G

HSC অর্থনীতি ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download অধ্যায় ৯

HSC অর্থনীতি ২য় পত্র (Srijonshil) সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর pdf download অধ্যায় ৯

এইচএসসি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি
HSC Economics 2nd Paper Srijonshil question and answer pdf download.

উচ্চমাধ্যমিক

অর্থনীতি
দ্বিতীয় পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
৯ম অধ্যায়

HSC Economics 2nd Paper
Srijonshil
Question and Answer pdf download

১. বর্তমানে জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকারকে প্রচুর ব্যয় নির্বাহ করতে হয়। রাজস্ব আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি হওয়ায় সরকারকে বিভিন্ন উৎস যেমন- নতুন মুদ্রা সৃষ্টি, অতিরিক্ত করারোপ, সরকারি তহবিল গঠন ইত্যাদি হতে অর্থসংস্থান করতে হয়। তবে অর্থসংস্থানের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হচ্ছে ঋণ গ্রহণ। গৃহীত ঋণের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা না গেলে তা দেশের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে।
ক. পরোক্ষ কর কী?
খ. দিনদিন সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে কেন?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত সরকারি অর্থসংস্থানের পদ্ধতিগুলো সংক্ষেপে বর্ণনা করো।
ঘ. সরকারি ঋণের সঠিক ব্যবহার না হলে তা দেশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে- তুমি কি এই ধারণার সাথে একমত? উদ্দীপকের আলোকে ব্যাখ্যা করো।

১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যে করের ভার বা বোঝা অন্যের ওপর চাপানো যায়, তাকে পরোক্ষ কর বলে।

খ. দিনদিন সরকারের কল্যাণমূলক কার্যক্রম বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সরকারি কর্মকা-, পরিকল্পনা, দেশরক্ষা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য সরকার যে অর্থ ব্যয় করে তাকে সরকারি ব্যয় বলে। বর্তমানে প্রতিটি দেশের সরকার কল্যাণকামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী বা সচেষ্ট। এজন্য সরকার মানবসম্পদ উন্নয়ন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও সামাজিক নিরাপত্তা বিধান, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রভৃতি উদ্দেশ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকে। এসব কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সরকারকে প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হয়।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত সরকারি অর্থসংস্থানের পদ্ধতিগুলো হলো নতুন মুদ্রা সৃষ্টি, অতিরিক্ত করারোপ ও সরকারি তহবিল গঠন। নিচে সরকারি অর্থ সংস্থানের উক্ত পদ্ধতিগুলো সংক্ষেপে বর্ণনা করা হলো-
নতুন মুদ্রা সৃষ্টি; সরকার অনেক সময় নতুন নোট ছাপিয়ে তার ব্যয় নির্বাহ করে। অন্যান্য উৎস হতে সংগৃহীত অর্থ বা আয় দ্বারা ব্যয় মিটানো সম্ভব না হলে সরকার অতিরিক্ত কাগজি মুদ্রা ছাপাতে পারে। অতিরিক্ত করারোপ; সরকারি আয়ের প্রধান উৎস হলো কর রাজস্ব। অনেক সময় উন্নয়ন ব্যয় মেটানোর লক্ষ্যে সরকার স্বাভাবিক কর ছাড়াও কিছু অতিরিক্ত কর আরোপ করে থাকে। একেই অতিরিক্ত করারোপ বলে। সরকারি তহবিল গঠন: সরকার তার কার্যক্রম পরিচালনা, ভবিষ্যৎ অপ্রত্যাশিত প্রতিকূল অবস্থা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করার জন্য অর্থ সঞ্চয় করা তথা তহবিল গঠন করে। এই সরকারি তহবিল থেকেও অনেক সময় সরকার তার ব্যয় নির্বাহ করে।

ঘ. সরকারি ঋণের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত না হলে ঋণের ভার অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। যা একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে।
সরকারের আয় অপেক্ষা ব্যয় বেশি হলে তা পূরণের জন্য সরকার দেশের অভ্যন্তরে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে অথবা বিদেশ হতে যে ঋণ গ্রহণ করে তাকে সরকারি ঋণ বলে। সাধারণত, সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাঠামো গঠন, জরি অবস্থা মোকাবিলা, উন্নয়ন পরিকল্পনা ও বাজেটে ঘাটতিপূরণ প্রভৃতি কারণে সরকার বিভিন্ন উৎস হতে ঋণ গ্রহণ করে। কিন্তু এই ঋণের সঠিক ব্যবহার না হলে ঋণ গ্রহণের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়। অর্থাৎ, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ব্যাহত হয়। অথচ সরকারি ঋণের আর্থিক ও প্রকৃত উভয় তার দেশের জনগণের উপর বর্তায়। এতে দেশে আয় বৈষম্য দেখা দেয়।
উদ্দীপকে লক্ষ করা যায়, সরকার তার অর্থসংস্থানের জন্য বিভিন্ন উৎস হতে ঋণ গ্রহণ করে। এই ঋণের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত হলে দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়ন দ্বারা জনগণের আয় বৃদ্ধি পায়। এর ফলে র জনগণের নিকট কম অনুভূত হয়। কিন্তু ঋণের সঠিক ব্যবহার হলে ঋণ পরিশোধের জন্য সরকার নতুন মুদ্রা, ছাপাতে পারে। যা দেশে মুদ্রাস্ফীতি সৃষ্টি করবে। তাছাড়া, সরকারি ঋণ পরিশোধের জন্য সরকার করের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে পারে। যা মানুষের কর্মোদ্যম ও সদয় স্পৃহা হ্রাস করে। এর ফলশ্রুতিতে দেশে বেসরকারি বিনিয়োগ হ্রাস পাবে। উপর্যুক্ত পর্যালোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, অর্থনৈতিক উন্নয়নের বায় নির্বাহের উদ্দেশ্যে গৃহীত সরকারি ঋণের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত না হলে তা দেশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

২. ফরিদ স্যার অর্থনীতির ক্লাসে সরকারের আয়-ব্যয় আলোচনা করছিলেন। তিনি ছাত্রদের বলেন, সরকার দেশ পরিচালনায় উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন খাতে প্রচুর অর্থ ব্যয় করে। এসব অর্থ সংগ্রহে সরকার আয়কর, মূল্য সংযোজন কর, আমদানি-রপ্তানি কর, বিক্রয় কর আরোপ করে থাকে। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণ করে। প্রয়োজনে নতুন টাকা ছাপিয়ে অর্থের ব্যবস্থা করে। বৃহৎ আকারে উন্নয়ন কর্মকা- বাস্তবায়নে সরকার আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে ঋণ গ্রহণ করে। কিন্তু ওইসব প্রতিষ্ঠানের শর্ত পূরণ খুব কঠিন হয়ে পড়ে। তাই উন্নয়ন কার্যক্রম ধীর গতিতে বাস্তবায়ন হয়। অথচ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন হচ্ছে।
ক. আবগারি শুল্ক কী?
খ. সরকারি ব্যয় কীভাবে কর্মসংস্থান ঘটায়?
গ. উদ্দীপকের ভিত্তিতে সরকারের আয়ের উৎসসমূহ বর্ণনা করো।
ঘ. উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন অর্থায়নের জন্য বৈদেশিক উৎসের চেয়ে অভ্যন্তরীণ উৎস উত্তম। উদ্দীপকের ভিত্তিতে বিশ্লেষণ করো।

২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. দেশের অভ্যন্তরে উৎপাদিত পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ককে আবগারি শুল্ক বলে।

খ. সরকারি ব্যয় বৃদ্ধির ফলে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পায়। অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশসমূহে কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নানারূপ বাস্তবায়নে অনেক অর্থ ব্যয় করে। সরকারি ব্যয় বৃদ্ধির ফলে যেমন নতুন নতুন স্থাপনা তৈরি হয়, তেমনি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। মনে করা যাক, সরকার কোনো স্থানে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য বাজেটে অর্থ বরন করল। এখন এই স্থানে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে। সুতরাং, সরকারি ব্যয় বৃদ্ধির ফলে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পায়।

গ. উদ্দীপকে বর্ণিত কর রাজস্ব ছাড়াও সরকারের রাজস্বের অন্য উৎসটি হলো কর বহির্ভূত রাজস্ব। নিচে বিষয়টি ব্যাখ্যা করা হলো:
সরকার কর ছাড়াও বিভিন্ন সুবিধা বা সেবা প্রদানের মাধ্যমে প্রচুর রাজস্ব আয় করে থাকে। এসব আয়কে কর বহির্ভূত রাজস্ব বলে। যেমন- প্রশাসনিক ফি, জরিমানা, বাজেয়াপ্তকরণ, নোট ছাপানো, ডাক বিভাগ, রেলওয়ে ইত্যাদি। উদ্দীপকে লক্ষ করা যায়, বাংলাদেশ সরকার ঘাটতি বাজেটের অর্থসংস্থানের জন্য কর ছাড়াও বিভিন্ন খাত হতে আয় করে থাকে। অর্থাৎ সরকার কর রাজার ছাড়াও কর বহির্ভূত রাজস্ব হতে অর্থ সংগ্রহ করে থাকে। সাধারণত কর বহির্ভূত রাজস্বকে প্রধানত দু'ভাগে ভাগ করা হয়। যথা-
১. প্রশাসনিক রাজস্ব প্রশাসনিক কাজ সম্পাদন এবং বিভিন্ন সেবা প্রদানের জন্য সরকার জনগণের কাছ থেকে যে অর্থ আদায় করে তাকে 'প্রশাসনিক রাজস্ব' বলা হয়। যেমন- কোর্ট ফি, রেজিস্ট্রেশন ফি, ট্রেড লাইসেন্স ফি, জরিমানা, বাজেয়াপ্তকরণ, নোট ছাপানো, ক্ষতিপূরণ, সাহায্য ও অনুদান ইত্যাদি।
২. বাণিজ্যিক রাজস্ব সরকারের কর বহির্ভূত রাজস্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎস হলো বাণিজ্যিক আয়। সরকার অনেক সময় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করে। বাণিজ্যিক বিভিতে পরিচালিত এসব প্রতিষ্ঠান হলো- ডাক বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, রেলওয়ে, রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প প্রতিষ্ঠান প্রভৃতি।

ঘ. "উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থায়নের জন্য বৈদেশিক উৎসের চেয়ে ''অভ্যন্তরীণ উৎস উত্তম কথাটি যথার্থ বলে আমি মনে করি।
সরকার নিজ দেশের জনগণ ও ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে যে ঋণ গ্রহণ করে তাকে অভ্যন্তরীণ ঋণ বলে। পক্ষান্তরে, বিদেশি সংস্থা, সরকার এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে যে ঋণ গ্রহণ করা হয় তাকে বৈদেশিক ঋণ বলে। তবে ঋণের উৎস হিসেবে অভ্যন্তরীণ উৎস হতে গৃহীত সরকারি ঋণ বেশি কার্যকর ও যৌক্তিক।
অভ্যন্তরীণ ঋণের মাধ্যমে সমাজের এক শ্রেণির হাত থেকে অর্থ অন্য শ্রেণির নিকট স্থানান্তরিত হয়। এর ফলে অভ্যন্তরীণ ঋণের কোনো আর্থিক ভার থাকে না। শুধু প্রকৃত ভার আছে। অন্যদিকে, বৈদেশিক ঋণের দ্বারা এক দেশের জনগণের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পায়, অন্য দেশের জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এ ঋণ পরিশোধে সমাজকে আর্থিক ও প্রকৃত তার উভয়ই বহন করতে হয়।
অভ্যন্তরীণ ঋণ পরিশোধে সরকার নতুন কর আরোপ বা নতুন মু ছাপাতে পারে। কিন্তু বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা বা স্বর্ণ আবশ্যক। বাণিজ্যনীতির মাধ্যমে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করা যায়। অভ্যন্তরীণ ঋণ শর্তমুক্ত। তাছাড়া, সরকার দেশি ঋণ গ্রহণে বা সংগ্রহে জনগণকে স্বেচ্ছায় ঋণ প্রদানে উদ্বুদ্ধ করতে পারে অথবা বাধ্যতামূলক পদক্ষেপ নিতে পারে। কিন্তু বৈদেশিক ঋণ প্রদানে কোনো দেশ বা সংস্থাকে বাধ্য করা যায় না।
উপরের বিশ্লেষণের পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থায়নের উৎস হিসেবে বৈদেশিক উৎসের চেয়ে অভ্যন্তরীণ উৎস অধিক কার্যকর।

৩. মানুষ আয় বুঝে যায় করে। কিন্তু যেকোনো দেশের সরকার ব্যয় অনুসারে আয় করে। সরকার আয়কর, সম্পদ কর, ফি, মুনাফা কর, রেলওয়ে, তার ও টেলিফোন, VAT, আবগারি শুল্ক, লাইসেন্স ফি, উত্তরাধিকার কর, জরিমানা, ডাক, রাষ্ট্রীয় কারখানা ইত্যাদি উৎস হতে আয় করে থাকে। যদি এসব উৎসের আয় দ্বারা ব্যয় সংকুলান না হয় তবে ঘাটতি অর্থায়নের অংশ হিসেবে সরকার অভ্যন্তরীণ এবং বৈদেশিক উৎস হতে ঋণ নেয়। যদিও এ দুটো উৎসের সুবিধা এবং অসুবিধা উভয়ই রয়েছে।
ক. সরকারি ব্যয় কী?
খ. প্রত্যক্ষ কর ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা বেশি।'- ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের আলোকে সরকারের আয়ের উৎসগুলোর কর ও কর বহির্ভূত রাজস্ব চিহ্নিত করো।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ঘাটতি অর্থায়নের উৎস দুটির তুলনাপূর্বক, কোনটি অধিকতর কার্যকর তা বিশ্লেষণ করো।

৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. দেশের ভেতরে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখা, দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করা, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবকাঠামো নির্মাণ, সামাজিক কল্যাণ সাধন, দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রভৃতি কাজের জন্য সরকার যে অর্থ ব্যয় করে তাকেই সরকারি ব্যয় বলে।

খ. প্রত্যক্ষ করের ভার অন্যের ওপর চাপানো যায় না বলে এ কর ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা বেশি।
যে ব্যক্তির ওপর কর আরোপ করা হয় তাকেই যদি করের বোঝা বহন করতে হয় তাহলে উক্ত করতে প্রত্যক্ষ কর বলে। অর্থাৎ এ করের করঘাত ও করপাত একই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ওপর পড়ে। যেমন- আয়কর, ভূমিকর, সম্পাদকর ইত্যাদি। এ সকল করের ভার সরাসরি করদাতাকেই বহন করতে হয়। এজন্যই এ সকল কর ফাঁকি দেয়ার প্রবণতা বেশি থাকে।

গ. জনকল্যাণমুখী রাষ্ট্র পরিচালনার লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন উৎস হতে অর্থ সংগ্রহ করে। নিচে উদ্দীপকে উল্লিখিত উৎসগুলোর কর ও কর- বহির্ভূত (অ-কর) রাজস্ব চিহ্নিত করা হলো- সাধারণত সরকারি আয়ের উৎসগুলোকে দু'ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
১. কর রাজস্ব এবং ২. কর-বহির্ভূত রাজস্ব। কোনো প্রকার সুবিধা প্রাপ্তির প্রত্যাশা না করে সাধারণ স্বার্থে সরকারকে সরকারি ব্যয় মেটানোর জন্য জনগণ বাধ্যতামূলকভাবে যে অর্থ প্রদান করে তাকে কর বলে। এই কর থেকে যে আয় হয়, তাকে কর রাজস্ব বলে। আবার, সরকার কর ব্যতীত অন্যান্য উৎস থেকে যে আয় করে তাকে ক বহির্ভূত রাজস্ব বলে।
উদ্দীপকে কর রাজস্বের উৎসগুলো হলো- আয়কর, সম্পদ কর, মুনাফা কর, মূল্য সংযোজন কর, আবগারি শুল্ক ও উত্তরাধিকার কর। অন্যদিকে, কর-বহির্ভূত রাজস্বের উৎসগুলো হলো- ফি, রেলওয়ে, তার ও টেলিফোন, লাইসেন্স ফি জরিমানা, ডাক ও রাষ্ট্রীয় কারখানা।

ঘ. বিভিন্ন উৎস থেকে সংগৃহীত অর্থ দ্বারা সরকারি ব্যয় নির্বাহ করা না গেলে সরকার অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক উৎস হতে ঋণ গ্রহণ করে। নিচে এই দুটি উৎসের মধ্যে তুলনামূলক আলোচনা করা হলো।
সরকার দেশের জনগণ বা বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে যে ঋণ গ্রহণ করে, তাকে অভ্যন্তরীণ ঋণ বলে। অন্যদিকে, সরকার যদি বিদেশি সরকার, সংস্থা বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ সংগ্রহ করে, তাকে বৈদেশিক ঋণ বলে।
সরকার অভ্যন্তরীণ ঋণ সংগ্রহে জনগণকে স্বেচ্ছায় ঋণ প্রদানে উদ্বুদ্ধ করতে পারে অথবা বাধ্যতামূলক পদক্ষেপ নিতে পারে। কিন্তু বৈদেশিক ঋণ স্বেচ্ছামূলক। তাছাড়া, অভ্যন্তরীণ ঋণ পরিশোধে সরকার নতুন কর আরোপ বা নতুন মুদ্রা ছাপাতে পারে। কিন্তু বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা বা স্বর্ণ আবশ্যক।
অভ্যন্তরীণ ঋণের ক্ষেত্রে দেশের এক শ্রেণির হাত থেকে অন্য শ্রেণির হাতে অর্থ বা সম্পদ স্থানান্তরিত হয়। তাই এ ঋণের কোনো আর্থিক ভার নেই; শুধু প্রকৃত ভার আছে। অপরদিকে, বৈদেশিক ঋণের আর্থিক ও প্রকৃত উভয় ভারই রয়েছে।
উপর্যুক্ত কারণগুলো ছাড়াও ঋণের শর্ত, ঋণ পরিশোধের সময় ও অর্থনৈতিক কল্যাণ বিবেচনা করে দেখা যায়, বৈদেশিক ঋণের চেয়ে অভ্যন্তরীণ ঋণ তুলনামূলকভাবে বেশি কার্যকর।

৪. 'X' দেশের সরকার বর্তমান অর্থবছরে একটি নতুন কর আরোপ করেছে। এই করের করঘাত এবং করপাত ভিরি ভিন্ন ব্যক্তির ওপর পড়ে। অর্থাৎ, এই করের করভার অন্যের ওপর চাপানো যায়। তাছাড়া সরকার তার ব্যয় নির্বাহের জন্য দেশের জনগণ এবং আমেরিকা থেকেও ঋণ গ্রহণ করেছে।
ক. সরকারি আয় কী?
খ. সরকারি ঋণের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হলো জরুরি অবস্থা মোকাবিলা করা ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকে সরকার কর্তৃক আরোপিত করটি কী প্রকৃতির? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে সরকারি ঋণের উৎসগুলোর মধ্যে কোনটি উত্তম? বিশ্লেষণ করো।

৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. সরকার তার সাধারণ প্রশাসনিক কার্যাবলি ও বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিভিন্ন উৎস থেকে যে অর্থ সংগ্রহ করে তাকে সরকারি আয় বলে।

খ. যেকোনো জরুরি অবস্থা মোকাবিলার জন্য সরকারকে প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হয়। আয়ের স্বাভাবিক উৎস থেকে এই অর্থ সংগ্রহ করা যায় না। তাই ঋণ নিয়ে সরকার জরুরি প্রয়োজন মেটায়। যেমন- বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, ঝড়, ভূমিকম্প, দুর্ভিক্ষ, মহামারি প্রভৃতি আকস্মিক দুর্ঘটনার সময় সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়। এ কারণে বলা হয়, 'সরকারি ঋণের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হলো জরুরি অবস্থা মোকাবিলা করা।

গ. উদ্দীপকে সরকার কর্তৃক আরোপিত করটি হলো পরোক্ষ কর। যে ব্যক্তির ওপর কর আরোপ করা হয় সে যদি করের বোঝা অন্যের ওপর চাপাতে পারে তাহলে তাকে পরোক্ষ কর বলা হয়। অর্থাৎ, যে করের করঘাত এবং করপাত ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তির ওপর পড়ে তাকে পরোক্ষ কর বলে। যে ব্যক্তির ওপর কর আরোপ করা হয় সে তার করের বোঝা অন্যের ওপর চাপানোর চেষ্টা করে। যদি করের বোঝা অন্যের ওপর চাপানো যায়, তাহলে তাকে পরোক্ষ কর বলে।
পরোক্ষ করের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মূল্য সংযোজন কর, আমদানি- রপ্তানি শুল্ক, আবগারি শুল্ক, বিক্রয় কর, প্রমোদ কর, মাদক শুল্ক প্রভৃতি। বাংলাদেশে কর রাজস্বের বেশির ভাগই পরোক্ষ করের মাধ্যমে সংগৃহীত হয়। পরোক্ষ কর দ্রব্যসামগ্রী ক্রয়ের সাথে প্রদান করতে হয়। তাই করদাতারা এর বোঝা অনুভব করতে পারে না। এজন্য এ করকে জনপ্রিয় কর বলা হয়। পরোক্ষ কর প্রব্যের দামের সঙ্গে আদায় করা হয়। কোনো ব্যক্তি যখন কোনো দ্রব্য ক্রয় করে তখন তাকে দ্রব্যের সঙ্গে কর প্রদান করতে হয়। কাজেই এ কর ফাঁকি দেওয়া যায় না। পরোক্ষ কর ধনী-গরিব নির্বিশেষে সকলকে প্রদান করতে হয়। তাই এ করের ভিত্তি খুবই বিস্তৃত।

ঘ. উদ্দীপকে বলা হয়েছে, সরকার তার ব্যয় নির্বাহের জন্য দেশের জনগণ এবং আমেরিকা থেকেও ঋণ গ্রহণ করেছে। দেশের জনগণ থেকে ঋণ গ্রহণ অভ্যন্তরীণ উৎস; অপরদিকে, আমেরিকা থেকে ঋণ গ্রহণ বৈদেশিক উৎস।
সরকারি ঋণের উৎসগুলোর মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ গ্রহণ উত্তম বলে আমি মনে করি। বিষয়টি নিচে তুলনামূলক আলোচনার মাধ্যমে বিশ্লেষণ করা হলো:
প্রথমত, অভ্যন্তরীণ উৎসগুলো থেকে ঋণ সংগ্রহ করা সহজ। কারণ, সরকার জনগণকে বিভিন্ন প্ররোচনা দানের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করে বা বাধ্য করে বল গ্রহণ করাতে পারে। কিন্তু বৈদেশিক উৎসগুলোকে বাধ্য করা যায় না। দ্বিতীয়ত, বৈদেশিক ঋণ গ্রহণ করলে বিদেশিদের বেঁধে দেওয়া শর্ত পূরণপূর্বক ব্যবহার করতে হয়। যা অর্থনীতির জন্য অনেক সময় উপকারী হওয়ার চেয়ে অপকারী হতে পারে। পক্ষান্তরে, অভ্যন্তরীণ ঋণ ব্যবহারের কোনো শর্তের মোকাবিলায় করতে হয় না। তৃতীয়ত, প্রত্যেক জিনিসের প্রাপ্তির বিনিময়ে প্রদান আছে। তাই ঋণ গ্রহণ করলে পরিশোধও করতে হয়। অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সংগৃহীত ঋণ পরিশোধে সরকারকে নতুন নোট ছাপিয়ে বা অধিক হারে কর ধার্য করে তা পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে স্বর্ণ ও রৌপ্য আবশ্যক। চতুর্থত, ঋণের মেয়াদের দৃষ্টিকোণ থেকে সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনা করলে বৈদেশিক উৎস, অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে বেশি সুবিধাজনক। কেননা বৈদেশিক ঋণ সবসময় দীর্ঘমেয়াদি হয়ে থাকে। আবার অনেক সময় মওকুফও করা হয়। অন্যদিকে, অভ্যন্তরীণ ঋণ সচরাচর স্বল্পমেয়াদি হয়ে থাকে এবং তা মওকুফের ঘটনাও বিরল।
উপরিউক্ত আলোচনা থেকে এ কথা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, সরকারি ঋণের দুটি উৎসের মধ্যে ঋণ পরিশোধের সময় বিষয়টি ছাড়া প্রতিটি ক্ষেত্রে বৈদেশিক উৎসের চেয়ে অভ্যন্তরীণ উৎস সুবিধাজনক এবং বৈদেশিক উৎস অসুবিধাজনক। তাই যেকোনো দেশের সরকারকে বৈদেশিক উৎসের পরিবর্তে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

৫. শিক্ষকের কাছে ছাত্রদের প্রশ্ন ছিল, রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থের উৎস কী? শিক্ষক বললেন, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর, নানা রকম ফি প্রভৃতি উৎস থেকে সরকার আয় করে এবং বায় নির্বাহ করে। এ ছাড়াও বিভিন্ন রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান থেকে সাহায্য ও ঋণ গ্রহণ করে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে নতুন নোট প্রচলন করে।
ক. পরোক্ষ কর কী?
খ. আয়করকে প্রত্যক্ষ কর বলা হয় কেন?
গ. উদ্দীপকের আলোকে বাংলাদেশ সরকারের আয়ের উৎসগুলোর বিবরণ দাও।
ঘ. সরকারের ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে ব্যয় নির্বাহের অসুবিধা সম্পর্কে তোমার মতামত দাও।

৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. যে করের বোঝা অন্যের ওপর চাপানো যায় তাকে পরোক্ষ কর বলে।

খ. আয়কর যে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ওপর আরোপ করা হয় উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকেই এর সম্পূর্ণ ভার বহন করতে হয়। তাই আয়করকে প্রত্যক্ষ কর বলা হয়।
যে সকল করের ভার ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সরাসরি বহন করে এবং ইচ্ছা করলেই ওই করের ভার আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে অন্যকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ওপর চাপাতে পারে না সে সকল করতে সাধারণত প্রত্যক্ষ কর বলা হয়। আয়করকেও প্রত্যক্ষ কর বলা যায়। কারণ, এই কর ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের আয়ের ওপর নির্দিষ্ট হারে আরোপ করা হয় এবং উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকেই এই কর পরিশোধ করতে হয়। এক্ষেত্রে করের বোঝা অন্য কারো ওপর চাপানো যায় না। তাই আয়করকে প্রত্যক্ষ কর বলা হয়।

গ. উদ্দীপকে বিভিন্ন ধরনের আয়ের উৎসের কথা বলা হয়েছে। নিম্নে উদ্দীপকের আলোকে সরকারের আয়ের উৎসগুলোর বিবরণ দেয়া হলো:
প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সরকারের আয়ের প্রধান উৎস হলো কর। যে সকল করের ভার ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নিজে বহন করে তাকে প্রত্যক্ষ কর এবং যে করের ভার অন্যের ওপর চাপানো যায় তাকে পরোক্ষ কর বলে। প্রত্যক্ষ করের উৎসসমূহ হলো- আয়কর, ভূমি রাজস্ব, সম্পদ কর, দান কর ইত্যাদি। আর পরোক্ষ করের উৎসসমূহ হলো- মূল্য সংযোজন কর, আমদানি শুল্ক, সম্পূরক কর ইত্যাদি।
নানা রকমের ফি: ফি সাধারণত কর বহির্ভূত রাজস্বের উৎস। সরকার কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে কোনো বিশেষ ধরনের সুবিধা প্রদান করলে তার বিনিময়ে যে অর্থ আদায় করে তাকে ফি বলে। যেমন- রেজিস্ট্রেশন ফি, কোর্ট ফি, টোল ইত্যাদি।
সরকারি ঋণ: সরকার প্রয়োজনে রাষ্ট্র বা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণ করে থাকে। এটি অ-কর রাজস্বের একটি উৎস।
নতুন নোট প্রচলন: সরকারের আদেশক্রমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন নোট।প্রচলন করে অর্থায়নে সাহায্য করে।
এভাবে সরকার তার প্রয়োজন বা ব্যয় অনুযায়ী, বিভিন্ন উৎস থেকে আয় করে থাকে। যখন অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে পর্যাপ্ত অর্থায়ন সম্ভব হয় না তখন সরকার ঋণ গ্রহণ করে। এভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার স্বার্থে সরকার বিভিন্ন উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহ করে তার কার্যক্রম পরিচালনা করে।

ঘ. সরকার তার রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম পরিচালনার স্বার্থে দেশীয় বা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান বা অন্যকোনো রাষ্ট্রের কাছ থেকে ঋণ গ্রহণ করলে তাকে সরকারি ঋণ বলে। উন্নয়নস্ক্রীল দেশে সাধারণত ঘাটতি বাজেট পরিলক্ষিত হয়, ফলে সরকার ঋণ গ্রহণে বাধ্য হয়। এ সক ঋণ পরিশোধের তথা বায় নির্বাহের ক্ষেত্রে কিছু অসুবিধা পরিলক্ষিত হয়। নিচে তা তুলে ধরা হলো:
১. সরকার ঋণকে অর্থ সংগ্রহের সহজ উৎসরূপে ব্যবহার করার জন্য প্রলোভিত হতে পারে।
২. এ ঋণ অনেক সময় রাজনৈতিক নেতারা দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করে।
৩. সরকারি ঋণের পরিমাণ বেশি হলে সমাজে আয় ও ধন বৈষম্য বৃদ্ধি পায়।
৪. ঋণের প্রকৃত ভার দেশবাসীকেই বহন করতে হয় এবং জাতীয় আয়ের একাংশ সুদ হিসেবে চলে যায়।
৫. এ ঋণের ফলে বেসরকারি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব পড়ে।
৬. দাতা দেশের শর্ত পূরণ করে কাঙ্ক্ষিত সাফল্যে পৌঁছাতে সমস্যায় পড়তে হয়।
এছাড়া, পাতা দেশের শর্ত পূরণ করে কাঙ্ক্ষিত সাফল্যে পৌঁছাতে যেকোনো উন্নয়নশীল দেশকে অনেক সমস্যায় পড়তে হয় যা উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। আমাদের দেশের অশিক্ষিত জনগণ শিল্প ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অর্থ বিনিয়োগে উৎসাহী নয়। ফলে সরকারের পক্ষে ঋণ সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
পরিশেষে বলা যায় যে, সরকারি ঋণ গ্রহণ ও এর ব্যয় নির্বাহের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশকে অনেক প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়, যা কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের ধারাকে বাধাগ্রস্ত করে। তাই সরকারের উচিত ঋণ গ্রহণের পরিবর্তে বিকল্প কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা, যাতে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত না হয়।

৬. প্রফেসর সনৎ স্যার বাজেট বিষয়ক একটি সেমিনারে বক্তব্য রাখছিলেন, এমন সময় একজন শ্রোতা প্রশ্ন করলেন, স্যার, রাষ্ট্র পরিচালনার এত বিশাল পরিমাণ অর্থ সরকার কোথা থেকে পায়? এর জবাবে স্যার বললেন, সরকার জনগণকে নানারকম সেবা দিয়ে ফি গ্রহণ করে, জনগণের বাড়তি আয়ের ওপর কর ধার্য করে, বিভিন্ন দ্রব্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (VAT) আরোপ করে। এ ছাড়াও বিভিন্ন বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র থেকে সাহায্য এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণ করে। এসব করার পরও অর্থের সংকুলান না হলে সরকার নতুন নোট প্রচলন করে।
ক. আয়কর কী?
খ. মূল্য সংযোজন কর (VAT) কে পরোক্ষ কর বলা হয় কেন?
গ. উদ্দীপক হতে সরকারি আয়ের উৎসের একটি তালিকা তৈরি করো।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ব্যয় নির্বাহের সর্বশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে অর্থনীতির ওপর কী প্রভাব পড়বে? ব্যাখ্যা করো।

৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. একটি নির্দিষ্ট সময়ে সাধারণত এক আর্থিক বছরের কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অর্জিত আয়ের ওপর সরাসরি যে কর ধার্য করা হয় তাকে আয়কর বলে।

খ. পরোক্ষ কর বলতে ওই করকে বোঝায় যে করের করঘাত ও করপাত ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তির ওপর পড়ে। অন্যকথায়, পরোক্ষ করের ক্ষেত্রে যার ওপর কর ধার্য করা হয় সে প্রাথমিকভাবে তা প্রদান করলেও পরে বর্ধিত দামের মাধ্যমে তা ক্রেতাদের কাছ থেকে আদায় করে নিতে পারে। মূল্য সংযোজন করের ক্ষেত্রে করদাতা তার ওপর আরোপিত কর প্রদান করলেও পরে বর্ধিত দামের মাধ্যমে তা ক্রেতাদের কাছ থেকে আদায় করে। এজন্য এ করতে পরোক্ষ কর বলা হয়।

গ. প্রদত্ত উদ্দীপকে সরকারি আয়ের বিভিন্ন উৎস উল্লেখ করা হয়েছে। তার ভিত্তিতে নিচে সরকারি আয়ের একটি তালিকা তৈরি করা হলো-
১. ফি
২. আয়কর
৩. মূল্য সংযোজন কর
৪. বৈদেশিক সাহায্য
৫. দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ
৬. নতুন নোট ছাপানো।
১. সরকার কোনো ব্যক্তিকে বিশেষ সুবিধাদানের বদলে তার কাছ থেকে পূর্ব-নির্ধারিত হারে যে অর্থ আদায় করে তাকে ফি বলে। ২. একটি নির্দিষ্ট সময়ে সাধারণত এক আর্থিক বছরে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অর্জিত আয়ের ওপর সরাসরি ধার্যকৃত করই হলো আয়কর। ৩. কোনো উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্যের বাজার নাম এবং ওই পণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত উপকরণ ব্যয়ের পার্থক্যকে মূল্য সংযোজন বলে, এর ওপর যে হারে কর আদায় করা হয় তাই হলো মূল্য সংযোজন কর। ৪. বিদেশি কোনো ব্যক্তি, এনজিও, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সাহায্য ও অনুদান সরকারের আয়ের অন্যতম উৎস। ৫. দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান থেকে স্বপ্নহার সুদে গৃহীত ঋণ হলো সরকারি আয়ের উৎস। ৬. সরকার বাড়তি ব্যয় নির্বাহের জন্য কখনো কখনো নোট ছাপায়, যা তার আয়।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত সরকারি ব্যয় নির্বাহের সর্বশেষ উপায় বা ব্যবস্থা হলো নতুন কাগজি নোট ছাপানো। আধুনিককালে পৃথিবীর সকল দেশের সরকার নানা উন্নয়নমূলক কর্মকা- পরিচালনা করতে গিয়ে বিপুল অঙ্কের অর্থ ব্যয় করে। আয়ের চিরাচরিত উৎসগুলো থেকে প্রাপ্ত রাজস্ব এ ব্যয় নির্বাহের জন্য সবসময় যথেষ্ট হয় না। তখন বাধ্য হয়েই সরকারকে নতুন কাগজি নোট ছাপাতে হয়।
উন্নয়নের জন্য বাড়তি ব্যয় মেটানো বা যেকোনো উদ্দেশ্যেই সরকার নতুন নোট ছাপাক না কেন, তার প্রভাব পড়ে দেশের মোট অর্থের যোগানের ওপর। নতুন নোট ছাপিয়ে বাড়তি ব্যয় নির্বাহের ফলে মজুরি, বেতন, খাজনা, সুদ, মুনাফা ইত্যাদি আকারে জনসাধারণের আয় বাড়ে। প্রকারান্তরে তা জাতীয় আয় বাড়ায়। তবে এ পন্থায় সরকারি ব্যয় মেটানোর সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়ে দেশে বিদ্যমান দামস্তরের ওপর। নতুন নোট ছাপিয়ে বিনিয়োগ বাড়লে তার দরুন অতিরিক্ত চাহিদা সৃষ্টি হয়; কিন্তু এর সাথে পাল্লা দিয়ে দ্রব্য ও সেবার উৎপাদন বাড়ে না। এ অবস্থায় বাড়তি চাহিদা মুদ্রাস্ফীতির মাত্রা বৃদ্ধি করে জনদুর্ভোগ বাড়ায়।
তবে সরকারের বাড়তি ব্যয়ভার বহনের জন্য নতুন নোট ছাপানোর পদ্ধতি দেশে মুদ্রাস্ফীতি ঘটালেও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে তা সহায়তা করে। মুদ্রাস্ফীতির মাত্রা বাড়ার কারণে মুনাফা বাড়লে উদ্যোক্তারা বিনিয়োগে আগ্রহী হয়ে ওঠে, যা পরিণামে উৎপাদন বাড়ায়।
তাই বাড়তি নোট ছাপানোর পাশাপাশি যদি অধিক পরিমাণে দ্রব্য ও সেবা উৎপাদনেরও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় তবে সে অবস্থায় মুদ্রাস্ফীতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়। শুধু তাই-ই নয়, সরকারের হাতের এই বাড়তি অর্থ যদি ব্যয়বহুল ও অতি প্রয়োজনীয় আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো নির্মাণ এবং অব্যবহৃত প্রাকৃতিক সম্পদ সদ্ব্যবহারের জন্য ব্যয় করা হয়, তবে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়। সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকে উল্লিখিত ব্যয় নির্বাহের সর্বশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে অর্থনীতির ওপর সুপ্রভাব পড়ে।

৭. শিপলু বিদেশে বসবাস করে। সে দেশের সরকার জনগণের নিকট থেকে উচ্চ হারে কর আদায় করে এবং সেই দেশের আয়ের প্রধান খাত কর। দেশটি উন্নত না হওয়ায় প্রতি বছর অন্য দেশ থেকে অনুদান ও ঋণ গ্রহণ করে। দেশটি সামান্য পরিমাণ দ্রব্যসামগ্রী অন্য দেশে রপ্তানিও করে।
ক. কর কত প্রকার ও কী কী?
খ. সরকারি আয়ের উল্লেখযোগ্য উৎসসমূহ কী কী?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত দেশটির সরকারের আয়ের খাতসমূহ কী-কী? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত দেশটির সাথে বাংলাদেশ সর খাতের মিল আছে কি? ব্যাখ্যা করো।

৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কর দুই প্রকার। যথা- প্রত্যক্ষ কর ও পরোক্ষ কর।

খ. সরকারি আয়ের উল্লেখযোগ্য উৎসসমূহকে দুইভাগে ভাগ করা যায়; যথা- কর ও কর-বহির্ভূত উৎস।
কর প্রধানত দুই প্রকার; যথা- প্রত্যক্ষ কর ও পরোক্ষ কর। আয়কর, সম্পত্তি কর, দান কর ইত্যাদি হলো প্রত্যক্ষ কর, অন্যদিকে মূল্য সংযোজন কর, আবগারি শুল্ক ইত্যাদি হলো পরোক্ষ কর। কর-বহির্ভূত আয়ের উৎসের মধ্যে উল্লেখযোগ্য উৎসগুলো হলো: ফি, বাণিজ্যিক আয়, সরকারি সম্পদ থেকে আয়, জারিমানা, সরকারি ঋণ, নতুন নোট ছাপানো, বিশেষ বাজেয়াপ্তকরণ, দান ও অনুদান ইত্যাদি।

গ. কোনো দেশে সরকারি আয়ের বিভিন্ন উৎস রয়েছে। তবে উদ্দীপকে দেখা যায়, শিপলু বর্তমান যে দেশে গিয়ে বাস করছে সেখানে সরকারি আয়ের কতগুলো সুনির্দিষ্ট উৎস রয়েছে। উদ্দীপকে উল্লিখিত দেশটিতে সরকারি আয়ের উৎসমূহের বিবরণ নিচে দেওয়া হলো-
১. কর: কোনো প্রকার প্রত্যক্ষ প্রাপ্তি বা উপকারের আশা না করে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কিছু শর্তাধীনে বাধ্যতামূলকভাবে সরকারকে যে অর্থ প্রদান করে তাই হলো কর। এ কর দুই শ্রেণিতে বিভক্ত, যথা- প্রত্যক্ষ কর ও পরোক্ষ কর। প্রত্যক্ষ করের মধ্যে রয়েছে আয়কর, সম্পত্তি কর, সম্পদ কর, দান কর, মূলধনী কর, ভূমি রাজস্ব প্রভৃতি। আর পরোক্ষ করের মধ্যে রয়েছে মূল্য সংযোজন কর, আমদানি শুল্ক, আবগারি শুল্ক, প্রমোদ কর ইত্যাদি। দেশটির সরকার উচ্চ হারে বিভিন্ন কর আদায় করে বিপুল অর্থ আয় করে।
২. অনুদান: কতগুলো নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদনের জন্য এক দেশের সরকার অন্য দেশের সরকারকে যে অর্থ সাহায্য করে তাই হলো অনুদান। অনুদান বাবদ উদ্দীপকের দেশটি অনেক অর্থ আয় করে।
৩. ঋণ: উদ্দীপকের দেশটির সরকার ব্যয় মেটানোর জন্য দেশের অভ্যন্তরে জনসাধারণ, ব্যাংক, সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং দেশের বাইরে আইএমএফ, বিশ্ব ব্যাংক ইত্যাদি থেকে ঋণ গ্রহণ করে।
৪. রপ্তানি আয়: উদ্দীপকের দেশটি থেকে যেসব দ্রব্যসামগ্রী রপ্তানি করা হয় তার ওপর শুল্ক আরোপ করেও সরকার কিছু অর্থ আয় করে।

ঘ. উদ্দীপকের দেশটির সরকারের আয়ের উৎসগুলোর সাথে বাংলাদেশের সরকারের আয়ের উৎসগুলোর মিল আছে কি না তা নিচে ব্যাখ্যা করা হলো-
উদ্দীপকের দেশটির সরকারের মতো বাংলাদেশের সরকারেরও আয়ের প্রধান উৎস হলো কর। বাংলাদেশ সরকার দেশে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর আরোপ করে তার আয়ের সিংহভাগ অর্জন করে। সরকার প্রত্যক্ষ কর হিসেবে জনগণের আয় ও কোম্পানির মুনাফার ওপর আয়কর ধার্য করে প্রচুর অর্থ আয় করে।
উদ্দীপকের দেশটির সরকারের মতো বাংলাদেশ সরকারও দ্রব্য ও সেবাকর্মের ওপর পরোক্ষ কর আরোপ করে অর্থ আয় করে। সরকারের আরোপিত প্রধান পরোক্ষ করগুলো হলো- মূল্য সংযোজন কর, আমদানি শুল্ক, আবগারি শুল্ক ও সম্পূরক শুল্ক। এছাড়া সরকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প, যানবাহন শুল্ক, আমোদ-প্রমোদ কর, ভোগকৃত বিদ্যুতের ওপর কর, বিদেশ ভ্রমণের ওপর কর ইত্যাদির মাধ্যমেও আয় করে থাকে।
উদ্দীপকের দেশটির মতো বাংলাদেশও উন্নত নয়। এজন্য ওই দেশের সরকারের মতো এদেশের সরকারও বিদেশ থেকে অনুদান গ্রহণ করে। বাংলাদেশ সরকার উদ্দীপকের দেশের সরকারের মতো দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মকা- পরিচালনার ব্যয় নির্বাহের জন্য ঋণ গ্রহণ করে। এ ছাড়াও বাংলাদেশ সরকার উদ্দীপকের দেশটির সরকারের মতো রপ্তানি কর থেকে যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ আয় করে।
সুতরাং বলা যায়, বাংলাদেশ সরকার উদ্দীপকের দেশটির সরকারের মতো কর ও কর-বহির্ভূত উৎস থেকে আয় করে। তবে বাংলাদেশ সরকারের আয়ের এমন সব উৎস রয়েছে যা উদ্দীপকের সরকারের নেই। সামগ্রিকভাবে বলা যায়, উদ্দীপকে উল্লিখিত দেশটির সরকারের আয়ের উৎসগুলোর সাথে বাংলাদেশ সরকারের আয়ের উৎসগুলোর যথেষ্ট মিল রয়েছে।

৮.সাম্প্রতিককালে সরকার অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য শিক্ষা, প্রতিরক্ষা এবং সামাজিক নিরাপত্তার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। সেজন এসব খাতের বরাদ্দ বাড়ানো হচ্ছে। এসব ব্যয় নির্বাহের জন্য সরকার অনেক সময় দেশের জনগণ, আর্থিক ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণ করে। তাছাড়া সরকার বৈদেশিক সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকেও ঋণ নেয়।
ক. সরকারি অর্থব্যবস্থা কাকে বলে?
খ. মূল্য সংযোজন করকে পরোক্ষ কর বলা হয় কেন?
গ. উদ্দীপকের আলোকে সরকারি ব্যয়ের গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলো ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকে যে দুই ধরনের সরকারি ঋণের কথা বলা হয়েছে তার তুলনামূলক বিশ্লেষণ করো। বাংলাদেশের জন্য কোন ধরনের ঋণ উত্তম বলে তুমি মনে করো?

৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. অর্থনীতির যে শাখায় সরকারের আয়-ব্যয় ও ঋণ সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয় তাকে সরকারি অর্থব্যবস্থা বলে।

খ. পরোক্ষ কর বলতে ওই করকে বোঝায় যে করের করঘাত ও করপাত ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তির ওপর পড়ে। অন্যকথায়, পরোক্ষ করের ক্ষেত্রে যার ওপর কর ধার্য করা হয় সে প্রাথমিকভাবে তা প্রদান করলেও পরে বর্ধিত দামের মাধ্যমে তা ক্রেতাদের কাছ থেকে আদায় করে নিতে পারে। মূল্য সংযোজন করের ক্ষেত্রে করদাতা তার ওপর আরোপিত কর প্রদান করলেও পরে বর্ধিত দামের মাধ্যমে তা ক্রেতাদের কাছ থেকে আদায় করে। এজন্য এ করতে পরোক্ষ কর বলা হয়।

গ. অতীতের তুলনায় বর্তমানে সরকারের অর্থনৈতিক ও জনকল্যাণমূলক কর্মকা- যথেষ্ট বেড়ে যাওয়ায় সরকারি ব্যয়ও অতীতের তুলনায় অনেক বেড়েছে। নিচে উদ্দীপকের আলোকে সরকারি ব্যয়ের গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলো ব্যাখ্যা করা হলো।
১. শিক্ষা: শিক্ষা মানবসম্পদের উন্নয়ন ঘটিয়ে দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টিতে সহায়তা করে বলে এ খাতে সরকার প্রচুর অর্থ ব্যয় করে। সরকারি উদ্যোগে সময়ের প্রয়োজনানুযায়ী বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা ও সেগুলো পরিচালনা, সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ও ভাতা প্রদান, শিক্ষা খাতে অনুদান প্রভৃতি বাবদ সরকার প্রচুর অর্থ বায় করে। সাম্প্রতিক সময়ে সকল শ্রেণির শিক্ষার্থীর বৃত্তি প্রদান, শিক্ষা উপকরণ ক্রয় বাবদ অনুদান, স্কুল করে-পড়া রোধে মাসিক ভাতা প্রদান ইত্যাদির দরুন এ খাতে সরকারি বায় বেড়েই চলেছে।
২. প্রতিরক্ষা: চিরাচরিতভাবেই সরকারি ব্যয়ের অন্যতম প্রধান খাত হলো প্রতিরক্ষা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা প্রত্যেক দেশেরই সরকারের দায়িত্ব। দেশ-ব্রক্ষার জন্য আধুনিক যুদ্ধের উপযোগী সাজ- সরঞ্জাম ক্রয়, একটি শক্তিশালী প্রতিরক্ষা বাহিনী গড়ে তোলা ও তা পরিচালনা করা প্রভৃতি বাবদ পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো এ দেশের সরকার একটি বিরাট অঙ্কের অর্থ ব্যয় করে।
৩. সামাজিক নিরাপত্তা: সামাজিক নিরাপত্তা বিধান বর্তমানকালের সরকারি ব্যয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত। কর্মরত চাকরিজীবীদের জন্য পেনশন ও গ্র্যাচুইটির ব্যবস্থা, কর্মহীনদের জন্য বেকার ভাতা, দুর্ঘটনার শিকার এমন লোকদেরকে আর্থিক সহায়তা প্রদান ইত্যাদির জন্য সরকারকে অনেক অর্থ ব্যয় করতে হয়। বর্তমান সময়ে সরকার সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী প্রসারিত করায় এ খাতের ব্যয় উত্তরোত্তর বাড়ছে।

ঘ. উদ্দীপকে যে দু'ধরনের সরকারি ঋণের কথা বলা হয়েছে তা হলো:
অভ্যন্তরীণ ঋণ ও বৈদেশিক ঋণ। এ দুধরনের ঋণের কিছু সুবিধা- অসুবিধা রয়েছে। নিচে এ উৎস দুটির তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা হলো: সরকারের পক্ষে অভ্যন্তরীণ উৎসগুলো থেকে ঋণ গ্রহণ করা সহজ; কারণ সরকার জনগণকে বিভিন্ন প্ররোচনা দানের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করে বা বাধ্য করে ঋণ গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু ঋণের বৈদেশিক উৎসগুলোকে ঋণ প্রদানের জন্য প্ররোচিত বা বাধ্য করা যায় না। এ দৃষ্টিকোণ থেকে অভ্যন্তরীণ ঋণ বৈদেশিক ঋণের চেয়ে সুবিধাজনক। অভ্যন্তরীণ ঋ নিতে গেলে সরকারকে কোনো শর্তের মোকাবিলা করতে হয় না। কিন্তু বৈদেশিক ঋণ গ্রহণ করলে তা বিদেশিদের বেঁধে দেওয়া শর্ত পূরণ করেই ব্যবহার করা যায়। ফলে অনেক সময় ঋণের উপকারের চেয়ে অপকারই বেশি হয়। অন্যদিকে, অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সংগৃহীত ঋ পরিশোধে সরকার নতুন নোট ছাপিয়ে বা অধিক হারে কর ধার্য করে তা পরিশোধ করতে পারে। কিন্তু বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে স্বর্ণ বা বৈদেশিক মুদ্রা আবশ্যক হয়। এ দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায়, অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ গ্রহণ সুবিধাজনক।
উপরিউল্লিখিত আলোচনার প্রেক্ষিতে দেখা যায় বাংলাদেশের জন্য অভ্যন্তরীণ ঋণ উত্তম। অভ্যন্তরীণ সরকারি ঋণ দেশে বিনিয়োগ, নিয়োগ, উৎপাদন ও আয় বৃদ্ধি করে। এ বর্ণিত আয় দ্বারাই পরবর্তীতে ঋণ পরিশোষ করা যেতে পারে। কিন্তু বিদেশি ঋণ সুদ-আসলসহ পরিশোধ করতে হয় যা দেশের বাইরে চলে যায় ও আয় সৃষ্টিতে অবদান রাখে না। এটি আসলে জাতীয় আর হ্রাস করে। তাই বাংলাদেশের জন্য অভ্যন্তরীণ ঋণ গ্রহণ করাই উত্তম বলে মত দেওয়া যায়।

৯. অর্থনীতি ক্লাসের এক ছাত্র শিক্ষককে জিজ্ঞেস করল, স্যার, সরকার অনেক টাকা আয় করে। এত টাকা সরকার কী করে? শিক্ষক উত্তরে বললেন, সরকার তার প্রশাসনিক কাজ সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য অনেক অর্থ ব্যয় করে। তাছাড়া অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে স্বাবলম্বী দেশে পরিণত হওয়ার জন্য দুর্যোগ পরবর্তী জরুরি উন্নয়নমূলক কাজের জন্য সরকারের ব্যয় আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ছাত্র আবার প্রশ্ন করে যদি সরকারের টাকা না থাকে তাহলে কাজ কীভাবে করে? শিক্ষক বললেন, সরকারের আয় দ্বারা উন্নয়নমূলক কাজের ব্যয় নির্বাহ সম্ভব না হলে সরকার বিভিন্ন উৎস হতে ঋণ নিয়ে থাকে।
ক. কর কাকে বলে?
খ. অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য কেন শিক্ষার উন্নয়নকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত?
গ. উদ্দীপকের ভিত্তিতে সরকারের ব্যয় বৃদ্ধির কারণ ব্যাখ্যা করো।
ঘ. তুমি কি মনে কর, বৈদেশিক উৎস অপেক্ষা অভ্যন্তরীণ উৎস হতে গৃহীত সরকারি ঋণ বেশি কার্যকর ও যৌক্তিক? যুক্তি দেখাও।

৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কোনো বিশেষ সুবিধা প্রত্যাশা না করে জনসাধারণের স্বার্থে ব্যয় নির্বাহের জন্য কোনো ব্যক্তি সরকারকে বাধ্যতামূলকভাবে যে অর্থ প্রদান করে তাকে কর বলে।

খ. সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য শিক্ষা যেকোনো জাতির প্রাণশক্তি হিসেবে কাজ করে। একমাত্র শিক্ষার উন্নয়নের মাধ্যমেই জনগণকে জনসম্পদে রূপান্তর করা সম্ভব।
জ্ঞানই উৎপাদনের একমাত্র উপকরণ, যার প্রতিদান ক্রমহ্রাসমান নয়। সেই জন্য প্রতিবছর শিক্ষা খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করা হয়। এ লক্ষ্যে প্রাথমিক শিক্ষার সম্প্রসারণ ও গুণগত মানোন্নয়ন, নারী শিক্ষার উন্নয়ন, ছাত্র-ছাত্রীদের মেধা বিকাশে বৃত্তির সংখ্যা এবং হার বৃদ্ধি, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রসার, গুণগত মান উন্নয়ন এবং উন্নয়নের গতিধারাকে টেকসই করার জন্য উচ্চশিক্ষার প্রসারে প্রতিবছর প্রচুর অর্থ ব্যয় করা হয়।

গ. সরকারের দৈনন্দিন কার্যাবলি পরিচালনা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য অর্থ ব্যয় অপরিহার্য। তবে বর্তমান সময়ে এসে সরকারের বিভিন্ন ব্যয় নির্বাহের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিচে সরকারের ব্যয় বৃদ্ধির কারণ ব্যাখ্যা করা হলো-
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মকান্ড সরকারি উদ্যোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ভারী শিল্পকারখানা প্রতিষ্ঠা, রাস্তাঘাট ও বাঁধ নির্মাণ, সেচব্যবস্থার সম্প্রসারণসহ অবকাঠামো নির্মাণকল্পে সরকারি ব্যয়ের পরিমাণ যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা ও বেসামরিক প্রশাসনের জন্য সরকারকে প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হয়। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে এ খাতে সরকারি ব্যয় ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
অনেক সময় অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, ঝড়, জলোচ্ছ্বাস প্রভৃতি দুর্যোগে কৃষি ও অন্যান্য সম্পদের উৎপাদন যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরূপ অবস্থা মোকাবিলার জন্য সরকার রাজস্ব প্রাপ্তির আশায় অপেক্ষা করতে পারে না। তাছাড়া রাজা আয় দ্বারা এ ধরনের ব্যয় নির্বাহ করা মোটেই সম্ভব নয়। কাজেই, জরুরি অবস্থা যখন মোকাবিলা করতে পারে না তখন সরকার এরকম অবস্থাউত্তরণের জন্য অধিক ঋণ গ্রহণ করে ব্যয় বৃদ্ধি করে। সাম্প্রতিককালে সরকার প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বরাদ্দ বৃদ্ধি করছে। এজন্য সরকারকে দক্ষ সেনাবাহিনী গঠন, যুদ্ধের সাজ-সরঞ্জাম ও অস্ত্রশস্ত্র ক্রয় করার জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। উপরিউক্ত ব্যয় নির্বাহের জন্য সরকারকে প্রতি বছর অধিক ব্যয় বৃদ্ধি করতে হচ্ছে।

ঘ. সরকার নিজ দেশের জনগণ ও ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে যে ঋণ গ্রহণ করে তাকে অভ্যন্তরীণ ঋণ বলে। পক্ষান্তরে, বিদেশি সংস্থা, সরকার এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে যে ঋণ গ্রহণ করা হয় তাকে বৈদেশিক ঋণ বলে। তবে ঋণের উৎস হিসেবে অভ্যন্তরীণ উৎস হতে গৃহীত সরকারি ঋণ বেশি কার্যকর ও যৌক্তিক। নিচে আমার যুক্তির পেছনের গুরুত্বপূর্ণ কারণসমূহ বর্ণনা করা হলো-
অভ্যন্তরীণ ঋণের মাধ্যমে অর্থ সমাজের এক শ্রেণির হাত থেকে অন্য শ্রেণির নিকট স্থানান্তরিত হয়। এর ফলে অভ্যন্তরীণ ঋণের কোনো আর্থিক ভার থাকে না। শুধু প্রকৃত ভার আছে। অন্যদিকে, বৈদেশিক ঋণের দ্বারা এক দেশের জনগণের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পায়, অন্য দেশের জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এ ঋণ পরিশোধে সমাজকে আর্থিক ও প্রকৃত তার উভয়ই বহন করতে হয়। অভ্যন্তরীণ ঋণ পরিশোধে সরকার নতুন কর আরোপ বা নতুন মুদ্রা ছাপাতে পারে। কিন্তু বৈদেশিক ঋণ করা বা ছাপানো নোট দ্বারা পরিশোধ করা যাবে না। বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা বা স্বর্ণ আবশ্যক। বাণিজ্যনীতির মাধ্যমে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করা যায়। অভ্যন্তরীণ ঋণ শর্তমুক্ত। বৈদেশিক ঋণ যথেষ্ট শর্তযুক্ত। বৈদেশিক ঋণ গ্রহণ করলে উচ্চ মূল্যের উৎপাদন ক্রয়, জাহাজ ভাড়া ইত্যাদি অর্থনৈতিক নির্দেশনামা মেনে চলতে হয়। সরকার দেশি ঋণ গ্রহণে বা সংগ্রহে জনগণকে স্বেচ্ছায় ঋণ প্রদানে উদ্বুদ্ধ করতে পারে অথবা বাধ্যতামূলক পদক্ষেপ নিতে পারে। কিন্তু বৈদেশিক ঋণ প্রদানে কোনো দেশ বা সংস্থাকে বাধ্য করা যায় না। উপরিউক্ত আলোচনা থেকে এটি বলতে পারি যে, বৈদেশিক উৎস অপেক্ষা অভ্যন্তরীণ উৎস হতে গৃহীত সরকারি ঋণ বেশি কার্যকর ও যৌক্তিক।

১০. অনুন্নত দেশগুলো অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য ঘাটতি বাজেট প্রণয়ন করে। বাংলাদেশ প্রতি বছরই এরূপ ঘাটতি বাজেট প্রণয়ন করে আসছে। অর্থাৎ বাংলাদেশের ব্যয়ের তুলনায় আর সীমিত। ফলে দেশি- বিদেশি ঋণের পরিমাণ বেড়েই চলছে। এমতাবস্থায় মাননীয় অর্থমন্ত্রী করের আওতা তথা আয়ের খাত বাড়ানোর প্রস্তাব সংসদে পেশ করেন।
ক. কর কাকে বলে?
খ. সরকার কেন ঋণ গ্রহণ করে?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ঋণের উৎসগুলো ব্যাখ্যা করো।
ঘ. সরকারের আয়-ব্যয়ের খাতগুলো বিশ্লেষণ করে, মাননীয় অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবনার বিষয়ে তোমার মতামত দাও।

১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ক. কোন ধরনের প্রত্যক্ষ উপকারের আশা না করে রাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্যয় নির্বাহের জন্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যখন বাধ্যতামূলকভাবে যে অর্থ প্রদান করে তাকে কর বলে।

খ. সরকার সাধারণত কর ও অন্যান্য স্বাভাবিক উৎস হতে প্রাপ্ত আয় দ্বারা ব্যয় নির্বাহ করে থাকে। কিন্তু অনেক সময় স্বাভাবিক উৎস হতে প্রাপ্ত আয় সরকারের ব্যয় নির্বাহের জন্য পর্যাপ্ত হয় না। তাই সরকার ঋণ গ্রহণ করতে বাধ্য হয়। সরকার কর্তৃক গৃহীত এই ঋণকে সরকারি ঋণ বলা হয়। সরকার নিজ দেশ ও বিদেশ উভয় ক্ষেত্র থেকে ঋণ গ্রহণ করতে পারে।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ঋণের উৎসগুলোকে প্রধানত দু'ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- ১. অভ্যন্তরীণ উৎস এবং ২. বৈদেশিক উৎস।
অভ্যন্তরীণ উৎস: কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সরকার ঋণ গ্রহণ করে এবং তা সরকারি ঋণের অভ্যন্তরীণ শেষ উৎসস্থল। সরকার বিভিন্ন বন্ড, ঋণপত্র ইত্যাদি ক্রয়ের মাধ্যমে ব্যাংক ঋণ সৃষ্টি করতে পারে। সরকার জরুরি প্রয়োজনে দেশের অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে ঋণ নিতে পারে। বাংলাদেশ সরকার সঞ্চয়পত্র, প্রতিরক্ষা সঞ্চয়পত্র ও সার্টিফিকেট বিক্রয় করে জনগণের কাছ থেকে অর্থ বা ঋণ সংগ্রহ করে থাকে।
বৈদেশিক উৎস: সরকার বিশ্বব্যাংক (WB), আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (IMF), আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (IDA), এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক (ADB) প্রভৃতি আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে ঋণ গ্রহণ করতে পারে। সরকার দেশের বৈদেশিক লেনদেনের ঘাটতি সমস্যা দূরীকরণের অন্য স্বল্পমেয়াদি এবং উন্নয়নমূলক কাজের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ঋণ গ্রহণ করে। উপরিউক্ত উৎস থেকে, বিভিন্ন জরুরি প্রয়োজনে দেশের ব্যয়ভার মেটানোর জন্য সরকার ঋণ গ্রহণ করে থাকে।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত মাননীয় অর্থমন্ত্রী করের আওতা তথা আয়ের খাত বাড়ানোর প্রস্তাব সংসদে পেশ করেন। করের খাতগুলো হলো- মূল্য সংযোজন কর: মাননীয় অর্থমন্ত্রী মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট বাড়ানোর প্রস্তাব করেন। এটি সরকারের আয়ের প্রধান উৎসে পরিণত হতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
আমদানি শুল্ক আমদানি শুল্ক সরকারের আয়ের অন্যতম একটি উৎস। সাম্প্রতিককালে আমদানির পরিমাণ অনেক বাড়ায় এ উৎস থেকে আয় বাড়ানোর জন্য মাননীয় মন্ত্রী প্রস্তাব করেন।
আবগারি শুল্ক: দেশে উৎপাদিত ও ব্যবহৃত দ্রব্যাদির ওপর যেমন- চা চিনি, তামাক, সিগারেট, বিড়ি দিয়াশলাই, কেরোসিন, স্পিরিট, ওষুধ প্রভৃতির ওপর আবগারি শুল্ক রাড়ানো যায়।
আয় ও মুনাফার ওপর কর: যাদের বার্ষিক আয় ২.২০ লক্ষ টাকার অধিক তাদের ওপর প্রগতিশীল হারে আয় কর ধার্য করা যায়। তাছাড়া কোম্পানির আয়ের ওপরও আয় কর ধার্য করা যায়।
সম্পূরক শুল্ক: কিছু কিছু দ্রব্যসামগ্রীর ওপর আমদনি বা আবগারি শুল্ক বা ভ্যাট আরোপের পরেও অতিরিক্ত কর আরোপ করার কথা মাননীয় মন্ত্রী বলেন।
অন্যান্য কর ও শুল্ক: উপরিউক্ত শুল্ক ও কর ছাড়াও সরকার আরও কিছু কর ও শুল্ক থেকে আয় করতে পারে। এগুলোর মধ্যে আমোদ-প্রমোদ কর, সম্পত্তির কর, ভোগকৃত বিদ্যুতের ওপর কর, পেট্রোল ও গ্যাসের ওপর কর, বিদেশ ভ্রমণের ওপর কর, সেচ কাজ ও যন্ত্রপাতির ওপর কর ইত্যাদি প্রধান।

No comments:

Post a Comment