HSC মনোবিজ্ঞান ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download অধ্যায় ৭

এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Psychology 2nd Paper Srijonshil question and answer. HSC Psychology 2nd Paper (Srijonshil) Creative Questions pdf download. HSC Monobiggan 2nd paper Srijonshil Proshno Uttor.

উচ্চ মাধ্যমিক
মনোবিজ্ঞান
দ্বিতীয় পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
অধ্যায়-৭

HSC Psychology
2nd Paper
Srijonshil Question and Answer pdf download

১. দৃশ্য-১: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা আতিয়া স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রেখে একটি শিশুর আচরণ অবলোকন করছেন। তার স্বাভাবিক আচরণ যাতে বিঘ্নিত না হয় সেদিকেও সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন।
দৃশ্য-২: সীমা একটি শিশুর আচরণ পর্যবেক্ষণের জন্য তাকে গবেষণাগারে নিয়ে আসেন এবং কিছু শর্ত প্রয়োজন অনুসারে বাড়িয়ে কমিয়ে তার আচরণ পর্যবেক্ষণ করেন। সবশেষে প্রাপ্ত উপাত্ত বিশ্লেষণ ও সরলীকরণের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
ক. বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি কী?
খ. পরীক্ষণ পদ্ধতি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় কেন?
গ. আতিয়ার ব্যবহৃত গবেষণা পদ্ধতির নাম লিখ এবং ব্যাখ্যা কর।
ঘ. দৃশ্য-২ এ সীমার ব্যবহৃত পদ্ধতি দুটো উল্লেখ কর এবং তুলনামূলক বিশ্লেষণ কর।

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি বলতে অনুসন্ধানের সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়াকে বোঝায়, যার দ্বারা ধারাবাহিক, বস্ত্তনিষ্ঠ ও সুশৃঙ্খল জ্ঞান আহরণ করা সম্ভব।

খ. পরীক্ষণ পদ্ধতি হলো এমন একটি সুপরিকল্পিত ও সুনিয়ন্ত্রিত বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি, যার মাধ্যমে অনির্ভরশীল চল ও নির্ভরশীল চলসমূহের কার্যকারণগত সম্পর্ক নির্ণয় ও পরিমাপ করা হয়।
মনোবৈজ্ঞানিক গবেষণার ক্ষেত্রে এ পরীক্ষণ পদ্ধতি হলো মানুষ বা প্রাণীর আচরণ ও মানসিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া নির্ণয়ের একটি সুপরিকল্পিত ও সুনিয়ন্ত্রিত বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি। পরীক্ষণ পদ্ধতিতেই সকল বৈজ্ঞানিক বৈশিষ্ট্যাবলি বর্তমান থাকে। এ কারণে পরীক্ষণ পদ্ধতি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়।

গ. উদ্দীপকে আতিয়ার ব্যবহৃত গবেষণা পদ্ধতির নাম প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি। নিচে ব্যাখ্যা করা হলো-
প্রাকৃতিক (স্বাভাবিক) পরিবেশে সংঘটিত কোনো ঘটনাকে অনুরূপভাবে পর্যবেক্ষণ করার প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি বলতে মূলত প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিকেই বোঝানো হয়ে থাকে। প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ তখনই সর্বোত্তম পর্যবেক্ষণ হবে, যখন পরীক্ষণপাত্র বুঝতে না পারে যে তাকে পার্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। স্বাভাবিক পরিবেশে যা ঘটে তার উপর খুব কম নিয়ন্ত্রণ করা যায়। পর্যবেক্ষণকালে যা কিছু ঘটছে, আমরা কেবলমাত্র সেসব আচরণই অনুধাবন করতে পারি। তাছাড়া স্বাভাবিক পরিবেশে নির্দিষ্ট চলনসমূহের মধ্যকার কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ণয় করাও খুব কঠিন। এ পদ্ধতিকে বিষয়গত পদ্ধতি বলা হয়। একে আবার পরোক্ষ পদ্ধতিও বলা হয়। কারণ এ পদ্ধতিতে অপরের বাহ্যিক আচরণ পর্যবেক্ষণ করে তার মানসিক অবস্থা ও ক্রিয়া সম্পর্কে অনুমান করা হয়। প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিতে পরীক্ষণকারী স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রেখে প্রাণীর আচরণ পর্যবেক্ষণ করেন। যে সকল ঘটনাকে পরীক্ষাণাগারে তৈরি বা পুনরুৎপাদন করা যায় না, যেমন- বিবাহ বিচ্ছেদ, সামাজিক সংঘর্ষ, দুর্ভিক্ষ, দাঙ্গা ইতাদি ঘটনায় কারণ নির্ধারণের জন্য মনোবিজ্ঞানী প্রকৃত নাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির সাহায্যে ঘটনার সাথে সংশিস্নষ্ট শর্তাবলি খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করেন। এ পদ্ধতিতে পর্যবেক্ষককে ঘটনার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এ পদ্ধতি ব্যক্তিদোষে দুষ্ট। এ পদ্ধতিতে প্রাপ্ত তথ্যের যথাযর্থতা প্রতিপাদন করা কঠিন ব্যাপার।

ঘ. উদ্দীপকে দৃশ্য-২ এ সীমার ব্যবহৃত পদ্ধতি দুটির প্রথমটি হলো নিয়ন্ত্রিত পর্যবেক্ষণ এবং দ্বিতীয়টি হরো অনির্ভরশীল চল। নিচে এদের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা হলো- 
যে পদ্ধতিতে পর্যবেক্ষক পূর্বপ্রস্তুতি সহকারে স্বাভাবিক পরিবেশে সংঘটিত কোনো ঘটনা বা আচরণ প্রত্যক্ষ করেন তাকে নিয়ন্ত্রিত পর্যবেক্ষণ বলা হয়। এক্ষেত্রে পর্যবেক্ষক কী কী বিষয় পর্যবেক্ষণ করবেন এবং কীভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন সে সম্পর্কে পূর্বেই একটি পরিকল্পনা তৈরি করেন এবং সেভাবেই পর্যবেক্ষণ করেন। অনেক সময় পর্যবেক্ষক আচরণের খুঁটিনাটি দিক লিপিবদ্ধ করেন, যাতে তিনি কোনো প্রয়োজনীয় বিষয় ভুলে না যান। বিস্তারিত পর্যবেক্ষণের সুবিধার জন্য অনেক ক্ষেত্রে টেপ রেকর্ডার ও ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়। সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করলে এ পদ্ধতিতে আচরণ সম্পর্কিত অনেক মূল্যবান তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব। যেমন- শিশুর আচরণ নিয়ে গবেষণা করার জন্য মনোবিজ্ঞানী বিভিন্ন পরিবেশে বিভিন্ন বয়সের শিশুর যাবতীয় ক্রিয়াকলাপ এ পদ্ধতিতে প্রত্যক্ষণ করতে পারেন।
আবার, সীমা যেহেতু কিছু শর্ত প্রয়োজন অনুসারে বাড়িয়ে কমিয়ে শিশুর আচরণ পর্যবেক্ষণ করেন, অর্থাৎ সে অনির্ভরশীল চলের প্রয়োগ করেছেন।
গবেষক যখন একটি পরীক্ষণ করেন তখন তিনি একজন বা একদল ব্যক্তিকে পরীক্ষণপাত্র হিসেবে গ্রহণ করেন। অতঃপর তিনি এক বা একাধিক চলের পরিবর্তন করেন এবং পরীক্ষণপাত্রের উপর তার প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করেন। এক্ষেত্রে পরীক্ষক যেসব অবস্থা বা চলের পরিবর্তন সাধন করেন সেগুলোকে অনির্ভরশীল চল বা পরীক্ষণমূলক চল বলা হয়। গবেষক প্রাণীর আচরণের উপর যে সকল চলের প্রভাব লক্ষ্য করেন সে সকল চলই হচ্ছে অনির্ভরশীল চল। এ চল নিজে নিজে পরিবর্তন হয় না। গবেষক তার ইচ্ছানুযায়ী হ্রাস বৃদ্ধি করে থাকেন।

২. জনাব মাহমুদুল হাছান শিশুদের আচরণের বিজ্ঞাশ এবং শিক্ষণ কার্যক্রমের উপর গবেষণা করেন। তিনি লক্ষ্য করেন শিশুদের বলবর্ধক প্রদান করা হলে নির্দিষ্ট আচরণটি করার প্রবণতা বৃদ্ধি পায় এবং বলবর্ধকের অনুপস্থিতিতে উদ্দীপকের সাথে প্রতিক্রিয়ার সম্পর্ক দুর্বল করে তোলে। জনাব মাহমুদুল হাছান তাঁর গবেষণাকার্য নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে বস্ত্তনিষ্ঠভাবে পরিচালনা করেছেন।
ক. সমস্যা কী?
খ. পরীক্ষণকে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি বলা হয় কেন?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বলবর্ধক কোন ধরনের চল?ব্যাখ্য কর। 
ঘ. জনাব, মাহমুদুল হাছান কোন পদ্ধতির সাহায্যে তাঁর পরীক্ষণ বৈশিষ্ট্যগুলি বিশ্লেষণ কর।

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. শাব্দিক অর্থে সমস্যা হলো একটি প্রস্তাবিত প্রশ্ন যার সমাধান প্রয়োজন।

খ পরীক্ষণ পদ্ধতিকে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি বলা হয়। পরীক্ষণ পদ্ধতিতে সুব্যবস্থিত ও সুপরিকল্পিত অবস্থায় সুনিয়ন্ত্রিত পরিবেশে উদ্দীপকের প্রতি পরীক্ষণপাত্রের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে গবেষণা করা হয়।
যে অনুসন্ধান কার্যে উদ্দীপকের প্রভাবের উপর অনুসন্ধানকারীর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা থাকে তাকে পরীক্ষণ বলা যায়। পরীক্ষণকার্য সাধারণত গবেষণাগারের নিয়ন্ত্রিত পরিবেশের ভেতর পরিচালনা করা হয়ে থাকে। তবে অনুরূপ পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারলে গবেষণাগারের বাইরেও পরীক্ষণ কার্য পরিচালনা করা যেতে পারে। পরীক্ষণ পদ্ধতির এ সমস্ত বৈশিষ্ট্যের কারণে একে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিও বলা হয়।

গ. উদ্দীপকে উল্লেখিত বলবর্ধক অনির্ভরশীল চল। নিচে ব্যাখ্যা করা হলো-
গবেষক প্রাণীর আচরণের উপর যে সকল চলের প্রভাব লক্ষ করেন সে সকল চলই হচ্ছে অনির্ভরশীল চল। গবেষক তার ইচ্ছানুসারে অনির্ভরশীল চলের হ্রাস বা বৃদ্ধি করে থাকেন। মনোবিজ্ঞানিগণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উদ্দীপকের প্রতি প্রাণীর প্রতিক্রিয়া নিয়ে গবেষণা করেন, এজন্য মনোবিজ্ঞানের গবেষণায় সাধারণত অনির্ভরশীল চল হলো উদ্দীপক। যেমন- শিক্ষণের উপর পুরস্কারের প্রভাব। এখানে পুরস্কার হচ্ছে অনির্ভরশীল চল।
উদ্দীপকে জনাব মাহমুদুল হাছান শিশুদের আচরণের বিকাশ এবং শিক্ষণ কার্যক্রমের উপর গবেষণা করেন। তিনি লক্ষ্য করেন শিশুদের বলবর্ধক প্রদান করা হলে নির্দিষ্ট আচরণটি করার প্রবণতা বৃদ্ধি পায় এবং বলবর্ধকের অনুপস্থিতিতে উদ্দীপকের সাথে প্রতিক্রিয়ার সম্পর্ক দুর্বল করে তোলে অর্থাৎ আচরণটি করার প্রবণতা হ্রাস পায়।

ঘ. উদ্দীপকে জনাব মাহমুদুল হাছান নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতির সাহায্যে শিশুদের আচরণের বিকাশ এবং শিক্ষণ কার্যক্রমের উপর পরীক্ষণ পরিচালনা করেছেন। নিচে নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতির বৈশিষ্ট্যগুলি বিশ্লেষণ করা হলো-
১. এ পদ্ধতিতে গবেষক পূর্বপ্রস্তুতি সহকারে স্বাভাবিক পরিবেশে সংঘটিত কোনো ঘটনা বা আচরণ প্রত্যক্ষ করেন। অর্থাৎ এ পদ্ধতির জন্য পূর্ব প্রস্তুতি প্রয়োজন হয়।
২. এ পদ্ধতিতে গবেষক কী কী বিষয় পর্যবেক্ষণ করবেন এবং কীভাবে করবেন সে সম্পর্কে পূর্বেই একটি পরিকল্পনা তৈরী করার প্রয়োজন হয়।
৩. এ পদ্ধতিতে গবেষককে আচরণের খুঁটিনাটি দিকগুলো লিপিবদ্ধ করতে হয়।
৪. বিস্তারিত পর্যবেক্ষণের সুবিধার জন্য অনেক ক্ষেত্রে গবেষককে টেপ রেকর্ডার ও ক্যামেরা ব্যবহার করতে হয়।
৫. এ পদ্ধতিতে সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে আচরণ সম্পর্কিত অনেক মূল্যবান তথ্য সংগ্রহ করা যায়।
৬. শিশু, অস্বাভাবিক ব্যক্তি ও ইতর প্রাণীর আচরণ অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি বেশ সুবিধাজনক।
৭. এ পদ্ধতিতে প্রাপ্ত তথ্য রাশিকে পরিসংখ্যানের ভাষায় প্রকাশ করা যায়।

৩. মনোবিজ্ঞানের শিক্ষক জোবায়দা নাসরীন দ্বাদশ শ্রেণির পাঠদান করতে গিয়ে বলেন যে, কোন গবেষণার মূলে থাকে সমস্যা, সমস্যাকে কেন্দ্র করেই পরীক্ষা পরিচালিত হয়। এ সমস্যা হতে পারে কোনো কিছু জানার অভাব থেকে। গবেষণার মাধ্যমেই আমরা যে কোন প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাই।
ক. চলকে কয়ভাগে ভাগ করা যায়?
খ. কোন পদ্ধতিকে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি বলা হয়- ব্যাখ্যা কর।
গ. জোবায়দা নাসরীন কোন ধরনের কারণে সমস্যার সৃষ্টির কথা বলেছেন- ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে সৃষ্ট কারণ ছাড়া আর কোন কোন কারণে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে বলে তুমি মনে কর?তোমার যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ কর।

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. চলকে ৪ ভাগে ভাগ করা যায়।

খ. পরীক্ষণ পদ্ধতিকে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি বলা হয়। পরীক্ষণ পদ্ধতিতে সুব্যবস্থিত ও সুপরিকল্পিত অবস্থায় সুনিয়ন্ত্রিত পরিবেশে উদ্দীপকের প্রতি পরীক্ষণপাত্রের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে গবেষণা করা হয়।
যে অনুসন্ধান কার্যে উদ্দীপকের প্রভাবের উপর অনুসন্ধানকারীর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা থাকে তাকে পরীক্ষণ বলা যায়। পরীক্ষণকার্য সাধারণত গবেষণাগারের নিয়ন্ত্রিত পরিবেশের ভেতর পরিচালনা করা হয়ে থাকে। তবে অনুরূপ পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারলে গবেষণাগারের বাইরেও পরীক্ষণ কার্য পরিচালনা করা যেতে পারে। পরীক্ষণ পদ্ধতির এ সমস্ত বৈশিষ্ট্যের কারণে একে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিও বলা হয়।

গ. উদ্দীপকে জোবায়দা নাসরীন জ্ঞানের অভাব বা জানার অভাবের কারণে সমস্যা সৃষ্টির কথা বলেছেন। নিচে ব্যাখ্যা করা হলো-
জ্ঞানের অভাব বা শূন্যতা:
জ্ঞানের অভাব বা শূন্যতা থেকে সমস্যার উদ্ভব হতে পারে। কোনো ঘটনা সম্পর্কে হয়তো বহু তথ্যই উৎঘাটিত হয়েছে। কিন্তু একটি বিশেষ তথ্য সম্পর্কে এখনও আমাদের জ্ঞানের শূন্যতা রয়েছে। এ জ্ঞানের শূন্যতা আমাদের মনে বিভিন্ন প্রশ্নের জন্ম দেয়; আর এ প্রশ্নকেই সমস্যার রূপ দিয়ে তা সমাধানের জন্য পরীক্ষণকার্য পরিচালনা করা হয়। যেমন, আমরা দেখতে চাই শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে সকল পদ্ধতি কোন্টি -বক্তৃতা দান পদ্ধতি না আলোচনা পদ্ধতি এ ধরনের হাজারো সমস্যা নিয়ে গবেষক গবেষণা করে থাকেন। এর সঠিক উত্তর না জানা পর্যন্ত এসব ক্ষেত্রে আমাদের সমস্যা হচ্ছে জ্ঞানের শূন্যতা। এ সমস্যার সমাধানের জন্যই গবেষণার দরকার হয়।

ঘ. উদ্দীপকে সৃষ্ট কারণ ছাড়া আর যেসব কারণে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে বলে আমি মনে করি তা হলো- পরস্পর বিরোধী ফলাফল ও তথ্যের ব্যাখ্যা। নিচে যৌক্তিক বিশ্লেষণ করা হলো-
পরস্পর বিরোধী ফলাফল:
অনেক সময় একই বিষয়ে গবেষণা করে বিভিন্ন বিজ্ঞানী ভিন্ন ভিন্ন ফলাফল বা পরস্পর বিরোধী ফলাফল প্রকাশ করেন। তখন কোন বিজ্ঞানীর পরীক্ষণের ফলাফল যথার্থ?প্রশ্নটি দেখা দেয়। ফলে জন্ম নেয় নতুন সমস্যা। এ সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজন হয় নতুন করে পরীক্ষণ পরিচালনার। উদাহরণস্বরূপ, একজন পরীক্ষণকারী তার পরীক্ষণে দেখতে পেলেন যে, শ্রেণিকক্ষে শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে বক্তৃতাদান পদ্ধতির চেয়ে আলোচনা পদ্ধতি বেশ ফলপ্রসূ। আবার অন্য একজন পরীক্ষণকারী এর উল্টো ফল পেলেন। এ ধরনের সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য আবার নতুন করে একাধিক পরীক্ষণ পরিচালনা করা হয়। প্রাপ্ত ফলাফলসমূহের পারস্পরিক মিল পূর্বের পরস্পর বিরোধী ফলাফল সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান প্রদান করে।
তথ্যের ব্যাখ্যা:
কোনো বিষয়ে গবেষণা করতে গিয়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সংগৃহীত তথ্যকে ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণের জন্য আবার পরীক্ষণের প্রয়োজন হতে পারে। অর্থাৎ সংগ্রহকৃত যে তথ্য সম্বন্ধে আমরা কিছু জানি না, সে সম্পর্কে জানার জন্য পরীক্ষণের প্রয়োজন।
উপরোক্ত আলোচনা হতে বলা যায় শুধু জানার অভাব থেকেই নয় পরস্পর বিরোধী ফলাফল ও তথ্যের ব্যাখ্যা থেকেও সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

৪. মিঃ সবুজ তার গবেষণার বিষয় ঠিক করে গবেষণাগারে পরীক্ষণ পাত্রের উপর প্রয়োগ করলেন। তিনি দেখতে চান এর ফলে পরীক্ষণ পাত্রের কি প্রতিক্রিয়া হবে? আর মিঃ কামরুল হাসান দীর্ঘদিন ঘরে বসে আছেন বাঘ শিকার ধরার কৌশল জানবার জন্য।
ক. বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি কী?
খ. তুল্যমূল্যায়ন কীভাবে কাজ করা হয়?
গ. মিঃ সবুজ যে পদ্ধতিতে গবেষণা করেছেন সেই পদ্ধতির সুবিধা ও অসুবিধা লেখ।
ঘ. মিঃ কামরুল হাসানের গবেষণার পদ্ধতিটি বর্ণনা কর এবং মিঃ সবুজের পদ্ধতি থেকে এটির কিরূপ ভিন্নতা রয়েছে?

৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি হচ্ছে বিজ্ঞানের ভিত্তি।

খ. তুল্যমূল্যায়নে ভারসাম্য সৃষ্টির মাধ্যমে কাজ করা হয়। এক্ষেত্রে এমন কতকগুলো অবাঞ্ছিত চল আছে যেগুলোকে অপসারণ বা অবস্থার সমতাকরণের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার অন্যতম কৌশল হলো ভারসাম্য সৃষ্টি করা। এ পদ্ধতিতে সকল বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে সমান সমান দুটি দল গঠন করা হয়। একটি দলকে পরীক্ষণ দল অন্যদলকে নিয়ন্ত্রিত দল বলা হয়। এ দুটি দল সব শর্তের দিক থেকে সমান বা সমতুল্য থাকবে; পার্থক্য শুধু এই যে, পরীক্ষণ দলে অনির্ভরশীল চল প্রয়োগ করা হয়। কিন্তু নিয়ন্ত্রিত দলে উক্ত চল প্রয়োগ করা হয় না। তাই দুটি দলের পার্থক্য তুলনার জন্য নিয়ন্ত্রিত চল ব্যতীত অন্যসব দিক থেকে পরীক্ষণ দল ও নিয়ন্ত্রিত দলকে সমমানে গঠন করার মাধ্যমেই ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করা হয়।

গ. উদ্দীপকে মি: সবুজ নিয়ন্ত্রিত পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিতে গবেষণা করেছেন। নিচে এ পদ্ধতির সুবিধা ও অসুবিধা লিখা হলো-
নিয়ন্ত্রিত পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রায় সব ধরনের আচরণ নিয়েই গবেষণা করা যায়। এ পদ্ধতিতে নির্ধারিত ঘটনা বা আচরণকে স্বাভাবিক পরিবেশে অধ্যয়ন করা হয় বলে সঠিকরূপে আচরণকে পর্যবেক্ষণ করা যায়। যেসব ক্ষেত্রে পরীক্ষণ পদ্ধতি ব্যবহারের সুযোগ নেই, সেসব ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রিত পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি ব্যবহার সুবিধাজনক। তাছাড়া এ পদ্ধতি ব্যবহার করে পরীক্ষণ পদ্ধতিতে প্রাপ্ত ফলাফলের যথার্থতা নিরূপণ করা যায়। এ পদ্ধতি প্রয়োগে প্রাপ্ত তথ্য বাস্তব জীবনঘনিষ্ঠ বিধায় গবেষণার ফলাফল অধিক বাস্তব জীবনের ঘটনা বা আচরণকে সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করতে পারে।
নিয়ন্ত্রিত পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির সবচেয়ে বড় অসুবিধাসমূহের মধ্যে এর ব্যক্তিনিষ্ঠতা, ফলাফলকে পুনরাবৃত্তি না করতে পারা, ইচ্ছেমতো ঘটনা সৃষ্টি বা পরিবর্তন করতে না পারা, চলসমূহের নিয়ন্ত্রণ না থাকা অন্যতম। সর্বোপরি এ পদ্ধতি ব্যবহারে প্রাপ্ত তথ্যের নির্ভরযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ। এ পদ্ধতির ব্যবহার বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির কিছু মৌলিক বৈশিষ্ট্যর সাথে সাংঘর্ষিক বিধায় মনোবিজ্ঞানীরা শুধুমাত্র দুই ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি ব্যবহার করেন।
যেমন- যে আচরণ বা ঘটনাকে অন্য কোনো অধিকতর বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির (যেমন- পরীক্ষণ পদ্ধতি) দ্বারা অনুধ্যান করা যায় না এবং অন্যকোনো বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি (যেমন- পরীক্ষণ পদ্ধতি) থেকে প্রাপ্ত তথ্য বাস্তবে কতটুকু কার্যকর তা জানতে।
উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে বলা যায় যে, নিয়ন্ত্রিত পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির কিছু অসুবিধা থাকলেও সামাজিক সমস্যা সম্পর্কিত কোনো বিষয় অনুধ্যানে এটি উপযুক্ত পদ্ধতি।

ঘ. উদ্দীপকে মি: কামরুল হাসানের গবেষণার পদ্ধতিটি হলো প্রাকৃতিক বা স্বাভাবিক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি। নিচে কামরুল হাসানের গবেষণার পদ্ধতিটি বর্ণনা করা হলো-
প্রাকৃতিক (স্বাভাবিক) পরিবেশে সংঘটিত কোনো ঘটনাকে অনুরূপভাবে পর্যবেক্ষণ করার প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি বলতে মূলত প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিকেই বোঝানো হয়ে থাকে। প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ তখনই সর্বোত্তম পর্যবেক্ষণ হবে, যখন পরীক্ষণপাত্র বুঝতে না পারে যে তাকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। স্বাভাবিক পরিবেশে যা ঘটে তার উপর খুব কম নিয়ন্ত্রণ করা যায়। পর্যবেক্ষণকালে যা কিছু ঘটছে, আমরা কেবলমাত্র সেসব আচরণই অনুধাবন করতে পারি। তাছাড়া স্বাভাবিক পরিবেশে নির্দিষ্ট চলনসমূহের মধ্যকার কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ণয় করাও খুব কঠিন। এ পদ্ধতিকে বিষয়গত পদ্ধতি বলা হয়। একে আবার পরোক্ষ পদ্ধতিও বলা হয়। কারণ এ পদ্ধতিতে অপরের বাহ্যিক আচরণ পর্যবেক্ষণ করে তার মানসিক অবস্থা ও ক্রিয়া সম্পর্কে অনুমান করা হয়। প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিতে পরীক্ষণকারী স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রেখে প্রাণীর আচরণ পর্যবেক্ষণ করেন। যে সকল ঘটনাকে পরীক্ষাণাগারে তৈরি বা পুনরুৎপাদন করা যায় না, যেমন- বিবাহ বিচ্ছেদ, সামাজিক সংঘর্ষ, দুর্ভিক্ষ, দাঙ্গা ইতাদি ঘটনায় কারণ নির্ধারণের জন্য মনোবিজ্ঞানী প্রকৃত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির সাহায্যে ঘটনার সাথে সংশিস্নষ্ট শর্তাবলি খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করেন। এ পদ্ধতিতে পর্যবেক্ষককে ঘটনার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এ পদ্ধতি ব্যক্তিদোষে দুষ্ট। এ পদ্ধতিতে প্রাপ্ত তথ্যের যথাযর্থতা প্রতিপাদন করা কঠিন ব্যাপার।
উদ্দীপকে মি: সবুজের পদ্ধতিটি পূর্ব পরিকল্পিত। যেখানে গবেষক পূর্ব প্রস্তুতি সহকারে স্বাভাবিক পরিবেশে সংঘটিত কোনো ঘটনা বা আচরণ পর্যবেক্ষণ করেন। কিন্তু মি: কামরুলের পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিটি সম্পন্ন করার জন্য পর্যবেক্ষককে অপেক্ষা করতে হয়। তাই বলা যায়, মি: সবুজের পদ্ধতি থেকে মি: কামরুলের গবেষণা পদ্ধতির মধ্যে ভিন্নতা রয়েছে।

৫. শায়লা মনোবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করে এখন একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন। প্রতিদিনের মতো মাঠে হাঁটতে গিয়ে আজ তিনি দেখলেন, খেলার মাঠে কিছু শিশু খেলছে। হঠাৎ করে এ শিশুদের আচরণ সম্পর্কে তিনি জানতে আগ্রহী হলেন। কিন্তু মাঠে অনেক লোকজন ছিল বলে তিনি কাজটি ভালোভাবে করতে পারলেন না। বাসায় এসে তিনি ঠিক করলেন ছোট শিশুরা খেলার সময় কিভাবে পরস্পরকে সহযোগিতা করে তা তিনি জানবেনা। তাই পরের দিন স্কুলে তার ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের অনেক ধরনের খেলনা দিয়ে দূর থেকে তাদের আচরণ তিনি লক্ষ করতে থাকলেন। এদিকে ৮ম শ্রেণির ছাত্র সুমন প্রায়ই ক্লাসে কিছুটা অস্বাভাবিক আচরণ করে। তার সমস্যা সম্পর্কে জানার জন্য শায়লা প্রথমে সুমন এবং পরে তার বন্ধু ও তার সহপাঠীদের সাথে কথা বলেন। তিনি সুমনের সমস্যা বোঝা ও তা প্রতিকারের জন্য সুমনের পিতা-মাতার সাথেও কথা বলেন।
ক. পরীক্ষণে প্রকল্প কী?
খ. চলের সুবিধাজনক ব্যবহার বলতে কী বুঝ?
গ. সুমনের আচরণগত সমস্যা সম্পর্কে জানার জন্য শায়লা কোন পদ্ধতির সাহায্য নিয়েছে?- এর সুবিধা ও অসুবিধা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. খেলার মাঠে শিশুদের এবং স্কুলে ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের আচরণ সম্পর্কে জানার জন্য শায়লা যে পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন তার মধ্যে কোনটি অধিক গ্রহণযোগ্য এবং কেন?- বিশ্লেষণ কর।

৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. পরীক্ষণে প্রকল্প হলো কল্পিত সমাধান বা অনুমান।

খ. অনির্ভরশীল চল বা এর বিভিন্ন মাত্রার নিয়ন্ত্রণ যখন পরীক্ষকের ইচ্ছানুযায়ী হয় তখন তাকে চলের সুবিধাজনক ব্যবহার বা ম্যানিপুলেশন বলা হয়। এক্ষেত্রে পরীক্ষক মূলত অনির্ভরশীল চল বা এর বিভিন্ন মাত্রা তার পরীক্ষণের প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার বা পরিবর্তন করতে পারেন। পরীক্ষক যখন একটি উদ্দীপকের সাথে প্রতিক্রিয়ার সম্পর্ক নির্ণয় করতে চান তখন তিনি উদ্দীপকটিকে বিভিন্নভাবে পরিবর্তন করতে পারেন। অনেক ক্ষেত্রে চলের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে শুধু একটি চলের বিভিন্ন মূল্যমান নির্বাচন করেন এবং প্রতিটি মূল্যমানকে পরীক্ষণমূলক ও নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় ব্যবহার করেন। কোনো পরীক্ষণে সমস্যা যদি হয় প্রাণীর নিজস্ব বৈশিষ্ট্য বা অভ্যন্তরীণ অবস্থাসমূহের সাথে প্রতিক্রিয়ার সম্পর্ক নির্ণয় করা তবে প্রাণীর অভ্যন্তরীণ চলসমূকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কিন্তু অভ্যন্তরীণ চলসমূহ নিয়ন্ত্রণ খুব সহজ নয়। যেমন- পরীক্ষণপাত্রের বয়সের সাথে প্রতিক্রিয়াকরণের সম্পর্ক নিয়ে গবেষণা করতে হবে। এখানে খুশিমত ব্যক্তির বয়স পরিবর্তন করা যায় না। তবে পরীক্ষক বিভিন্ন বয়সের পরীক্ষণ পাত্র নিয়ে পরীক্ষণ পরিচালনা করতে পারেন। এভাবে পরীক্ষক অনির্ভরশীল চল নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। এই সবই হলো ম্যানিপুলেশন বা চলের সুবিধাজনক ব্যবহার।

গ. উদ্দীপকে সুমনের আচরণগত সমস্যা সম্পর্কে জানার জন্য শায়লা যে পদ্ধতিটির সাহায্য নিয়েছে তা হলো- চিকিৎসা পদ্ধতি। নিচে চিকিৎসা পদ্ধতির সুবিধা ও অসুবিধাসমূহ ব্যাখ্যা করা হলো-

চিকিৎসামূলক পদ্ধতির সুবিধা:
১. সাধারণত মনোচিকিৎসকগণ এ পদ্ধতির ব্যবহার করেন তাদের কাছে বহু সংখ্যক সমস্যাগ্রস্থ ব্যক্তি চিকিৎসার জন্য আসে। তখন চিকিৎসক তাদের নিকট থেকে বা তাদের আত্মীয়/ বন্ধুদের নিকট থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন।
২. চিকিৎসক নিজে দীর্ঘদিন যাবৎ রোগীর আচরণ অনুধ্যান করে বহু মূল্যবান তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন।
৩. বহু সংখ্যক পর্যবেক্ষণ থেকে চিকিৎসক যথার্থ বা সঠিক সিদ্ধান্ত গঠন করতে পারেন।
৪. এ পদ্ধতির সাহায্যে মানসিক রোগের কারণ এবং এর গতি প্রকৃতি সম্বন্ধে জানা যায়।
৫. দীর্ঘদিন যাবৎ রোগীর আচরণ অনুধ্যান করেন বলে চিকিৎসক যথার্থ বা সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে সক্ষম হয়।

চিকিৎসামূলক পদ্ধতির অসুবিধা:
১. রোগীর প্রদত্ত তথ্য সঠিক কি-না তা যাচাই করা সম্ভব নয়।
২. কোনো পরীক্ষণমূলক অনুমান গঠন করা যায় না।
৩. তথ্য গ্রহণের জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি নেই।
৪. ঘটনা অনুধ্যানের জন্য দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন।
৫. এটাকে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি বলা যায় না।
৬. কোনো পরীক্ষণমূলক প্রকল্প গঠন করা যায় না।

ঘ. উদ্দীপকে খেলার মাঠে শিশুদের এবং স্কুলে ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের আচরণ সম্পর্কে জানার জন্য শায়লা যে পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন তা হলো- প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি ও পদ্ধতিগত পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি। এ পদ্ধতি দুটির মধ্যে পদ্ধতিগত পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিটি অধিক গ্রহণযোগ্য। নিচে এর কারণ বিশ্লেষণ করা হলো-
পদ্ধতিগত পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রায় সব ধরনের আচরণ নিয়েই গবেষণা করা যায়। এ পদ্ধতিতে নির্ধারিত ঘটনা বা আচরণকে স্বাভাবিক পরিবেশে অধ্যয়ন করা হয় বলে সঠিকরূপে আচরণকে পর্যবেক্ষণ করা যায়। যেসব ক্ষেত্রে পরীক্ষণ পদ্ধতি ব্যবহারের সুযোগ নেই, সেসব ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি ব্যবহার সুবিধাজনক। তাছাড়া এ পদ্ধতি ব্যবহার করে পরীক্ষণ পদ্ধতিতে প্রাপ্ত ফলাফলের যথার্থতা নিরূপণ করা যায়। এ পদ্ধতি প্রয়োগে প্রাপ্ত তথ্য বাস্তব জীবাণুঘনিষ্ঠ বিধায় গবেষণার ফলাফল অধিক বাস্তব জীবনের ঘটনা বা আচরণকে সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করতে পারে।
উপরোক্ত কারণে, পদ্ধতিগত পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি অধিক গ্রহণযোগ্য।

৬. একাদশ শ্রেণির ছাত্র তৌফিক মনোবিজ্ঞানের ব্যবহারিক ক্লাসে শিক্ষকের উপস্থাপিত প্রশ্নের সমাধান দিতে পারছে না। কিছুক্ষণ পর শিক্ষক বুঝতে পারেন পর্যাপ্ত জ্ঞান না থাকায় ছাত্রটি সমাধান দিতে পারে নি। অন্য এক ছাত্র ছাইফুলকে শিক্ষক একটি প্রকল্প স্থির করে সেটি নিয়ে পরীক্ষণ পরিচালনা করার নির্দেশনা প্রদান করেন। ছাইফুল প্রকল্প তৈরি করে শিক্ষকের সামনে উপস্থাপন করে। শিক্ষক দেখেন এটি প্রমাণযোগ্য, সমাধান করা যায়, সরল, মিতব্যয়ী এবং চল শনাক্ত করা যায়।
ক. চল কী?
খ. বয়স কেন মধ্যবর্তী চল?ব্যাখ্যা কর।
গ. তৌফিক এর ক্ষেত্রে সমস্যার কোন উৎস লক্ষণীয়?ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘‘ছাইফুল এর প্রকল্পটিতে একাধিক বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান’’- উক্তিটি বিশ্লেষণ কর।

৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যা কিছু পরিবর্তনশীল বা যাকে পরিবর্তন করা যায় তাই চল।

খ. বয়স মধ্যাবর্তী চল। নিচে ব্যাখ্যা করা হলো-
অনির্ভরশীল ও নির্ভরশীল চলের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করে যে চল তাকে অন্তর্বর্তী বা মধ্যবর্তী চল বলা হয়। এ চলকে বাইরে থেকে পর্যবেক্ষণ করা যায় না, শুধু অবস্থান আছে বলে ধরে নেওয়া হয়। যেমন, বাবা-মায়ের ভালোবাসার সম্পর্কের দরুন সন্তানের উপযোজন ভালো হয়। এখানে বাবা-মায়ের ভালোবাসা অনির্ভরশীল চল এবং সন্তানের উপযোজন নির্ভরশীল চল। অনির্ভরশীল ও নির্ভরশীল চলের মাঝে একটি প্রক্রিয়া এ ধরনের উপযোজনে ভূমিকা রেখেছে। আর এজন্য তাদের সন্তান সামনে এগিয়ে যাবার জন্য আশাবাদী হয়ে ওঠে। এখানে আশাবাদী হযয় উঠা অন্তর্বর্তী চল। তেমনি পরিবারের কোনো অবস্থার জন্য নিজেকে দোষারোপ করা, নিজের মধ্যে ভীতিকর অবস্থা তৈরি হওয়া অন্তর্বর্তী চলের উদাহরণ। তাছাড়া বয়স, লিঙ্গ, অভিজ্ঞতা প্রভৃতি মধ্যবর্তী চলের উদাহরণ।

গ. উদ্দীপকে তৌফিক এর ক্ষেত্রে সমস্যার যে উৎস লক্ষণীয় তা হলো- জ্ঞানের অসম্পূর্ণতা। নিচে ব্যাখ্যা করা হলো-
যখন তথ্যের এমন অভাব লক্ষ করা যায় যা মূলত জ্ঞানের ক্ষেত্রে আমাদের অসম্পূর্ণতাকে তুলে ধরে তখনই সমস্যার সৃষ্টি হয়। এসব ক্ষেত্রে সংগৃহীত উপাত্ত এবং প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মধ্যে এক ধরনের ফাঁক থেকে যায়। যেমন, একটি কলেজ স্থাপন করে সবচেয়ে সফল পদ্ধতিতে আমরা যদি কলেজের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদানের ইচ্ছা রাখি তাহলে আমরা এক ধরনের সমস্যায় পড়ে থাকি। বিজ্ঞানসম্মত এমন কোনো পদ্ধতি আমাদের জানা নেই যাকে আমরা সবচেয়ে সফল পদ্ধতি বলতে পারি। পদ্ধতি সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানের এ অসম্পূর্ণ সমস্যা সম্পর্কে অবহিত হতে আমাদের সাহায্য করে থাকে।

ঘ. উদ্দীপকে ছাইফুলের তৈরিকৃত প্রকল্পটিতে শিক্ষক দেখতে পান যে, প্রকল্পটি প্রমাণযোগ্য তথা প্রমাণ সাপেক্ষতা, সমাধান করা যায় তথা সমস্যার সমাধান যোগ্যতা, সরল তথা সরলতা, মিতব্যয়ী তথা মিতব্যয়ীতা, চল সনাক্ত করা যায় তথা চলের সনাক্তকরণ প্রভৃতি বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান যা কিনা একটি ভালো প্রকল্পের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য। নিচে বিশ্লেষণ করা হলো-
১. প্রমাণ সাপেক্ষতা: একটি প্রকল্পকে অবশ্যই পরীক্ষণের সাহায্যে প্রমাণযোগ্য হতে হবে। প্রকল্প যদি প্রমাণযোগ্য না হয় তবে সে প্রকল্পের কোনো মূল্য থাকে না। প্রাপ্ত উপাত্ত যদি কোনো প্রকল্পকে সমর্থন না করে তবে সে প্রকল্পটি বর্জন করতে হয়। অবশ্য বর্তমানে পরীক্ষণযোগ্য (Presently testable) কোনো প্রকল্প ভবিষ্যতে পরীক্ষণযোগ্য (Potentially testable) প্রকল্প হতে উত্তম। যেমন- ‘‘খারাপ পিতামাতা খারাপ সন্তানের জন্ম দেয়’’ -এ প্রকল্পটি পরীক্ষণযোগ্য নয়, কারণ খারাপ কথাটি অস্পষ্ট এবং কোনো পর্যবেক্ষণযোগ্য তথ্য নির্দেশ করে না।
২. সমস্যার সমাধানযোগ্যতা: প্রকল্পকে অবশ্যই সমস্যাটি সমাধানের যোগ্য হতে হবে। প্রকল্প যদি সমস্যা সমাধানের যোগ্য না হয় তবে ভালো প্রকল্প বলা যাবে না।
৩. সরলতা: প্রকল্পকে যৌক্তিকভাবে সরল হতে হবে। যদি একটি সমস্যার সমাধান হিসেবে দুটি প্রকল্প তৈরি করা হয় এবং একটি প্রকল্প নিজেই সমস্যাটির সমাধান করতে পারে কিন্তু অন্যটি আরো কয়েকটি বাড়তি অনুমান ছাড়া সমস্যাটির সমাধান করতে পারে না, তবে প্রথম প্রকল্পটি পছন্দ করতে হবে (Cohen and Nagel, 1934)। কারণ প্রথম প্রকল্পটি যৌক্তিকভাবে সরল।
৪. মিতব্যয়িতা: একটি ভালো প্রকল্পকে অবশ্যই সমস্যা ব্যাখ্যা ক্ষেত্রে মিতব্যয়ী হতে হবে। কোনো পরীক্ষণে কম সংখ্যক চল ব্যবহার করাই হলো মিতব্যয়িতা। সুতরাং যে প্রকল্পে অনির্ভরশীল ও নির্ভরশীল চল কম থাকবে তাকে ভালো প্রকল্প বলা যায়। একটি সমস্যা থেকে উদ্ভূত দুটি প্রকল্পের মধ্যে যেটি বেশি মিতব্যয়ী সেটিই গ্রহণযোগ্য।
৫. চলের সনাক্তকরণ: প্রকল্পটি এমন হবে যেন তা থেকে অনির্ভরশীল ও নির্ভরশীল চল সনাক্ত করা যায়।
উপরোক্ত আলোচনা হতে বলা যায় যে, "ছাইফুলের একাধিক বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান" - উক্তিটি সঠিক।

HSC মনোবিজ্ঞান ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায় ৭ pdf download

৭. মনোবিজ্ঞান ক্লাসে শিক্ষক তার ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যবহারিক কাজের অংশ হিসেবে রাজধানীর বস্তি এলাকায় ইভটিজিং ও যৌন হয়রানির ধরন ও গণসংখ্যা নির্ণয় করার জন্য নির্দেশ দিলেন। এজন্য তিনি রাজধানীর কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বস্তি এলাকা নির্ধারণ করে, কলাসের ৫ জন মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীকে দায়িত্ব প্রদান করলেন।
ক. পরিসংখ্যান পদ্ধতি কাকে বলে?
খ. মধ্যবর্তী চল বলতে কি বুঝ?
গ. উদ্দীপকের ব্যবহারিক কাজটি সম্পূর্ণ করার জন্য কোন পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে ব্যবহারিক কাজটি সম্পূর্ণ করতে শিক্ষকের গৃহীত বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির মধ্যে তোমার যৌক্তিক মতামত উপস্থাপন কর।

৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যে পদ্ধতিতে তথ্য প্রক্রিয়াজাত ও বিশ্লেষণ করা হয় তাকে পরিসংখ্যান পদ্ধতি বলে।

খ. অন্তর্বর্তী বা মধ্যবর্তী চল:
যেসব চল নিরপেক্ষ চল ও সাপেক্ষ চল-এর অন্তর্বর্তী থেকে এ দুটি চল-এর ভিতর সংযোগ স্থাপন করে, সেসব চলকে অন্তর্বর্তী বা মধ্যবর্তী চল বলা হয়। এ চলগুলো জৈবিক, তাই এসব চল পর্যবেক্ষণযোগ্য নয়।

গ. উদ্দীপকের ব্যবহারিক কাজটি হলো ইভটিজিং ও যৌন হয়রানির ধরন ও গণসংখ্যা নির্ণয় করা। এর জন্য যে পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে তা হলো- প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি। নিমেণ ব্যাখ্যা করা হলো-
প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিতে প্রাকৃতিক (স্বাভাবিক) পরিবেশ সংঘটিত কোনো ঘটনাকে অনুরূপভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়। পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি বলতে মূলত প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিকেই বোঝানা হয়। এ পদ্ধতির দুটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য। যথা- (১) পর্যবেক্ষণকারী স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রেখে পরীক্ষণপাত্রের আচরণ পর্যবেক্ষণ করেন। (২) পরীক্ষণপাত্রের স্বাভাবিক আচরণ যাতে বিঘ্নিত না হয়, পর্যবেক্ষণকারী সেদিকে খেয়াল রাখেন। প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিতে, স্বাভাবিক পরিবেশে যা ঘটে তার ওপর খুব কম নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা যায়। পর্যবেক্ষণকালে যা কিছু ঘটছে, গবেষণক শুধুমাত্র সেসব আচরণই অনুধ্যান করতে পারেন, তাছাড়া স্বাভাবিক পরিবেশে নির্দিষ্ট চলসমূহের মধ্যকার কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ণয় করা খুবই কঠিন।

ঘ. রাজধানীর বস্তি এলাকায় ইভটিজিং ও যৌন হয়রানির ধরন ও গণসংখ্যা নির্ণয় সম্পর্কিত ব্যবহারিক কাজটি সম্পূর্ণ করতে শিক্ষকের গৃহীত বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিটি হলো- প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি। যা আমার মতে সম্পূর্ণ যৌক্তিক মনে হয়েছে। নিমেণ যৌক্তিকতা উপস্থাপন করা হলো-
ইভটিজিং ও যৌন হয়রানির ধরন বুঝতে হলে এটি সংঘটিত হওয়ার পুরো পরিবেশ সম্পর্কে অবহিত হওয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি ও শুধু কোনো ঘটনার তথ্যই প্রদান করে না সাথে সাথে ঘটনা ঘটার পূর্বাপর অবস্থা সম্পর্কে ধারণা দেয়। ইভটিজিং ও যৌন হয়রানির মতো ঘটনাসমূহ পরীক্ষাগারে অনুধ্যান করা সম্ভব নয়। পরীক্ষণপাত্র স্বতঃস্ফূর্তভাবে এ ধরনের আচরণ করবে না তখন তারা জানতে পারবে যে তা পর্যবেক্ষিত হচ্ছে। কৃত্রিম পরিবেশে জনাকীর্ণ এলাকা তৈরি করা এবং সেখানে ইভটিজিংয়ের ধরন সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ অসম্ভব। বাস্তব জীবনে কোনো ঘটনা সম্পর্কে ব্যাখ্যা তৈরি করার জন্য প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির চেয়ে উত্তম কোনো বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি নেই।
প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিতে মনোবিজ্ঞানীরা কোনো ঘটনা বা আচরণকে স্বাভাবিক পরিবেশে অনুরূপভাবে পর্যবেক্ষণ করে থাকে, তাই ইভটিজিং ও যৌন হয়রানির মতো ঘটনাকে প্রাকৃতিক পরিবেশে। পর্যবেক্ষণ করাই যুক্তিযুক্ত।

৮. বিজ্ঞানী যৌক্তিক পদ্ধতিতে সামাজিক ও প্রাকৃতিক বিষয়াবলি বর্ণনা, ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে সাধারণ তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করেন। এ জন্য তিনি কেবল কারণ এবং ফলাফল (Cause-and-effect) সম্পর্ক শনাক্ত করতে পারেন। কিন্তু কোনো কোনো গবেষণা যেমন, দাঙ্গাকারী জনতার আচরণ, মিছিলকারী জনতার আচরণ ইত্যাদি জানারও প্রয়োজন।
ক. চলের সংজ্ঞা দাও।
খ. বয়স, লিঙ্গ, অভিজ্ঞতা, প্রেষণা ইত্যাদিকে অন্তর্বর্তী চল বলা হয় কেন?
গ. কারণ-এবং-ফলাফল সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহের জন্য কোন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়?এই পদ্ধতির সুবিধাগুলো উল্লেখ কর।
ঘ. দাঙ্গাকারী জনতার আচরণ কোন পদ্ধতির মাধ্যমে যাচাই করা যায়?এ বিষয়ে তোমার মতামত বিশ্লেষণ কর।

৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. ব্যক্তির নিজস্ব বৈশিষ্ট্য এবং পারিপার্শ্বিক উপাদানগুলোর পরিবর্তনের ফলে আচরণেও পরিবর্তন হয়। তাই যা কিছু পরিবর্তনশীল বা যাকে পরিবর্তন করা যায় তাকে চল বলে।

খ. বয়স, লিঙ্গ, অভিজ্ঞতা, প্রেষণা ইত্যাদিকে অন্তর্বর্তী চল বলা হয়। কারণ এ চল অনির্ভরশীল ও নির্ভরশীল চলের মধ্যে সংযোগ বা সম্পর্ক স্থাপন করে থাকে। আমরা জানি, ব্যক্তির নিজস্ব বৈশিষ্ট্যগত পার্থক্যের ফলেও আচরণের মধ্যে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। ব্যক্তির শারীরিক বা মানসিক দিক থেকে যেসব চলের উদ্ভব হয়, তাকে মধ্যবর্তী চল বলে। এটা অন্তর্বর্তী বা জৈবিক চল নামেও পরিচিত যেমন- বয়স, লিঙ্গ, অভ্যাস, অভিজ্ঞতা, প্রেষণা ইত্যদি মধ্যবর্তী চল। উপরোক্ত উদাহরণে কবিতা আবৃত্তির ক্ষেত্রে ৬০ বছরের বৃদ্ধের তা মুখস্থ করতে যে সময় লাগবে, ২৫ বছরের যুবকের তা নাও লাগতে পরে। আবার লিঙ্গভেদে অর্থাৎ বালক বা বালিকার ক্ষেত্রেও মুখস্থ করার সময়ের তারতম্য হতে পারে।

গ. কারণ-এবং-ফলাফল সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহের জন্য চিকিৎসামূলক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এ পদ্ধতির সুবিধাগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো-
১. এ পদ্ধতির সাহায্যে মানসিক রোগের কারণ এবং এর গতি-প্রকৃতি সম্বন্ধে জানা যায়।
২. সমস্যাগ্রস্থ ব্যক্তির নিকট থেকে এবং তার আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু-বান্ধব থেকেও তথ্য সংগ্রহ করা যায়।
৩. চিকিৎসক নিজে দীর্ঘদিন যাবৎ রোগীর আচরণ অনুধ্যান করে বহু মূল্যবান তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন।
৪. দীর্ঘদিন যাবৎ রোগীর আচরণ অনুধ্যান করেন বলে চিকিৎসক যথার্থ বা সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে সক্ষম হন।

ঘ. দাঙ্গাকারীর জনতার আচরণ নিয়মতান্ত্রিক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির অন্তর্গত প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিরে মাধ্যমে যাচাই করা যায়। এ বিষয়ে আমার মতামত বিশ্লেষণ করা হলো-
প্রাকৃতিক (স্বাভাবিক) পরিবেশে সংঘটিত কোনো ঘটনাকে অনুরূপভাবে পর্যবেক্ষণ করার জন্য প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি বলতে মূলত প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিকেই বোঝানো হয়ে থাকে। প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ তখনই সর্বোত্তম পর্যবেক্ষণ হবে, যখন পরীক্ষণপাত্র বুঝতে না পারে যে তাকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। স্বাভাবিক পরিবেশে যা ঘটে তার উপর খুব কম নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা যায়। পর্যবেক্ষণকলে যা কিছু ঘটছে, আরা কেবলমাত্র সেসব আচরণই অনুধ্যন করতে পারি। তাছাড়া, স্বাভাবিক পরিবেশে নির্দিষ্ট চলসমূহের মধ্যকার কার্যকরণ সম্পর্ক নির্ণয় করাও খুব কঠিন। প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিতে পরীক্ষণকারী স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রেখে প্রাণীর আচরণ পর্যবেক্ষণ করেন। যে সকল ঘটনাকে পরীক্ষণাগারে তৈরি বা পুনরুৎপাদন করা যায় না, যেমন- বিবাহ বিচ্ছেদ, সামাজিক সংঘর্ষ, দুর্ভিক্ষ, দাঙ্গা ইত্যাদি ঘটনার কারণ নির্ধারণের জন্য মনোবিজ্ঞানী প্রকৃত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির সাহায্যে ঘটনার সাথে সংশিস্নষ্ট শর্তাবলি খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করেন। এ পদ্ধতিতে পর্যবেক্ষককে ঘটনার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এ পদ্ধতি ব্যক্তি দোষে দুষ্ট। এ পদ্ধতিতে প্রাপ্ত তথ্যের যথার্থতা প্রতিপাদন করা কঠিন ব্যাপার।

৯. রনি ও রিন্টু আলোচনায় বসেছে। রনি বললেন, ‘‘সামাদকে ইদানিং কেমন যেন উদাস উদাস মনে হয়। ডাকলে সাড়া দেয় না। কেমন যেন উপযোজনমূলক আচরণের সমস্যা।’’ রিন্টু কিন্তু অন্যরকম কথা বললেন, ‘‘আগে সামাদকে দেখতে হবে। সামাদ স্বাভাবিক পরিবেশে কেমন আচরণ করছে। তার স্বাভাবিক আচরণ যেন বিঘ্নিত না হয়। আমরা সামাদের সাথে এমনভাবে মিশব ও যেন তা বুঝতে না পারে।’’
ক. বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি কী?
খ. একটি সমস্যার চল শনাক্তকরণ বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ কেন?
গ. রিন্টু যে পদ্ধতির কথা বলল তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. রনি সামাদের ব্যাপারে কোন পদ্ধতির কথা বলছে?তার সুবিধা ও অসুবিধা বর্ণনা কর।

৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি বলতে অনুসন্ধানের সে সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়াকে বোঝায়, যার দ্বারা ধারাবাহিক, বস্ত্তনিষ্ঠ ও সুশৃঙ্খল জ্ঞান আহরণ করা সম্ভব।

খ. একটি সমস্যার চল শনাক্তকরণ বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ চল শনাক্তকরণ পরীক্ষণ পদ্ধতির একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। পরীক্ষণে সাধারণত নির্ভরশীল চলের ওপর অনির্ভরশীল চলের প্রভাব লক্ষ করা হয় এবং অন্তর্বর্তী চল ও বাহ্যিক চলকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। পরীক্ষণ পরিস্থিতিতে যে উপাদান বা বিষয়ের পরিবর্তন আনা হয় (অনির্ভরশীল চল) এবং এই পরিবর্তন আচরণে যে প্রভাব ফেলে (নির্ভরশীল চল) তা শনাক্ত করতে হবে। অর্থাৎ পরীক্ষণে কোনটি অনির্ভরশীল চল এবং কোনটি নির্ভরশীল চল তা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে।

গ. উদ্দীপকের আলোচনার রিন্টু যে পদ্ধতির কথা বলেছে তা হলো প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি।
প্রাকৃতিক পরিবেশে সংঘটিত কোনো ঘটনাকে অনুরূপভাবে পর্যবেক্ষণ করার জন্য প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি বলতে মূলত প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিকেই বোঝানো হয়ে থাকে। প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণের দুটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য হলো-
১. পর্যবেক্ষণকারী স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রেখে পরীক্ষণপাত্রের আচরণ পর্যবেক্ষণ করেন।
২. পরীক্ষণপাত্রের স্বাভাবিক আচরণ যাতে বিঘ্নিত না হয়, পর্যবেক্ষণকারী সেদিকে খেয়াল রাখেন।
উদ্দীপকে রিন্টু বলেছে সামাদকে স্বাভাবিক পরিবেশে পর্যবেক্ষণ করে তার আচরণ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আবার সামাদের স্বাভাবিক আচরণ যাতে বিঘ্নিত না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। 
প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ তখনই সর্বোত্তম পর্যবেক্ষণ হবে, যখন পরীক্ষণপাত্র বুঝতে না পারে যে তাকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। স্বাভাবিক পরিবেশে যা ঘটে তার ওপর খুব কম নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা যায়। পর্যবেক্ষণকালে যা কিছু ঘটছে, আমরা কেবলমাত্র সেসব আচরণই অনুধ্যান করতে পারি। তাছাড়া স্বাভাবিক পরিবেশে নির্দিষ্ট চলসমূহের মধ্যকার কার্যকারণ সম্পর্কে নির্ণয় করাও খুব কঠিন। এ পদ্ধতিকে বিষয়গত পদ্ধতি বলা হয়। একে আবার পরোক্ষ পদ্ধতিও বলা হয়। কারণ এ পদ্ধতিতে সামাদের বাহ্যিক আচরণ পর্যবেক্ষণ করে তার মানসিক অবস্থা ও ক্রিয়া সম্পর্কে অনুমান করা হয়।

ঘ. উদ্দীপকের আলোচনা থেকে বুঝা যায় রনি সামাদের ব্যাপারে চিকিৎসামূলক পদ্ধতির কথা বলছে। নিচে চিকিৎসামূলক পদ্ধতির সুবিধা ও অসুবিধা বর্ণনা করা হলো-

চিকিৎসামূলক পদ্ধতির সুবিধা:
১. সাধারণত মনোচিকিৎসকগণ এ পদ্ধতির ব্যবহার করেন তাদের কাছে বহু সংখ্যক সমস্যাগ্রস্থ ব্যক্তি চিকিৎসার জন্য আসে। তখন চিকিৎসক তাদের নিকট থেকে বা তাদের আত্মীয়/ বন্ধুদের নিকট থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন।
২. চিকিৎসক নিজে দীর্ঘদিন যাবৎ রোগীর আচরণ অনুধ্যান করে বহু মূল্যবান তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন।
৩. বহু সংখ্যক পর্যবেক্ষণ থেকে চিকিৎসক যথার্থ বা সঠিক সিদ্ধান্ত গঠন করতে পারেন।
৪. এ পদ্ধতির সাহায্যে মানসিক রোগের কারণ এবং এর গতি প্রকৃতি সম্বন্ধে জানা যায়।
৫. দীর্ঘদিন যাবৎ রোগীর আচরণ অনুধ্যান করেন বলে চিকিৎসক যথার্থ বা সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে সক্ষম হয়।

চিকিৎসামূলক পদ্ধতির অসুবিধা:
১. রোগীর প্রদত্ত তথ্য সঠিক কি-না তা যাচাই করা সম্ভব নয়।
২. কোনো পরীক্ষণমূলক অনুমান গঠন করা যায় না।
৩. তথ্য গ্রহণের জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি নেই।
৪. ঘটনা অনুধ্যানের জন্য দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন।
৫. এটাকে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি বলা যায় না।
৬. কোনো পরীক্ষণমূলক প্রকল্প গঠন করা যায় না।

১০. আশরাফ উদ্দিন সরদার একাদশ শ্রেণির ক্লাস নেন। দুটি শাখা- ক শাখায় ক্লাস নেন শনি, সোম ও বুধবার এবং খ শাখায় রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার। প্রতি শাখায় ৫০ জন ছাত্র-ছাত্রী। তিনি ছাত্র-ছাত্রীর উপস্থিতি দেখতে চান। তিনি ক শাখায় প্রতিদিন ১০টায় ক্লাসে উপস্থিত হন এবং ক্লাস নেন। কিন্তু খ শাখায় তিনি ১২/১৫ মিনিট দেরিতে ক্লাসে ঢোকেন। দু'মাস পরে তিনি দেখতে পান ক শাখার ছাত্র-ছাত্রীরা সঠিক সময়ে ক্লাসে উপস্থিত হয়। কিন্তু খ শাখায় তেমনটি হয়নি।
ক. নিয়মতান্ত্রিক পর্যবেক্ষণ কী?
খ. পরীক্ষণপদ্ধতিকে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি বলা হয় কেন?
গ. ক শাখার ছাত্র-ছাত্রীদের নির্দিষ্ট সময়ে উপস্থিতি কোন ধরনের চল?ব্যাখ্যা কর।
ঘ. আশরাফ উদ্দিন সরদার বাহ্যিক চল নিয়ন্ত্রণে যে কৌশলটি ব্যবহার করেছেন তার যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ কর।

১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. মনোবিজ্ঞানের একটি প্রাচীন পদ্ধতি হলো নিয়মতান্ত্রিক পর্যবেক্ষণ। নিয়মতান্ত্রিক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি হলো এমন একটি নিরীক্ষণ পদ্ধতি, যার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে মানুষ বা প্রাণীর বাহ্যিক আচরণ ও ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার নিরীক্ষণ ও পর্যালোচনা করে তার মানসিক অবস্থা সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা হয়।

খ. পরীক্ষণ পদ্ধতি হলো এমন একটি সুপরিকল্পিত ও সুনিয়ন্ত্রিত বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি, যার মাধ্যমে অনির্ভরশীল চল ও নির্ভরশীল চলসমূহের কার্যকারণগত সম্পর্ক নির্ণয় ও পরিমাপ করা হয়। মনোবৈজ্ঞানিক গবেষণার ক্ষেত্রে এ পরীক্ষণ পদ্ধতি হলো মানুষ বা প্রাণীর আচরণ ও মানসিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া নির্ণয়ের একটি সুপরিকল্পিত ও সুনিয়ন্ত্রিত বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি। পরীক্ষণ পদ্ধতিতেই সকল বৈজ্ঞানিক বৈশিষ্ট্যাবলি বর্তমান থাকে। এ কারণে পরীক্ষণ পদ্ধতিকেই যথার্থ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

গ. ‘ক’ শাখার ছাত্র-ছাত্রীদের নির্দিষ্ট সময়ে উপস্থিতি হলো নির্ভরশীল চল।
নির্ভরশীল চলকে তার উপস্থিতি বা সৃষ্টির জন্য অন্য কারও ওপর নির্ভর করতে হয়। ওয়াইনী ওয়াইটেন এর মতে, ‘‘নির্ভরশীল চল হলো সেই চল যা অনির্ভরশীল চল প্রয়োগের ফলে প্রভাবিত হয় বলে মনে হয়।
অনির্ভরশীল চল পরিবর্তনের সাথে সাথে প্রাণীর আচরণে যেসব পরিবর্তন ঘটে, সেগুলোকে নির্ভরশীল চল বলা হয়। নির্ভরশীল চল অনির্ভরশীল চল কর্তৃক সৃষ্ট, প্রভাবিত বা পরিবর্তিত হয়ে থাকে। মনোবিজ্ঞান গবেষণায় জীবের প্রতিক্রিয়া বা সাড়াই হলো নির্ভরশীল চল। উদ্দীপকের ঘটনা থেকে বলা যায় যে, শিক্ষকের সঠিক সময়ে ক্লাসে উপস্থিতির প্রভাব ছাত্র-ছাত্রীদের নির্দিষ্ট সময়ে উপস্থিতিকে প্রভাবিত করে। তাই এ ক্ষেত্রে শিক্ষকের ক্লাসে উপস্থিতি হলো অনির্ভরশীল চল কিন্তু ছাত্র-ছাত্রীদের নির্দিষ্ট সময়ে উপস্থিতি হলো নির্ভরশীল চল। অনির্ভরশীল চল ক্লাসে শিক্ষকের উপস্থিতি সঠিক সময়ে হওয়ায় ‘ক’ শাখার ছাত্র-ছাত্রীরা সঠিক সময়ে উপস্থিত হয়। কিন্তু ‘খ’ শাখায় শিক্ষকের উপস্থিতি ১২/১৫ মিনিট দেরিতে হওয়ায়, ছাত্র-ছাত্রীরাও সঠিক সময়ে ক্লাসে উপস্থিত হয় না।

ঘ. আশরাফ উদ্দিন সরদারের ঘটনায় বাহ্যিক চলসমূহ হচ্ছে:
ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা, প্রতি সপ্তাহে মোট ক্লাসের সংখ্যা। তিনি এই চলসমূহকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য অবস্থার ধ্রম্নবকতা বা সমতা ও তুল্য মূল্যায়ন বা ভারসাম্য সৃষ্টি কৌশল ব্যবহার করেছেন। তার ব্যবহৃত বাহ্যিক চল নিয়ন্ত্রণের কৌশল নিচে বিশ্লেষণ করা হলো।
সব চলকে সব সময় পরীক্ষণ পরিবেশ থেকে অপসারণ করা যায় না। এ সকল চলকে নিয়ন্ত্রণের জন্য লক্ষ রাখতে হয় যে, পরীক্ষণে অংশগ্রহণকারী সকল পরীক্ষণপাত্রের উপরই যেন এগুলো অপরিবর্তনশীলভাবে ক্রিয়াশীল থাকে। যেমন- প্রদত্ত উদ্দীপকে আশরাফ উদ্দিন সরদার সাহেব 'ক' ও 'খ' শাখার ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষেত্রে সপ্তাহে তিন দিন করে ক্লাস নিয়েছেন। এখানে তিনি উভয় দলের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে ক্লাস নিয়েছেন।
তুল্যমূল্যায়ন বা ভারসাম্য সৃষ্টি হলো এমন একটি চল নিয়ন্ত্রণ কৌশল যার দ্বারা ঐ সমস্ত বাহ্যিক চলসমূহকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়, সেগুলোকে অপসারণ বা অবস্থার ধ্রম্নবকতা বা সমতার কৌশল দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। এক্ষেত্রে এ পদ্ধতিতে সকল বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে সমান সমান দুটি দল গঠন করা হয়। যাতে পরীক্ষণ দল ও নিয়ন্ত্রিত দল উভয়টির মাঝে একমাত্র অনির্ভরশীল চলের ক্রিয়াগত পার্থক্য ছাড়া আর কোনো বাহ্যিক চল ক্রিয়াশীল থাকে না। উদ্দীপকের ক্ষেত্রে আশরাফ উদ্দীন সরদার ‘ক’ ও ‘খ’ শাখার ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা সমান রেখে উভয় দলের মধ্যে তুল্যমূল্যায়ন বা ভারসাম্য সৃষ্টি করেছেন।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post