G

HSC ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ১ম পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায়-০২ pdf download

এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Business Organization and Management 1st Paper Srijonshil question and answer pdf download.

অধ্যায়-০২
ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা
১ম পত্র
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

HSC Business Organization and Management 1st Paper
Srijonshil
Question and Answer pdf download

পরীক্ষার্থী বন্ধুরা, এ অধ্যায়ে বোর্ড পরীক্ষা, শীর্ষস্থানীয় কলেজসমূহের নির্বাচনি পরীক্ষা এবং বাছাইকৃত এক্সক্লুসিভ মডেল টেস্টের প্রশ্নগুলোর পূর্ণাঙ্গ উত্তর দেওয়া হয়েছে। এগুলো অনুশীলন করলে তোমরা এ অধ্যায় থেকে যেকোনো সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর সহজেই লিখতে পারবে।

সৃজনশীল প্রশ্ন-০১
গণি মিয়া কৃষক পরিবারের কর্মঠ ছেলে। নদী বিধৌত পদ্মার পাড়ে তারা বাস করতো। জমিতে পলি থাকায় সেখানে প্রচুর ফসল উৎপন্ন হতো। ফলে তারা সচ্ছল জীবিকা নির্বাহ করতো। বন্যায় নদীভাঙনের ফলে গত বছর গণি মিয়াদের ভিটেমাটি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তার ব্যবসায় করার ইচ্ছা ছিল। ব্যাংক ঋণ না পেয়ে তিনি ইটের ভাটায় কাজ শুরু করেন। পরবর্তীতে নদীভাঙন এলাকায় সরকার ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করলে গণি মিয়াদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হয়। [ঢা. বো. ১৭]
ক. প্রযুক্তিগত পরিবেশ কী? ১
খ. সামাজিক পরিবেশ বলতে কী বোঝ? ২
গ. গণি মিয়াদের মানবেতর জীবনযাপনের ওপর কোন পরিবেশের প্রভাব ছিল? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. সরকারি নীতিমালা প্রণয়নের কারণে গণি মিয়ার মতো যুবকদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়ন কি সম্ভব? মতামত দাও। ৪

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষা, বিজ্ঞান সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ ও গবেষণা, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, প্রযুক্তি আমদানির সুযোগ- এসব নিয়ে একটি দেশের অভ্যন্তরে সৃষ্ট পরিবেশকে প্রযুক্তিগত পরিবেশ বলে।

'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
সমাজে বসবাসরত মানুষের সংখ্যা, শিক্ষা ব্যবস্থা, বেকারত্ব, রীতি-নীতি, যা জীবনধারণে প্রভাব বিস্তার করে তাকে সামাজিক পরিবেশ বলে।

সামাজিক পরিবেশের উপাদানগুলো মূলত মানুষের কার্যক্রম দ্বারা প্রভাবিত হয়। এ পরিবেশ ব্যবসায়ের আয় ও লাভ-লোকসানকে প্রভাবিত করে।

'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকের গণি মিয়াদের মানবেতর জীবনযাপনের ওপর প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রভাব ছিল।

কোনো দেশের প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদান নিয়ে তার প্রাকৃতিক পরিবেশ গঠিত হয়। সাধারণত দেশভেদে প্রাকৃতিক পরিবেশ আলাদা হয়ে থাকে। দেশের জলবায়ু, ভূ-প্রকৃতি, মৃত্তিকা, নদ-নদী, সাগর এসবের সমন্বয়ে এ পরিবেশ গঠিত। এসব উপাদানের পার্থক্যহেতু দেশের ব্যবসায় কার্যকলাপ ও মানুষের জীবনধারণও ভিন্নতর হতে পারে।

উদ্দীপকের গণি মিয়ারা নদী বিধৌত পদ্মার পাড়ে বাস করতেন। জমিতে পলি থাকায় তারা সেখানে প্রচুর ফসল উৎপাদন করতে পারতেন। এর ফলে তারা সচ্ছল জীবিকা নির্বাহ করতেন। বন্যায় নদীভাঙনের ফলে গত বছর তাদের ভিটেমাটি নদীতে বিলীন হওয়ায় তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। মানুষ এরূপ প্রতিকূল পরিবেশকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। প্রকৃতিগত কারণেই এরূপ নদীভাঙন হয়েছে। পরিবেশের এরূপ প্রতিকূল ভূ-প্রকৃতিগত অবস্থা প্রাকৃতিক পরিবেশের উপাদান। সুতরাং গণি মিয়াদের মানবেতর জীবনযাপনের ওপর প্রাকৃতিক পরিবেশেরই প্রভাব ছিল।

'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
রাজনৈতিক পরিবেশের আওতায় সরকারি নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে গণি মিয়ার মতো যুবকদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব বলে আমি মনে করি।

দেশের রাজনৈতিক উপাদান নিয়ে এ পরিবেশ গঠিত হয়। সরকারের স্থিতিশীলতা, নীতিমালা, দেশের সার্বভৌমত্ব, রাজনৈতিক দল, নেতৃত্ব, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এ পরিবেশের উপাদান। উন্নত ও সহনশীল রাজনৈতিক পরিবেশ দেশের ব্যবসায়ের জন্য সহায়ক।

উদ্দীপকে গণি মিয়াদের অঞ্চলে নদীভাঙনে তাদের ভিটেমাটি নদীতে বিলীন হয়ে যায়। তারপর ব্যবসায় করার ইচ্ছা থাকলেও ব্যাংক ঋণ না পেয়ে তিনি ইটভাটায় কাজ নেন। পরবর্তী সময়ে সরকারি নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে নদীভাঙন এলাকায় সরকার ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করে। এ সরকারি নীতিমালা রাজনৈতিক পরিবেশের উপাদান।

গণি মিয়াদের মতো এদেশে অসংখ্য যুবক আছেন যারা সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণের অভাবে ব্যবসায় করতে পারেন না। সরকার যদি ব্যবসায়-বান্ধব নীতিমালা প্রণয়ন করে তাহলে এ যুবকরা সহজভাবে ব্যবসায় শুরু করতে পারবেন। এতে অনেক লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। এভাবে তারা নিজেদের অর্থনৈতিক উন্নতি সাধন করতে পারবেন। তাদের মাধ্যমে বেকার যুবকদেরও কর্মের ব্যবস্থা হবে। এর ফলে তারা পারিবারিক আয়ের উৎস বাড়াতে পারবেন। সুতরাং বলা যায়, সরকারি নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে গণি মিয়ার মতো যুবকদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়ন সম্ভব।

সৃজনশীল প্রশ্ন-০২
বাংলাদেশে রয়েছে প্রচুর জনশক্তি। এ জনশক্তি ও সস্তা শ্রমিকের ওপর নির্ভর করে গড়ে ওঠেছে পোশাক শিল্প। বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের বিদেশে যথেষ্ট সুনাম আছে। তবে পোশাক শিল্পে অনেক সমস্যাও আছে। এসব সমস্যার কারণে এ শিল্পের উন্নয়ন কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। [রা. বো. ১৭]
ক. অর্থনৈতিক পরিবেশ কী? ১
খ. সামাজিক পরিবেশ বলতে কী বোঝায়? ২
গ. বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের উন্নয়নে কোন পরিবেশ সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করছে? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে পোশাক শিল্পের উন্নয়নে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত? মতামত দাও। ৪

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
কোনো দেশের অর্থ ও ঋণ ব্যবস্থা, জনগণের আয় ও সঞ্চয়, বিনিয়োগ, মূলধন, জনসম্পদ এসব উপাদানের ওপর ভিত্তি করে যে পরিবেশের সৃষ্টি হয় তাকে অর্থনৈতিক পরিবেশ বলে।

'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
সমাজে বসবাসরত মানুষের সংখ্যা, শিক্ষা ব্যবস্থা, বেকারত্ব, রীতি-নীতি এসব উপাদান নিয়ে যে পরিবেশের সৃষ্টি হয় তাকে সামাজিক পরিবেশ বলে।

সামাজিক পরিবেশের উপাদানগুলো মূলত মানুষের সৃষ্টি এবং মানুষের কার্যক্রম দ্বারা প্রভাবিত হয়। এটি ব্যবসায়ের আয়, লাভ-লোকসানকে নানাভাবে প্রভাবিত করে।

'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের উন্নয়নে অর্থনৈতিক পরিবেশ সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করছে।

অর্থনৈতিক উপাদান নিয়ে যে পরিবেশ গঠিত হয় তাই হলো অর্থনৈতিক পরিবেশ। জনগণের আয় ও সঞ্চয়, অর্থ ও ঋণ ব্যবস্থা, বিনিয়োগ, মূলধন, জনসম্পদ এ পরিবেশের উপাদান। যে দেশের অর্থনৈতিক পরিবেশ যত ভালো, সে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য তত অগ্রগতি লাভ করতে পারে।

উদ্দীপকে উল্লেখ্য, বাংলাদেশে প্রচুর জনশক্তি রয়েছে। এখানে জনশক্তি ও সস্তা শ্রমিকের ওপর নির্ভর করে পোশাক শিল্প গড়ে ওঠেছে। বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের বিদেশে যথেষ্ট সুনাম আছে। এ জনশক্তি ও সস্তা শ্রমিক হলো দেশের ‘মানবসম্পদ’। এ সম্পদকে কাজে লাগিয়ে দেশের পোশাক শিল্পের সব কাজ করানো হচ্ছে। এদেশে তৈরি পোশাক বর্তমানে বাইরের দেশেও জনপ্রিয় হচ্ছে। এ মানবসম্পদ অর্থনৈতিক পরিবেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সুতরাং বলা যায়, বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের উন্নয়নে মূলত অথনৈতিক পরিবেশই অবদান রাখছে।

'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের উন্নয়নে এখানকার অর্থনৈতিক পরিবেশকে আরও উন্নত করা উচিত বলে আমি মনে করি।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিবেশের কিছু উপাদান যেমন: মূলধন স্বল্পতা, সুদের উচ্চহার, শ্রমিকদের কম আয় পোশাক শিল্পের উন্নয়নের পথে বড় ধরনের বাধা হয়ে আছে। এসব সমস্যা দূর করা গেলে এ শিল্পের দ্রুত উন্নয়ন আশা করা যায়।

উদ্দীপকে উল্লেখ্য, জনশক্তি ও সস্তা শ্রমিকের ওপর নির্ভর করে এদেশে পোশাক শিল্প গড়ে ওঠেছে। এ শিল্প বিদেশে বেশ সুনামও অর্জন করেছে। তবে নানা সমস্যার কারণে এ শিল্পের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য পোশাক শিল্পের শ্রমিকদেরকে ন্যায্য পারিশ্রমিকের ব্যবস্থা করতে হবে।

এক্ষেত্রে জনগণের মাথাপিছু আয় বাড়িয়ে তাদের সঞ্চয় ও মূলধন গঠনের সামর্থ্য বাড়াতে হবে। এছাড়া শেয়ারবাজারকে গতিশীল করা গেলে তা মূলধন সংস্থানে ভূমিকা রাখতে পারে। ব্যাংকগুলোতে সুদের উচ্চহার কমাতে হবে, যাতে ঋণ নিতে দক্ষ ব্যবসায়ী বা শিল্প উদ্যোক্তাগণ উৎসাহিত হন। এভাবে অর্থনৈতিক উপাদানসমূহের উন্নয়নের মাধ্যমে পোশাক শিল্পের উন্নয়ন সম্ভব।

সৃজনশীল প্রশ্ন-০৩
খুলনার বাসিন্দা রাজিব একজন কৃষক। তার জমিতে প্রচুর ফসল উৎপাদিত হতো। এসব ফসল বিক্রি করে তিনি স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করতেন। কিন্তু লবণাক্ততার কারণে তার জমিতে কয়েক বছর যাবত উৎপাদন ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ায় তিনি নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। বর্তমানে রাজিব কৃষিকাজ ছেড়ে একটি দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করছেন। [রা. বো., কু. বো. ১৭]
ক. BSTI-এর পূর্ণরূপ কী? ১
খ. শিল্প বলতে কী বোঝায়? ২
গ. রাজিবের পেশা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কোন পরিবেশের উপাদান প্রভাব ফেলেছে? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. বাংলাদেশে রাজিবের মতো অনেক ব্যক্তির পেশা পরিবর্তনের কারণ বিশ্লেষণ করো। ৪

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
BSTI-এর পূর্ণরূপ হলো Bangladesh Standards & Testing Institution।

'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
যে কার্যপ্রচেষ্টা বা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রাকৃতিক সম্পদ ও কাঁচামালকে প্রক্রিয়াজাত করে মানুষের ব্যবহার উপযোগী পণ্য প্রস্তুত করা হয় তাকে শিল্প বলে।

প্রকৃতি প্রদত্ত উপকরণ বা কাঁচামাল প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে মাধ্যমিক ও চুড়ান্ত পণ্যদ্রব্য উৎপাদন করা হয়। অর্থাৎ ব্যবসায়ের উৎপাদন সংক্রান্ত কাজ শিল্পের দ্বারা সংঘটিত হয়। এজন্য শিল্পকে উৎপাদনের বাহন বলা হয়।

'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকের রাজিবের পেশা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক পরিবেশের উপাদান প্রভাব ফেলেছে।

প্রকৃতির উপাদানসমূহ নিয়ে মূলত প্রাকৃতিক পরিবেশ গঠিত। কোনো দেশের জলবায়ু, ভূ-প্রকৃতি, মৃত্তিকা, নদ-নদী, সাগর ও আয়তন এ পরিবেশের উপাদান। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ বিভিন্ন ধরনের হয়। এসব উপাদানের পার্থক্যহেতু দেশের ব্যবসায় কার্যকলাপও ভিন্নতর হয়ে থাকে।

উদ্দীপকের কৃষক রাজিবের জমিতে প্রচুর ফসল উৎপাদিত হতো। এসব ফসল বিক্রি করে তিনি স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করতেন। কিন্তু কয়েক বছর যাবত তার জমিতে লবণাক্ততার কারণে উৎপাদন ব্যাপকভাবে কমে যায়। এতে তিনি নিঃস্ব হয়ে পড়েন। জমির এ লবণাক্ততা সাগরের অবস্থানের কারণে হয়েছে, যা পরিবেশে প্রতিকূল প্রভাব ফেলে। তাই রাজিব বর্তমানে কৃষিকাজ ছেড়ে একটি দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করছেন। প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রতিকূল অবস্থার কারণে তিনি এ কাজে যোগ দেন। সুতরাং বলা যায়, তার পেশা পরিবর্তনে এ প্রাকৃতিক পরিবেশই প্রভাব ফেলেছে।

'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রভাবে বাংলাদেশে রাজিবের মতো অনেক ব্যক্তিকে পেশা পরিবর্তন করতে হয়।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ আলাদা হয়ে থাকে। পরিবেশের উপাদানের পার্থক্যের কারণে দেশের মানুষের ব্যবসায় কার্যকলাপেও ভিন্নতা দেখা যায়।

উদ্দীপকে রাজিব খুলনায় কৃষিকাজ করতেন। উর্বর জমিতে জলবায়ুর কারণে তিনি ভালো ফসল উৎপাদন করতে পারতেন। কিন্তু সেখানে সাগরের প্রভাবে জমিতে লবণাক্ততার কারণে উৎপাদন ব্যাপকভাবে কমে যায়। তাই তিনি কৃষিকাজ ছেড়ে একটি দোকানে কাজ শুরু করেন। প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রতিকূল প্রভাবে তিনি তার পেশা পরিবর্তন করেছেন।

বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অনেকেই উদ্দীপকের রাজিবের মতো জীবিকা নির্বাহ করেন। প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রভাবে তাদের জীবিকার ধরন বিভিন্ন রকমের হয়। আবার এ পরিবেশের প্রভাবেই তারা তাদের জীবিকা পরিবর্তন করতে বাধ্য হন। সাধারণত পরিবেশের যে উপাদান যে অঞ্চলের জন্য উপযুক্ত তার ওপর ভিত্তি করে মানুষ জীবিকা নির্বাচন করে থাকেন। কিন্তু পরিবেশের উপাদান যেকোনো সময় পরিবর্তনযোগ্য। এ পরিবর্তনশীলতার সাথে তাল মিলিয়েই মানুষ নিজের পেশা পরিবর্তন করেন। সুতরাং বলা যায়, প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রভাবেই এদেশে রাজিবের মতো অনেক মানুষকে পেশা পরিবর্তন করতে হয়।

সৃজনশীল প্রশ্ন-০৪
বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ হলেও শিল্পের ক্ষেত্রে এদেশ ক্রমাগত এগিয়ে চলেছে। তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে বিশ্বে আমাদের অবস্থান দ্বিতীয়। তবে রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় সহস্রাধিক পোশাক কর্মীর মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র সেদেশে বাংলাদেশি পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে প্রদত্ত কোটা সুবিধা বাতিল করেছে। যুক্তরাষ্ট্রকে এমন সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য বাংলাদেশের সর্বাত্মাক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। [দি. বো. ১৭]
ক. পরিবেশ কাকে বলে? ১
খ. অর্থনৈতিক পরিবেশ গুরুত্বপূর্ণ কেন? ২
গ. উদ্দীপকে যুক্তরাষ্ট্রের কোটা বাতিলের বিষয়টি কোন পরিবেশের অন্তর্ভুক্ত? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে রানা প্লাজার ঘটনা উত্তরণে করণীয় সম্পর্কে তোমার মতামত দাও। ৪

৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
মানুষ যে পারিপার্শ্বিকতার মধ্যে বসবাস করে এবং যা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তার জীবনধারাকে প্রভাবিত করে তাকেই পরিবেশ বলে।

'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
অর্থনৈতিক বিভিন্ন উপাদান যেমন সঞ্চয় ও বিনিয়োগ, মূলধন ও অর্থবাজার নিয়ে যে পরিবেশ গঠিত হয় তাকে অর্থনৈতিক পরিবেশ বলে।

অর্থনৈতিক পরিবেশ এমন কতগুলো উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত, যা ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতা ও ব্যয়ের ধরনকে প্রভাবিত করে। যে দেশ বা অঞ্চলে অর্থনৈতিক পরিবেশের উপাদানগুলো ব্যবসায়ের অনুকূলে, সেখানে অতি দ্রুত ব্যবসায়ের প্রসার ঘটে। এজন্য অর্থনৈতিক পরিবেশ গুরুত্বপূর্ণ।

'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকে যুক্তরাষ্ট্রের কোটা বাতিলের বিষয়টি রাজনৈতিক পরিবেশের অন্তর্ভুক্ত।

একটি দেশের রাজনীতির পারিপার্শ্বিকতা বা উপাদানসমূহ নিয়ে রাজনৈতিক পরিবেশ গঠিত হয়। দেশের সার্বভৌমত্ব, সরকারি নীতিমালা, রাজনৈতিক দল, নেতৃত্ব, আইন-শৃঙ্খলা এ পরিবেশের অন্তর্ভুক্ত। অনুন্নত ও অসহনশীল রাজনৈতিক পরিবেশ দেশের ব্যবসায় পরিবেশকে বাধাগ্রস্ত করে।

উদ্দীপকে উল্লেখ্য, বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে ক্রমাগত এগিয়ে চলেছে। তবে সম্প্রতি রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় সহস্রাধিক পোশাক কর্মীর মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র সেদেশে বাংলাদেশি পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে প্রদত্ত কোটা সুবিধা বাতিল করেছে। এর ফলে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল তার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বাণিজ্য নীতি রাজনৈতিক পরিবেশেরই উপাদান, যা ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর প্রভাব ফেলে। সুতরাং বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক কোটা বাতিলের বিষয়টি রাজনৈতিক পরিবেশের অন্তর্ভুক্ত।

'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে রানা প্লাজার ঘটনা উত্তরণে সুষম কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।

ব্যবসায়-বান্ধব শিল্প ও বাণিজ্য নীতির মাধ্যমে কর্মপরিবেশ উন্নত করা যায়। রাজনৈতিক পরিবেশের এসব উপাদানের নেতিবাচক প্রভাব বাংলাদেশে বিশেষভাবে লক্ষণীয়। সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো যদি ব্যবসায়-বান্ধব হয় এবং নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে, তবে এ অবস্থার থেকে উত্তরণ সম্ভব।

উদ্দীপকে উল্লেখ্য, রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় সহস্রাধিক পোশাক কর্মীর মৃত্যু হয়। এটি পোশাক শিল্পের একটি নেতিবাচক ঘটনা। এ রকম দুর্ঘটনায় হাজার হাজার শ্রমিকের মৃত্যু হয়ে তাদের পরিবারে অসহায়ত্ব নেমে আসে। এতে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের প্রতি বাইরের দেশের ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর বিরূপ ধারণা জন্মে। এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া খুবই জরুরি।

এ অবস্থা নিয়ন্ত্রণের জন্য মৃত শ্রমিক পরিবারের সদস্যদের নতুন করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। পাশাপাশি শ্রমিকদেরকে একটি সুষ্ঠু কাজের পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে। কারখানা গঠনের সময় সরকারকে নজর দিতে হবে যেন এটি সঠিক নিয়ম ও অবকাঠমো অনুযায়ী স্থাপিত হয়। এসব বিষয় নিশ্চিত হলে একটি সুষম কর্মপরিবেশ সৃষ্টি হবে। এর ফলে কর্মীরাও কাজে মনোযোগী ও আগ্রহী হতে পারবে। এভাবে বাইরের দেশের কাছে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের ভাবমূর্তি সুদৃঢ় করা যাবে। এভাবে রানা প্লাজার ঘটনা থেকে উত্তরণ সম্ভব হবে।

সৃজনশীল প্রশ্ন-০৫
শেরপুরের হাবিব স্থানীয় তাল, বাঁশ ও খেজুর গাছের ওপর ভিত্তি করে ‘রূপসী বাংলা’ নামে একটি কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। তার উৎপাদিত পাখা, টুপি, পাট ও খেলনা সামগ্রী ক্রেতাদের আকৃষ্ট করে। উৎপাদিত পণ্য বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। দিন দিন চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় তিনি কারখানাটি সম্প্রসারণের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু মূলধন সংকটের কারণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারছেন না। [চ. বো. ১৭]
ক. একমালিকানা ব্যবসায় কী? ১
খ. নামমাত্র অংশীদার বলতে কী বোঝায়? ২
গ. হাবিব কোন পরিবেশের ওপর ভিত্তি করে তার প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. হাবিবের ব্যবসায়ের সমস্যা উত্তরণের উপায় সম্পর্কে যুক্তি উপস্থাপন করো। ৪

৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
কোনো ব্যক্তি এককভাবে ব্যবসায় গঠন ও নিয়ন্ত্রণ, মূলধন সরবরাহ, ঝুঁকি বহন, পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ এবং মুনাফা বা ক্ষতি একাই ভোগ করলে সেই ব্যবসায়কে একমালিকানা ব্যবসায় বলে।

'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
যিনি প্রতিষ্ঠানের অংশীদার না হয়েও ব্যবসায়ে নিজের নাম ব্যবহারের অনুমতি দেন (কিন্তু মূলধন বিনিয়োগ করেন না) তাকে নামমাত্র অংশীদার বলে।

নামমাত্র অংশীদার ব্যবসায়ের স্বার্থে নিজের সুনাম ব্যবহারের সুযোগ দেন। তিনি ব্যবসায়ের অংশীদার নন। তবে তিনি ব্যবসায় হতে আর্থিক সুবিধা বা কমিশন গ্রহণ করতে পারেন। এ ধরনের অংশীদার ব্যবসায়ে মূলধন, শ্রম, দক্ষতা কিছুই বিনিয়োগ করেন না।

'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকে হাবিব প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপর ভিত্তি করে তার প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছেন।

কোনো দেশের জলবায়ু, ভূ-প্রকৃতি, সাগর, নদ-নদী ও মৃত্তিকার সমন্বয়ে যে পরিবেশ গড়ে ওঠে তাই হলো প্রাকৃতিক পরিবেশ। বিভিন্ন দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ আলাদা হয়ে থাকে। এসব উপাদানের পার্থক্যহেতু দেশের ব্যবসায় কার্যকলাপও ভিন্নতর হয়ে থাকে।

উদ্দীপকের হাবিব শেরপুরে তাল, বাঁশ ও খেজুর গাছের ওপর ভিত্তি করে “রূপসী বাংলা” নামে একটি কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। তার প্রতিষ্ঠানে পাখা, টুপি, পাটি ও খেলনা সামগ্রী উৎপাদিত হয়। এ অঞ্চলে মৃত্তিকার অনুকূল প্রভাবে তাল, বাঁশ ও খেজুর গাছ ভালো উৎপন্ন হয়। তাই হাবিব সেখানে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছেন। এতে তার পণ্যের উৎপাদনের জন্য কাঁচামাল সমসময় পর্যাপ্ত থাকে। ফলে পর্যাপ্ত পরিমাণ পণ্যও তিনি তৈরি করতে পারেন। সুতরাং প্রাকৃতিক পরিবেশ অনুকূলে থাকার কারণেই হাবিব সেখানে কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠানটি স্থাপন করেছেন।

'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
হাবিবের ব্যবসায়ের সমস্যা উত্তরণের জন্য তার আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে বলে আমি মনে করি।

ব্যবসায় গঠন, পরিচালনা ও সম্প্রসারণের জন্য সর্বক্ষেত্রেই পর্যাপ্ত পুঁজি বা মূলধনের প্রয়োজন। মূলধনের সহজ সুযোগ, অর্থ-ঋণ ব্যবস্থা উন্নত হলে ব্যবসা-বাণিজ্য দ্রুত অগ্রগতি লাভ করতে পারে।

উদ্দীপকের হাবিবের উৎপাদিত পণ্য ক্রেতাদের আকৃষ্ট করে। তার উৎপাদিত পণ্য বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। দিন দিন চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় তিনি কারখানাটি সম্প্রসারণের চেষ্টা করছেন। কিন্তু মূলধন সংকটের কারণে তিনি সেটি সম্প্রসারণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারছেন না।

একটা দেশের ব্যবসায় উন্নয়ন প্রয়োজনীয় উপকরণাদির সহজ প্রাপ্তির ওপর নির্ভরশীল। উদ্দীপকে অনুকূল অবস্থার কারণে হাবিবের শিল্পের দ্রুত উন্নতি হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে মূলধন সংকট হওয়ায় তিনি প্রতিষ্ঠানটি সম্প্রসারণ করতে পারছেন না। এ সমস্যা সমাধানে তিনি ব্যাংক বা এরূপ আর্থিক উৎস হতে সহজ শর্তে ঋণ নিতে পারেন। নিজস্ব পুঁজির সাথে এরূপ ঋণের অর্থ মিলিয়ে তিনি ব্যবসায়টি সম্প্রসারণের জন্য পর্যাপ্ত পুঁজি একত্র করতে পারবেন। এতে তার আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নে বর্তমানে এরূপ আর্থিক প্রতিষ্ঠান ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোক্তাদের ঋণ সহায়তা দিয়ে থাকে। সুতরাং এভাবেই হাবিব তার প্রয়োজনীয় পুঁজি সংগ্রহ করে ব্যবসায়টি সম্প্রসারণ করতে পারবেন।

সৃজনশীল প্রশ্ন-০৬
বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। আশির দশকের শুরুতে জনাব আওলাদ বাংলাদেশের জনসম্পদকে কেন্দ্র করে ঢাকায় একটি পোশাক কারখানা গড়ে তোলেন, যার লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটানো। ঐ দশকের মাঝামাঝি জনাব আওলাদ যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে তার তৈরি পোশাক বিক্রি করেন। ক্রমান্বয়ে তার তৈরি পোশাক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। জনাব আওলাদ যুক্তরাষ্ট্রে বসে তার কারখানায় নিয়োজিত জনাব সেজাদকে প্রয়োজনীয়সংখ্যক পোশাক উৎপাদনের নির্দেশ দেন। জনাব সেজাদ কারখানার কর্মীদেরকে দিয়ে পোশাক উৎপাদন করে জনাব আওলাদের কাছে পাঠান। জনাব আওলাদ তৈরি পোশাকের একের পর এক নতুন বাজারের দ্বার উন্মুক্ত করেন।
[সি. বো. ১৭]
ক. খুচরা ব্যবসায় কী? ১
খ. প্রাকৃতিক পরিবেশ বলতে কী বোঝায়? ২
গ. উদ্দীপকে জনাব আওলাদ পরিবেশের কোন উপাদান বিবেচনায় ঢাকায় পোশাক কারখানা গড়ে তোলেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. ‘উদ্দীপকে জনাব আওলাদ ও জনাব সেজাদ উভয়ের কাজকে কি উদ্যোগ’ বলা যায়? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দেখাও। ৪

৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
পাইকার, বিক্রয় প্রতিনিধি বা আমদানিকারকদের থেকে পণ্যসামগ্রী ক্রয় করে চুড়ান্ত ভোক্তাদের নিকট বিক্রয় করা হলে তাকে খুচরা ব্যবসায় বলে।

'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
কোনো দেশের জলবায়ু, ভূ-প্রকৃতি, মৃত্তিকা, নদ-নদী, আয়তন ও অবস্থানের সমন্বয়ে যে পরিবেশ গড়ে ওঠে তাকে প্রাকৃতিক পরিবেশ বলে।

প্রকৃতির পরিবেশের উপাদানের ওপর ভিত্তি করে মানুষের জীবিকার পরিবর্তন হয়। যেসব দেশে প্রাকৃতিক সম্পদের পরিমাণ যত বেশি, সেসব দেশে কৃষিনির্ভর জীবন-জীবিকা তত বেশি হয়ে থাকে। এ পরিবেশের উপাদানগুলো ব্যবসায়েও নানাভাবে প্রভাব ফেলে।

'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকে জনাব আওলাদ অর্থনৈতিক পরিবেশের কারণে ঢাকায় পোশাক কারখানা গড়ে তোলেন।

কোনো স্থানে বিদ্যমান অর্থনৈতিক পরিবেশের উপাদান সেখানকার অবস্থিত ব্যবসায়ের সাফল্য বা ব্যর্থতার সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। জনগণের আয় ও সঞ্চয়, অর্থ ও ঋণ ব্যবস্থা, বিনিয়োগ, মূলধন ও জনসম্পদ ঐ স্থানের ব্যবসায়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে।

উদ্দীপকে জনাব আওলাদ আশির দশকের শুরুতে বাংলাদেশের জনসম্পদকে কেন্দ্র করে ঢাকায় একটি পোশাক কারখানা গড়ে তোলেন। যার লক্ষ্য ছিল দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটানো। যেকোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি হলো জনসম্পদ। এ সম্পদকে বাদ দিয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই এ জনসম্পদকে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর প্রয়োজন আছে। তাই বলা যায়, জনাব আওলাদ দেশের অর্থনৈতিক পরিবেশের উপাদানকে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে ঢাকায় পোশাক কারখানা গড়ে তোলেন।

'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
কোনো নতুন চিন্তা মাথায় রেখে যখন কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেন তখন তার কার‌্যাবলিকে উদ্যোগ বলে।

উদ্যোগ ছাড়া কোনো ব্যবসায় বা শিল্প স্থাপন করা যায় না। দেশে উদ্যোক্তা সৃষ্টির হার যত বেশি হবে শিল্পায়নের পরিমাণও তত বেশি হবে।

উদ্দীপকে জনাব আওলাদ দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটানোর লক্ষ্যে ঢাকায় একটি পোশাক কারখানা স্থাপন করেন। আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। সেখানে গিয়ে তিনি বাড়ি বাড়ি পোশাক বিক্রয় শুরু করেন। তাই তার এ কাজকে উদ্যোগ বলা যায়। অন্যদিকে জনাব সেজাদ জনাব আওলাদের দেওয়া নির্দেশ অনুযায়ী পোশাক উৎপাদন করেন। অর্থাৎ তিনি জনাব আওলাদের প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তাই তার এ কাজকে উদ্যোগ বলা যায় না।

নতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে উদ্যোক্তগণ দেশের শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করেন। জনাব আওলাদও এমন একজন ব্যক্তি যিনি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে পোশাক কারখানা স্থাপন করেন। যেখানে দেশের অনেক লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আর জনাব সেজাদের মতো মানুষ জনাব আওলাদের প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তাই উভয়ের কাজের মধ্যে জনাব আওলাদের কাজকে উদ্যোগ বলা গেলেও জনাব সেজাদের কাজকে উদ্যোগ বলা যায় না।

সৃজনশীল প্রশ্ন-০৭
জনাব ইকবাল ঢাকায় থাকেন। তিনি সন্দ্বীপেও একটি বাড়ি কিনেছেন। সেখানে গিয়ে তিনি সমুদ্রে মাছ ধরেন। উক্ত মাছ বিশেষ প্রক্রিয়ায় শুকিয়ে চাহিদা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করেন। বাজারে তার পণ্যের ব্যাপক সুনাম আছে। তবে পণ্যগুলোর ওজন ও আকার সুনির্দিষ্ট না থাকায় ক্রেতারা মাঝে মধ্যে তার পণ্য ক্রয়ে সমস্যার মুখোমুখি হন। [য. বো. ১৭]
ক. সামাজিক ব্যবসায় কী? ১
খ. শিল্পকে কেন্দ্রীভূত কাজ বলা হয় কেন? ২
গ. উদ্দীপকে পরিবেশের কোন উপাদান বিবেচনায় জনাব ইকবাল সন্দ্বীপে ব্যবসায় শুরু করেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. ক্রেতাদের সমস্যা সমাধানে জনাব ইকবালের করণীয় সম্পর্কে তোমার মতামত দাও। ৪

৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
যে ব্যবসায়ে মূলধন বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ প্রাপ্তির কোনো প্রত্যাশা থাকে না বরং সমাজের কল্যাণ ও দারিদ্র্য দূরীকরণের উদ্দেশ্যে গঠন করা হয় তাকে সামাজিক ব্যবসায় বলে।

'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
প্রাকৃতিক সম্পদ ও কাঁচামালকে ভোগ বা ব্যবহারযোগ্য পণ্যে রূপান্তর করার প্রক্রিয়াকে শিল্প বলে।

সাধারণত ব্যবসায়ের বিভিন্ন কাজ ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় সংঘটিত হয়। কিন্তু শিল্পের কাজটি ব্যতিক্রম, যা এক জায়গায় করতে হয়। অর্থাৎ কারখানাতে প্রক্রিয়াজাতকরণের সব কাজ সম্পাদিত হয়। তাই শিল্পকে কেন্দ্রীভূত কাজ বলা হয়।

'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকে জনাব ইকবাল প্রাকৃতিক পরিবেশের সাগর ও নদ-নদী উপাদান বিবেচনা করে সন্দ্বীপে ব্যবসায় শুরু করেন।

কোনো দেশের জলবায়ু, ভূ-প্রকৃতি, মৃত্তিকা, নদ-নদী, সাগর, আয়তন ও অবস্থানের সমন্বয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশ গড়ে ওঠে। এসব উপাদানের পার্থক্যজনিত কারণে বিভিন্ন দেশের ব্যবসায় কার্যকলাপও ভিন্নতর হয়ে থাকে।

ঢাকায় বসবাসকারী জনাব ইকবাল সন্দ্বীপে বাড়ি কিনেন। সন্দ্বীপে গিয়ে তিনি সমুদ্রে মাছ ধরেন। উক্ত মাছ বিশেষ প্রক্রিয়ায় শুকিয়ে চাহিদা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করেন। সন্দ্বীপে সমুদ্র থাকায় সেখানে সহজেই প্রচুর সামুদ্রিক মাছ পাওয়া যায়। এ বিষয়টি বিবেচনা করেই তিনি সন্দ্বীপে মাছের ব্যবসায় শুরু করেন। এর ফলে অল্প সময়েই তিনি বাজারে সুনাম অর্জন এবং প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। সুতরাং বলা যায়, প্রাকৃতিক পরিবেশের সাগর ও নদ-নদী উপাদানটির অনুকূল অবস্থা বিবেচনায় জনাব ইকবাল সন্দ্বীপে ব্যবসায় শুরু করেন।

'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
ক্রেতাদের সমস্যা সমাধানে জনাব ইকবাল প্রমিতকরণের মাধ্যমে পণ্যের মান বজায় রাখার চেষ্টা করতে পারেন।

পণ্যের ওজন, আকার, রং ও গুণাগুণ বিবেচনায় নিয়ে পণ্য মানের সীমা নির্ধারণ করার কাজই হলো প্রমিতকরণ। এর মাধ্যমে ক্রেতাদের আস্থা অর্জন করা যায়।

উদ্দীপকের জনাব ইকবাল সন্দ্বীপে মাছের ব্যবসায় করে সুনাম অর্জন করেছেন। কিন্তু তার পণ্যগুলোর ওজন ও আকার সুনির্দিষ্ট নয়। ফলে ক্রেতারা মাঝে-মধ্যে তার পণ্য ক্রয়ে সমস্যার মুখোমুখি হন।

প্রমিতকরণের অভাবে এ সমস্যা হচ্ছে। জনাব ইকবাল প্রমিতকরণের মাধ্যমে বিভিন্ন ওজনের ও বিভিন্ন আকারের মাছ আলাদা করে সাজাতে পারেন। এর মাধ্যমে ক্রেতারা তাদের চাহিদা অনুযায়ী মাছ ক্রয় করতে পারবেন। এতে বিক্রেতা হিসেবেও ইকবালের মাছ সরবরাহ কাজ দ্রুততার সাথে সম্পন্ন হবে। সুতরাং প্রমিতকরণ কাজটি উক্ত সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।

সৃজনশীল প্রশ্ন-০৮
জনাব রিফাত গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানা স্থাপন করেন। এখানে জমির মূল্য অপেক্ষাকৃত কম এবং পর্যাপ্ত দক্ষ শ্রমিক পাওয়া যায়। এতে বিনিয়োগ কম করেও মুনাফার পরিমাণ বেশি হয়। তিনি দেখলেন তার কারখানার পার্শ্ববর্তী ‘রংধনু’ নামক একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের কাজের সময় ও কর্মপরিবেশ নিয়ে শ্রম অসন্তোষ চলছে। মালিকপক্ষ ‘রংধনু’ নামক পোশাক কারখানাটি তালাবদ্ধ ঘোষণা দেয়। [দি. বো. ১৬]
ক. পরিবেশ কী? ১
খ. সামাজিক পরিবেশ বলতে কী বোঝায়? ২
গ. পরিবেশের কোন উপাদান বিবেচনা করে জনাব রিফাত পোশাক কারখানা স্থাপন করেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. ‘রংধনু’ পোশাক শিল্পে শ্রম অসন্তোষ ও তালাবদ্ধকরণ ব্যবসায় পরিবেশের যে উপাদানের অন্তর্গত উদ্দীপকের আলোকে তা বিশ্লেষণ করো। ৪

৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
মানুষ যে পারিপার্শ্বিকতার মধ্যে বসবাস ও জীবনধারণ করে এবং যা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জীবনধারাকে প্রভাবিত করে তাকেই পরিবেশ বলে।

'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
সমাজে বসবাসরত মানুষের সংখ্যা, শিক্ষা ব্যবস্থা, বেকারত্ব, রীতি-নীতি ইত্যাদি, যা জীবনধারণে প্রভাব বিস্তার করে তাকে সামাজিক পরিবেশ বলে।

সামাজিক পরিবেশের উপাদানগুলো মূলত মানুষের সৃষ্টি এবং মানুষের কার্যক্রম দ্বারা প্রভাবিত হয়। এটি ব্যবসায়ের আয়, লাভ-লোকসানকে নানাভাবে প্রভাবিত করে।

'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
জনাব রিফাত পরিবেশের অর্থনৈতিক উপাদান বিবেচনা করে পোশাক কারখানা স্থাপন করেন।

অর্থনৈতিক পরিবেশ কোনো দেশের জনগণের আয় ও সঞ্চয়, অর্থ ও ঋণ ব্যবস্থা, দক্ষ উদ্যোক্তা ও মানবসম্পদ ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে গঠিত হয়। এ পরিবেশ উন্নত হলে ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে সফলতা লাভ করা সহজ হয়।

জনাব রিফাত গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানা স্থাপন করলেন। কেননা গাজীপুরে জমির মূল্য অপেক্ষাকৃত কম এবং পর্যাপ্ত দক্ষ শ্রমিক পাওয়া যায়। জমির মূল্য কম হওয়ায় তার স্থায়ী ব্যয়ও কম। আর সস্তায় দক্ষ শ্রমিক পাওয়া গেলে দক্ষতার সাথে স্বল্প ব্যয়ে কাজ শেষ করা সম্ভব হবে। এর ফলে তিনি কম বিনিয়োগ করেও বেশি মুনাফা অর্জন করতে পারবেন। এ থেকে বোঝা যায়, তিনি অর্থনৈতিক পরিবেশকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।

'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
রংধনু পোশাক শিল্পে শ্রম অসন্তোষ ও তালাবদ্ধকরণ ব্যবসায় পরিবেশের রাজনৈতিক উপাদানের অন্তর্গত।

রাজনৈতিক পরিবেশ কোনো দেশের সার্বভৌমত্ব, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, ও শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক প্রভৃতি উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত হয়। অনুন্নত ও অসহনশীল রাজনৈতিক পরিবেশ দেশের ব্যবসায় পরিবেশকে মারাত্মাক বাধাগ্রস্ত করে।

জনাব রিফাতের কারখানার পাশে ‘রংধুন’ নামক একটি পোশাক কারখানা আছে। এ কারখানায় শ্রমিকদের কাজের সময় ও কর্মপরিবেশ উন্নত নয়। তাই শ্রমিকরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। মালিকপক্ষ তাদের কারখানাটি তালাবদ্ধ করার ঘোষণা দেয়। এতে শ্রমিক-মালিক সম্পর্কের অবনতি হয়। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক পরিবেশের প্রভাব লক্ষ করা যায়।

উক্ত প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা অসন্তুষ্ট হওয়ায় তাদের দাবি আদায়ের জন্য তারা মালিকদের বিরুদ্ধে ঘর্মঘটের ঘোষণা দেয়। মালিকপক্ষ তাদের দাবি পূরণ না করে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেয়। এর ফলে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হয়। এর ফলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। এর ফলস্বরূপ ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে।

সৃজনশীল প্রশ্ন-০৯
মাহমুদ কাপড়ের ব্যবসায় করেন। ঢাকার ব্যস্ততম এলাকা গুলিস্তানে তার দোকান। ঈদ সামনে রেখে তিনি তার দোকানের জন্য নরসিংদী থেকে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার কাপড় ক্রয় করে আনার সময় পথে কতিপয় দুর্বৃত্ত তার কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। তিনি চাঁদা দিতে অপারগ হলে দুর্বৃত্তরা তার গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে তার ব্যাপক ক্ষতি হয়। [য. বো. ১৬]
ক. ব্যবসায় পরিবেশ কী? ১
খ. ব্যবসায়ের ওপর প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রভাব কীরূপ? ২
গ. মাহমুদ ব্যবসায়ে কোন পরিবেশের কথা চিন্তা করে অনেক টাকার কাপড় ক্রয় করেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. কোন পরিবেশের অভাবে তিনি ব্যাপক ব্যবসায়িক ক্ষতির সম্মুখীন হন? বিশ্লেষণ করো। ৪

৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের গঠন, পরিচালন ও নিয়ন্ত্রণে যেসব পারিপার্শ্বিক উপাদান বা শক্তির দ্বারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রভাবিত হয় সেগুলোর সমষ্টিকে ব্যবসায় পরিবেশ বলে।

'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
কোনো দেশের জলবায়ু, ভূ-প্রকৃতি, মৃত্তিকা, নদ-নদী, আয়তন, অবস্থান ইত্যাদি প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট উপাদানের সমন্বয়ে যে পরিবেশ গড়ে ওঠে তাকে প্রাকৃতিক পরিবেশ বলে।

প্রাকৃতিক উপাদানগুলো ব্যবসায়ে নানাভাবে প্রভাব ফেলে। এগুলোর ওপর ভিত্তি করে মানুষের জীবিকার পরিবর্তন হয়। যেসব দেশে প্রাকৃতিক সম্পদের পরিমাণ যত বেশি সেসব দেশে কৃষি নির্ভর জীবন-জীবিকা তত বেশি হয়ে থাকে।

'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
মাহমুদ ব্যবসায়ে সামাজিক পরিবেশের কথা চিন্তা করে অনেক টাকার কাপড় ক্রয় করেন।

সমাজে বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের মানুষ বাস করে। এসব মানুষের রীতি-নীতি, ধর্মীয় অনুষ্ঠান, সংস্কৃতি, মূল্যবোধ, শিক্ষা সবকিছুর সমষ্টিই হলো সামাজিক পরিবেশ।

মাহমুদ কাপড়ের ব্যবসায় করেন। ঢাকার গুলিস্তানে তার দোকান আছে। ঈদ উপলক্ষে তিনি ৫ লক্ষ টাকার কাপড় ক্রয় করেন। ঈদ মুসলিম ধর্মের অনুসারীদের জন্য একটি পবিত্র এবং আনন্দের অনুষ্ঠান। ঈদ উপলক্ষে মুসলমানরা নতুন কাপড়-চোপড় ক্রয় করে। এতে মাহমুদের দোকানের বিক্রিও ঈদ উপলক্ষে বাড়ে। এ ঈদ সামাজিক পরিবেশের একটি উপাদান। সুতরাং সামাজিক পরিবেশ বিবেচনা করেই মাহমুদ বেশি পরিমাণ কাপড় ক্রয় করেছেন।

'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশের অভাবে মাহমুদ ব্যবসায়ে ক্ষতির সম্মুখীন হন।

সরকার, রাজনৈতিক দল ও প্রতিষ্ঠান, স্থিতিশীল আইন-শৃঙ্খলা ইত্যাদি উপাদানের সমন্বয়ই হলো রাজনৈতিক পরিবেশ। রাজনৈতিক পরিবেশ স্থিতিশীল হলে দেশের ব্যবসায় সম্প্রসারণ ঘটে।

মাহমুদ একজন ব্যবসায়ী। তিনি ঈদ উপলক্ষে ৫ লক্ষ টাকার কাপড় ক্রয় করেন। কাপড় ক্রয় করে নরসিংদী থেকে ঢাকায় আসার পথে কতিপয় দুর্বৃত্ত তার গতিরোধ করে। দুর্বৃত্তরা তার কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে রাজি না হলে দুর্বৃত্তরা তার গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে তার ক্রয়কৃত সমস্ত কাপড় পুড়ে যায়।

আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রতিকূল থাকার কারণে মাহমুদের কাছে দুর্বৃত্তরা চাঁদা দাবি করতে পেরেছে। স্থিতিশীল আইন-শৃঙ্খলা রাজনৈতিক পরিবেশের উপাদান। আইন-শৃঙ্খলা স্থিতিশীল না থাকায় মাহমুদ দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হন। সুতরাং রাজনৈতিক পরিবেশের অভাবে তিনি ক্ষতির সম্মুখীন হন।

ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ১ম পত্র অধ্যায়-২ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির গাইড

সৃজনশীল প্রশ্ন-১০
মিসেস পাখি চাঁপাইনবাবগঞ্জের একজন বাসিন্দা। সেখানকার আমের উৎপাদন সচরাচর বেশি হয়। তাই তিনি নতুন ধরনের ব্যবসায় শুরু করলেন, যেখানে তিনি বিভিন্ন ধরনের আচার ও আমের দ্বারা তৈরি বিভিন্ন প্রকার মিষ্টি রাখেন। অল্পদিনের মধ্যে তার ব্যবসায়টি স্থানীয়ভাবে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে। তাই তিনি দেশব্যাপী তার পণ্যগুলোর প্রচার করতে চান। তিনি বিভিন্ন পাইকারি ব্যবসায়ী ও অন্য প্রতিষ্ঠানের পারস্পরিক সহযোগিতা নেওয়ার কথা ভাবছেন। পাশাপাশি বর্তমানে প্রচলিত সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রচারের কথাও ভাবছেন। তবে পদ্ধতিগুলোর দীর্ঘসূত্রতা নিয়ে তিনি চিন্তিত। [ব. বো. ১৬]
ক. ব্যবসায় পরিবেশ কী? ১
খ. ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ পরিবেশ বিবেচনার কারণ ব্যাখ্যা করো। ২
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত মিসেস পাখি ব্যবসায় পরিবেশের কোন উপাদান বিবেচনায় এনে ব্যবসায় শুরু করেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. মিসেস পাখির ব্যবসায়টির দ্রুত প্রচারের জন্য বাহ্যিক পরিবেশের কোন উপাদানকে অধিক বিবেচনা করা উচিত? মতামত দাও। ৪

১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের গঠন, পরিচালন ও নিয়ন্ত্রণে যেসব পারিপার্শ্বিক উপাদান বা শক্তির দ্বারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রভাবিত হয় সেগুলোর সমষ্টিকে ব্যবসায় পরিবেশ বলে।

'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে বিরাজমান যেসব উপাদান বা শক্তি ব্যবসায় কার্যক্রম পরিচালনায় ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রত্যক্ষ প্রভাব বিস্তার করে তাকে ব্যবসায়ের অভ্যন্তরীণ পরিবেশ বলে।

এরূপ পরিবেশের উপাদানের মধ্যে পরিচালনা পর্ষদ, ব্যবস্থাপক, শ্রমিক-কর্মী ব্যবসায়ের আর্থিক ও কারিগরি সমর্থ, সুনাম, নিজস্ব সংস্কৃতি ইত্যাদি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। এরূপ পরিবেশ বিবেচনায় না নিয়ে ব্যবসায় পরিচালনা করা সম্ভব নয়। তাই ব্যবসায়ে এরূপ পরিবেশ বিবেচনার প্রয়োজন পড়ে।

'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
মিসেস পাখি ব্যবসায় পরিবেশের প্রাকৃতিক উপাদান বিবেচনায় এনে ব্যবসায় শুরু করেন।

প্রকৃতি প্রদত্ত উপাদান যেগুলো মানুষ সৃষ্টি করতে পারে না সেগুলোর সমষ্টিই প্রাকৃতিক পরিবেশ। প্রাকৃতিক উপাদানগুলোর মধ্যে মাটি, জলবায়ু, নদ-নদী, পাহাড়-পর্বত ইত্যাদি অন্যতম।

মিসেস পাখি চাঁপাইনবাবগঞ্জে আচার ও আমের দ্বারা তৈরি বিভিন্ন মিষ্টির ব্যবসায় শুরু করেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রচুর আম উৎপাদিত হয়। এখানকার আবহাওয়া এবং মাটি আম চাষের জন্য অনুকূল। প্রচুর আম উৎপাদিত হওয়ায় মিসেস পাখি এ অঞ্চলের আম থেকে বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনের ব্যবসায় শুরু করেছেন। তার এ ব্যবসায়ের মৌলিক উপাদান হলো আম, যেটি প্রকৃতির দান। সুতরাং মিস পাখির ব্যবসায় শুরু করার প্রধান কারণ পরিবেশের প্রাকৃতিক উপাদান।

'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
মিসেস পাখির ব্যবসায়টির দ্রুত প্রচারের জন্য বাহ্যিক পরিবেশের প্রযুক্তিগত উপাদানকে অধিক বিবেচনা করা উচিত।

প্রযুক্তিগত পরিবেশ বলতে বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষা, গবেষণা, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, প্রযুক্তি আমদানির সুযোগ ইত্যাদি মিলিয়ে সৃষ্ট পরিবেশকে বোঝায়। এ পরিবেশের প্রভাবে নতুন নতুন ব্যবসায় ও পণ্য উদ্ভাবন সম্ভব হয়।

মিসেস পাখি আচার ও আমের দ্বারা তৈরি বিভিন্ন প্রকার মিষ্টির ব্যবসায়ের সাথে জড়িত। অল্প দিনের মধ্যেই তার ব্যবসায়টি স্থানীয়ভাবে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে। তাই মিসেস পাখি দেশব্যাপী তার পণ্যগুলোর প্রচার করতে চান। তিনি পণ্যের প্রচারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের কথা ভাবছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বলতে ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার ইত্যাদিকে বোঝায়, যেগুলো প্রযুক্তিগত পরিবেশের উপাদান। এসব যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে মিসেস পাখি অল্প সময়ে কম খরচে দেশব্যাপী পণ্যের প্রচার করতে পারবেন। দেশের বাইরেও সামাজিক মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচার করা যায়। অনলাইন এবং সামাজিক মাধ্যমগুলো প্রযুক্তিগত পরিবেশের উপাদান। মিসেস পাখির পণ্যের প্রচারে এ প্রযুক্তিগত পরিবেশ বিবেচনা করা উচিত বলে আমি মনে করি।

1 comment: