘ক’ পর্বত সৃষ্টির কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে ‘ক’ ও ‘খ’ পর্বতদ্বয়ের বৈশিষ্ট্যের তুলনামূলক আলোচনা কর।

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ভূপৃষ্ঠের অতি উচ্চ, সুবিস্তৃত এবং খাড়া ঢালবিশিষ্ট শিলাস্তৃপকে পর্বত বলে।

খ. মালভূমি গঠনের সাথে ভূআলোড়ন, ভূপৃষ্ঠের ক্ষয় প্রক্রিয়া এবং লাভা সঞ্চয় প্রক্রিয়া জড়িত।
পর্বত গঠনের সময় ভূআলোড়নের ফলে বিস্তীর্ণ ভূভাগ উঁচু হয়ে মালভূমি সৃষ্টি করে। আবার উঁচু ভূভাগ প্রাকৃতিক শক্তি দ্বারা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে মালভূমিতে পরিণত হয়। এছাড়াও মহাদেশীয় উঁচু ভূমিতে লাভা সঞ্চিত হয়ে মালভূমি গঠিত হয়ে থাকে।

গ. উদ্দীপকের ‘ক’ পর্বত হলো ভঙ্গিল পর্বত।
কোনো বৃহৎ জলরাশির অববাহিকায় পলি এসে জমা হলে এ অববাহিকা পার্শ্ববর্তী অঞ্চল হতে দুর্বল হয়। ফলে অভ্যন্তরীণ চাপ, পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের চাপ এবং ভূআন্দোলনের ফলে অববাহিকার তলানীসমূহ কুঁচকে গিয়ে ভঙ্গিল পর্বতের সৃষ্টি করে। পৃথিবীর অধিকাংশ বিখ্যাত পর্বতশ্রেণি এ ধরনের ভঙ্গিল পর্বত। যেমন- এশিয়ার হিমালয় পর্বত।
উদ্দীপকে বাংলাদেশের উত্তরে অবস্থিত এবং পৃথিবীর বৃহত্তম ভারতের হিমালয় পর্বত ভাঁজ পরে সৃষ্টি হয়। সুতরাং ‘ক’ ভঙ্গিল পর্বতশ্রেণি।

ঘ. উদ্দীপকের ‘ক’ ও ‘খ’ পর্বতদ্বয় হলো ভঙ্গিল পর্বত ও স্তপ পর্বত। পর্বতদ্বয়ের মধ্যে বৈশিষ্ট্যগত বৈসাদৃশ্য আলোচনা করা হলো।
ভঙ্গিল পর্বতের বৈশিষ্ট্য:
১. ভাজই ভঙ্গিল পর্বতের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য। এ পর্বতে অনেক শৃঙ্গ থাকে।
২. এ পর্বত স্তরযুক্ত নরম পাললিক শিলায় গঠিত এবং জীবাশ্ম বিশিষ্ট।
৩. এ পর্বতের শিলাস্তরের মধ্যে মাঝে মাঝে আগ্নেয় ও রূপান্তরিত শিলা দেখা যায়।
৪. পৃথিবীর দীর্ঘ ও উচ্চতম পর্বতগুলো এ পর্বত শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত।
৫. দীর্ঘ চ্যুতিরেখা এ পর্বতে লক্ষ্য করা যায়।
স্কুপ পর্বতের বৈশিষ্ট্য:
১. স্কুপ পর্বতের ঢাল খুব খাড়া হয়। কারণ তূপ পর্বত ধীরে ধীরে উঁচু হয় না। ভূপৃষ্ঠ থেকে হঠাৎ মাথা তুলে দাঁড়ায়।
২. ভঙ্গিল পর্বতের ন্যায় স্কুপ পর্বত বিস্তীর্ণ অঞ্চলব্যাপী অবস্থান করে না। তবে মহাদেশের কোনো কোনো অঞ্চলে বিচ্ছিন্নভাবে স্থূপ পর্বত দেখা যায়। এ পর্বত খুব বেশি উঁচু হয় না।
৩. ধূপ পর্বতের চূড়া চ্যাপ্টা আকৃতির হয়।
৪. এ পর্বতের শৃঙ্গ থাকে না।
উদ্দীপকে ভারতে হিমালয় পর্বতমালা রয়েছে যা বাংলাদেশের উত্তরে অবস্থিত এবং পৃথিবীর বৃহত্তম যা ভঙ্গিল পর্বতের অন্তর্ভুক্ত। অপরদিকে রয়েছে ভারতের বিন্ধ্য পর্বত যা স্তুপ পর্বতের অন্তর্ভুক্ত। তাই বলা যায় দুটি পর্বতদ্বয়ের মধ্যে বৈশিষ্ট্যগত বৈসাদৃশ্য বিদ্যমান।

৪. বাংলাদেশের প্রধান আম উৎপাদনকারী এলাকা থেকে একদল ছাত্র শিক্ষা সফরে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের চা উৎপাদনকারী অঞ্চলে বেড়াতে গেল। তারা সেখানকার ভূপ্রাকৃতিক অবস্থা সম্পর্কে সরেজমিনে অবস্থিত হয়ে উভয় এলাকার পার্থক্য বুঝতে পারল।
ক. কনরাড বিযুক্তি কী?
খ. ভঙ্গিল পর্বতের বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রথম অঞ্চলটির ভূমিরূপ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত অঞ্চল দুটির ভূমিরূপ বৈশিষ্ট্যের তুলনামূলক বিশ্লেষণ কর।

৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ব্যাসল্ট স্তরের সাথে গ্রানাইট স্তরের পৃথকীকরণ রেখাকে কনরাড বিযুক্তি রেখা বলে।

খ. বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে শিলায় ঢেউয়ের মত ভাঁজ পড়ে যে পর্বত সৃষ্টি হয় তাকে ভঙ্গিল পর্বত বলে।
গিরিজনি আলোড়নের ফলে ভঙ্গিল পর্বতের সৃষ্টি হয়েছে। ভূভাগের স্থান পরিবর্তনের ফলে প্রান্তভাগের অংশবিশেষে ভজের সৃষ্টি হয়ে এ পর্বত গঠিত হয়। ভঙ্গিল পর্বতে সুউচ্চ শৃঙ্গ থাকে, যা অন্যান্য পর্বতে কম দেখা যায়। এ পর্বত স্তরযুক্ত নরম পাললিক শিলা দ্বারা গঠিত। এ পর্বতে জীবাশ্মের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। পৃথিবীর দীর্ঘ ও উচ্চতম পর্বতগুলো এ শ্রেণির। রকি, হিমালয় ভঙ্গিল পর্বতের উদাহরণ।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রথম অঞ্চলটি হলো রাজশাহী অঞ্চল যা বরেন্দ্র ভূমির অন্তর্গত।
বাংলাদেশের দিনাজপুর, রাজশাহী, বগুড়া ও রংপুর অঞ্চল নিয়ে এ বরেন্দ্রভূমি অঞ্চল গঠিত। এ অঞ্চলের আয়তন ৯,২৮৮ বর্গকিলোমিটার বা ৩,৬০০ বর্গমাইল। বরেন্দ্রভূমি প্লাবন সমভূমি থেকে প্রায় ৬ থেকে ১২ মিটার উঁচু হয়ে থাকে। এ অঞ্চলটি প্লাইস্টোসিন যুগের উচ্চভূমি। সমগ্র বরেন্দ্র অঞ্চলটি পুনর্ভবা, আত্রাই ও যমুনা নদী দ্বারা চারটি অংশে বিভক্ত। এ অঞ্চলের মাটির রং অনেকটা হলুদ থেকে লালচে হলুদ। এ অঞ্চলে গভীর খাতবিশিষ্ট আঁকাবাঁকা ছোট ছোট কয়েকটি স্রোতস্বিনী রয়েছে। এগুলো খাড়ি নামে পরিচিত। বরেন্দ্র অঞ্চলটি কৃষিতে বিশেষভাবে উপযোগী। কৃষিজ ফসলের মধ্যে ধানই প্রধান। ধান ছাড়াও ৭ পাট, ভুট্টা, পান প্রভৃতি কিছু কিছু উৎপন্ন হয়ে থাকে এ অঞ্চলে।
এছাড়া এ অঞ্চল নদী বিধৌত বলে এখানকার মাটি কৃষি উপযোগী।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত অঞ্চল দুটি হলো রাজশাহী এবং সিলেট যাযথাক্রমে বরেন্দ্র ভূমি ও টারশিয়ারি যুগের ভূমিরূপের অন্তর্গত।
বাংলাদেশের দিনাজপুর, রাজশাহী, বগুড়া ও রংপুর অঞ্চল নিয়ে এ বরেন্দ্রভূমি অঞ্চল গঠিত। এ অঞ্চলের আয়তন ৯,২৮৮ বর্গকিলোমিটার বা ৩,৬০০ বর্গমাইল। বরেন্দ্রভূমি প্লাবন সমভূমি থেকে প্রায় ৬ থেকে ১২ মিটার উচু হয়ে থাকে। এ অঞ্চলটি প্লাইস্টোসিন যুগের উচ্চভূমি। সমগ্র বরেন্দ্র অঞ্চলটি পুনর্ভবা, আত্রাই ও যমুনা নদী দ্বারা চারটি অংশে বিভক্ত। এ অঞ্চলের মাটির রং অনেকটা হলুদ থেকে লালচে হলুদ। এ অঞ্চলে গভীর খাতবিশিষ্ট আঁকাবাকা ছোট ছোট কয়েকটি স্রোতস্বিনী রয়েছে। এগুলো খাড়ি নামে পরিচিত। বরেন্দ্র অঞ্চলটি কৃষিতে বিশেষভাবে উপযোগী। কৃষিজ ফসলের মধ্যে ধানই প্রধান। ধান ছাড়াও পাট, ভুট্টা, পান প্রভৃতি কিছু কিছু উৎপন্ন হয়ে থাকে এ অঞ্চলে।
অন্যদিকে, টারশিয়ারি যুগে হিমালয় পর্বত উথিত হওয়ার সময় মায়ানমারের দিক থেকে আগত গিরিজনি আলোড়নের ধাক্কায় ভাঁজ হয়ে উক্ত অঞ্চলটি গঠিত হয়। এ অঞ্চলের মাটি বেলে পাথর, শেল ও কর্দম দ্বারা গঠিত। বাংলাদেশের প্রকৃত পাহাড়িয়া এলাকা বলতে এ অলকেই বোঝায়। বাংলাদেশের রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান এবং সিলেট অঞ্চলের পাহাড়ি এলাকাসমূহ টারশিয়ারি যুগের অন্তর্গত এর মধ্যে সিলেট অঞ্চলটি টারশিয়ারী যুগের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের অন্তর্গত।
তাই বলা যায়, উদ্দীপকে উল্লিখিত দুই অঞ্চলের ভূমিরূপগত পার্থক্য রয়েছে।

৫. টাঙ্গাইল বিন্দুবাসিনী কলেজের ছাত্ররা গ্রীষ্মের ছুটিতে শিক্ষাসফরে রাঙামাটি যায়। তারা সেখানে মাটির রং, গঠন ও ঢালের ভিন্নতা দেখতে পায়। কলেজের আরেক দল শিক্ষার্থী বরিশাল অঞ্চলে গেল। সেখানে তারা নিজেদের এলাকা থেকে ভিন্ন প্রকৃতির মৃত্তিকা দেখতে পেল।
ক. উত্তরের পাহাড়গুলো স্থানীয়ভাবে কী নামে পরিচিত?
খ. গ্রীষ্মকালে বাংলাদেশে বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা কর।
গ. অনুচ্ছেদে উল্লিখিত কলেজটি যে অঞ্চলে অবস্থিত সে অঞ্চলের ভূমিরূপটি কীভাবে গঠিত হয়েছে ব্যাখ্যা কর।
ঘ. প্রথম দলটির ভ্রমণকৃত অঞ্চলটির সাথে দ্বিতীয় দলটির দেখা অঞ্চলটির ভূপ্রকৃতির তুলনামূলক বিশ্লেষণ কর।

৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. উত্তরের পাহাড়গুলো স্থানীয়ভাবে টিলা নামে পরিচিত।

খ. বাংলাদেশের উপর দিয়ে গ্রীষ্মকালে উষ্ণ ও আর্দ্র দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হয়।
গ্রীষ্মকালে পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিক হতে শুষ্ক ও শীতল বায়ু প্রবাহিত হয়। গ্রীষ্মকালে এ দুই বায়ুর সংঘর্ষে বাংলাদেশে প্রচুর বৃষ্টি হয়ে থাকে। গ্রীষ্মকালীন গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৫১ সেমি।

গ. অনুচ্ছেদে উল্লিখিত টাঙ্গাইল জেলার বিন্দুবাসিনী কলেজটি মধুপুর ও ভাওয়াল গড় অঞ্চলে অবস্থিত; যা প্লাইস্টোসিন কালের সোপানসমূহের মধুপুর ও ভাওয়াল গড়ের অন্তর্গত।
প্রায় ২৫,০০০ বছর পূর্বের সময়কে প্লাইস্টোসিনকাল বলে। টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর ও গাজীপুর জেলার ভাওয়াল গড় অঞ্চলটি প্লাইস্টোসিন যুগে অর্থাৎ আজ থেকে অর্ধ মিলিয়ন বছর পূর্বে বরফ যুগের পরোক্ষ প্রভাবের ফলে গঠিত হয়েছিল। এ অঞ্চলের মাটির রং লালচে ও ধূসর। এ চত্বর ভূমিতে পত্রপতনশীল বৃক্ষের বনাঞ্চল সৃষ্টি হয়েছে। মধুপুর ও ভাওয়াল গড় অঞ্চলটির উত্তরাংশ পার্শ্ববর্তী প্লাবনভূমি থেকে উচু এবং প্রান্তভাগ খাড়া ঢালবিশিষ্ট। এ অঞ্চলটি গাজীপুর, টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ জুড়ে বিস্তৃত।

ঘ. উদ্দীপকে প্রথম দলটির ভ্রমণকৃত অঞ্চল হলো রাঙামাটি যা টারশিয়ারি যুগের এবং দ্বিতীয় দলটির দেখা অঞ্চলটি হলো বরিশাল যা সাম্প্রতিককালের প্লাবন সমভূমির অন্তর্ভুক্ত।
টারশিয়ারি যুগে হিমালয় পর্বত উথিত হওয়ার সময় মায়ানমারের দিক থেকে আগত গিরিজনি আলোড়নের ধাক্কায় ভাঁজ হয়ে উক্ত অঞ্চলটি গঠিত হয়। এ অঞ্চলের মাটি বেলে পাথর, শেল ও কর্দম দ্বারা গঠিত। বাংলাদেশের প্রকৃত পাহাড়িয়া এলাকা বলতে এ অঞ্চলকেই বোঝায়। রাস্তাঘাট, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, সিলেট, ময়মনসিংহ প্রভৃতি অঞ্চল টারশিয়ারি যুগের পাহড়ের অন্তর্ভুক্ত।
অপরদিকে, বরিশালে অসংখ্য ছোট-বড় নদী জালের মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। সমভূমির ওপর এ নদীগুলো প্রবাহিত হওয়ার কারণে বর্ষাকালে বন্যার সৃষ্টির হয়। দীর্ঘদিন যাবৎ এরূপ বন্যার সঙ্গে পরিবাহিত মাটি সঞ্চিত হয়ে এ প্লাবন সমভূমি গঠিত হয়। প্লাবন সমভূমি অঞ্চলে যেসব ভূমিরূপের সৃষ্টি হয় সেগুলোই মূলত নদীর সঞ্চয়জাত ভূমিরূপ।
সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকের প্রথম ও দ্বিতীয় দলটির দেখা ভূমিরূপ দুটির মধ্যে তুলনামূলক ব্যাপক পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।

৬. নিচের চিত্রটি লক্ষ্য কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।

ক. ভিসুভিয়াস কোন ধরনের পর্বত?
খ. ভঙ্গিল পর্বত কীভাবে সৃষ্টি হয় ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে ক চিহ্নিত স্তরটির বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের খ ও গ চিহ্নিত স্তর দুটোর তুলনামূলক বিশ্লেষণ কর।

৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ভিসুভিয়াস আগ্নেয় বা সঞ্চয়জাত পর্বত।

খ. ভঙ্গিল পর্বত প্রধানত পাললিক শিলা দ্বারা গঠিত। তবে, পরিচালন স্রোতের মাধ্যমে বিভিন্ন পাতের চলনই ভঙ্গিল পর্বত সৃষ্টির প্রধান কারণ।
দীর্ঘদিন ধরে অগভীর সমুদ্র বা মহাখাত অঞ্চলের তলদেশে পলি সঞ্চিত হয়ে পাললিক শিলার সৃষ্টি হয়। পরে এ পাললিক শিলা বিভিন্ন পার্শ্বচাপ ও প্রাকৃতিক ক্রিয়ায় ফলে ভঙ্গিল পর্বতের সৃষ্টি করে। নেপালের হিমালয় ভঙ্গিল পর্বতের অন্তর্ভুক্ত।

গ. চিত্রের ‘ক’ স্তরটি অশ্মমন্ডল।
পৃথিবীর উপরের কঠিন ও পাতলা শিলাস্তরকে অশ্মমন্ডল বলে।
ভূপৃষ্ঠের নানা প্রকার শিলা দ্বারা গঠিত কঠিন বহিরাবরণকে অশ্মমন্ডল বলে। ‘অশ্ম’ শব্দের অর্থ হলো শিলা। যে কারণে এ মন্ডলকে শিলামন্ডলও বলা হয়। এ মন্ডলের গভীরতা ৩ কি.মি. হতে ৪০ কি.মি. পর্যন্ত হয়ে থাকে। গড় গভীরতা ২০ কি.মি.। এ স্তরের আপেক্ষিক গুরুত্ব পানির চেয়ে ২/৩ গুণ ভারী। এ শিলামন্ডল সিলিকন, ম্যাগনেসিয়াম, কোয়ার্টজ, ফেলসপার, গ্রানাইট ও কিছু ব্যাসল্ট ৭ উপাদান দ্বারা গঠিত। অশ্মমন্ডলের নিচের দিকে প্রতি কিলোমিটারে ৩০° সেলসিয়াস তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। এ স্তরটি দুটি স্তরে বিভক্ত। উপরের স্তরটি হালকা। এ স্তরকে সিয়াল স্তর বলে। নিচের স্তরটি ভারী। এ স্তরকে সিমা স্তর বলে।

ঘ. চিত্রের ‘খ’ ও ‘গ’ চিহ্নিত স্তর দুটি যথাক্রমে গুরুমন্ডল ও কেন্দ্রমন্ডল। বৈশিষ্ট্যগতভাবে এদের মধ্যে কিছু পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় যা নিচে আলোচনা করা হলো-
অশামন্ডলের নিচের স্তরকে গুরুমন্ডল বলে। গুরুমন্ডল স্তরের গভীরতা ১৫ কিমি. থেকে ২,৮৮৫ কিমি পর্যন্ত। এটি মূলত ব্যাসল্ট শিলায় গঠিত। গুরুমন্ডলকে বহিঃগুরুমন্ডল ও অমত্মঃগুরুমন্ডল এ দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। বহিঃগুরুমন্ডল স্তরটি ১০০ কিমি. থেকে ৭০০ কিমি পর্যন্ত বিস্তৃত। অমত্মঃগুরুমন্ডল স্তরটি ৭০০ কিমি. থেকে ২,৮৮৫ কিমি পর্যন্ত বিস্তৃত।
অন্যদিকে পৃথিবীর কেন্দ্রের চারিদিকে প্রায় ৩,৪৮৬ কিমি. ব্যাসার্ধের এক গোলক অবস্থিত। এ গোলকটির নাম কেন্দ্রমন্ডল। কেন্দ্রমন্ডলটি গুরুমন্ডল (২৮৮৫ কিমি) থেকে পৃথিবীর কেন্দ্র (৬,৩৭১ কিমি) পর্যন্ত বিস্তৃত। গুটেনবার্গ বিযুক্তি থেকে এর গভীরতা ৩,৪৮৬ কিমি। এর মূল উপাদান নিকেল ও লোহা। তবে পারদ ও সিসার মতো ভারী ধাতুও কেন্দ্রমন্ডলে বিদ্যমান। এর তাপমাত্রা স্থানভেদে ৩,০০০°-৫,০০০° এ সে, বা তারও বেশি।
এ থেকে বোঝা যায়, গুরুমন্ডল ও কেন্দ্রমন্ডলের বৈশিষ্ট্যের ভিন্নতা আছে।

HSC ভূগোল ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায় ২ pdf download

৭. ইমরান স্যার শ্রেণিতে পড়ানোর সময় ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমরা নিশ্চয় লক্ষ করে থাকবে, বড় একটি হাঁড়িতে পায়েস যেভাবে ধীরে ধীরে ঠান্ডা হয়ে উপরের স্তরটি কঠিন আবরণ ধারণ করে পৃথিবীও এভাবে ক্রমান্বয়ে শীতল ও কঠিন আকার ধারণ করেছে, যার নিচের অংশ এখনও উত্তপ্ত।
ক. বরেন্দ্রভূমির আয়তন কত?
খ. বাংলাদেশের টারশিয়ারি যুগের পাহাড় ভাঁজগ্রস্ত কেন?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বিষয়ের সাথে পৃথিবী সৃষ্টির প্রক্রিয়ার যে অংশের মিল রয়েছে তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ অবস্থার কারণ বিশ্লেষণ কর।

৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বরেন্দ্রভূমির আয়তন ৯,২৮৮ বর্গকিমি.।

খ. বাংলাদেশের টারশিয়ারি যুগের পাহাড় ভঙ্গিল পর্বতমালা থেকে সৃষ্টি হওয়ার কারণে এটি ভাঁজগ্রস্ত হয়েছে।
টারশিয়ারি যুগে হিমালয় পর্বত উত্থিত হওয়ার সময় উক্ত ভাঁজ আকৃতির ভূমিরূপ দেখা যায়। আমরা জানি, হিমালয় পর্বত ভঁজের মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছে। এ পর্বতের নিচের দিকে ধীরে ধীরে বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চলের দিকে এসে ভাঁজের সৃষ্টি করেছে। এ কারণে বাংলাদেশের টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ ভাঁজগ্রস্ত।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বিষয়ের সাথে পৃথিবীর ভূত্বক অংশের ব্যাপক মিল রয়েছে।
পৃথিবীর উপরের পৃষ্ঠের নাম হলো ভূত্বক। পৃথিবী শুরুতে ছিল একটি জ্বলন্ত গ্যাসপি- এবং কোটি কোটি বছর ধরে বিভিন্ন পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গড়ে উঠেছে পৃথিবীর বাহ্যিক গঠন। পৃথিবীর উৎপত্তির সময় বাইরের দিকে হালকা গ্যাস তারপর লবণ জাতীয় পদার্থের গ্যাস এবং একেবারে ভেতরের দিকে ভারী লৌহ জাতীয় পদার্থের গ্যাস ছিল। এরপর উত্তপ্ত বায়বীয় পৃথিবী ক্রমশ তাপ বিকিরণ করে শীতল হতে থাকে। তাপ বিকিরণের ফলে একটির পর একটি খনিজ পদার্থ দানা বেঁধে তরল পদার্থ হতে পৃথক হতে থাকে। দানাগুলোর ঘনত্ব অধিক বলে এরা উৎপত্তির সঙ্গে সঙ্গে নিমজ্জিত হতে থাকে ও অভ্যন্তরীণ তাপের দরূন পুনরায় সম্পূর্ণরূপে বা আংশিক দ্রবীভূত হয়। এ প্রকারে অভ্যন্তরীণ তাপ কিছুটা কমে যায়। এরূপে একটির পর একটি পদার্থ বা উপরিভাগে সৃষ্টি হয়ে নিচে চলে যায় ও সেখানকার তাপ হ্রাস পয়। এভাবে উক্ত প্রক্রিয়া বহবার চলার ফলে উপরের দিকে শীতল ও কঠিন আবরণের সৃষ্টি হয় যা ভূত্বক নামে পরিচিত।

ঘ. উদ্দীপকে পৃথিবীর অভ্যন্তরের উত্তপ্ত অবস্থার কথা বলা হয়েছে।
পৃথিবী প্রথম অবস্থায় জ্বলন্ত আগুনের মতো ছিল। প্রায় ৫০০ কোটি বছর ধরে তাপ বিকিরণ করে তা ঠান্ডা হলেও এর অভ্যন্তর ভাগ এখনও উত্তপ্ত রয়েছে। ভূত্বকের শিলা আবরণ তাপের উপযুক্ত বাহক নয় বলে ভূঅভ্যন্তর ভাগ শীতল হতে পারেনি। পৃথিবীর উপরিস্থিত বস্তুর প্রচন্ড চাপের দরুনও ভূঅভ্যন্তরে প্রচুর তাপ সৃষ্টি হতে পারে। তেজস্ক্রিয় পদার্থের তেজস্ক্রিয়তার ফলেও তাপের সৃষ্টি হয়। পৃথিবীর সৃষ্টি হতে এ পর্যন্ত তেজস্ক্রিয় পদার্থের দ্বারা প্রচুর তাপ সৃষ্টি হয়েছে। তাই ভূঅভ্যন্তরে প্রচুর তাপ থাকাই স্বাভাবিক। পৃথিবীর বিভিন্ন গভীরতায় উত্তাপের প্রকৃত পরিমাণ মাপা সম্ভব নয়। কারণ অভ্যন্তরে প্রবেশ করা সম্ভব নয়। তবে খনির গভীরতায় প্রাপ্ত তাপ হতে কিছুটা নির্ণয় করা সম্ভব। খনির অভ্যন্তরে প্রতি ৩০ মিটার গভীরতায় ১০ সেন্টিগ্রেড উত্তাপ বৃদ্ধি পায়। পৃথিবীর অভ্যন্তরে বিভিন্ন স্তরে উত্তাপ সম্বন্ধে বিভিন্ন বিজ্ঞানী বিভিন্ন সময়ে যে তত্ত্ব ও তথ্য পেশ করেছেন তা প্রায় একই ধরনের। তারা সকলে একমত যে, ভূপৃষ্ঠ হতে কেন্দ্রের দিকে তাপ ক্রমশ বেশি। তাই স্থানভেদে তাপমাত্রার ব্যবধান প্রতীয়মান হয়।
সুতরাং বলা যায়, পৃথিবীর অভ্যন্তর ভাগে বিভিন্ন প্রকার খনিজ পদার্থ, তেজস্ক্রিয় মৌল এবং অন্যান্য পদার্থের ভিন্নতা ও চাপ প্রভৃতির কারণে এর অভ্যন্তরভাগের উষ্ণতার ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়।

৮. মুকল দৈনিক পত্রিকা পড়ে এমন একটি ভূমিরূপ সম্পর্কে জানতে পারল যা, সাধারণত সমুদ্র সমতল থেকে সামান্য উঁচু এবং কোনো কোনো সময় কয়েক মিটার উঁচুতে গঠিত হয়। এ ভূমিরূপ সৃষ্টিতে ক্ষয় ও সঞ্চয় কাজ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং পৃথিবীর মোট ভূমিরূপের শতকরা ৩৬ ভাগ এ ভূমিরূপ দ্বারা গঠিত।
ক. ভূত্বক কী?
খ. অ্যাসথেনোস্ফিয়ার বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে মুকুল দৈনিক পত্রিকা পড়ে কোন ভূমিরূপ সম্পর্কে জানতে পেরেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. মানবজীবনে উল্লিখিত ভূমিরূপের প্রভাব বিশ্লেষণ কর।

৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ভূপৃষ্ঠের কঠিন বহিরাবরণকে ভূত্বক বলে।

খ. বহিঃগুরুমন্ডল স্তরের নমনীয় অংশকে অ্যাসথেনোস্ফিয়ার বা নমনীয়মন্ডল বলে।
গঠন উপাদানের গুরুত্বের তারতম্য অনুসারে গুরুমন্ডলকে দুটি স্তরে বিভক্ত করা হয়েছে। যথা- বহিঃগুরুমন্ডল ও অমত্মঃগুরুমন্ডল। বহিঃগুরুমন্ডলের স্তরটি ১০০ থেকে ৭০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। ক্রোমিয়াম, লোহা, সিলিকন ও ম্যাগনেসিয়াম দ্বারা গঠিত বলে একে ক্রোফেসিমা (Cro-Fe-Si-Ma) বলা হয়। এ স্তরেই নমনীয় মন্ডল (Astheno Sphere) অবস্থিত।

গ. উদ্দীপকের মুকুল দৈনিক পত্রিকা পড়ে সমভূমি সম্পর্কে জানতে পেরেছে।
সমুদ্র সমতলের প্রায় সমউচ্চতায় সুবিস্তৃত স্থলভাগকে সমভূমি বলা হয়। ভূমির গঠন, ক্ষয়কার্য, সঞ্চয়কার্য প্রভৃতির ফলে সাধারণত সমভূমির উৎপত্তি হয়। ক্ষয়কার্যের ও সঞ্চয়কার্যের ফলে বেশিরভাগ সমভূমিই সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণত বায়ুপ্রবাহ, সূর্যতাপ, বৃষ্টিপাত, পানিস্রোত, হিমবাহ প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তিগুলোর দ্বারা উচ্চভূমি ক্রমশ ক্ষয় হয়ে সমভূমিতে পরিণত হয় যা ক্ষয়জাত সমভূমি নামে পরিচিত।
এরূপ পরিবর্তনের জন্য হাজার হাজার বছর সময়ের প্রয়োজন হলেও পৃথিবীর বহু সমভূমি এভাবেই সৃষ্টি হয়েছে। এটি বিভিন্নভাবে গঠিত হতে পারে। যেমন- নদীবিধৌত সমভূমি, হৈমবাহিক সমভূমি, তরঙ্গকর্তিত সমভূমি, মরু সমভূমি প্রভৃতি। আবার নদী, হিমবাহ, বায়ুপ্রবাহ প্রভৃতির দ্বারা পলি, কাকর, বালুকণা, ধূলিকণা প্রভৃতি কোনো নিম্ন অঞ্চলে সঞ্চিত হতে হতে কালক্রমে যে সমভূমির সৃষ্টি হয় তাই সঞ্চয়জাত সমভূমি। এদের মধ্যে পলল সমভূমি, প্লাবন সমভূমি, বদ্বীপ সমভূমি, হিমবাহিত সমভূমি, লাভা সমভূমি, লোয়েস সমভূমি, হ্রদ সমভূমি প্রভৃতি সঞ্চয়ের মাধ্যমে গঠিত হয়েছে।

ঘ. উদ্দীপকে যে ভূমিরূপের কথা বলা হয়েছে তা হচ্ছে সমভূমি। উক্ত সমভূমি মানবজীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
পৃথিবীর প্রায় ৩৬ ভাগ সমভূমি দ্বারা গঠিত। সমভূমিতে বিভিন্ন ধরনের কৃষিজ ও বনজ ফসল উৎপাদন করা হয়। উক্ত কৃষি ফসলের আশেপাশেই বেশিরভাগ মানুষ ঘরবাড়ি ও দালানকোঠা নির্মাণ করে বসতি স্থাপন করেছে। সমভূমি এলাকায় বেশিরভাগ নদী পরিলক্ষিত হয়। এসব নদীবিধৌত সমভূমি অঞ্চলের মাটি প্লাবিত হয়ে পলি জমা হয় এবং মাটি উর্বর হয়ে থাকে। উক্ত উর্বর মাটিতে বিভিন্ন ধরনের ফসলের চাষাবাদ করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের শিল্পের কাঁচামাল আসে উক্ত কৃষিজ ফসল থেকে যা শিল্পের বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। এসব শিল্পপণ্য বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা হয়। সমভূমি অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য স্থলপথ নির্মাণ করা হয়। উক্ত পথের মাধ্যমে মানুষ পণ্যসামগ্রী নিয়ে একস্থান থেকে অন্যস্থানে গমন করে।
সুতরাং বলা যায়, সমভূমি হচ্ছে মানববসতি স্থাপন এবং জীবনধারণের জন্য একমাত্র অবলম্বন। তাই মানবজীবনে এর গুরুত্ব অপরিসীম।

৯. জার্মানির অধিবাসী ডেনিয়েল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি দেশে বেড়াতে গিয়ে দেখলেন, সে দেশের অধিকাংশ অঞ্চল নদী বিধৌত হয়ে গঠিত হলেও দেশটির উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চল সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রকৃতির। যা দেশটিকে ভূপ্রাকৃতিক গঠনের দিক দিয়ে বৈচিত্র্যমন্ড-ত করেছে।
ক. কনরাড বিযুক্তি কী?
খ. কেন্দ্রমন্ডলের ব্যাখ্যা দাও।
গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত দেশটির উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চল যে ভূমিরূপের অন্তর্গত তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত দেশটির অধিকাংশ অঞ্চলের ভূপ্রকৃতি বিশ্লেষণ কর।

৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. সিয়াল স্তরের সাথে সিসা স্তরের পৃথকীকরণ রেখাকে কনরাড বিযুক্তি রেখা বলে।

খ. পৃথিবীর কেন্দ্রের চারিদিকে প্রায় ৩,৪৮৬ কিমি. ব্যাসার্ধের এক গোলক অবস্থিত। এ গোলকটির নাম কেন্দ্রমন্ডল। কেন্দ্রমন্ডলটি গুরুমন্ডল (২৮৮৫ কিমি) থেকে পৃথিবীর কেন্দ্র (৬,৩৭১ কিমি) পর্যন্ত বিস্তৃত। গুটেনবার্গ বিযুক্তি থেকে এর গভীরতা ৩,৪৮৬ ৪ কিমি। এর মূল উপাদান নিকেল ও লোহা। তবে পারদ ও সিসার মতো ভারী ধাতুও কেন্দ্রমন্ডলে বিদ্যমান। এর তাপমাত্রা স্থানভেলে ৩,০০০°-৫,০০০° সে. বা তারও বেশি।

গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত দেশটি হলো বাংলাদেশ যার উত্তর পূর্ব ও দক্ষিণ পূর্ব অঞ্চল ভিন্ন হলেও এ দুটি অঞ্চলই টারশিয়ারি যুগের পাহাড়ের অন্তর্গত।
প্রায় ৭০ মিলিয়ন বছর পূর্বে উত্থিত হওয়া টারশিয়ারি যুগের হিমালয় পর্বত গঠিত হয়েছে বলে একে টারশিয়ারি যুগের পাহাড় বলে। এ পাহাড়সমূহ বেলে, সেস্নট জাতীয় পাথর ও কর্দমের সংমিশ্রণে গঠিত।
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়সমূহ পূর্বাঞ্চলের রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি জেলা ও চট্টগ্রাম, উত্তর পূর্বাঞ্চলের সিলেট জেলায় অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত। এ পাহাড়সমূহ বিশাল পাললিক শিলা দ্বারা গঠিত। এ জাতীয় পাহাড়ের গড় উচ্চতা ৬০০ মিটার। পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে পাহাড়সমূহের উচ্চতা ক্রমশ বেড়েছে। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বত তাজিনডং এ অঞ্চলের পাহাড়সমূহের র অন্তর্ভুক্ত যা বান্দরবান জেলায় অবস্থিত। এ অঞ্চলের পাহাড়ের মধ্যে বহু সংকীর্ণ উপত্যকা রয়েছে। এ উপত্যকা দিয়ে কর্ণফুলী, সাঙ্গু, মাতামুহুরী, হালদা, কাসালং, নাফ প্রভৃতি নদী প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিশে গেছে। নদীগুলো খুবই খরস্রোতা।

ঘ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত দেশটি হলো বাংলাদেশ যেখানে অধিকাংশ অঞ্চল সাম্প্রতিককালের প্লাবন সমভূমি দ্বারা গঠিত।
সাম্প্রতিককালের প্লাবন সমভূমি অঞ্চলটি পদ্ম, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, মেঘনা প্রভৃতি নদ-নদী ও এদের উপনদী শাখানদী বাহিত পলিমাটি দ্বারা গঠিত। এ অঞ্চলের মোট আয়তন ১,২৪,২৬৬ বর্গকিলোমিটার। বাংলাদেশের বৃহত্তম এ এলাকার নদীগুলো প্রায়ই গতি পরিবর্তনের কারণে নতুন নতুন পললভূমি গঠিত হতে দেখা যায়। এ সমভূমির গড় উচ্চতা ৯ মিটার (৩০ ফুট) যে কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে প্লাবন সমভূমি এলাকাতে পানি ওঠে যায়।
প্লাবন সমভূমি পলি দ্বারা গঠিত বলে এ অঞ্চলের মাটি উর্বরতা তুলনামূলকভাবে অন্য এলাকার চেয়ে অনেক বেশি। এ অঞ্চল কয়েকটি ভাগে বিভক্ত। যথা- কুমিল্লা বা ত্রিপুরার সমভূমি, পাদেশীয় ও পলল সমভূমি, সিলেট অববাহিকা, গঙ্গার বহ্মপুত্র, মঘনার প্লাবন সমভূমি, বদ্বীপ সমভূমি ও চট্টগ্রাম উপকূলি সমভূমি প্রধান।
সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত দেশটি হলো বাংলাদেশ যেখানে অধিকাংশ অঞ্চল সাম্প্রতিককালের প্লাবন সমভূমি দ্বারা গঠিত।

১০. নিচের ছকটি লক্ষ করো এবং সংশিস্নষ্ট প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:

ভূমিরূপ

উদাহরণ

আনাতোলিয়া, ফিজেন্ড, কলরাডো

আগ, চাঁদ

বিজয়, কেওক্রাডং

ক. ভঙ্গিল পর্বত কাকে বলা হয়?
খ. সত্মূপ পর্বত সৃষ্টির প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত ‘গ’ ভূমিরূপটি সৃষ্টির কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত ‘ক’ ও ‘খ’ ভূমিরূপদ্বয়ের বৈসাদৃশ্য বিশ্লেষণ কর।

১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বিস্তৃত ও সুউচ্চ অনেক পর্বতের সমন্বয়ে যে ভাঁজবিশিষ্ট পর্বত গঠিত হয় তাকে ভঙ্গিল পর্বত বলে।

খ. ভূআলোড়নের ফলে ভূত্বকের স্থানচ্যুতি ঘটে। ভূত্বকের এ স্থানচ্যুতি কোথাও উপরের দিকে হয়, আবার কখনো নিম্নগামী হয়। চ্যুতি বরাবর ঊর্ধ্বগামী শিলাস্তুপকে সত্মূপ পর্বত বলে।
এ ধরনের পর্বতের অন্তত একপাশে উঁচু কোণবিশিষ্ট স্বাভাবিক চ্যুতি থাকে। ভূআলোড়নের সময় ভূপৃষ্ঠে যে টানজনিত চাপ পড়ে তাতে ভূত্বকে ফাটলের সৃষ্টি হয়। বস্ন্যাক ফরেস্ট, ভোজ, নীলগিরি ও আন্ন্যামালি এ পর্বতের অন্তর্ভুক্ত।

গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত ‘গ’ ভূমিরূপটি হলো ভঙ্গিল পর্বত। নিচে ভঙ্গিল পর্বত সৃষ্টির কারণ ব্যাখ্যা করা হলো-
ভূগর্ভের অভ্যন্তরের শিলার চাপের ফলে ভূপৃষ্ঠে উঁচুনিচু অবস্থার সৃষ্টি হয়, যাকে ভঙ্গিল পর্বত বলে। বিস্তৃত ও সুউচ্চ অনেক পর্বতের সমন্বয়ে ভঙ্গিল পর্বত গঠিত হয়। এ পর্বতের প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ভাঁজ। সাধারণত অভ্যন্তরের তলদেশে যেখানে একটি শিলামন্ডলের প্লেট, পার্শ্ববর্তী প্লেটের তলদেশে ঢুকে পড়ে সেখানে বরাবর বিপুল পরিমাণ পলি এসে জমা হতে থাকে। এসব পলি এক পর্যায়ে প্রবল পার্শ্বচাপের কারণে কোথাও ঊর্ধ্বভাঁজের সঙ্গেই নিম্নভাজের সৃষ্টি করে। বিস্তৃত এলাকাজুড়ে এসব ঊর্ধ্ব ও অধঃক্ষেপ সংবলিত ভূমিরূপ মিলেই ভঙ্গিল পর্বত গঠিত হয়। এ ধরনের ভঙ্গিল পর্বতের উদাহরণ হচ্ছে এশিয়ার হিমালয় পর্বত, বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের পাহাড় বিষয়। কেও ক্রাডং ইউরোপের আল্পস ও ইউরাল পর্বত এবং উত্তর আমেরিকার রকি পর্বত প্রভৃতি।
তাই বলা যায়, ‘গ’ ভূমিরূপটি হলো ভঙ্গিল পর্বত অন্তর্গত।

ঘ. উদ্দীপকে ‘ক’ এবং ‘খ’ চিহ্নিত ভূমিরূপটি হলো মালভূমি এবং সমভূমি। এ ভূমিরূপদ্বয়ের মধ্যে বৈশিষ্ট্যগত অনেক পার্থক্য রয়েছে। নিচে তা ব্যাখ্যা করা হলো-
মালভূমির উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩০০-৬০০ মিটার হলেও কোনো কোনো মালভূমির উচ্চতা এর চেয়ে অনেক বেশি। নিম্ন মালভূমিও অনেক আছে, যেগুলোর উচ্চতা গড়ে ৬০০ মিটারেরও কম। পৃথিবীর সর্বোচ্চ মালভূমি পামির এর গড় উচ্চতা ৪,৮০০ মিটারের বেশি। পৃথিবীর বৃহত্তম মালভূমি তিববত এর উচ্চতা প্রায় ৪,০০০ মি.। আগ্নেয়জাত মালভূমি অগ্ন্যুৎপাতের ফলে সৃষ্টি হয়। এটি বিস্তৃত উচ্চভূমি। উপরিভাগ কিছুটা তরঙ্গায়িত বা প্রায় সমতল। চারদিকের ঢাল বেশ খাড়া অর্থাৎ মালভূমি অনেকটা টেবিলের মতো দেখতে। আনাতেলিয়, ফিজেন্ট, বলিভিয়া প্রভৃতি মালভূমির উদাহরণ।
অন্যদিকে, সমুদ্র সমতলের প্রায় সমউচ্চ সুবিস্তৃত স্থলভাগকে সমভূমি বলে। সমভূমির উপরিভাগ প্রায় সমান অথবা সামান্য উঁচুনিচু হয়। ভূমির গঠন, ক্ষয়কার্য, সয়কার্য প্রভৃতির ফলে সমভূমির উৎপত্তি হয়। সমভূমি নদী, হিমবাহ দ্বারা বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপায়ে গঠিত হয়।
এখানে ভূমি সমতল বলে রাস্তাঘাট নির্মাণ সহজ হয়। কৃষির জন্যও ও সমভূমি উপযোগী স্থান। উৎপত্তির ওপর নির্ভর করে ক্ষয়জনিত সমভূমি ও সয়জাত সমভূমি এ দুই প্রকার সমভূমি দেখা যায়। সমভূমির উচচতা সাধারণত ১০০০ মিটারের মধ্যে হয়। তবে কোথাও কোথাও ২৫০-৩০০ মিটার উঁচুতেও সমভূমি অবস্থান করে। এ ধরনের ভূমিরূপ বসবাসের জন্য উপযোগী। আগ চাঁদ হলো সমভূমি অঞ্চলের উদাহরণ।
তাই বলা যায়, মালভূমি এবং সমভূমির মধ্যে গঠনগত ও বৈশিষ্ট্যগত কিছু পার্থক্য বিদ্যমান।

1 Comments

  1. Anonymous1:23:00 PM

    2022 er board questions answere lagbe 🙂

    ReplyDelete
Post a Comment
Previous Post Next Post