বাংলাদেশের বনজ, প্রাণীজ, মৎস ও খনিজ সম্পদ

 বাংলাদেশের বনজ সম্পদঃ

উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশের বনভূমি তিন প্রকারঃ

১. ক্রান্তীয় চিরহরিৎ ও পত্রপতনশীল বৃক্ষের বনভূমিঃ চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সিলেটের এলাকা জুড়ে এ বনাঞ্চল বিস্তৃত। এ বনাঞ্চলে চাপালিস, গর্জন, গামারি, জারুল, কড়ই, বাঁশ, বেত, মধু ও মোম প্রভৃতি পাওয়া যায়। গর্জন ও জারুল দ্বারা রেলপথের স্লিপার এবং গামারি ও চাপালিশ দ্বারা সাম্পান ও নৌকা তৈরি করা হয়।

২. শালবনঃ ময়মনসিংহ, গাজীপুর ও টাঙ্গাইলে এ বনভূমি অবস্থিত। সামান্য পরিমাণে রংপুর ও দিনাজপুরে শালবন দেখতে পাওয়া যায়। এ বনাঞ্চলের ৯৫% বৃক্ষই শাল। এছাড়া ছাতিম, কুর্চি, কড়ই, হিজল প্রভৃতি গাছ জন্মে।

৩. স্রোতজ বা টাইডাল বনভূমিঃ যে বনভূমি জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয় এবং ভাটার সময় শুকিয়ে যায় তাকে টাইডাল বনভূমি বা স্রোতজ অরণ্য বলে। এই বনভূমিকে সমুদ্র উপক‚লীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, বরগুণা ও পটুয়াখালীতে দে তে পাওয়া যায়। সুন্দরবন পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তর টাইডাল বন। সুন্দরী সুন্দরবনের প্রধান বৃক্ষ। এচাড়া গরান, গেওয়া, কেওড়া, ধুন্দল, পশুর, বায়েন প্রভৃতি বৃক্ষ এ বনে পাওয়া যায়।

৪. ইকোপার্ক ও সাফারী পার্কঃ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, প্রাণীক‚লের অভয়ারণ্য গড়ে তোলা এবং চিত্তবিনোদনের জন্য বনবিভাগ ইকোপার্ক ও সাফারী পার্ক নির্মাণ করেছে। বাংলাদেশে ইকোপার্ক তিনটি। যেমন সীতাকুন্ড ইকোপার্ক, মাধবকুন্ড ইকোপার্ক এবং মুরাইছড়া ইকোপার্ক। বাংলাদেশের একমাত্র সাফারি পার্ক কক্সবাজারের ডুলাহাজারায় অবস্থিত।

৫. ম্যানগ্রোভ বনঃ প্রাকৃতিক জলোচ্ছ্বাস ও জোয়ার-ছাটা এলাকায় যে সমস্ত উদ্ভিদ পানির মধ্যে বেঁচে থাকে এবং জোয়ার-ভাটা থেকেই শ্বাস-প্রশ্বাস চালায় সে সব উদ্ভিদকে ম্যানগ্রোভ বলে। বাংলাদেশে এ ধরনের প্রাকৃতিক ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল দেকা যায় সুন্দরবনে। এচাড়া কক্সবাজারের চকোরিয়া বনাঞ্চলও ম্যানগ্রোভ বনের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ। বাংলাদেশে সুন্দরবনের আয়তন প্রায় ৫৫৭৫ বর্গকিলোমিটার, যায় প্রায় ২০০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ম্যানগ্রোভ বন রয়েছে।

৬. বিশ্ব ঐতিহ্যঃ ১৯৯৯ সালের ৪ ফেব্রুয়ারী সুন্দরবনের ১৪০০ বর্গমাইল এলাকাকে UNESCO ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট ঘোষণা করেছে। এটি ৫২২ তম বিশ্বঐতিহ্য। বাংলাদেশে মোট বিশ্বঐতিহ্য ৩টি। অন্য দুটি হলো মোসপুর বিহার এবং ষাটগম্বুজ মসজিদ।

বাংলাদেশের প্রাণীজ ও মৎস সম্পদঃ

১. দেশে মাছ থেকে প্রাণীজ ইমষ আসে      %, দৈনিক মাথাপিছু মাছের প্রয়োজন    গ্রাম, দৈনিক মাথা পিছু মাছের প্রাপ্তি    গ্রাম।

২. মিঠা পানির চিংড়ি গলদা, লোনা পানিরচিংড়ি বাগদা।

৩. চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্র খুলনায়, মৎস গবেষণা কেন্দ্র চাঁদপুরে।

৪. GDP-তে পশুসম্পদের অবদান-

৫. বাংলাদেশ পশুসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট ১৯৮৪ সালে সাভারে প্রতিষ্ঠিত হয়।

৬. বাংলাদেশ মৎস গবেষণা ইনস্টিটিউট ১৯৮৪ সালে ময়মনসিংহে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর অধীনস্থঃ প্রতিষ্ঠান ৫টি। যেমন-

স্বাদু পানির মাছ- ময়মনসিংহ

নদীর মাছ- চাঁদপুর।

স্বল্প লোনাপানির মাছ ও চিংড়ী- খুলনা।

চিংড়ী- বাগের হাট।

সামুদ্রিক মাছ-কক্সবাজার।

৭. BFDC = Bangladesh Fisheries Development Corporation বা বাংলাদেশ মৎস উন্নয়ন সংস্থা ১৯৬৪ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে প্রতিষ্ঠিত হয়।

৮. গবাদী শশুতে ভ্রণবদল করা হয় ৫ মে, ১৯৯৫।

৯. ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় প্রথম বারের (দেশে) মতো বানিজ্যিক ভিত্তিকে কুমির খামার গড়ে তোলা হয়েছে।

১০. বাংলাদেশে অতিথি পাখি আসে সাইবেরিয়া হতে।

১১. দেশের একমাত্র মহিষ প্রজনন খামার বাগেরহাটে অবস্থিত।

১২. সোনাদিয়া দ্বীপ বিখ্যাত মাছ ধরার জন্য।

১৩. দেশের একমাত্র ছাগল প্রজনন খামার সিলেটে অবস্থিত।

১৪. দুবলার চর বিখ্যাত শুটকির জন্য।

১৫. দেশের বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র অবস্থিত কক্সবাজারে।
বাংলাদেশের বনজ, প্রাণীজ, মৎস ও খনিজ সম্পদ

বাংলাদেশের খনিজ সম্পদঃ

গ্যাসঃ বাংলাদেশের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদ হল প্রাকৃতিক গ্যাস। গ্যাসক্ষেত্র আবিস্কৃত হয়েছে  টি। বর্তমানে ১৭টি গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। বাংলাদেশে প্রথম গ্যাস পাওয়া গিয়েছে সিলেটের হরিপুরে, মোট মজুদের দিক থেকে তিতাস বৃহত্তম গ্যাসফিল্ড। ঢাকা শহরে সরবরাহকৃত গ্যাস আসে তিতাস গ্যাসক্ষেত্র থেকে।

কয়লাঃ দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর থানার বড়পুকুরিয়ায় দুই বর্গমাইল ব্যাপী কয়লা খনি আবিস্কৃত হয়েছে। এছাড়া জয়পুরহাটের জামালগঞ্জে, সিলেটের লালঘাট, লাকমারা ও দিনাজপুরের নওয়াবগঞ্জ থানার দীঘিপাড়া ও ফুলবাড়িতে কয়লা পাওয়া গিয়েছে।

চুনাপাথরঃ ১৯৫৮ সালে সর্বপ্রথম সেন্টমার্টিন দ্বীপে চুনাপাথর পাওয়া গিয়েছে। এছাড়া সুনামগঞ্জের টেকেরঘাট, বাগালিবাজারে ও জয়পুরহাটে চুনাপাথর পাওয়া গিয়েছে। ১৯৬৫ সালে সুনামগঞ্জের টেকেরঘাট এবং ১৯৬৬ সলে জয়পুরহাটে চুনাপাথর পাওয়া যায়।

চীনামাটিঃ নেত্রকোণা জেলার বিজয়পুরে ৮ লক্ষ মেট্রিক টন চীনামাট সঞ্চিত আছে। এছাড়া নওগাঁর পত্নীতলায় এবং চট্টগ্রামের পটিয়ায় চীনামাটির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।

খনিজ তেলঃ সিলেটের হরিপুরে তেল পাওয়া গিয়েছে।

ব্লাকগোল্ড (কালো সোনা): কালো সোনা বা ব্ল্যাক গোল্ড হলো এক ধরণের মূল্যবান খনিজ বালু। এর মধ্যে রয়েছে ১৫টি মূল্যবান খনিজ পদার্থ। এদের মধ্যে রুটাইল, ইলমেনাইট, মোনাজাইট, ম্যাগনেটাইট ও জিরকন অতি মূল্যবান খনিজ। কালো সোনা কোন সোনা হয়, এটি রূপকার্থে মূল্যবান কালো রঙের খনিজ পদার্থকে বোঝায়। এ খনিজ বালি সাধারণত সমুদ্র তীরের এক থেকে দুই মাইলের মধ্যে পাওয়া যায়।
Post a Comment (0)
Previous Post Next Post