G

আহ্বান -বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়

[লেখক-পরিচিতিঃ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ১৮৯৪ সালের ১২ই সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার মুরারিপুর গ্রামে মামাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতৃনিবাস একই জেলার ব্যারাকপুর গ্রামে। বিভূতিভূষণের বাল্য ও কৈশোরকাল কাটে অত্যন্ত দারিদ্র্যে। কিন্তু তিনি ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র। ১৯১৪ সালে ম্যাট্রিক ও ১৯১৬ সালে আইএ – উভয় পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে এবং ১৯১৮ সালে ডিস্টিংশনসহ বিএ পাস করেন। তিনি দীর্ঘদিন স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন এবং এর পাশাপাশি শহর থেকে দূরে অবস্থান করে নিরবচ্ছিন্ন সাহিত্যসাধনা করেছেন। বাংলার প্রকৃতি ও মানুষের জীবনকে তিনি তার অসাধারণ শিল্পসুষমাময় ভাষায় সাহজিক সারল্যে প্রকাশ করেছেন। মানুষকে তিনি দেখেছেন গভীর মমত্ববোধ ও নিবিড় ভালোবাসা দিয়ে। তাঁর গদ্য কাব্যময় ও চিত্রাত্মক বর্ণনায় সমৃদ্ধ। বিভূতিভূষণের কালজয়ী যুগল উপন্যাস 'পথের পাঁচালী’, ‘অপরাজিতা’। তার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- উপন্যাস : ‘দৃষ্টি প্রদীপ’, ‘আরণ্যক’, ‘দেবযান’ ও ‘ইছামতি’; গল্পগ্রন্থ ; ‘মেঘমল্লার', মৌরিফুল, ‘যাত্রাবদল’ ও ‘কিন্নর দল। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯৫০ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর ঘাটশিলায় মৃত্যুবরণ করেন।]

গল্পঃ
আহ্বান

দেশের ঘরবাড়ি নেই অনেকদিন থেকেই। পৈতৃক বাড়ি যা ছিল ভেঙেচুরে ভিটিতে জঙ্গল গজিয়েছে। এ অবস্থায় একদিন গিয়েছি দেশে কিসের একটা ছুটিতে। গ্রামের চক্কোত্তি মশায় আমার বাবার পুরাতন বন্ধু। আমাকে দেখে খুব খুশি হলেন। বললেন-কতকাল পরে বাবা মনে পড়ল দেশের কথা? প্রণাম করে পায়ের ধুলা নিলাম।

বললেন-এসো, এসো, বেঁচে থাকো, দীর্ঘজীবী হও। বাড়িঘর করবে না? –আজ্ঞে সামান্য মাইনে পাই-তাতে কী? গ্রামের ছেলে গ্রামে বাস করবে, এতে আর সামান্য মাইনে বেশি মাইনে কী? আমি খড় বাঁশ দিচ্ছি, চালাঘর তুলে ফেল, মাঝে মাঝে যাতায়াত করো। আরও অনেকে এসে ধরল, অন্তত খড়ের ঘর ওঠাতে হবে।

অনেক দিন পরে গ্রামে এসে লাগছে ভালোই। বড় আমবাগানের মধ্য দিয়ে বাজারের দিকে যাচ্ছি, আমগাছের ছায়ায় একটি বৃদ্ধার চেহারা, ডান হাতে নড়ি ঠকঠক করতে করতে বোধহয় বাজারের দিকে চলেছে। বুড়িকে দেখেই আমি দাঁড়িয়ে গেলাম। জিজ্ঞাসা করলাম, কোথায় যাবে? —বাজারে বাবা।

বুড়ি আমায় ভালো না দেখতে পেয়ে কিংবা না চিনতে পেরে ডান হাত উঁচিয়ে তালু আড়ভাবে চোখের ওপর ধরল। বলল, কে বাবা তুমি? চেনলাম না তো? -চিনবে না। আমি অনেক দিন গাঁয়ে আসি নি। -তা হবে বাবা। আমি আগে তো এপাড়া-ওপাড়া যাতাম আসতাম না। তিনি থাকতি অভাব ছিল না কোনো জিনিসের। গোলাপোরা ধান, গোয়ালপোরা গরু।

-তোমাকে তো চিনতে পারলাম না, বুড়ি? —আমার তো তেনার নাম করতে নেই বাবা। করাতের কাজ করতেন। বললাম, তোমার ছেলে আছে? -কেউ নেই বাবা, কেউ নেই। এক নাত-জামাই আছে তো সে মোরে ভাত দেয় না। আমার বড় কষ্ট। ভাত জোটে না সবদিন। বুড়িকে পকেট থেকে কিছু পয়সা বার করে দিলাম। ব্যাপারটা এখানেই চুকে যাবে ভেবেছিলাম।

কিন্তু তা চুকল না। পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠেছি, এমন সময় সেই বুড়ি লাঠি ঠকঠক করতে করতে হাজির উঠোনে। থাকি এক জ্ঞাতি খুড়োর বাড়ি। তিনি বললেন, ও হলো জমির করাতির স্ত্রী। অনেকদিন আগে মরে গিয়েছে জমির। বডি উঠোনে দাড়িয়ে ডাকল ও বাবা। বোধহয় চোখে একটু কম দেখে। বললাম, এই যে আমি এখানে।

আমার খুড়োমশায় বুড়িকে বুঝিয়ে দিলেন আমি কে। সে উঠোনের কাঁঠালতলায় বসে আপন মনে খুব খানিকটা বকে গেল। পরদিন কলকাতা চলে গেলাম, ছুটি ফুরিয়ে গেল। কয়েক মাস পরে জ্যৈষ্ঠ মাসে গরমের ছুটিতে আমার নতুন তৈরি খড়ের ঘরখানাতে এসে উঠলাম। কলকাতাতে কর্মব্যস্ত এই ক’মাসের মধ্যে বুড়িকে একবারও মনে পড়েনি বা এখানে এসেও মনে হঠাৎ হয়ত হতো না, যদি সে তার পরের দিনই সকালে আমার ঘরের নিচু দাওয়ায় এসে না বসে পড়ত। বললাম, কী বুড়ি, ভালো আছ? ময়লা ছেড়া কাপড়ের প্রান্ত থেকে গোটাকতক আম খুলে আমার সামনে মাটিতে রেখে বলল, আমার কি মরণ আছে রে বাবা।
আহ্বান - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
লেখকঃ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়

জিজ্ঞাসা করলাম, ও আম কীসের। দন্তহীন মুখে একটু হাসবার চেষ্টা করে বললে, অ গোপাল আমার, তোর জন্যি নিয়ে আলাম। গাছের আম বেশ কড়া মিষ্টি, খেয়ে দেখ এখন। বড়ো ভালো লাগল। গ্রামে অনেকদিন থেকে আপনার জন কেউ নেই। একটা ঘনিষ্ঠ আদরের সম্বোধন করার লোকের দেখা পাই নি বাল্যকালে মা-পিসিমা মারা যাওয়ার পর থেকে। বুড়ি বললে, খাও কোথায় হ্যাঁ বাবা? -খুড়ো মশায়ের বাড়ি। —বেশ যত্ন করে তো ওনারা? —তা করে। -দুধ পাচ্চ ভালো? ঘুটি গোয়ালিনী দেয়, মন্দ না।

–ও বাবা, ওর দুধ! অর্ধেক জল— দুধ খেতি পাচ্চ না ভালো সে বুঝেচি। পরদিন সকাল হয়েছে সবে, বুড়ি দেখি উঠোনে এসে ডাকছে, অ গোপাল। বিছানা ছেড়ে উঠে বললাম, আরে এত সকালে কী মনে করে। হাতে কী? বৃদ্ধা হাতের নড়ি আমার দাওয়ার গায়ে ঠেস দিয়ে রেখে বলল, এক ঘটি দুধ আনলাম তোর জন্যি। -সে কী! দুধ পেলে কোথায় এত সকালে?

আহ্বান -বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় Ahoban By Bibhutibhushon Bondopaddhoy
আহবান গল্পটি শুনতে ভিডিওটি দেখুনঃ

আমায় মা বলে ডাকে ওই হাজরা ব্যাটার বউ। তারও কেউ নেই। মোর চালাঘরের পাশে ওর চালাঘর। ওরে কাল রাত্তিরে বলে রেখে দিয়েছিলাম, বলি বউ আমার, গোপাল দুধ খেতি পায় না। তাই আজ ভোরে উঠে দেখি আমারে ডাকচে, মা ওঠো, তোমার গোপালের জন্যি দুধ নিয়ে যাও। –আচ্ছা কেন বলতো তোমার এসব! এ রকম আর কখনও এনো না।

কত পয়সা দাম দিতে হবে বল। কতটা দুধ? বুড়ি একটু ঘাবড়ে গেল। ভয়ে ভয়ে বলে, কেন বাবা, পয়সা কেন? –পয়সা না তো তুমি দুধ পাবে কোথায়? -ওই যে, বললাম বাবা, আমার মেয়ের বাড়ি থেকে। —তা হোক, তুমি পয়সা নিয়ে যাও। সেও তো গরিব লোক।

বুড়ি পয়সা নিয়ে চলে গেল বটে কিন্তু সে যে দমে গিয়েছে তার কথাবার্তার ধরনে বেশ বুঝতে পারলাম। মনে একটু কষ্ট হলো বুড়ি চলে গেলে। পয়সা দিতে যাওয়া ঠিক হয়েছে কি? বুড়ির কী রকম হয়ত মন পড়ে গিয়েছে। আমার ওপর, স্নেহের দান— এমন করা ঠিক হয়নি।

বুড়ি কিন্তু এ অবহেলা গায়ে মাখল না আদৌ। প্রতিদিন সকাল হতে না হতেই সে এসে জুটবে। -অ গোপাল, এই দুটি কচি শসার জালি মোর গাছের, এই ন্যাও। নুন দিয়ে খাও দিকিন মোর সামনে? -বুড়ি তোমার চলে কীসে? –ওই যারে মেয়ে বলি, ও বড় ভালো।

লোকের ধান ভানে, তাই চাল পায়, আমায় দুটো না দিয়ে খায় না। —একা থাক? —তা একদিন মোর ঘরখানা না হয় দেখতি গেলে, অ মোর গোপাল! আমি নতুন খাজুর পাতার চেটাই বুনে রেখে দিয়েছিলাম তোমারে বসতি দেবার জন্যি। সেবার বুড়ির বাড়িতে আমার যাওয়া ঘটে উঠল না। নানাদিকে ব্যস্ত থাকি।

অনেক দিন পরে গ্রামে এসেছি তো! যে কদিন গ্রামে থাকি বুড়ি রোজ সকালে আসতে ভুলবে না। কিছু না কিছু আনবেই। কখনো পাকা আম, কখনো পাতি লেবু, কখনো বা একছড়া কাঁচকলা কি এক-ফালি কুমড়ো। পুনরায় গ্রামে এলাম পাঁচ-ছয় মাস পরে, আশ্বিন মাসের শেষে।

কয়েকদিন পরে ঘরে বসে আছি, বাইরের উঠোনে দাড়িয়ে কে যেন জিজ্ঞাসা করলে; বাবু ঘরে আছেন গা? বাইরে এসে দেখি গত জ্যৈষ্ঠ মাসে যাকে বুড়ির সঙ্গে দেখেছিলাম সেই মধ্যবয়সী স্ত্রীলোকটি। আমায় দেখে সলজ্জভাবে মাথার কাপড়টা আর একটু টেনে দেবার চেষ্টা করে সে বললে, বাবু কবে এসেছেন? —দিন পাঁচ-ছয় হলো। কেন? –আমার সেই মা পেটিয়ে দিলে, বলে দেখে এসো গিয়ে।

-ওই সেই বুড়ি— এখানে যিনি আসত। তেনার বড়উ অসুখ। এবার বোধহয় বাঁচবে না। গোপাল কবে আসবে, গোপাল কবে আসবে— অস্থির, আমারে রোজ শুধায়। একবার দেখে আসুন গিয়ে, বড় খুশি হবে তাহলি। বিকেলের দিকে বেড়াতে যাবার পথে দেখতে গেলাম বুড়িকে। বুড়ি শুয়ে আছে একটা মাদুরের ওপর, মাথায় মলিন বালিশ।

আমি গিয়ে কাছে দাঁড়াতেই বুড়ি চোখ মেলে আমার দিকে চাইল। পরে আমাকে চিনে ধড়মড় করে বিছানা ছেড়ে উঠবার চেষ্টা করতেই আমি বললাম, উঠো না, ও কী? বুড়ি আহ্লাদে আটখানা হয়ে বলল, ভালো আছ অ মোর গোপাল? বসতে দে গোপালকে। বসতে দে। -বসবার দরকার নেই, থাক। -গোপালেরে ওই খাজুরের চটখানা পেতে দে।

পরে ঠিক যেন আপনার মা কি পিসিমার মতো অনুযোগের সুরে বলতে লাগল, তোর জন্যি খাজুরের চাটাইখানা কদ্দিন আগে বুনে রেখেলাম। ওখানা পুরনো হয়ে ভেঙ্গে যাচ্ছে। তুই একদিনও এলি না গোপাল। অসুখ হয়েছে তাও দেখতে এলি না।

বুড়ির দুচোখ বেয়ে জল বেয়ে পড়ছে গড়িয়ে। আমায় বলল, গোপাল, যদি মরি, আমার কাফনের কাপড় তুই কিনে দিস। আসবার সময় বুড়ির পাতানো মেয়েটির হাতে কিছু দিয়ে এলাম পথ্য ও ফলের জন্য। হয়ত আর বেশি দিন বাঁচবে না, এই অসুখ থেকে উঠবে না। বুড়ি কিন্তু সে যাত্রা সেরে উঠল। বছরখানেক আর গ্রামে যাইনি।

বোধহয় দেড় বছরও হতে পারে। একবার শরতের ছুটির পর তখনও দুইদিন ছুটি হাতে আছে। গ্রামেই গেলাম এই দুইদিন কাটাতে। গ্রামে ঢুকতেই প্রথমে দেখা পরশু সর্দারের বউ দিগম্বরীর সঙ্গে। দিগম্বরী অবাক হয়ে বলে, ওমা আজই তুমি এলে? সে বুড়ি যে কাল রাতে মারা গিয়েছে। তোমার নাম করলো বড়ড়। ওর সেই পাতানো মেয়ে আজ সকালে বলছেল। আমি এসেছি শুনে বুড়ির নাতজামাই দেখা করতে এল।

আমার মনে পড়ল বুড়ি বলেছিল সেই একদিন আমি মরে গেলে তুই কাফনের কাপড় কিনে দিস বাবা। ওর হোতুর আত্মা বহু দূর থেকে আমায় আহ্বান করে এনেছে। আমার মন হয়ত ওর ডাক এবার আর তাচ্ছিল্য করতে পারেনি। কাপড় কেনবার টাকা দিলাম। নাতজামাই বলে গেল, মাটি দেওয়ার সময় একবার যাবেন বাবু। বেলা বারোটা আন্দাজ যাবেন।

শরতের কটুতিক্ত গন্ধ ওঠা বনঝোপ ও মাকাল-লতা দোলানো একটা প্রাচীন তিত্তিাজ গাছের তলায় বৃদ্ধাকে কবর দেওয়া হচ্ছে। আমি গিয়ে বসলাম। আবদুল, শুকুর মিয়া, নসর, আমাদের সঙ্গে পড়ত আবেদালি, তার ছেলে গনি। এরা সকলে গাছের ছায়ায় বসে। প্রবীণ শুকুর মিয়া আমায় দেখে বলল, এই যে বাবা, এসো।

বুড়ির মাটি দেওয়ার দিন তুমি কনে থেকে এলে, তুমি তো জানতে না? তোমায় যে বড় ভালোবাসত বুড়ি। দুজন জোয়ান ছেলে কবর খুঁড়ছে। কবর দেওয়ার পর সকলে এক এক কোদাল মাটি দিল কবরের উপর। শুকুর মিয়া বলল, দ্যাও বাবা তুমিও দ্যাও। দিলাম এক কোদাল মাটি। সঙ্গে সঙ্গে মনে হলো, ও বেঁচে থাকলে বলে উঠত,- অ মোর গোপাল।
[সংক্ষেপিত]

শব্দার্থ ও টীকাঃ
চক্কোত্তী - ‘চক্রবর্তী’ উপাধির সংক্ষিপ্ত রূপ। পূজারী ব্রাহ্মণের উপাধিবিশেষ।
নড়ি - লাঠি।
অন্ধের নড়ি - অসহায়ের একমাত্র অবলম্বন।
গোলাপোরা - গোলাভরা।
গেয়ালপোরা - গোয়ালভরা।
করাতের কাজ - কাঠ চেরাই করার পেশা।
করাতি - করাত দিয়ে কাঠ কেটে জীবিকা নির্বাহ করে যে।
দাওয়া - রোয়াক। বারান্দা।

পাঠ-পরিচিতিঃ
“আহ্বান” গল্পটি বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচনাবলি থেকে সংকলিত হয়েছে। এটি একটি উদার মানবিক সম্পর্কের গল্প। মানুষের স্নেহ-মমতা-প্রীতির যে বাঁধন তা ধনসম্পদে নয়, হৃদয়ের নিবিড় আন্তরিকতার স্পর্শেই গড়ে ওঠে। ধনী-দরিদ্রের শ্রেণিবিভাগ ও বৈষম্য, বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মধ্যে যে দূরত্ব সংস্কার ও গোঁড়ামির ফলে গড়ে ওঠে তাও ঘুচে যেতে পারে- নিবিড় স্নেহ, উদার হৃদয়ের আন্তরিকতা ও মানবীয় দৃষ্টির ফলে। দারিদ্র্যপীড়িত গ্রামের মানুষের সহজ-সরল জীবনধারার প্রতিফলনও এই গল্পের অন্যতম উপজীব্য। এ গল্পে লেখক দুটি ভিন্ন ধর্ম, বর্ণ ও আর্থিক অবস্থানে বেড়ে-ওঠা চরিত্রের মধ্যে সংকীর্ণতা ও সংস্কারমুক্ত মনোভঙ্গির প্রকাশ ঘটিয়েছেন। গ্রামীণ লোকায়ত প্রান্তিক জীবনধারা শাস্ত্রীয় কঠোরতা থেকে যে অনেকটা মুক্ত সে-সত্যও এ গল্পে উন্মোচিত হয়েছে।

বহুনির্বাচনি প্রশ্নঃ
১. “আহ্বান” গল্পে কথকের সহপাঠী কে ছিলেন?
ক. আবদুল 
গ. শুকুর মিয়া
খ. আবেদালি
ঘ. নসর

২. বুড়ি কেন বারবার গোপালের কাছে যেতেন?
ক. পয়সা পাওয়ার লোভে
খ. হে ভালোবাসার টানে।
গ. নিঃসঙ্গতা দুর করতে
ঘ. অতিথি পরায়ন বলে।

নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৩ ও ৪ সংখ্যক প্রশ্নের উত্তর দাও।
অকালে বিধবা হয়ে প্রতিমা আজ থেকে ৩০ বছর আগে এসেছিলেন সুদীপ্তদের বাড়িতে, সুদীপ্তর বয়স তখন তিন মাস। ব্যস্ত চিকিৎসক বাবা-মার অনুপস্থিতিতে প্রতিমার কাছেই সুদীপ্ত বেড়ে উঠে। আজ সুদীপ্তও একজন চিকিৎসক। উচ্চশিক্ষার জন্য সে আমেরিকা চলে যাবে শুনে প্রতিমা তাকে বলেন- বাবা, যেখানে থাকিস আমার মৃত্যুর পর তুই মুখাগ্নি করতে আসিস।

৩. সুদীপ্ত “আহ্বান” গল্পের কোন চরিত্রটির প্রতিনিধিত্ব করে?
ক. আব্দুলের
খ. জমির করাতির 
গ. আবেদালির
ঘ. কথকের 

৪. প্রতিমা ও গল্পের বুড়ি চরিত্রে প্রকাশ পেয়েছে—
i. স্নেহ
ii. নির্ভরতা 
iii. দায়িত্ববোধ 

নিচের কোনটি ঠিক?
ক. i ও ii
খ. ii ও iii 
গ. i ও iii
ঘ. i, ii ও iii

এইচএসসি (HSC) বোর্ড পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতির জন্য পড়ুন সৃজনশীল এবং বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তরসহ: 

সৃজনশীল প্রশ্নঃ
কাজ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন দিন মজুর কেরামত। হঠাৎ দেখতে পান মৃতপ্রায় একটি শিশু পথের ধারে পড়ে আছে। পরম যত্নে তিনি শিশুটিকে ঘরে তুলে আনেন। নিজের ছেলে-মেয়ে নিয়ে অভাবের সংসারে স্ত্রী প্রথমে খানিকটা আপত্তি করলেও শিশুটির অবস্থা দেখে তিনিও বুকে জড়িয়ে ধরেন বড় করতে থাকেন নিজের সন্তান পরিচয়ে।
ক. বুড়িকে মা বলে ডাকত কে? 
খ. “স্নেহের দান এমন করা ঠিক হয়নি”- কথাটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে? 
গ. কেরামত দম্পতির মধ্য দিয়ে “আহ্বান” গল্পের কোন বিশেষ দিকটির ইঙ্গিত রয়েছে? ব্যাখ্যা কর। 
ঘ. ‘উক্ত বিশেষ দিকটিই অনুচ্ছেদ ও “আহ্বান" গল্পের মূল উপজীব্য বিশ্লেষণ কর।

1 comment:

  1. Anonymous8:29:00 AM

    আহ্বান গল্পে কথকের সহপাঠী ছিলেন ৪ জন।আব্দুল, শুকুর মিয়া,নসর, আমাদের সঙ্গে পড়ত আবেদালি।
    কথকের সহপাঠী কেবল আবেদালি হলে লেখক কেন আমাদের শব্দটা উল্লেখ করলেন?

    ReplyDelete